Ajker Patrika

ধর্ম অবমাননার মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
ধর্ম অবমাননার মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মিরকাদিমে অবস্থিত রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে ধর্ম অবমাননার মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার মুন্সিগঞ্জ আমলি আদালত-১ এর বিচারক জশিতা ইসলাম পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে তাঁকে মামলা থেকে অব্যাহতির আদেশ দেন।

আজ বুধবার কোর্ট ইন্সপেক্টর জামাল উদ্দিন এ খবর নিশ্চিত করে জানান, আদালত গতকাল মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেন এবং শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। মামলার বাদীও এ ব্যাপারে কোনো আপত্তি দেননি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মুন্সিগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান জানান, গত প্রায় দুই মাস আগে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়। পুলিশের তদন্তে বাদীর অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের আইনজীবী শাহীন মো. আমানউল্লাহ জানান, মামলা থেকে অব্যাহতির মাধ্যমে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল ধর্ম অবমাননার অভিযোগ থেকে রেহাই পেলেন। বাদীও কোনো আপত্তি দেয়নি। তিনি বরং এই মামলা থেকে সরে যেতে পারলে বাঁচে এমনই অবস্থা। বরং চাইলে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল মানহানির মামলা করতে পারেন।

শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘গতকাল আমি, স্কুলের প্রধান শিক্ষক, মামলার বাদী সকলেই আদালতে গিয়েছিলাম। পরে আদালত মামলা থেকে অব্যাহতি দিলে আমার আইনজীবীর সহকারীর মাধ্যমে সেটা জানতে পারি।’

মামলা থেকে অব্যাহতির পর কেমন লাগছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন নিজেকে মুক্ত মনে করছি। তবে মুক্ত মনে করলে কি হবে! একবার গায়ে লাল কালির দাগ লেগে গেলে সেটা কি দূর হয়? মনে একটা ভয়ভীতি থেকেই যায়। আমার বাড়িতে সিসি ক্যামেরা আছে, তবু মাঝেমধ্যে অজ্ঞাত লোক হুমকি দেয়। বাড়ির সামনে হৈ হুল্লোড় করে। তবে বাড়ির বাইরে আমি বেশি একটা যাই না। ঘরেই আবদ্ধ থাকি।’

প্রসঙ্গত, গত ২২ মার্চ সকালে বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ উঠে বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বিচারের দাবিতে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে প্রধান শিক্ষক আলাউদ্দিন আহম্মেদ পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। পরে বিদ্যালয়ের ইলেকট্রিশিয়ান আসাদ বাদী হয়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্মানুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে মামলা করেন। ১৯ দিন কারাগারে থেকে গত ১০ এপ্রিল তিনি মুক্তি পান। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত