Ajker Patrika

স্কুল-শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের মুক্তি দাবি ঢাবি শিক্ষক সমিতির

ঢাবি প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২২, ১৯: ৫২
স্কুল-শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের মুক্তি দাবি ঢাবি শিক্ষক সমিতির

‘ধর্ম অবমাননা’র দায়ে মুন্সিগঞ্জ সদরের বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। একইসঙ্গে হৃদয় মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে খুঁজে বের করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানায় সংগঠনটি। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়। 

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী গত ২০ মার্চে উল্লেখিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দশম শ্রেণির বাংলা দ্বিতীয় পত্রের শ্রেণি শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলকে ক্লাসে পাঠানো হয়। বিজ্ঞানের ক্লাসে অপ্রাসঙ্গিকভাবে ধর্মের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল ধর্মকে ‘বিশ্বাস’ আর বিজ্ঞানকে ‘প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান' হিসেবে ব্যাখ্যা করেন। শিক্ষকের এ বক্তব্য গোপনে রেকর্ড করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। ধারণা করা যায়, কোনো মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ কাজে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করেছে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেন। কিন্তু রহস্যজনকভাবে তার আগেই গত ২২ মার্চ বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী এবং বহিরাগত ব্যক্তি হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।’ 

‘হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল একুশ বছর ধরে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। এ ধরনের প্রবীণ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের একজন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারির মাধ্যমে মামলা করানো হয়, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রতীয়মান হয়। এছাড়া তড়িঘড়ি করে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করাটাও রহস্যজনক। গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষকের জামিনের শুনানিকালে এখন জামিন দিলে জীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি উদ্বেগজনক। আর যে কোনো নাগরিকের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘সাম্প্রতিককালে ধর্ম নিয়ে একশ্রেণির মানুষের তৎপরতাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করে ঘোলাজলে মাছ শিকারের জন্য সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে একটি মহল অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এ ঘটনা তারই অংশ বলে আমরা মনে করি। শিক্ষকের শিক্ষাদানের স্বাধীনতাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে। এ ধরনের অপতৎপরতা সমূলে উৎপাটন করা না গেলে যেকোনো শিক্ষকের পক্ষে স্বাধীনভাবে শ্রেণিশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়বে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত