আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে, ছায়া দে রে তুই, আল্লাহ...’ আব্বাস উদ্দীনের এই গান গাওয়াসহ বৃষ্টির জন্য আদি লোকজ আচার-রীতিতে প্রার্থনা করেছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার শিশু ও প্রবীণ নারী-পুরুষেরা।
আজ রোববার দুপুরে উপজেলায় ফসলের মাঠে বৃষ্টির আশায় সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। এলাকার শিশু-কিশোর ও প্রবীণেরা কাদাজলে (স্থানীয় ভাষায় নইলা মাগন) জিকির গেয়ে এ বৃষ্টি প্রার্থনা করেন।
এর আগে শনিবার বিকেলে উপজেলার নালী ইউনিয়নের গাংডুবী গ্রামে বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও গত শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজের পর বৃষ্টির জন্য দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের বাষ্টিয়া ও পুরান গ্রামে বাঙালির অতি প্রাচীন এই সংস্কৃতির আদলে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হচ্ছে। বাষ্টিয়া, গুবিন্দী ও পুরান গ্রামবাসী এ আয়োজন করে। দুপুরের তপ্ত রোদে ঢালু এক ফসলের মাঠে পানি ছিটিয়ে কর্দমাক্ত করা হয়েছে। সেই কাদায় পোঁতা হয়েছে চারটি কলা গাছ; মাঝে মাটির ছোট একটি কলস। তার চারপাশে হাঁটু গেড়ে, সারা শরীরে কাঁদা মাখিয়ে মাটি চাপরে আর দুহাত আকাশের দিকে উঠিয়ে তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করছে।
এতে অংশ নিয়েছে সীমান্ত, আলমাস, লিমন, ইমরান, সুমাইয়াসহ ওই এলাকার বেশ কয়েকজন শিশু। পাশে বসা গাঁয়ের কয়েকজন প্রবীণ নারী-পুরুষ। তারা ওদের ওপর পানি ছিটাচ্ছেন এবং দল বেঁধে গাইছেন-‘আল্লা মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে তুই আল্লাহ...। এরপর গাঁয়ের প্রবীণেরা একসঙ্গে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ ও বিশেষ মোনাজাত করেন।
বিকেলে শিশুরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেচে-গেয়ে পানি ছিটিয়ে চাল-ডালসহ তরিতরকারি সংগ্রহ করে। সন্ধ্যার পর সেই চাল ডাল দিয়ে তৈরি শিন্নি বিতরণ করা গ্রামবাসীর মাঝে বিতরণ করা হবে বলে জানান গ্রামের প্রবীণেরা।
পুরান গ্রামের বাসিন্দা আমছের আলী (৮৫) আজকের পত্রিকা বলেন, ‘গরমে জনজীবন শ্যাষ। অনেক দিন বৃষ্টি হয় না। পূর্ব পুরুষদের রীতি-অনুযায়ী বৃষ্টির জন্য এই প্রার্থনা করা হয়।’
গুবিন্দী গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ আমেজা বেগম (৭০) ও রেনু বেগম (৬৫) জানান, তাদের ছোটবেলা থেকেই বৃষ্টির অভাব হরে তারা এমন আয়োজন দেখে আসছেন। বৃষ্টির জন্য কাদা মাখিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন তারা। সে সময় বৃষ্টির জন্য জিকিরের আয়োজন করা হতো, শিন্নি করে খাওয়ানো হতো। বর্তমান সময়ে মানুষ আর এগুলো মানতে চায় না বলেও জানান তারা।
বাষ্টিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ রীতি আমাদের গ্রামে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে।’
এ বিষয়ে জেলা কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কৃষিপ্রধান বাংলায় এই দাবদাহ আর অনাবৃষ্টিতে ফসলের মাঠ বিবর্ণ হয়ে উঠে। সব জলাশয় শুকিয়ে যায়। দীর্ঘদিনের অনাবৃষ্টি আর দাবদাহের হাত থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির জন্য জিকির-আসকার, ইসতিসকার নামাজ, শিন্নি বিতরণ, কাদা মাখানো, মেঘ পূজা, হুদমা গান, তালতলার শিন্নি, ব্যাঙের বিয়েসহ নানা আচার পালন করা হতো। এমনও দেখা গেছে এসব আচার অনুষ্ঠান পালনের সময়ই ঝুমঝুমিয়ে বৃষ্টি নামতো। কিন্তু কাল পরিক্রমায় তা আজ বিলুপ্তির পথে।’
ঘিওর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃষ্টির দেখা না পেলে বাংলার বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণ ও সম্প্রদায়ের মানুষ বৃষ্টির জন্য আদি সংস্কৃতি ও লোক সংস্কৃতি অনুযায়ী নানা নিয়মাচার ও লোকাচার পালন করত। কালের পরিক্রমায় বৃষ্টির জন্য বাংলার লোকজ সংস্কৃতির সেই সমৃদ্ধ অধ্যায়টি আজ এক প্রকার বিলুপ্তই বলা চলে। কিছু কিছু আচার এখনো পালিত হয়।’
‘আল্লাহ মেঘ দে পানি দে, ছায়া দে রে তুই, আল্লাহ...’ আব্বাস উদ্দীনের এই গান গাওয়াসহ বৃষ্টির জন্য আদি লোকজ আচার-রীতিতে প্রার্থনা করেছেন মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার শিশু ও প্রবীণ নারী-পুরুষেরা।
আজ রোববার দুপুরে উপজেলায় ফসলের মাঠে বৃষ্টির আশায় সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতে দেখা গেছে। এলাকার শিশু-কিশোর ও প্রবীণেরা কাদাজলে (স্থানীয় ভাষায় নইলা মাগন) জিকির গেয়ে এ বৃষ্টি প্রার্থনা করেন।
এর আগে শনিবার বিকেলে উপজেলার নালী ইউনিয়নের গাংডুবী গ্রামে বৃষ্টির জন্য ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়াও গত শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজের পর বৃষ্টির জন্য দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের বাষ্টিয়া ও পুরান গ্রামে বাঙালির অতি প্রাচীন এই সংস্কৃতির আদলে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হচ্ছে। বাষ্টিয়া, গুবিন্দী ও পুরান গ্রামবাসী এ আয়োজন করে। দুপুরের তপ্ত রোদে ঢালু এক ফসলের মাঠে পানি ছিটিয়ে কর্দমাক্ত করা হয়েছে। সেই কাদায় পোঁতা হয়েছে চারটি কলা গাছ; মাঝে মাটির ছোট একটি কলস। তার চারপাশে হাঁটু গেড়ে, সারা শরীরে কাঁদা মাখিয়ে মাটি চাপরে আর দুহাত আকাশের দিকে উঠিয়ে তারা সৃষ্টিকর্তার কাছে বৃষ্টি প্রার্থনা করছে।
এতে অংশ নিয়েছে সীমান্ত, আলমাস, লিমন, ইমরান, সুমাইয়াসহ ওই এলাকার বেশ কয়েকজন শিশু। পাশে বসা গাঁয়ের কয়েকজন প্রবীণ নারী-পুরুষ। তারা ওদের ওপর পানি ছিটাচ্ছেন এবং দল বেঁধে গাইছেন-‘আল্লা মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে রে তুই আল্লাহ...। এরপর গাঁয়ের প্রবীণেরা একসঙ্গে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ ও বিশেষ মোনাজাত করেন।
বিকেলে শিশুরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে নেচে-গেয়ে পানি ছিটিয়ে চাল-ডালসহ তরিতরকারি সংগ্রহ করে। সন্ধ্যার পর সেই চাল ডাল দিয়ে তৈরি শিন্নি বিতরণ করা গ্রামবাসীর মাঝে বিতরণ করা হবে বলে জানান গ্রামের প্রবীণেরা।
পুরান গ্রামের বাসিন্দা আমছের আলী (৮৫) আজকের পত্রিকা বলেন, ‘গরমে জনজীবন শ্যাষ। অনেক দিন বৃষ্টি হয় না। পূর্ব পুরুষদের রীতি-অনুযায়ী বৃষ্টির জন্য এই প্রার্থনা করা হয়।’
গুবিন্দী গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ আমেজা বেগম (৭০) ও রেনু বেগম (৬৫) জানান, তাদের ছোটবেলা থেকেই বৃষ্টির অভাব হরে তারা এমন আয়োজন দেখে আসছেন। বৃষ্টির জন্য কাদা মাখিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করেন তারা। সে সময় বৃষ্টির জন্য জিকিরের আয়োজন করা হতো, শিন্নি করে খাওয়ানো হতো। বর্তমান সময়ে মানুষ আর এগুলো মানতে চায় না বলেও জানান তারা।
বাষ্টিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ রীতি আমাদের গ্রামে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসছে।’
এ বিষয়ে জেলা কৃষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কৃষিপ্রধান বাংলায় এই দাবদাহ আর অনাবৃষ্টিতে ফসলের মাঠ বিবর্ণ হয়ে উঠে। সব জলাশয় শুকিয়ে যায়। দীর্ঘদিনের অনাবৃষ্টি আর দাবদাহের হাত থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির জন্য জিকির-আসকার, ইসতিসকার নামাজ, শিন্নি বিতরণ, কাদা মাখানো, মেঘ পূজা, হুদমা গান, তালতলার শিন্নি, ব্যাঙের বিয়েসহ নানা আচার পালন করা হতো। এমনও দেখা গেছে এসব আচার অনুষ্ঠান পালনের সময়ই ঝুমঝুমিয়ে বৃষ্টি নামতো। কিন্তু কাল পরিক্রমায় তা আজ বিলুপ্তির পথে।’
ঘিওর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃষ্টির দেখা না পেলে বাংলার বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণ ও সম্প্রদায়ের মানুষ বৃষ্টির জন্য আদি সংস্কৃতি ও লোক সংস্কৃতি অনুযায়ী নানা নিয়মাচার ও লোকাচার পালন করত। কালের পরিক্রমায় বৃষ্টির জন্য বাংলার লোকজ সংস্কৃতির সেই সমৃদ্ধ অধ্যায়টি আজ এক প্রকার বিলুপ্তই বলা চলে। কিছু কিছু আচার এখনো পালিত হয়।’
গত জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ থেকে ভারী বৃষ্টির কারণে নোয়াখালীর আটটি উপজেলার বেশির ভাগ এলাকায় দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। অব্যাহত বৃষ্টি ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় ডুবে যায় জেলার বিভিন্ন সড়ক, মহল্লা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। জেলার ১৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেই জলাবদ্ধতা এখনো রয়ে গেছে। এক মাসের বেশি এই জলাবদ্ধতায়
২৫ মিনিট আগেসরকারি কেনাকাটার ক্ষেত্রে যে ঠিকাদার সর্বনিম্ন দরে মালপত্র সরবরাহ করবেন, তাকেই কাজ দেওয়ার কথা। তবে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে রাজশাহী আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারে। এখানে সর্বনিম্ন নয়, যাঁরা সর্বোচ্চ দর দিয়েছেন—তাঁদেরই কাজ দেওয়া হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ৯২ লাখ টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছে।
৩০ মিনিট আগেবিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) নিয়োগ-বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় সম্প্রতি কারাগারে যেতে হয়েছে সাবেক উপাচার্য আব্দুস সাত্তারকে। তবে এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটি গত পাঁচ মাসেও কাজ
৩৫ মিনিট আগেউড়োজাহাজের অনলাইন টিকিট বুকিংয়ে দেশের অন্যতম প্ল্যাটফর্ম ফ্লাইট এক্সপার্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদ শাহ সাইমের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের কচুয়ার মুরাদপুর গ্রামে। এই গ্রাম, উপজেলা, এমনকি পাশের ফরিদগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দাদের কাছ থেকেও তাঁরা টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়েছেন ব্যবসার নামে।
১ ঘণ্টা আগে