সৌগত বসু, ঢাকা

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে কয়েক দফা মারধরের একপর্যায়ে তিনি পানি খেতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁকে মারধরকারীরা পানি খেতে দেয়নি। নিরাপত্তা কর্মকর্তা পানির বোতল দিতে গেলে তাঁর হাত থেকে বোতল ফেলে দেওয়া হয়।
গত বুধবার বিকেলে শামীম মোল্লাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেটে (প্রান্তিক গেট) পেটানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তার অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আরও কয়েক দফা মারধর করে শামীমকে রাত ৮টার কিছু পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রাত ৯টায় শামীম সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে মারা যান। হাসপাতালের চিকিৎসক সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, হাসপাতালে তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল।
শামীম মোল্লাকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ৮ জন শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে; আটজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের কেউ এখনও গ্রেপ্তার হননি।
আজকের পত্রিকার হাতে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রান্তিক গেটে লাঠি হাতে শামীমকে মেরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব। এসময় লাথি দিতে দেখা যায় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিককে। আহসান লাবিব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক। গতকাল তাঁকে এ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি যখন সবাইকে আটকাতে যাব, তখন আমাকে আহসান লাবিব আটকে রাখে। শামীম যখন পানি খেতে চায়, তখন আমি তাকে পানি দিতে গেলে আমার হাত থেকে পানির বোতল ফেলে দেওয়া হয়।’
এর আগে ফেসবুকে আহসান লাবিব গতকাল একটি পোস্ট করেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। তবে সেই পোস্ট পরে তিনি সরিয়ে নেন। সেখানেও সুদীপ্ত শাহীন মন্তব্যের ঘরে লেখেন, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ, শামীমকে তার শেষ চাওয়া পানিটুকু দিতে দেয়নি এই ছেলে। সে যে ধমক আমাকে দিছে গতকাল, তা আমার চাকরি জীবনে কেউ দেয়নি। বেশি না, আমি তার ২৩ ব্যাচ সিনিয়র!’
সুদীপ্ত শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওখানে যখন আমি যাই, তখন ওকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ওদিকে মার হচ্ছে আর বীভৎস চিৎকার। এদিকে সবাই প্রক্টর রুমে বসে চিৎকার শুনতেছে; তারা বের হচ্ছে না।’
সুদীপ্ত বলেন, তিনি প্রক্টরকে বলেছিলেন, ছেলেটা মরে যাবে। সে চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রাখে। তখন প্রক্টর তাঁকে বলেন, ‘ছেলেপেলে তাকে এখানে থেকে নিয়ে গেছে’। তখন সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘শামীমকে প্রক্টর রুমে রাখতে হবে। নিরাপত্তা কর্মকর্তার রুমেও না।’
নিরাপত্তা কর্মকর্তা আরও জানান, শামীমকে নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষের সামনে বেশ প্রশস্ত একটা খালি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর সামনেই কলাপসিবল গেট।
তিনি বলেন, শামীম প্রক্টরের কক্ষে থাকলে মারধর হয়তো কিছুটা কম হত। কিন্তু প্রক্টরের কক্ষের বাইরে নেওয়ায় ব্যাপক পিটুনির সুযোগ মেলে। তাঁকে বড় ডাল, গজার গাছের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।
সুদীপ্ত শাহীন বলেন, শামীমকে সহকারী রেজিস্ট্রার (প্রক্টর অফিস) সোহেলের কক্ষে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে ছাত্ররা তুলে নিয়ে এসেছে। তাঁকে প্রথম দফা মারধর করা হয় প্রান্তিকে। এরপর দ্বিতীয় দফা মারধর করা হয় ওই কক্ষ থেকে বের করে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষের সামনে । তখন আহসান লাবিব তাঁকে বের করে নিয়ে চলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী একটি সূত্র জানায়, ঘটনার সময় সুদীপ্ত শাহীন যখন প্রক্টরের কক্ষ থেকে উঠে বের হতে চান তখন লাবিব তাঁকে বলেন, ‘এই মিয়া আপনি কই যান, বেশি বাড়িয়েন না। আমরা আছি বলেই চাকরি করতে পারছেন। না হলে আপনিও মামলার আসামি হতেন।’
এরপর লাবিব সেখান থেকে চলে গেলে সুদীপ্ত শাহীন প্রক্টরকে কিছু করার তাগাদা দেন। তখন প্রক্টর বলেন, ‘যেহেতু মব (অনেক মানুষ) বা ছেলেপেলে যা চায় এখন আর কী করবা!’ এসময় শামীমকে তৃতীয় দফা মারধর করা হয়।
সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘এরপর শামীমকে ওই জায়গায় রেখে তালা মেরে রাখা হয়। এসময় লাবিব ভবনের নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ঘুষি মারতে থাকে। তখন প্রক্টর স্যার সামনেই ছিল। গার্ডের পকেট থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে আরেক দফা পিটায়।’
কেন এতবার শামীমকে মারা হলো এমন প্রশ্নে শাহীন বলেন, ‘যে শুনেছে, সে–ই শামীম মোল্লাকে মারার জন্য এসেছে।’
নিরাপত্তা শাখার কার্যালয়ের ভিডিও ফুটেজ থেকে আরও পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন— সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া, রাজু আহমেদ, রাজন হাসান, হামিদুল্লাহ সালমান এবং এম এন সোহাগ। সবাই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া ৩৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া রাজু আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও রাজন হাসান একই বিভাগের ৪৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী, হামিদুল্লাহ সালমান ইংরেজি ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও এমএন সোহাগ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
বারবার কেন লাবিবের কথা বলা হচ্ছে এমন প্রশ্নে শাহীন বলেন, তিনি জাহাঙ্গীরনগরে চাকরিতে এসে ছাত্রদলকে (ক্ষমতায়) পাননি। তাই তাঁদের কাউকেই ওইভাবে চেনেন না। তবে লাবিবের সঙ্গে যেহেতু একবার কথাকাটাকাটি হয়েছে, সেহেতু লাবিবকে তাঁর মনে আছে।
শাহীন বলেন, ‘লাবিব প্রান্তিক গেট থেকে সাঈদ হোসেন ভূঁইয়াকে সঙ্গে নিয়ে এখানে আসে।’
পানি খেতে চাওয়ার বিষয়ে শাহীন বলেন, ‘যখন শেষবার মারধরের সময় শামীম পানি খেতে চেয়েছিল তখন আমি বলেছিলাম তাকে একবারে অনেক পানি দিলে সমস্যা হবে। একটা হাফ লিটার ঠান্ডা পানির বোতল থেকে অল্প অল্প করে দিতে হবে। তখন শামীমকে পানির বোতল দিতে গেলে লাবিব সেটি আমার হাত থেকে নিয়ে ফেলে দেয়।’
প্রান্তিক গেটে মারধরের পর যখন শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা অফিসে আনা হয় তখন সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া সেখানে ছিলেন। ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন একজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওই সময় সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া উপাচার্যের সঙ্গেও দেখা করেন। ‘শামীমকে মেরে ক্লান্ত’, এ কথা উপাচার্যকে জানান সাঈদ হোসেন। উপাচার্যের কক্ষে থাকা গ্লাস থেকে পানিও খান। সে সময় সেখানে সাংবাদিকসহ অন্যরাও ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাঈদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওই সময় প্রক্টর অফিসে উপাচার্য এসেছেন, এটি শুনে সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। ‘শামীমকে মেরে ক্লান্ত’ এমন কোনো কথা তিনি উপাচার্যকে বলেননি। সৌজন্য সাক্ষাৎ করেই তিনি বেরিয়ে যান। আর শামীমকে মারধরের সময় ছাত্রদের ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন।
শামীমকে থানায় নেওয়া হয়নি
আজকের পত্রিকার কাছে শামীম মোল্লার ডেথ সার্টিফিকেটের কপি এসেছে, সেখানে দেখা গেছে, শামীম মোল্লা রাত ৯টায় মারা যান। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থানা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়নি। সরাসরি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘শামীম মোল্লা শুধু একবার উঠে দাঁড়াতে পেরেছিল। তখন তাকে ধরে গাড়িতে তোলা হয়। গাড়িতে উঠেই সে সিটের ওপর পড়ে যায়। গাড়িতে ওঠানোর সময়েও তাকে মারধর করা হচ্ছিল। রাত সাড়ে ৮টায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুলিশের গাড়িতে ওঠানো হয়। গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যেতে সময় লাগবে আর কত! ৯টার পরেই তার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়। এখানে থানা বা অন্য কোথাও তাকে নেওয়ায় সুযোগ ছিল না।’
আশুলিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, ওই দিন দুই পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে শামীম মোল্লা পুলিশ ভ্যানে ওঠেন। তখনও পেছন থেকে তাঁকে ধাক্কা ও কিল ঘুষি মারা হচ্ছিল; গাড়িতে উঠেই তিনি পড়ে যান। তখন পুলিশ ধারণা করে, গাড়িতেই শামীম হয়তো মারা যাবে। পুলিশের গাড়ি সরাসরি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যায়। শামীম মোল্লা গাড়িতে থাকা পুলিশের কাঁধে এলিয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর পালস পাওয়া যায়নি। এরপর ইসিজি করা হয়।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রান্তিক গেট থেকে শামীম মোল্লাকে নিয়ে আসার পরে আমরা তাঁকে নিরাপত্তা অফিসে কলাপসিবল গেটে তালা মেরে আটকে রাখি ৷ এসময় কলাপসিবল গেট ভেঙে কিছু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে মারধর শুরু করে। এ ঘটনা দেখে আমি এবং আমার টিম দৌড়ে যাই এবং সেখানে শিক্ষার্থীদের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়াই। এতে কিছু শিক্ষার্থী নিবৃত্ত হয়।’
তখন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা কী করছিলেন— এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, ‘তারা চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এক পর্যায়ে তারাও ব্যর্থ হয়।’
প্রক্টরের উপস্থিতিতে এরকম পিটুনি ঠেকানো গেল না কেন, শামীমকে তৃতীয় দফা মারা হয় এবং সেক্ষেত্রে কোনো অবহেলা আছে কিনা— এমন প্রসঙ্গ তুললে প্রক্টর বলেন, ‘আমি আমার শিক্ষার্থীদের বলেছি, আমার সামনে তোমরা এটা করতে পার না। এমনকি আমি তাদের সামনে ঢাল হয়েও দাঁড়িয়েছি। এতে কিছু শিক্ষার্থী আমার কথা শুনলেও অনেকে না শুনে মারধর করেছে। আমাদের কয়েকজনের পক্ষে এতজন শিক্ষার্থীকে আটকানো সম্ভব ছিল না।’
[এই প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন জাবি সংবাদদাতা]

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে কয়েক দফা মারধরের একপর্যায়ে তিনি পানি খেতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁকে মারধরকারীরা পানি খেতে দেয়নি। নিরাপত্তা কর্মকর্তা পানির বোতল দিতে গেলে তাঁর হাত থেকে বোতল ফেলে দেওয়া হয়।
গত বুধবার বিকেলে শামীম মোল্লাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা গেটে (প্রান্তিক গেট) পেটানোর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তার অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আরও কয়েক দফা মারধর করে শামীমকে রাত ৮টার কিছু পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। রাত ৯টায় শামীম সাভারের গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে মারা যান। হাসপাতালের চিকিৎসক সেলিমুজ্জামান সেলিম বলেন, হাসপাতালে তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছিল।
শামীম মোল্লাকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ৮ জন শিক্ষার্থী ও অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে; আটজনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের কেউ এখনও গ্রেপ্তার হননি।
আজকের পত্রিকার হাতে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রান্তিক গেটে লাঠি হাতে শামীমকে মেরেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আহসান লাবিব। এসময় লাথি দিতে দেখা যায় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আতিককে। আহসান লাবিব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জাবি শাখার অন্যতম সমন্বয়ক। গতকাল তাঁকে এ পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি যখন সবাইকে আটকাতে যাব, তখন আমাকে আহসান লাবিব আটকে রাখে। শামীম যখন পানি খেতে চায়, তখন আমি তাকে পানি দিতে গেলে আমার হাত থেকে পানির বোতল ফেলে দেওয়া হয়।’
এর আগে ফেসবুকে আহসান লাবিব গতকাল একটি পোস্ট করেন নিজেকে নির্দোষ দাবি করে। তবে সেই পোস্ট পরে তিনি সরিয়ে নেন। সেখানেও সুদীপ্ত শাহীন মন্তব্যের ঘরে লেখেন, ‘আস্তাগফিরুল্লাহ, শামীমকে তার শেষ চাওয়া পানিটুকু দিতে দেয়নি এই ছেলে। সে যে ধমক আমাকে দিছে গতকাল, তা আমার চাকরি জীবনে কেউ দেয়নি। বেশি না, আমি তার ২৩ ব্যাচ সিনিয়র!’
সুদীপ্ত শাহীন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ওখানে যখন আমি যাই, তখন ওকে বেধড়ক মারধর করা হয়। ওদিকে মার হচ্ছে আর বীভৎস চিৎকার। এদিকে সবাই প্রক্টর রুমে বসে চিৎকার শুনতেছে; তারা বের হচ্ছে না।’
সুদীপ্ত বলেন, তিনি প্রক্টরকে বলেছিলেন, ছেলেটা মরে যাবে। সে চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রাখে। তখন প্রক্টর তাঁকে বলেন, ‘ছেলেপেলে তাকে এখানে থেকে নিয়ে গেছে’। তখন সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘শামীমকে প্রক্টর রুমে রাখতে হবে। নিরাপত্তা কর্মকর্তার রুমেও না।’
নিরাপত্তা কর্মকর্তা আরও জানান, শামীমকে নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষের সামনে বেশ প্রশস্ত একটা খালি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। এর সামনেই কলাপসিবল গেট।
তিনি বলেন, শামীম প্রক্টরের কক্ষে থাকলে মারধর হয়তো কিছুটা কম হত। কিন্তু প্রক্টরের কক্ষের বাইরে নেওয়ায় ব্যাপক পিটুনির সুযোগ মেলে। তাঁকে বড় ডাল, গজার গাছের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়।
সুদীপ্ত শাহীন বলেন, শামীমকে সহকারী রেজিস্ট্রার (প্রক্টর অফিস) সোহেলের কক্ষে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকে ছাত্ররা তুলে নিয়ে এসেছে। তাঁকে প্রথম দফা মারধর করা হয় প্রান্তিকে। এরপর দ্বিতীয় দফা মারধর করা হয় ওই কক্ষ থেকে বের করে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার কক্ষের সামনে । তখন আহসান লাবিব তাঁকে বের করে নিয়ে চলে যান।
প্রত্যক্ষদর্শী একটি সূত্র জানায়, ঘটনার সময় সুদীপ্ত শাহীন যখন প্রক্টরের কক্ষ থেকে উঠে বের হতে চান তখন লাবিব তাঁকে বলেন, ‘এই মিয়া আপনি কই যান, বেশি বাড়িয়েন না। আমরা আছি বলেই চাকরি করতে পারছেন। না হলে আপনিও মামলার আসামি হতেন।’
এরপর লাবিব সেখান থেকে চলে গেলে সুদীপ্ত শাহীন প্রক্টরকে কিছু করার তাগাদা দেন। তখন প্রক্টর বলেন, ‘যেহেতু মব (অনেক মানুষ) বা ছেলেপেলে যা চায় এখন আর কী করবা!’ এসময় শামীমকে তৃতীয় দফা মারধর করা হয়।
সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘এরপর শামীমকে ওই জায়গায় রেখে তালা মেরে রাখা হয়। এসময় লাবিব ভবনের নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ঘুষি মারতে থাকে। তখন প্রক্টর স্যার সামনেই ছিল। গার্ডের পকেট থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে আরেক দফা পিটায়।’
কেন এতবার শামীমকে মারা হলো এমন প্রশ্নে শাহীন বলেন, ‘যে শুনেছে, সে–ই শামীম মোল্লাকে মারার জন্য এসেছে।’
নিরাপত্তা শাখার কার্যালয়ের ভিডিও ফুটেজ থেকে আরও পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন— সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া, রাজু আহমেদ, রাজন হাসান, হামিদুল্লাহ সালমান এবং এম এন সোহাগ। সবাই ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া ৩৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া রাজু আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও রাজন হাসান একই বিভাগের ৪৬ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী, হামিদুল্লাহ সালমান ইংরেজি ৪৯ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও এমএন সোহাগ কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
বারবার কেন লাবিবের কথা বলা হচ্ছে এমন প্রশ্নে শাহীন বলেন, তিনি জাহাঙ্গীরনগরে চাকরিতে এসে ছাত্রদলকে (ক্ষমতায়) পাননি। তাই তাঁদের কাউকেই ওইভাবে চেনেন না। তবে লাবিবের সঙ্গে যেহেতু একবার কথাকাটাকাটি হয়েছে, সেহেতু লাবিবকে তাঁর মনে আছে।
শাহীন বলেন, ‘লাবিব প্রান্তিক গেট থেকে সাঈদ হোসেন ভূঁইয়াকে সঙ্গে নিয়ে এখানে আসে।’
পানি খেতে চাওয়ার বিষয়ে শাহীন বলেন, ‘যখন শেষবার মারধরের সময় শামীম পানি খেতে চেয়েছিল তখন আমি বলেছিলাম তাকে একবারে অনেক পানি দিলে সমস্যা হবে। একটা হাফ লিটার ঠান্ডা পানির বোতল থেকে অল্প অল্প করে দিতে হবে। তখন শামীমকে পানির বোতল দিতে গেলে লাবিব সেটি আমার হাত থেকে নিয়ে ফেলে দেয়।’
প্রান্তিক গেটে মারধরের পর যখন শামীম মোল্লাকে নিরাপত্তা অফিসে আনা হয় তখন সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া সেখানে ছিলেন। ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন একজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওই সময় সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া উপাচার্যের সঙ্গেও দেখা করেন। ‘শামীমকে মেরে ক্লান্ত’, এ কথা উপাচার্যকে জানান সাঈদ হোসেন। উপাচার্যের কক্ষে থাকা গ্লাস থেকে পানিও খান। সে সময় সেখানে সাংবাদিকসহ অন্যরাও ছিলেন।
অভিযোগের বিষয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতা সাঈদ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ওই সময় প্রক্টর অফিসে উপাচার্য এসেছেন, এটি শুনে সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি। ‘শামীমকে মেরে ক্লান্ত’ এমন কোনো কথা তিনি উপাচার্যকে বলেননি। সৌজন্য সাক্ষাৎ করেই তিনি বেরিয়ে যান। আর শামীমকে মারধরের সময় ছাত্রদের ঠেকানোর চেষ্টা করেছেন।
শামীমকে থানায় নেওয়া হয়নি
আজকের পত্রিকার কাছে শামীম মোল্লার ডেথ সার্টিফিকেটের কপি এসেছে, সেখানে দেখা গেছে, শামীম মোল্লা রাত ৯টায় মারা যান। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে থানা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয়নি। সরাসরি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ‘শামীম মোল্লা শুধু একবার উঠে দাঁড়াতে পেরেছিল। তখন তাকে ধরে গাড়িতে তোলা হয়। গাড়িতে উঠেই সে সিটের ওপর পড়ে যায়। গাড়িতে ওঠানোর সময়েও তাকে মারধর করা হচ্ছিল। রাত সাড়ে ৮টায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পুলিশের গাড়িতে ওঠানো হয়। গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যেতে সময় লাগবে আর কত! ৯টার পরেই তার মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়। এখানে থানা বা অন্য কোথাও তাকে নেওয়ায় সুযোগ ছিল না।’
আশুলিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, ওই দিন দুই পুলিশের কাঁধে ভর দিয়ে শামীম মোল্লা পুলিশ ভ্যানে ওঠেন। তখনও পেছন থেকে তাঁকে ধাক্কা ও কিল ঘুষি মারা হচ্ছিল; গাড়িতে উঠেই তিনি পড়ে যান। তখন পুলিশ ধারণা করে, গাড়িতেই শামীম হয়তো মারা যাবে। পুলিশের গাড়ি সরাসরি গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে যায়। শামীম মোল্লা গাড়িতে থাকা পুলিশের কাঁধে এলিয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁর পালস পাওয়া যায়নি। এরপর ইসিজি করা হয়।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রান্তিক গেট থেকে শামীম মোল্লাকে নিয়ে আসার পরে আমরা তাঁকে নিরাপত্তা অফিসে কলাপসিবল গেটে তালা মেরে আটকে রাখি ৷ এসময় কলাপসিবল গেট ভেঙে কিছু বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী শামীম মোল্লাকে মারধর শুরু করে। এ ঘটনা দেখে আমি এবং আমার টিম দৌড়ে যাই এবং সেখানে শিক্ষার্থীদের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়াই। এতে কিছু শিক্ষার্থী নিবৃত্ত হয়।’
তখন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা কী করছিলেন— এমন প্রশ্নের জবাবে প্রক্টর বলেন, ‘তারা চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এক পর্যায়ে তারাও ব্যর্থ হয়।’
প্রক্টরের উপস্থিতিতে এরকম পিটুনি ঠেকানো গেল না কেন, শামীমকে তৃতীয় দফা মারা হয় এবং সেক্ষেত্রে কোনো অবহেলা আছে কিনা— এমন প্রসঙ্গ তুললে প্রক্টর বলেন, ‘আমি আমার শিক্ষার্থীদের বলেছি, আমার সামনে তোমরা এটা করতে পার না। এমনকি আমি তাদের সামনে ঢাল হয়েও দাঁড়িয়েছি। এতে কিছু শিক্ষার্থী আমার কথা শুনলেও অনেকে না শুনে মারধর করেছে। আমাদের কয়েকজনের পক্ষে এতজন শিক্ষার্থীকে আটকানো সম্ভব ছিল না।’
[এই প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন জাবি সংবাদদাতা]

আগে চাঁদা শামীম ওসমানের লোকেরা নিত; এখনো কেউ না কেউ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিবিরোধী যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের তারুণ্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
১৭ মিনিট আগে
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
৩২ মিনিট আগে
সিলেটে ঝটিকা মিছিল করেছেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার সকালে সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে এ মিছিল হয়। মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
৩৫ মিনিট আগে
পটুয়াখালীর গলাচিপায় গণঅধিকারের নুরুল হক নুর নাকি বিএনপির হাসান মামুন—বিতর্কে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই দলের নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩১ জন আহত হয়েছেন। তবে ঘটনার পর উভয় দলের নেতারা পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন।
৩৭ মিনিট আগেনারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

আগে চাঁদা শামীম ওসমানের লোকেরা নিত; এখনো কেউ না কেউ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিবিরোধী যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের তারুণ্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে যে স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জীবন বাজি রেখে রাজপথে নেমেছি, তা গণ-অভ্যুত্থানের পরের ১৫ মাসেও পূরণ হয়নি। আগামীতে বাংলাদেশ কোন দিকে এবং কীভাবে পরিচালিত হবে, তার ফয়সালা হবে এই নির্বাচনে।
‘তাই ছাত্র-জনতাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—আপনারা নির্বাচনে কাদের ভোট দেবেন। ভালো মানুষকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে দেশের ভালো হবে। পেশিশক্তি, কালোটাকার মাফিয়া ও দুর্বৃত্তদের পেছনে স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করার দিন শেষ।’
নুর আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অসংখ্য সংগ্রামী ও সাহসী তরুণ রয়েছেন, যাঁরা শামীম ওসমানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে হাসিনার পতনের জন্য লড়াই করেছেন। মানুষের সমর্থন পেলে তাঁরাই আগামী দিনের জনপ্রতিনিধি হবেন।
রাজনৈতিক নেতাদের সমালোচনা করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন দলের নেতারা মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকে, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই মাদকের ব্যবসা-বাণিজ্য চলে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়। শুধু ব্যক্তি পাল্টায়, দৃশ্যপট পাল্টায় না।
‘নারায়ণগঞ্জের কলকারখানা ও শিল্পমালিকদের কাছ থেকে আগে শামীম ওসমানের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকেরা চাঁদা নিত। এখনো কেউ না কেউ চাঁদা নিচ্ছে। চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সন্ত্রাস বন্ধে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট দরকার। কিন্তু কেউ সেটি চায় না। কারণ, সবাই ভোটকেন্দ্র দখল করার জন্য, গুন্ডামি, মাস্তানি করার জন্য তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে চায়।’
এখন পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ কারও সঙ্গে নির্বাচনী জোট করেনি জানিয়ে নুরুল হক বলেন, ‘রাষ্ট্রব্যবস্থা ও দেশের পরিবর্তনের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা বিবেচনার পর আমরা জোটের কথা ভাবব।’
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি শেখ সাব্বিরের সভাপতিত্বে ও ছাত্র অধিকারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান রাজের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।

আগে চাঁদা শামীম ওসমানের লোকেরা নিত; এখনো কেউ না কেউ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। আজ শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিবিরোধী যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের তারুণ্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল হক নুর বলেন, ‘৫ আগস্টের আগে যে স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জীবন বাজি রেখে রাজপথে নেমেছি, তা গণ-অভ্যুত্থানের পরের ১৫ মাসেও পূরণ হয়নি। আগামীতে বাংলাদেশ কোন দিকে এবং কীভাবে পরিচালিত হবে, তার ফয়সালা হবে এই নির্বাচনে।
‘তাই ছাত্র-জনতাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে—আপনারা নির্বাচনে কাদের ভোট দেবেন। ভালো মানুষকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে দেশের ভালো হবে। পেশিশক্তি, কালোটাকার মাফিয়া ও দুর্বৃত্তদের পেছনে স্লোগান দিয়ে রাজনীতি করার দিন শেষ।’
নুর আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অসংখ্য সংগ্রামী ও সাহসী তরুণ রয়েছেন, যাঁরা শামীম ওসমানদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে হাসিনার পতনের জন্য লড়াই করেছেন। মানুষের সমর্থন পেলে তাঁরাই আগামী দিনের জনপ্রতিনিধি হবেন।
রাজনৈতিক নেতাদের সমালোচনা করে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, ‘আমাদের বিভিন্ন দলের নেতারা মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকে, কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই মাদকের ব্যবসা-বাণিজ্য চলে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়। শুধু ব্যক্তি পাল্টায়, দৃশ্যপট পাল্টায় না।
‘নারায়ণগঞ্জের কলকারখানা ও শিল্পমালিকদের কাছ থেকে আগে শামীম ওসমানের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকেরা চাঁদা নিত। এখনো কেউ না কেউ চাঁদা নিচ্ছে। চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সন্ত্রাস বন্ধে রাজনৈতিক কমিটমেন্ট দরকার। কিন্তু কেউ সেটি চায় না। কারণ, সবাই ভোটকেন্দ্র দখল করার জন্য, গুন্ডামি, মাস্তানি করার জন্য তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করতে চায়।’
এখন পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ কারও সঙ্গে নির্বাচনী জোট করেনি জানিয়ে নুরুল হক বলেন, ‘রাষ্ট্রব্যবস্থা ও দেশের পরিবর্তনের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা বিবেচনার পর আমরা জোটের কথা ভাবব।’
নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি শেখ সাব্বিরের সভাপতিত্বে ও ছাত্র অধিকারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান রাজের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান প্রমুখ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে কয়েক দফা মারধরের একপর্যায়ে তিনি পানি খেতে চেয়েছিলেন। তবে তাকে মারধরকারীরা পানি খেতে দেয়নি। নিরাপত্তা কর্মকর্তা পানির বোতল দিতে গেলে তার হাত থেকে বোতল ফেলে দেওয়া হয়।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
৩২ মিনিট আগে
সিলেটে ঝটিকা মিছিল করেছেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার সকালে সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে এ মিছিল হয়। মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
৩৫ মিনিট আগে
পটুয়াখালীর গলাচিপায় গণঅধিকারের নুরুল হক নুর নাকি বিএনপির হাসান মামুন—বিতর্কে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই দলের নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩১ জন আহত হয়েছেন। তবে ঘটনার পর উভয় দলের নেতারা পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন।
৩৭ মিনিট আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মৎস্যজীবী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহানগর উত্তর আওয়ামী যুবলীগের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ক্রীড়া সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন (৪৪), চাঁদপুর সদরের চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান মো. খান জাহান আলী ওরফে কালু পাটোয়ারী (৫৫), ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মো. মশিউর রহমান (৩২), খুলনা জেলার খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ (৫২), ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উপগ্রন্থাগার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক এবং মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক আলিম আল তারিফ (২৮) এবং আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. টিপু সুলতান (৪৫)।
ডিবি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ডিবি-তেজগাঁও বিভাগ তেজগাঁও থানাধীন মণিপুরিপাড়া এলাকা থেকে মো. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ধ্যায় খিলগাঁও থানাধীন নন্দীপাড়া ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে মো. খান জাহান আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন রাতে পশ্চিম আগারগাঁও এলাকা থেকে মো. মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-লালবাগ বিভাগ।
ডিবি-সাইবার বিভাগের আরেকটি দল বৃহস্পতিবার রাতে বসুন্ধরা এলাকা থেকে কাজী ফয়েজ আহমেদকে এবং ডেমরা থানা এলাকা থেকে মো. টিপু সুলতানকে গ্রেপ্তার করে। একই দল ওই দিবাগত রাতে লালবাগ থানা এলাকা থেকে আলিম আল তারিফকে গ্রেপ্তার করে। ডিবি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মৎস্যজীবী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহানগর উত্তর আওয়ামী যুবলীগের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ক্রীড়া সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন (৪৪), চাঁদপুর সদরের চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের চেয়ারম্যান মো. খান জাহান আলী ওরফে কালু পাটোয়ারী (৫৫), ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মো. মশিউর রহমান (৩২), খুলনা জেলার খালিশপুর থানা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ (৫২), ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উপগ্রন্থাগার ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক এবং মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদক আলিম আল তারিফ (২৮) এবং আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. টিপু সুলতান (৪৫)।
ডিবি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ডিবি-তেজগাঁও বিভাগ তেজগাঁও থানাধীন মণিপুরিপাড়া এলাকা থেকে মো. শাহাদাত হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সন্ধ্যায় খিলগাঁও থানাধীন নন্দীপাড়া ব্রিজসংলগ্ন এলাকা থেকে মো. খান জাহান আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন রাতে পশ্চিম আগারগাঁও এলাকা থেকে মো. মশিউর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি-লালবাগ বিভাগ।
ডিবি-সাইবার বিভাগের আরেকটি দল বৃহস্পতিবার রাতে বসুন্ধরা এলাকা থেকে কাজী ফয়েজ আহমেদকে এবং ডেমরা থানা এলাকা থেকে মো. টিপু সুলতানকে গ্রেপ্তার করে। একই দল ওই দিবাগত রাতে লালবাগ থানা এলাকা থেকে আলিম আল তারিফকে গ্রেপ্তার করে। ডিবি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে কয়েক দফা মারধরের একপর্যায়ে তিনি পানি খেতে চেয়েছিলেন। তবে তাকে মারধরকারীরা পানি খেতে দেয়নি। নিরাপত্তা কর্মকর্তা পানির বোতল দিতে গেলে তার হাত থেকে বোতল ফেলে দেওয়া হয়।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আগে চাঁদা শামীম ওসমানের লোকেরা নিত; এখনো কেউ না কেউ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিবিরোধী যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের তারুণ্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
১৭ মিনিট আগে
সিলেটে ঝটিকা মিছিল করেছেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার সকালে সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে এ মিছিল হয়। মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
৩৫ মিনিট আগে
পটুয়াখালীর গলাচিপায় গণঅধিকারের নুরুল হক নুর নাকি বিএনপির হাসান মামুন—বিতর্কে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই দলের নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩১ জন আহত হয়েছেন। তবে ঘটনার পর উভয় দলের নেতারা পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন।
৩৭ মিনিট আগেসিলেট প্রতিনিধি

সিলেটে ঝটিকা মিছিল করেছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার সকালে সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে এ মিছিল হয়। মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। মিছিলে ১৫-২০ জন নেতা-কর্মীকে অংশ নিতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি দিলওয়ার হোসেন রাহী আজ শুক্রবার বিকেলে তাঁর ফেসবুক আইডিতে প্রথম মিছিলের ভিডিও প্রকাশ করেন। মিছিলে নেতৃত্ব দেন রাহী। মিছিলে অংশ নেওয়া দু-তিনজন ছাড়া অধিকাংশ নেতা-কর্মীর মুখে কালো মাস্ক ও মাথায় হেলমেট ছিল। মিছিলে এমসি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টেলেন্ট কান্তি দাশকে দেখা যায়। আর বাকিদের চেনা যায়নি। মিছিলের ব্যানারে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রনজিত সরকারের ছবি চোখে পড়ে। রাহী ও টেলেন্ট রনজিত সরকারের গ্রুপের নেতা ছিলেন।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই মিছিলের পরে আমরা একজনকে আটক করেছি। বাকিদের ধরতে অভিযানে রয়েছি আমরা।’

সিলেটে ঝটিকা মিছিল করেছে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার সকালে সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে এ মিছিল হয়। মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। মিছিলে ১৫-২০ জন নেতা-কর্মীকে অংশ নিতে দেখা গেছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি দিলওয়ার হোসেন রাহী আজ শুক্রবার বিকেলে তাঁর ফেসবুক আইডিতে প্রথম মিছিলের ভিডিও প্রকাশ করেন। মিছিলে নেতৃত্ব দেন রাহী। মিছিলে অংশ নেওয়া দু-তিনজন ছাড়া অধিকাংশ নেতা-কর্মীর মুখে কালো মাস্ক ও মাথায় হেলমেট ছিল। মিছিলে এমসি কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টেলেন্ট কান্তি দাশকে দেখা যায়। আর বাকিদের চেনা যায়নি। মিছিলের ব্যানারে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট রনজিত সরকারের ছবি চোখে পড়ে। রাহী ও টেলেন্ট রনজিত সরকারের গ্রুপের নেতা ছিলেন।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এই মিছিলের পরে আমরা একজনকে আটক করেছি। বাকিদের ধরতে অভিযানে রয়েছি আমরা।’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে কয়েক দফা মারধরের একপর্যায়ে তিনি পানি খেতে চেয়েছিলেন। তবে তাকে মারধরকারীরা পানি খেতে দেয়নি। নিরাপত্তা কর্মকর্তা পানির বোতল দিতে গেলে তার হাত থেকে বোতল ফেলে দেওয়া হয়।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আগে চাঁদা শামীম ওসমানের লোকেরা নিত; এখনো কেউ না কেউ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিবিরোধী যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের তারুণ্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
১৭ মিনিট আগে
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
৩২ মিনিট আগে
পটুয়াখালীর গলাচিপায় গণঅধিকারের নুরুল হক নুর নাকি বিএনপির হাসান মামুন—বিতর্কে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই দলের নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩১ জন আহত হয়েছেন। তবে ঘটনার পর উভয় দলের নেতারা পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন।
৩৭ মিনিট আগেগলাচিপা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা

পটুয়াখালীর গলাচিপায় গণঅধিকারের নুরুল হক নুর নাকি বিএনপির হাসান মামুন—বিতর্কে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই দলের নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩১ জন আহত হয়েছেন। তবে ঘটনার পর উভয় দলের নেতারা পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গলাচিপা উপজেলার দক্ষিণ কপালবেড়া খলিফা বাড়ির সামনের চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার চরশিবা ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস রাঢ়ী, সদস্য সবুজ রাঢ়ী, নূরনবী রাঢ়ী, হাসান রাঢ়ী, কুদ্দুস ব্যাপারী, ইয়াকুব রাঢ়ী, ওমর রাঢ়ী, রাহান রাঢ়ী ও সলেমান রাঢ়ী; তাঁরা সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
অপর দিকে যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল খলিফা, আজমীর খলিফা, শাহাবুল খলিফা, আমেনা বেগম, নাঈম খলিফা ও নবীন খলিফা আহত হয়েছেন। তাঁরা গণঅধিকার পরিষদের কর্মী-সমর্থক। দুই পক্ষের অন্য আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি চলে যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরশিবা সাংগঠনিক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কমিটি গঠন উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় কপালবেড়া বাজারে গণঅধিকারের সভা ছিল। সভায় বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে অংশ নেন। অন্যদিকে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মিছিল বের করেন ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
কর্মসূচি শেষে উভয় দলের নেতা-কর্মীরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথে দক্ষিণ কপালবেড়া চৌরাস্তা বাজারে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সভায় লোক উপস্থিত হওয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় বিএনপির নমিনেশন হাসান মামুন পাবেন না গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর পাবেন—এ বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে তর্ক হয়। একপর্যায়ে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
আহত যুবদল নেতা মো. ইলিয়াস রাঢ়ী বলেন, ‘শুক্রবার হাসান মামুন ভাইয়ের প্রোগ্রাম উপলক্ষে রাতে আমরা কপালবেড়া বাজারে শুভেচ্ছা মিছিল করি। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার সময় গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরা আমাদের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।’
ইলিয়াস রাঢ়ী আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, ৭ নভেম্বরের প্রোগ্রামে হাসান মামুন ভাই যে নির্দেশনা দেবেন, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব। কিন্তু তারা বলে, হাসান মামুন নমিনেশন পাবেন না, গণঅধিকারের নুরুল হক নুরকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। এই কথা বলেই তারা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’
আহত আজমীরের মা আমেনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে মোটরসাইকেলচালক। কিছুদিন আগে বিএনপির সভায় গাড়ি নিয়ে যেতে বলেছিল, সে যায় নাই। কিন্তু আজ গণঅধিকার পরিষদের সভায় যায়। সভা শেষ করে বাসায় ফেরার পথে চৌরাস্তায় বিএনপির লোকজন তাকে ধরে মারধর করে। আমার বাসার সামনেই ঘটনা ঘটে। আমি ছেলেকে বাঁচাতে দৌড়ে গেলে আমাকেও মারধর করে।’
আজমীরের বাবা শাহাবুল খলিফা বলেন, ‘আমরা গণঅধিকার পরিষদ করি। এর আগে চরবিশ্বাসে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের মারামারির ঘটনার পর চরশিবায় পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে তারা। আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল তাদের এবং আজকে গণঅধিকারের সভায় লোকজন যাওয়ার কারণে মারধর করে।’
যুব অধিকার নেতা সোহেল খলিফা বলেন, ‘দুপক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হলে বিএনপির লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে হামলা করে। আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি, এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। তবে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা–দশমিনা) আসনে প্রার্থী ঘোষণা স্থগিত রাখে দলটি।
এ নিয়ে সাধারণ মানুষ, বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাগ্যুদ্ধ শুরু হয়। পৌর শহর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় প্রতীকে হাসান মামুনের মনোনয়ন চেয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন। তাঁরা দলীয় প্রার্থীর বাইরে বিকল্প কোনো প্রার্থীকে মেনে নিতে নারাজ।
এর ধারাবাহিকতায় উপজেলার চরশিবা সাংগঠনিক ইউনিয়নের চর কপালবেড়া নামের স্থানে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এরপর সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের পর চর কপালবেড়াসহ পুরো চর কাজল ইউনিয়নে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাতেই ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে অবস্থান নেয়।
এ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নুরুল হক নুরের ভাই ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুব অধিকার পরিষদের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম নুর বলেন, ‘আমি এলাকায় ছিলাম না। তবে বিষয়টি হলো, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চর কপালবেড়ায় ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে গণঅধিকারের একটি সভা ছিল। অন্যদিকে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির লোকজন মিছিল করে। মিছিল শেষে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর তারা হামলা করেছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।’
আমিনুল ইসলাম বলেন, হাসান মামুন নমিনেশন না পাওয়ার কারণে বিএনপির লোকজন উচ্ছৃঙ্খলতা শুরু করেছে। এলাকায় একটা ভয়ভীতি ও ত্রাসের রাজনীতি করতে চায়, যাতে গণঅধিকারে কেউ যোগ না দেয়।
এদিকে ঘটনার পরে রাত ১২টার দিকে আহত ব্যক্তিদের দেখতে গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। এ সময় উভয় দলের আহত ব্যক্তিদের তিনি চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। তিনি সবাইকে ধৈর্য ও শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ জানান।
এ সময় বিএনপি নেতা হাসান মামুন বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছি, তবে এখনো বিস্তারিত জানতে পারিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখানে রয়েছেন। তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। আমরাও প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করছি।’
হাসান মামুন আরও বলেন, ‘শুক্রবার আমাদের দলের একটি র্যালি রয়েছে, সে কারণেই নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হচ্ছিলেন। সেই প্রোগ্রাম ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে হয়তো এ ধরনের তৎপরতা চালাতে পারে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করব, সঠিকভাবে তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করুন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’
মামুন বলেন, ‘একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে উঠেছে। এই পরিবেশ রক্ষায় সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করব।’
সংঘর্ষের বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দুই পরিবারের সদস্যরা দুই রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তাঁদের আগে প্রভাব বিস্তার নিয়ে পারিবারিক বিরোধ রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এ নিয়ে সংঘর্ষ হতে পারে। সংঘর্ষে দুপক্ষই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও দলীয় প্রভাব বিস্তার নিয়ে পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

পটুয়াখালীর গলাচিপায় গণঅধিকারের নুরুল হক নুর নাকি বিএনপির হাসান মামুন—বিতর্কে আবারও সংঘর্ষে জড়িয়েছেন দুই দলের নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৩১ জন আহত হয়েছেন। তবে ঘটনার পর উভয় দলের নেতারা পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে গলাচিপা উপজেলার দক্ষিণ কপালবেড়া খলিফা বাড়ির সামনের চৌরাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার চরশিবা ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস রাঢ়ী, সদস্য সবুজ রাঢ়ী, নূরনবী রাঢ়ী, হাসান রাঢ়ী, কুদ্দুস ব্যাপারী, ইয়াকুব রাঢ়ী, ওমর রাঢ়ী, রাহান রাঢ়ী ও সলেমান রাঢ়ী; তাঁরা সবাই বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
অপর দিকে যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল খলিফা, আজমীর খলিফা, শাহাবুল খলিফা, আমেনা বেগম, নাঈম খলিফা ও নবীন খলিফা আহত হয়েছেন। তাঁরা গণঅধিকার পরিষদের কর্মী-সমর্থক। দুই পক্ষের অন্য আহত ব্যক্তিরা স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি চলে যান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরশিবা সাংগঠনিক ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কমিটি গঠন উপলক্ষে গতকাল সন্ধ্যায় কপালবেড়া বাজারে গণঅধিকারের সভা ছিল। সভায় বিভিন্ন স্থান থেকে নেতা-কর্মীরা মোটরসাইকেল মহড়া দিয়ে অংশ নেন। অন্যদিকে ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মিছিল বের করেন ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
কর্মসূচি শেষে উভয় দলের নেতা-কর্মীরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথে দক্ষিণ কপালবেড়া চৌরাস্তা বাজারে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সভায় লোক উপস্থিত হওয়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়। এ সময় বিএনপির নমিনেশন হাসান মামুন পাবেন না গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর পাবেন—এ বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে তর্ক হয়। একপর্যায়ে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
আহত যুবদল নেতা মো. ইলিয়াস রাঢ়ী বলেন, ‘শুক্রবার হাসান মামুন ভাইয়ের প্রোগ্রাম উপলক্ষে রাতে আমরা কপালবেড়া বাজারে শুভেচ্ছা মিছিল করি। মিছিল শেষে বাড়ি ফেরার সময় গণঅধিকার পরিষদের কর্মীরা আমাদের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।’
ইলিয়াস রাঢ়ী আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি, ৭ নভেম্বরের প্রোগ্রামে হাসান মামুন ভাই যে নির্দেশনা দেবেন, আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করব। কিন্তু তারা বলে, হাসান মামুন নমিনেশন পাবেন না, গণঅধিকারের নুরুল হক নুরকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছে। এই কথা বলেই তারা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালায়।’
আহত আজমীরের মা আমেনা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে মোটরসাইকেলচালক। কিছুদিন আগে বিএনপির সভায় গাড়ি নিয়ে যেতে বলেছিল, সে যায় নাই। কিন্তু আজ গণঅধিকার পরিষদের সভায় যায়। সভা শেষ করে বাসায় ফেরার পথে চৌরাস্তায় বিএনপির লোকজন তাকে ধরে মারধর করে। আমার বাসার সামনেই ঘটনা ঘটে। আমি ছেলেকে বাঁচাতে দৌড়ে গেলে আমাকেও মারধর করে।’
আজমীরের বাবা শাহাবুল খলিফা বলেন, ‘আমরা গণঅধিকার পরিষদ করি। এর আগে চরবিশ্বাসে বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের মারামারির ঘটনার পর চরশিবায় পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে তারা। আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল তাদের এবং আজকে গণঅধিকারের সভায় লোকজন যাওয়ার কারণে মারধর করে।’
যুব অধিকার নেতা সোহেল খলিফা বলেন, ‘দুপক্ষের মধ্যে মারামারি শুরু হলে বিএনপির লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে হামলা করে। আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি, এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারিতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৩ নভেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২৩৭টি আসনে দলীয় প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। তবে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা–দশমিনা) আসনে প্রার্থী ঘোষণা স্থগিত রাখে দলটি।
এ নিয়ে সাধারণ মানুষ, বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাগ্যুদ্ধ শুরু হয়। পৌর শহর ও বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় প্রতীকে হাসান মামুনের মনোনয়ন চেয়ে দফায় দফায় বিক্ষোভ-মিছিল করেছেন। তাঁরা দলীয় প্রার্থীর বাইরে বিকল্প কোনো প্রার্থীকে মেনে নিতে নারাজ।
এর ধারাবাহিকতায় উপজেলার চরশিবা সাংগঠনিক ইউনিয়নের চর কপালবেড়া নামের স্থানে দুই দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এরপর সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়ে।
সংঘর্ষের পর চর কপালবেড়াসহ পুরো চর কাজল ইউনিয়নে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাতেই ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে অবস্থান নেয়।
এ ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নুরুল হক নুরের ভাই ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুব অধিকার পরিষদের সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম নুর বলেন, ‘আমি এলাকায় ছিলাম না। তবে বিষয়টি হলো, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চর কপালবেড়ায় ওয়ার্ড কমিটি গঠন নিয়ে গণঅধিকারের একটি সভা ছিল। অন্যদিকে ৭ নভেম্বর উপলক্ষে বিএনপির লোকজন মিছিল করে। মিছিল শেষে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর তারা হামলা করেছে। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।’
আমিনুল ইসলাম বলেন, হাসান মামুন নমিনেশন না পাওয়ার কারণে বিএনপির লোকজন উচ্ছৃঙ্খলতা শুরু করেছে। এলাকায় একটা ভয়ভীতি ও ত্রাসের রাজনীতি করতে চায়, যাতে গণঅধিকারে কেউ যোগ না দেয়।
এদিকে ঘটনার পরে রাত ১২টার দিকে আহত ব্যক্তিদের দেখতে গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন। এ সময় উভয় দলের আহত ব্যক্তিদের তিনি চিকিৎসার খোঁজখবর নেন। তিনি সবাইকে ধৈর্য ও শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ জানান।
এ সময় বিএনপি নেতা হাসান মামুন বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছি, তবে এখনো বিস্তারিত জানতে পারিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এখানে রয়েছেন। তাঁরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। আমরাও প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করছি।’
হাসান মামুন আরও বলেন, ‘শুক্রবার আমাদের দলের একটি র্যালি রয়েছে, সে কারণেই নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হচ্ছিলেন। সেই প্রোগ্রাম ব্যাহত করার উদ্দেশ্যে হয়তো এ ধরনের তৎপরতা চালাতে পারে। আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ করব, সঠিকভাবে তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটন করুন এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।’
মামুন বলেন, ‘একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে উঠেছে। এই পরিবেশ রক্ষায় সব পক্ষকে শান্তি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করব।’
সংঘর্ষের বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশাদুর রহমান বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। দুই পরিবারের সদস্যরা দুই রাজনৈতিক দলের সমর্থক। তাঁদের আগে প্রভাব বিস্তার নিয়ে পারিবারিক বিরোধ রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এ নিয়ে সংঘর্ষ হতে পারে। সংঘর্ষে দুপক্ষই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও দলীয় প্রভাব বিস্তার নিয়ে পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে কয়েক দফা মারধরের একপর্যায়ে তিনি পানি খেতে চেয়েছিলেন। তবে তাকে মারধরকারীরা পানি খেতে দেয়নি। নিরাপত্তা কর্মকর্তা পানির বোতল দিতে গেলে তার হাত থেকে বোতল ফেলে দেওয়া হয়।
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪
আগে চাঁদা শামীম ওসমানের লোকেরা নিত; এখনো কেউ না কেউ নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজিবিরোধী যুব ও ছাত্র অধিকার পরিষদের তারুণ্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
১৭ মিনিট আগে
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের ছয়জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
৩২ মিনিট আগে
সিলেটে ঝটিকা মিছিল করেছেন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। আজ শুক্রবার সকালে সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় সিলেট জেলা ছাত্রলীগের ব্যানারে এ মিছিল হয়। মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইতিমধ্যে ভাইরাল হয়েছে।
৩৫ মিনিট আগে