Ajker Patrika

গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে ১, ভিডিও ছড়ানোয় গ্রেপ্তার ৪

  • মূল অভিযুক্ত পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে
  • ফজর আলীর রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি
  • ছবি-ভিডিও সরানোর নির্দেশ হাইকোর্টের
 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
কুমিল্লার আদালতে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কুমিল্লার আদালতে গ্রেপ্তার আসামিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে দরজা ভেঙে এক সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগে ফজর আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে চারজনকে গতকাল রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ফজর আলী পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে ফজর আলীর রাজনৈতিক পরিচয় ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্র বলছে, তিনি আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর গত ৫ আগস্টের পর বিএনপির নেতাদের সঙ্গে চলাফেরা শুরু করেন। তবে আওয়ামী লীগ বা বিএনপির কোনো কমিটিতে তাঁর পদ নেই।

ফজর আলী ছাড়াও গ্রেপ্তার বাকি ব্যক্তিরা হলেন মুরাদনগরের স্থানীয় মোহাম্মদ আলী ওরফে সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিক। তাঁদের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র বলেছে, ভুক্তভোগী ওই নারী মুরাদনগর থানায় শুক্রবার দুপুরে ধর্ষণের অভিযোগে এবং গতকাল পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন। পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় চারজনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ধর্ষণ মামলার অভিযোগে বলা হয়, প্রায় ১৫ দিন আগে তিনি সন্তানদের নিয়ে মুরাদনগরে বাবার বাড়ি বেড়াতে যান। গত বৃহস্পতিবার রাতে ভুক্তভোগীর বাবা-মা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যান। ভুক্তভোগীর ভাইও বাড়িতে ছিলেন না। বাড়িতে ছিলেন তাঁর বোন, বোনের ছোট দুই ছেলেমেয়ে। তারা ঘুমিয়ে ছিল। রাত ১০টার দিকে ফজর আলী ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, বিষয়টি টের পেয়ে আশপাশ থেকে লোকজন এসে ফজর আলীকে পেটাতে থাকেন। পুলিশ যে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে, তাঁরা ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দিয়েছেন। এদিকে ফজর আলীকে পেটানোর পর তাঁর স্বজনেরা তাঁকে কুমিল্লা শহরের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। মামলা হওয়ার খবর শোনার পর তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান।

পুলিশ সূত্র বলেছে, গতকাল ভোরে রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকা থেকে ফজর আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ছাড়া ভিডিও ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মুরাদনগরের স্থানীয় মো. সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিককে।

মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, ‘ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় পর্নোগ্রাফি এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে (রোববার) ভোরে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সময় তাঁকে মারধর করা হয়। তিনি পুলিশ হেফাজতে কুমিল্লা জেলা পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’ তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগীকে বিবস্ত্র অবস্থায় নির্যাতন ও ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সুমন, রমজান, আরিফ ও অনিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী সুমন নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ওয়ার্ড কমিটির সাবেক নেতা।

আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মো. সাদেকুর রহমান বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় চার আসামি সুমন, রমজান, আরিফ ও অনিককে কুমিল্লার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

ফজর আলীর রাজনৈতিক পরিচয় ঘিরে বিভ্রান্তি

মুরাদনগর রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আল-আমিন বলেন, ‘ফজর আলী দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। তিনি সাবেক এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুনের মিছিল-সমাবেশে সক্রিয় ছিলেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়ার দেহরক্ষী হিসেবেও কাজ করেছেন।’

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জনের দাবি, ‘ফজর আলীর সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই। তাঁকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিএনপির কর্মী বানানোর অপচেষ্টা চলছে।’

এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া খোকন বলেন, ‘আমি জনপ্রতিনিধি হিসেবে সবার সঙ্গে চলাফেরা করি। ফজর আলীকে ভালোভাবে চিনি না।’

বিএনপির সংবাদ সম্মেলন: অপপ্রচারের প্রতিবাদ

কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড়ে গতকাল বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলা বিএনপির নেতারা বলেন, ‘ফজর আলী আওয়ামী লীগ নেতা, অথচ বিএনপির নাম জড়িয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’ তাঁরা অভিযোগ করেন, অতীতেও বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা ও হয়রানি হয়েছে। এখন সংখ্যালঘু ইস্যুকে ব্যবহার করে নতুনভাবে ষড়যন্ত্র চলছে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া, সদস্যসচিব মোল্লা মুজিবুল হক, দুলাল দেবনাথ ও দয়ানন্দ ঠাকুর।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিবাদ মিছিল

মুরাদনগরের ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল বিকেল ৫টার দিকে কুমিল্লা নগরীর রাণীর বাজার রামঠাকুর আশ্রম থেকে সংখ্যালঘু ঐক্য মঞ্চের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লার সভাপতি চন্দন কুমার রায়, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ তাপস কুমার বকসী, আইনজীবী বিকাশ সাহা, অমল দত্ত প্রমুখ।

ছবি-ভিডিও সরানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা জানান, মুরাদনগরে ধর্ষণের শিকার নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে ভুক্তভোগীর সব ছবি ও ভিডিও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এ ঘটনায় করা মামলার তদন্তের অগ্রগতি আগামী ১৪ জুলাই জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

কুমিল্লার ঘটনায় করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। এর আগে গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মীর এ কে এম নূরুন্নবী গতকাল রিটটি করেন। রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও তানিম খান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়কের মরদেহ উদ্ধার

 টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. ইউনুসের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের রঙিখালি সড়কের মাথার ব্রিজের নিচ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মো. ইউনুস (৫৫) টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের চান্দলীপাড়া এলাকার হাছন আলীর ছেলে। তিনি সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইসমাইল বলেন, ‘সকালে লেদা বাজার যাওয়ার পথে রঙিখালি ব্রিজের নিচে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে জানা যায়, মরদেহটি সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুস মেম্বারের।’

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে পুড়ল ২০ দোকান

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২০টি দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, বজ্রপাত থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহালছড়িতে ফায়ার সার্ভিস না থাকায় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। পরে খাগড়াছড়ি থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। এ সময় আগুনে রফিক স্টোর, ফরিদ স্টোর, প্রতিভা লাইব্রেরিসহ ২০টি দোকান পুড়ে যায়। দোকানগুলোর মধ্যে বেশির ভাগ মুদি ও কাপড়ের দোকান। এর মধ্যে দুটি চায়ের দোকান ও একটি স্বর্ণালংকারের দোকানও রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা।

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা
খাগড়াছড়ির মহালছড়ি বাজারে আগুনে পুড়েছে অন্তত ২০টি দোকান। ছবি: আজকের পত্রিকা

অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে আজ বুধবার সকালে মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রায়হান ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলেন।

খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক জাকের হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মুষলধারে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের কারণে বাজারে বিদ্যুৎ-সরবরাহ বন্ধ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, বজ্রপাত থেকে আগুন লাগতে পারে। তিনি জানান, আশপাশে পানির উৎস না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। সব কটি দোকান আগুনে পুড়ে কয়লা হয়ে গেছে। কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করে জানা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মাদারীপুর-১ আসন: মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে জামান মোল্লার সমর্থকদের সড়ক অবরোধ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত রাখার ঘটনায় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল থেকে শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে অবস্থান নেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা।

জানা গেছে, গত সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সারা দেশের ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করে। এর মধ্যে মাদারীপুর-১ আসনে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয় কামাল জামান মোল্লার নাম। এর প্রতিবাদ জানিয়ে সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা-ভাঙ্গা মহাসড়ক অবরোধ করেন মনোনয়ন না পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকী লাভলুর সমর্থকেরা। পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দলীয় দপ্তর থেকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণে মাদারীপুর-১ (শিবচর উপজেলা) আসনের মনোনয়ন স্থগিত রাখা হয়েছে। বিএনপির দপ্তর সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিবচর পৌর এলাকার ৭১ সড়কে কামাল জামান মোল্লার সমর্থক নেতা-কর্মীদের বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে শিবচর সদরের ৭১ সড়কে বিক্ষোভ করছেন কামাল জামান মোল্লার সমর্থকেরা। তাঁরা মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবি জানিয়ে সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। এ সময় বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদ জানান তাঁরা। প্রতিবাদে নারী-পুরুষসহ অসংখ্য সমর্থক অংশ নিয়েছে।

জামান মোল্লার সমর্থিত একাধিক নেতা-কর্মী বলেন, ‘জামান মোল্লা একজন জননন্দিত নেতা। শিবচরে তাঁর প্রচুর সমর্থক রয়েছে। তিনি বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছেন। তাঁর মনোনয়ন স্থগিত মেনে নেওয়া হবে না। মনোনয়ন পুনর্বহাল করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে নামতে চায়: আলতাফ হোসেন চৌধুরী

পটুয়াখালী প্রতিনিধি
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা
জনসভায় বক্তব্য দেন এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী। ছবি: আজকের পত্রিকা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন চার ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন একটি অংশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এমনকি তাদের মধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধরান্দী আবাসন মাঠে এক নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে এবারের নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। শুনেছি, ইতিমধ্যে টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না। তার ওপর পার্শ্ববর্তী দেশগুলো আওয়ামী লীগকে নিয়ে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে।’

বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন যতটা সহজ মনে হচ্ছে, বাস্তবে ততটা সহজ নয়। জনাব তারেক রহমানও একাধিকবার বলেছেন—এই নির্বাচনের পেছনে রয়েছে বিভিন্ন চাপ, পার্শ্ববর্তী দেশের, আওয়ামী লীগের, জাতীয় পার্টির এমনকি গোপনে গোয়েন্দা সংস্থারও।’

দলীয় কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, এখন শুধু মঞ্চে বক্তৃতা দিয়ে হবে না, ঘরে ঘরে যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে কথা বলতে হবে—কেন ভোট হবে, কাকে ভোট দেবে, কেন দেবে, তা জনগণকে বোঝাতে হবে।

ভোটের পরিবেশ নিয়ে আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এমন এক অবস্থায় পৌঁছেছি, যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট প্রায় ইতিহাস হয়ে গেছে। গত ১৫ বছরে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। রাতে ভোট হয়েছে, দিনের ভোট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। প্রকৃত নির্বাচন না হয়ে ‘সিলেকশন’ হয়েছে। এতে অযোগ্য ও অদক্ষ লোক সংসদে গেছে, পবিত্র সংসদকে অপবিত্র করা হয়েছে।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না। সভাপতিত্ব করেন কমলাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম মৃধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত