Ajker Patrika

রাখাইনে সংঘাত: আবারও দলে দলে রোহিঙ্গা আসছে

কক্সবাজার প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২২: ১৭
রাখাইনে সংঘাত: আবারও দলে দলে রোহিঙ্গা আসছে

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ দখল নিয়ে দেশটির সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) লড়াই তীব্র হয়ে উঠেছে। এতে রোহিঙ্গাদের জীবন আবারও হুমকির মুখে পড়েছে। গত কয়েক দিনে ভিটেমাটি ফেলে মংডু ও আশপাশের এলাকা থেকে দলে দলে রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়ছে।

অভিযোগ উঠেছে, নাফ নদ পাড়ি দিয়ে দালালদের সহযোগিতায় কাঠের নৌকা করে কক্সবাজারের টেকনাফের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে ঢুকছে রোহিঙ্গারা। এরপর তারা টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির এবং টেকনাফে বিভিন্ন বাসাবাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে।

সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডসহ প্রশাসনের কড়া নজরদারির মধ্যে আবারও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ উদ্বেগ জানিয়েছেন।

তবে নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গার আশ্রয় দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। গতকাল রোববার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা ইউএনএইচসিআরকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি যে, আমাদের পক্ষে আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়।’

গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত আট হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা নতুন আগতদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছিল, যা সরকার দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে।’ 

রাখাইনে সংঘাত: আবারও দলে দলে ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা। ছবি: আজকের পত্রিকামংডু টাউনশিপ ঘিরে তীব্র লড়াই 
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে আরাকান আর্মির সঙ্গে সরকারি বাহিনীর লড়াই শুরু হয়। আরাকান আর্মি ইতিমধ্যে রাখাইনের ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ দখলের পাশাপাশি বাংলাদেশ সীমান্তের সীমান্ত চৌকি দখলে নিয়েছে। এখন রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মংডু টাউনশিপ ও আশপাশের এলাকায় যুদ্ধ চলছে। এ যুদ্ধে রোহিঙ্গাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে আরাকান আর্মি। 

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা ও সীমান্তের একাধিক সূত্র জানায়, মংডু শহরের সেনা ও বিজিপির দুটি ব্যারাক (ব্যাটালিয়ন) দখলে নিতে হামলা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি। দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র গোলাগুলির পাশাপাশি মর্টার শেল নিক্ষেপ ও গ্রেনেড–বোমা ছোড়া হচ্ছে। এর মধ্যে আরাকান আর্মি মংডু টাউনশিপের পাশের পাঁচটি গ্রাম সুধাপাড়া, মংনিপাড়া, সিকদারপাড়া, উকিলপাড়া, নুরুল্লাপাড়া দখল করে ৫০–৬০ হাজার রোহিঙ্গাকে উচ্ছেদ করেছে। 

মংডু ও আশপাশের গ্রামগুলোতে ৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাস রয়েছে। রোহিঙ্গারা জানায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরেও মংডু এলাকার রোহিঙ্গাদের সমস্যা হয়নি। কিন্তু এবার তাদেরও উচ্ছেদ করা হচ্ছে। 

সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, ‘রোববার রাতেও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ এপারে ভেসে আসে। তবে সোমবার ভোর থেকে তেমন বিকট শব্দ শোনা যায়নি। কয়েক দিন ধরে মংডু ও আশপাশের এলাকায় টানা বিমান হামলা ও মর্টারশেল বিস্ফোরণ হয়েছে।’ 

সীমান্তে জড়ো হয়েছে রোহিঙ্গারা
বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের জন্য মংডু ও আশপাশের সীমান্তে ৬০–৬৫ হাজার রোহিঙ্গা জড়ো হয়েছে। এরই মধ্যে হাজারো রোহিঙ্গারা নাফ নদ ও সীমান্ত পার হয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ আশ্রয়শিবিরে আত্মীয়স্বজনের কাছে আশ্রয় নিয়েছে। গত এক মাসে অন্তত ১৮ থেকে ২০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। তবে সীমান্তে কর্মরত সরকারি সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, এ পর্যন্ত ১০ হাজার মতো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। 
 
একাধিক সূত্রমতে, টেকনাফের জাদিমোরা, দমদমিয়া, কেরুনতলী, বরইতলী, নাইট্যংপাড়া, জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, মৌলভীপাড়া, নয়াপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, জালিয়াপাড়া, মিস্ত্রিপাড়া, ঘোলারচর, খুরেরমুখ, আলীর ডেইল, মহেষখালীয়াপাড়া, লম্বরী, তুলাতলী, রাজারছড়া, বাহারছড়া উপকূল, উখিয়ার বালুখালী, ঘুমধুম সীমান্তসহ অন্তত ৩০টি পয়েন্টে দিয়ে রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করছে।

মংডুর উত্তরের প্যারাংপুরু ও দক্ষিণের ফাদংচা এলাকায় জড়ো থাকা রোহিঙ্গারা দালালদের সহায়তায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, জনপ্রতি রোহিঙ্গারা দালালদের ৫ লাখ কিয়াত (বার্মিজ মুদ্রা) বা বাংলাদেশি ২০ হাজার টাকা দিয়ে সীমান্ত পার হচ্ছে। 

রাখাইনে সংঘাত: আবারও দলে দলে ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা। ছবি: আজকের পত্রিকাএ বিষয়ে জানতে চাইলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নতুন আসা রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ক্যাম্পে আত্মীয়স্বজনদের ঘরে অবস্থান করছেন। এদের মধ্যে অনেকেই গুলিবিদ্ধ ও আহত আছেন। তাঁদের চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আবাসন নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি আশ্রয়শিবিরে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা গাদাগাদি করে বসবাস করছেন। এর মধ্যে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরে কয়েক মাসে আট লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।’ 

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়টি স্বীকার করে টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আট–নয় হাজারের মতো রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের টহল বাড়ানো হয়েছে।’ 

এদিকে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) কক্সবাজার শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আবারও গণহারে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনায় স্থানীয়রা উদ্বিগ্ন। নাফ নদ–সীমান্তে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের টহল থাকার পরও দালাল চক্রের মাধ্যমে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের বিষয়টি দুঃখজনক। অবিলম্বে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো দরকার বলে জানান তিনি। 

রোহিঙ্গাদের সংগঠন ‘আরাকান সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জুবায়ের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জাতিসংঘ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গা–সংকট সমাধানে কার্যকর ভূমিকা নিতে পারছে না। এতে নতুন করে আরও রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ ঘটছে। রাখাইনের দখল নিয়ে জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির যুদ্ধে আবারও রোহিঙ্গারা নির্মূল হচ্ছে।’ এসব বন্ধে আন্তর্জাতিক মহলের কঠোর হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করেন তিনি। 
 
উল্লেখ, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পড়ে বাংলাদেশে অন্তত ৮ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় নেয়। গত ৭ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত নেয়নি মিয়ানমারের জান্তা সরকার। সম্প্রতি চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের কার্যক্রম শুরু হলেও রাখাইনের যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে থেমে আছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নাটোর গুদাম থেকে ১৫০ বস্তা চাল লুট

নাটোর প্রতিনিধি 
নাটোরে গুদামে শাটারের তালা ভেঙে ও কেটে চাল লুট। ছবি: আজকের পত্রিকা
নাটোরে গুদামে শাটারের তালা ভেঙে ও কেটে চাল লুট। ছবি: আজকের পত্রিকা

নাটোর শহরতলির ফুলবাগান এলাকার সেলিম ভূঁইয়া নামের এক ব্যবসায়ীর গুদাম থেকে ১৫০ বস্তা চাল লুট করে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ২টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ জানায়, সোমবার রাত আনুমানিক ২টার দিকে ফুলবাগান এলাকার সড়ক ভবন-সংলগ্ন সেলিম ট্রেডার্সের সামনে একটি ট্রাক এনে দাঁড় করায় দুর্বৃত্তরা। তারা শাটারের তালা ভেঙে ও কেটে দোকানে প্রবেশ করে ক্যাশ বাক্স থেকে নগদ ১২ হাজার টাকাসহ প্রায় ১৫০ বস্তা চাল ট্রাকে লোড করে নিয়ে যায়।

ব্যবসায়ী সেলিম ভূঁইয়া বলেন, ‘ফজরের নামাজের সময় স্থানীয় এক ব্যক্তি ফোনে জানান, গুদামের শাটার কাটা ও আরেকটি পুরোপুরি খোলা। পরে সেখানে এসে দেখি, দুর্বৃত্তরা স্তূপাকারে রাখা চালের বস্তাগুলো নিয়ে গেছে। স্টক রেজিস্টার থেকে জেনেছি, চালের বস্তা ছিল ১৫০টি।’

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে জানান, এই ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাতক্ষীরায় মনোনয়ন না পাওয়া প্রার্থীর সমর্থনে সড়ক অবরোধ

দেবহাটা ও সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৩: ২৫
সাতক্ষীরা-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়ায় অধ্যাপক মো. শহিদুল আলমের সমর্থকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাতক্ষীরা-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়ায় অধ্যাপক মো. শহিদুল আলমের সমর্থকদের সড়ক অবরোধ। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি-কালিগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পাওয়ায় ‘গরিবের ডাক্তার’ নামে পরিচিত মো. শহিদুল আলমের সমর্থকেরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কালিগঞ্জ প্রধান মহাসড়কে স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ে।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, শহিদুল আলম দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের পাশে থেকে মানবিক সেবা দিয়ে আসছেন। কিন্তু তাঁকে মনোনয়ন না দিয়ে অন্যকে প্রার্থী করায় দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

এ সময় তাঁরা শহিদুল আলমকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে স্লোগান দেন এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সদস্য শেখ নুরুজ্জামান, নলতা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান, নলতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কেসমতুল বারি, সাধারণ সম্পাদক মিলন কুমার সরকার, কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক শেখ খায়রুল আলম, সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মারধরের ঘটনায় জাবি শিক্ষার্থীদের ৫ দাবি মেনে নিল সেনাবাহিনী

জাবি প্রতিনিধি 
সমস্যা সমাধানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসেন সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
সমস্যা সমাধানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসেন সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

সেনাবাহিনী কর্তৃক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানানো পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়েছেন সাভার অঞ্চলে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম ইমদাদুল হক ইমন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ৫০তম (২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ) ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

জানা গেছে, গতকাল সোমবার বিকেলে টিউশনি শেষে বাইকে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন ইমন। এ সময় তাঁর হেলমেট না থাকায় সাভারের পাকিজা এলাকায় সেনাসদস্যরা তাঁকে আটকান। এ সময় তাঁর সঙ্গে গাড়ির কাগজপত্র ছিল না। এতে তাঁকে প্রায় ২ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং তাঁর এক ভাই সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন বলে জানান সেনাসদস্যদের। একপর্যায়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাঁকে মারধর করেন এবং তাঁদের পা ধরে মাফ চাইতে বাধ্য করেন।

এই ঘটনার জেরে সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। এতে সড়কের উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। প্রায় আধা ঘণ্টা অবরোধ চলার পর সাভার অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে এসে সমস্যার সমাধান করতে চাইলে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

রাত পৌনে ১১টার দিকে সেই সেনা কর্মকর্তাসহ সাভার অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্যাম্পাসে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও জাকসুর মধ্যস্থতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। এ সময় তাঁরা সেনাবাহিনীর সদস্য কর্তৃক সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন।

আলোচনা শেষে ভুক্তভোগী ইমনের পক্ষ থেকে পাঁচটি দাবি উত্থাপন করেন জাকসুর ভিপি আব্দুর রশিদ জিতু। দাবিগুলো হলো—অভিযুক্ত মেজর এহসান ও ওয়ারেন্ট অফিসার আলীকে ক্ষমা চাইতে হবে; ভুক্তভোগী ইমনের সম্পূর্ণ চিকিৎসার দায়ভার সেনাবাহিনীকে গ্রহণ করতে হবে; ভবিষ্যতে এই ঘটনার জের ধরে ইমন বা তাঁর পরিবার যেন কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয়, তার নিশ্চয়তা দিতে হবে; দেশের কোনো সাধারণ নাগরিক যেন সেনাবাহিনীর দ্বারা এমন আচরণের শিকার না হন, তার নিশ্চয়তা দিতে হবে; ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ‘কোর্ট অব ইনকোয়ারি’ গঠন করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার করতে হবে।

আলোচনায় উপস্থিত সেনাবাহিনীর সাভার স্টেশন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইনতেখাব হায়দার খান শিক্ষার্থীদের পাঁচ দাবি মেনে নেন এবং তার অগ্রগতি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করবেন বলে জানান। পাঁচ দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই সেনা কর্মকর্তা মেজর এহসান ও ওয়ারেন্ট অফিসার আলী তাৎক্ষণিক তাঁদের ভুলের জন্য ক্ষমা চান।

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীর সঙ্গে যা ঘটেছে, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনাটি জানার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সাভারে সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তাঁদেরকে ক্যাম্পাসে এসে সমস্যাটি সমাধানের অনুরোধ করেছি। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাতে তাঁরা ক্যাম্পাসে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের জানানো পাঁচটি দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বগুড়ায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা

বগুড়া প্রতিনিধি
ধানখেত থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
ধানখেত থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জহুরুল ইসলাম (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সোমবার রাতে সদর উপজেলার হাজরাদীঘি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

আজ মঙ্গলবার সকালে পুলিশ গ্রামের একটি ধানখেত থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে। নিহত জহুরুল ইসলাম ওই এলাকার শ্বশুরবাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছিলেন। তিনি পেশায় বেকারি সামগ্রী পরিবহনের ভ্যান চালাতেন। বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাত ১১টার দিকে কে বা কারা ফোন করে জহুরুলকে বাড়ি থেকে ডেকে নেয়। এরপর তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন ভোরে স্থানীয় বাসিন্দারা ধানখেতে তাঁর লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তফা মঞ্জুর বলেন, নিহত ব্যক্তির মাথায় ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে হত্যার কারণ জানা যায়নি। ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কার্গো ভিলেজে আগুন: বিমানবন্দরের ভল্ট ভেঙে চুরি হলো ৭ আগ্নেয়াস্ত্র

বিচার বিভাগ: পদোন্নতির প্যানেলে ১১ শতাধিক কর্মকর্তা

প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির ভূমিকায় চায় জামায়াত

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

আজকের রাশিফল: ছবি পোস্ট করার আগে সাতবার ভাবুন, জ্ঞানের কথা চেপে রাখুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত