Ajker Patrika

চার বছরেও শেষ হয়নি ৮ স্কুলভবন নির্মাণের কাজ

মো. মাহবুবুল আলম, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর)
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২৩: ০২
চার বছরেও শেষ হয়নি ৮ স্কুলভবন নির্মাণের কাজ

চার বছরেও শেষ হয়নি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ। বিদ্যালয়ের পাশাপাশি ভবনগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবেও ব্যবহারের কথা রয়েছে। ভবনগুলোর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে। প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী দুই বছরে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা এখনো শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কবে নির্মাণকাজ শেষ হবে, তা কেউ নিশ্চিত করে বলতেও পারছেন না।

আজ বুধবার বিদ্যালয়গুলোয় সরেজমিনে দেখা যায়, কোনো ভবনের কাজ অর্ধেক, আবার কোনো ভবনের শুধুমাত্র পিলার নির্মাণ করা হয়েছে। আবার কোনো ভবনের ছাদ নির্মাণ হলেও দেয়াল নেই। আবার কোনোটির দেয়াল থাকলেও ছাদ নেই। বিদ্যালয়গুলোর আসবাবপত্রগুলো অব্যবহৃত ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

পশ্চিম চর আবাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের তৃতীয়তলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়নি এখনোপ্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ১৫৯ কোটি ৮৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ‘মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার শেল্টার প্রজেক্ট’-এর আওতায় লক্ষ্মীপুর জেলায় ৩৪টি বিদ্যালয়ে এই ভবন নির্মাণকাজ করছে নাভানা কনস্ট্রাকশন। এ প্রকল্পের আওতায় রায়পুর উপজেলার উত্তর চর আবাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম চর আবাবিল, গাইয়ার চর, চর বিকন্সফিল্ড, রাখালিয়া আহাম্মদিয়া, পশ্চিম কেরোয়া, উত্তর পশ্চিম দেবীপুর ও উত্তর চরপাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।

নতুন ভবনের আশায় পুরোনো ভবন ভেঙে এবং জায়গা ছেড়ে দিয়ে এখন বেকায়দায় পড়েছেন বিদ্যালয়গুলোর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলে দিলে এসব প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কীভাবে চলবে, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে চরম অনিশ্চয়তা। ভবনের সঙ্গে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সংযোগ সড়ক ও কালভার্টগুলোর মেরামতকাজও। নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের এমন গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।

উত্তর চর আবাবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পুতুল রানী সরকার বলেন, মাত্র তৃতীয় তলার ছাদ নির্মাণ করে কাজটি ফেলে রাখা হয়েছে। স্বাভাবিক গতিতে কাজ করলেও ছয় মাসের আগে এখানে পাঠদান শুরু করা সম্ভব হবে না। অস্থায়ী টিনের ঘরটি পাঠদানের জন্য রাখা হলেও সেটির দরজা-জানালা নেই। বেঞ্চ ভাঙচুর করে রাখা হয়েছে। চুরি হয়ে গেছে সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি। পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। কোনো শৌচাগারের ব্যবস্থাও নেই। বিদ্যালয় খুললে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করানো ছাড়া কোনো উপায় নেই।

উত্তর পশ্চিম দেবীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। চার বছরে মাত্র তৃতীয় ছাদ ঢালাইয়ের জন্য প্রস্তুত করে ফেলে রাখা হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ভবনটিএ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (চলতি দায়িত্ব) মোসতাক আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভবনের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় বিদ্যালয়গুলোর শ্রেণি কার্যক্রম কীভাবে চলবে, তা আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে। অস্থায়ী টিনের ঘরগুলোও জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। অনেক জায়গায় মালিকেরা জমি থেকে অস্থায়ী ঘরগুলো সরাতে চাপ দিচ্ছেন। পুরো বিষয়টি জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

নাভানা কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, করোনা ও নিজেদের অন্যান্য সমস্যার কারণে নির্ধারিত সময়ে কাজগুলো শেষ করা হয়নি। চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে কাজগুলো পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। চলতি মাসের শেষ দিকে আবারও কাজগুলো শুরু করা সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।

এ অবস্থায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি বাতিলের জন্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে বলে জানান স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের লক্ষ্মীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শাহ আলম পাটওয়ারী। তিনি বলেন, দুই বছরের কাজ নাভানা কনস্ট্রাকশন চার বছরেও শেষ করতে পারেনি। তাদের সঙ্গে লক্ষ্মীপুর জেলার সব প্রকল্পের চুক্তি বাতিল করার জন্য মন্ত্রণালয়কে এপ্রিল মাসে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তাদের যেন সময় বাড়িয়ে পুনরায় দরপত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

অপারেশন সিন্দুর ঘিরে আলোচিত কে এই কর্নেল সোফিয়া কুরেশি

কাশ্মীরে বিধ্বস্ত বিমানের অংশবিশেষ ফরাসি কোম্পানির তৈরি, হতে পারে রাফাল

নিজ কার্যালয়ে র‍্যাব কর্মকর্তার গুলিবিদ্ধ লাশ, পাশে চিরকুট

আকাশ প্রতিরক্ষায় কে এগিয়ে, পাকিস্তান কি ভারতের আক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম

শ্রীনগরের কাছে যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ, ভারতের নাকি পাকিস্তানের

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত