Ajker Patrika

ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে আটকে পড়া আসিফের ফিরে আসার অপেক্ষায় স্বজনেরা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে আটকে পড়া আসিফের ফিরে আসার অপেক্ষায় স্বজনেরা

ইউক্রেনে এমভি ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ নামক বাংলাদেশি একটি জাহাজে আটকে পড়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছেলে সৈয়দ আসিফুল ইসলাম (৩৩)। বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ওই জাহাজে তিনি সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তাঁর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মুন্সেফপাড়ায়। 

রাশিয়া-ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধে গতকাল বুধবার ওই জাহাজে রকেট হামলায় হাদিসুর রহমান নামের এক নাবিকের মৃত্যু হয়েছে। ওই জাহাজে আসিফসহ বেশ কয়েকজন নাবিক আটকে পড়ে আছেন। আসিফের বাবা-মা এখন ছেলের জীবিত ফেরত আসার অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। 

ছেলের জন্য বাবা মসজিদে কোরআন খতম পড়িয়েছেন। মা সারাদিন তসবিহ জপছেন। ভাইয়ের ছবিতে হাত বুলিয়ে প্রার্থনা করছেন বোন। আর স্বামীর বিপদের খবর শোনার পর থেকেই অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন আসিফের স্ত্রী। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আসিফের বাবা সৈয়দ নুরুল ইসলাম রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা। আর মা পারভীন আক্তার গৃহিণী। দুই ভাই-বোনের মধ্যে আসিফ বড়। 

বাবার চাকরির সুবাদে আসিফের শৈশব কেটেছে ঢাকায়। পড়াশোনাও করেছেন সেখানে। মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা সিটি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ভর্তি হন চট্টগ্রামের মেরিন একাডেমিতে। সেখানকার পাঠ চুকিয়ে যোগ দেন বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনে। ২০১৭ সালে বিয়ে করেন আসিফ। দাম্পত্য জীবনে তিনি এক কন্যা সন্তানের বাবা। 

আসিফের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর ছুটিতে বাড়ি আসেন আসিফ। ছুটি কাটিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় যান তিনি। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে গিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি জাহাজে ওঠেন। জাহাজ নিয়ে ইতালি যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে জাহাজটি ইউক্রেনের একটি বন্দরে আটকে পড়ে। সম্প্রতি পদোন্নতি পাওয়া আসিফের ওই জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের দায়িত্ব নেওয়ার কথা ছিল। অথচ এখন যুদ্ধের কারণে জীবন নিয়েই শঙ্কা কাটছে না। 

আসিফের মা পারভীন আক্তার বলেন, ‘ছেলের জন্য অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে। কখন কী হয়, বলা যাচ্ছে না। সরকারের কাছে দাবি জানাই আমার ছেলেসহ জাহাজের সবাইকে যেন নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করে।’ 

আসিফের বোন সৈয়দা নুসরাত জাহান বলেন, শিপিং করপোরেশন থেকে ফোন করে বলা হয়েছে, কেউ যেন জাহাজ ছেড়ে না আসে। জাহাজের দাম ৩০০ কোটি টাকা। তাদের কাছে মানুষের জীবনের দাম নেই। 

ভাইকে নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান নুসরাত জাহান। 

আসিফের বাবা সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আসিফের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সে ভালো আছে বলে জানিয়েছে। জাহাজে এক মাসের খাবার মজুত আছে। কিন্তু যুদ্ধ এক মাসে শেষ হবে বলে মনে হচ্ছে না। ফলে তারা না খেয়েই মারা যাবে। সে জন্য দ্রুত জাহাজে থাকা সবাইকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছি।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

রাখাইনে মানবিক করিডর কি প্রক্সি যুদ্ধের ফাঁদ হবে, ভারত-চীন কীভাবে দেখবে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত