Ajker Patrika

পাথরঘাটায় জামায়াতের কর্মিসভায় হামলার অভিযোগ, ১৫ জন আহত হওয়ার দাবি

পাথরঘাটা(বরগুনা) প্রতিনিধি  
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে পাথরঘাটা শহরে বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে পাথরঘাটা শহরে বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরগুনার পাথরঘাটায় জামায়াতের কর্মিসভায় হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জামায়াতের দাবি, হামলায় ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। গুরুতর দুজনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মোশারফ হোসেন মোল্লার বাড়িতে জামায়াতের কর্মী বৈঠকে এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দলটি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের যৌথ উদ্যোগে পাথরঘাটা শহরে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভায় নেতারা দাবি করেন, খুলনা শ্রমিক লীগের নেতা সোলায়মান সাদিক তাঁদের কর্মীদের ওপর এ হামলা করেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সোলায়মান সাদিক।

জামায়াতের ভাষ্যমতে, আহতরা হলেন পাথরঘাটা পৌর যুব বিভাগের সেক্রেটারি আব্দুল কাইয়ুম, পাথরঘাটা পৌর প্রচার সম্পাদক তাওহিদুল ইসলাম, জামায়াত কর্মী ওয়ালিদ পহলান, ফুলমিয়া, ইলিয়াস, মোহাম্মদ হানিফ, ফিরোজ হোসেন, মাহবুর রহমান, আনোয়ার হোসেন, ইউনুছ হাওলাদারের নাম জানা গেছে। এঁদের মধ্যে আব্দুল কাইয়ুম ও তাওহিদুল ইসলামকে চিকিৎসার জন্য বরিশালে পাঠানো হয়েছে।

পথসভায় পাথরঘাটা উপজেলা জামায়াতের আমির মাসুদুল আলম বলেন, ‘বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমরা নাচনাপাড়া ইউনিয়নের জামায়াত কর্মীর বাড়িতে দলের কর্মসূচি পালন করি। এরপর বাড়ি থেকে বের হওয়ার পথে খুলনা পরিবহন শ্রমিক লীগের নেতা সোলাইমান সাদিক তার বাহিনী নিয়ে আমাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে আমাদের ১৫ নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। আমরা এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিচার চাই।’

ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি এস এম সোলায়মান বাদশা বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বরগুনা-২ আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী নুরুল ইসলাম মনির ভাইয়ের ছেলে সুলাইমান সাদিক একসময়ে খুলনাতে শ্রমিক লীগের নেতৃত্ব দিতেন। জুলাই-আগস্টের পর তিনি তাঁর নিজ বাড়িতে এসে বিশেষ বিএনপির নব্য নেতা হিসেবে সমাজকর্মী দাবি করে সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করেছেন। এর পর থেকে পাথরঘাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখল, সালিসের নামে অন্যের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছে।

এস এম সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের কাছে এই সন্ত্রাসীর বিচার দাবি করছি। তা না হলে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই সোলায়মান বাহিনী প্রভাব ফেলতে পারে।’ তিনি এই বাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের সবাইকে লাঠি হাতে প্রস্তুত থাকতে বলেন।

জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিলের পরপরই তাদের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এনামুল হোসেন।

এরপর তাঁরাও শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এতে শহরে উত্তপ্ত ছড়িয়ে পড়ে।

অভিযোগের বিষয়ে সোলায়মান সাদিক বলেন, ‘আমি পাঁচ দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করতেছি। জামায়াত নেতারা নির্বাচনী ফায়দা নেওয়ার জন্য আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ করতেছেন। আমি বিএনপি পরিবারের সদস্য। আমাকে জোর করে শ্রমিক লীগের নেতা বানানো হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার চাচা ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী। তাঁর জনপ্রিয়তা দেখে জামায়াত নেতারা নানা রকমের মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে।’

পাথরঘাটা থানার ওসি মাংচেনলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জামায়াতের কর্মিসভা শেষে স্থানীয় কিছু লোকদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক হয়েছে—এমনটাই জানা গেছে। থানা-পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনে অভিযোগ আসেনি।’

পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ইসরাত জাহান বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ