মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
কক্সবাজার বিমানবন্দরের মূল ফটকের উল্টো দিকে দেশের অন্যতম সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণকেন্দ্র। গভীর সমুদ্র ও উপকূল থেকে আহরিত মাছ এই কেন্দ্র থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকায় যায়। এতে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যবসায়ী ও মৎস্যজীবীদের আনাগোনায় সরগরম থাকে এ কেন্দ্র। কিন্তু দুই-আড়াইমাস ধরে এই কেন্দ্রের সেই চিত্রে চিড় ধরেছে।
বাঁকখালী নদীর মোহনায় এ কেন্দ্রের ৬ নম্বর জেটিতে সারি সারি নোঙর করে রাখা হয়েছে কয়েক শ মাছ ধরার ট্রলার। সাগরে ইলিশের প্রজনন মৌসুমের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২ নভেম্বর থেকে ২০ মে পর্যন্ত সামুদ্রিক মাছ শিকারের ভর মৌসুম ধরা হয়। চলতি মৌসুমের শুরুতে জেলেরা সাগরে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ পেলেও জানুয়ারিতে এসে মাছ আহরণে ভাটা পড়েছে।
সম্প্রতি সাগরে জেলিফিশের আধিক্য বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলে ও ট্রলার মালিকরা বলেন, ‘সাগরে কোথাও জাল ফেলা যাচ্ছে না। জাল ফেললেই উঠে আসছে জেলিফিশ। এতে মাছ না পাওয়ায় সাগরে নামতে সাহস করছেন না জেলেরা।’
সমুদ্রবিজ্ঞানী ও গবেষকেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধি, পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া, সামুদ্রিক কচ্ছপের বিচরণ ও সংখ্যা কমে যাওয়া এবং অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে ‘জেলিফিশ ব্লুম’ বা উচ্চ প্রজনন হারের ঘটনা ঘটছে।
আজ শনিবার নুনিয়ারছড়া ৬ নম্বর ঘাটে অলস সময় কাটাচ্ছিলেন এফবি মায়ের দোয়ার মাঝি সৈয়দ আহমদসহ কয়েকজন জেলে। সৈয়দ আহমদ বলেন, ‘তিন-চার দফা সাগরে গিয়ে মাছ না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরে এসেছি। সাগরে নুইন্যা (জেলিফিশ) ছাড়া মাছই উঠে না। অবস্থা ভালো হলে সাগরে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’
জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজার মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে। দুই-আড়াই মাস ধরে অধিকাংশ ট্রলার সাগরে নেমে মাছ না পেয়ে ফিরে আসছে। অল্প-সল্প যা পায় তাতে জ্বালানি খরচও উঠছে না।’
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. বদরুদ্দোজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চলতি মাসে ১ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ১৫৬ টন ইলিশ, ১৩ টন রিটা, ৯ টন চান্দা ও ১৭৩ টন মিশ্রিত মাছ এসেছে। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে ২৬৭ দশমিক ৮৮ টন ইলিশ ও অন্যান্য মাছসহ শুধু মাত্র ৪৭১ টন মাছ আহরণ হয়েছে। জানুয়ারি মাসে আহরণ হয়েছিল ৪২৪ দশমিক ৫৩ মেট্রিক টন ইলিশসহ ৭১৯ টন মাছ।’
সামুদ্রিক মাছের এই আকাল চোখে পড়ে কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া, বড় বাজার ও কালুর দোকান ঘুরে। এই তিন বাজারে উল্লেখযোগ্য সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ নেই। যা আছে তাঁর দাম শুনলে চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা। আগে যেই কালো চান্দা সর্বোচ্চ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো সেই মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরের ফুল পোয়া বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
কালুর দোকানের মাছ বিক্রেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সাগরে মাছ মিলছে না। যা সরবরাহ আছে তা চড়া দামে কিনতে হচ্ছে।’
দেশে প্রায় ৪৫ লাখ টন মাছের চাহিদার মধ্যে ৭ লাখ টন মাছের যোগান আসে সাগর থেকে। চলতি মৌসুমে মাছ ধরা শেষ হচ্ছে ২০ মে। এরপর সামুদ্রিক মাছের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এই পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকলে চলতি মৌসুম সামুদ্রিক মাছের ঘাটতি দিয়েই শেষ হবে।
জেলিফিশ খাওয়ার উপযোগী, আছে অর্থনৈতিক মূল্য
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে দুই বছর ধরে মরা জেলিফিশ ভেসে আসছে। কয়েকদিন ধরে সৈকতের নাজিরারটেক, ডায়াবেটিক, শৈবাল, লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী, দরিয়ানগর ও হিমছড়ি পয়েন্টসহ বিস্তৃত উপকূল জুড়ে ভেসে আসে মৃত জেলিফিশ। সাগরে জেলেদের জালে আটকা পড়ে জেলিফিশ মারা পড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জেলিফিশ খাওয়ার তালিকায় থাকলেও বাংলাদেশে এখনও বাজার সৃষ্টি হয়নি।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট (বোরি) জেলিফিশ সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও বাজার সৃষ্টি নিয়ে ৬ মাস ধরে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌমিত্র চৌধুরী। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে ২২ প্রজাতির জেলিফিশ শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশ খাওয়ার উপযোগী। এর মধ্যে জেলিফিশের উচ্চ প্রজননের বিষয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে।
সাগরে জেলিফিশ বেড়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণের মধ্যে সামুদ্রিক কাছিমের বিচরণ কমে যাওয়া অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলিফিশ কাছিমের প্রধান খাদ্য। কাছিম কমে গেলে জেলিফিশের আধিক্য স্বাভাবিক বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক সাগর-মহাসাগরে ‘জেলিফিশ ব্লুম’ বা উচ্চ প্রজনন জেলেদের দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে জেলেদের জালে মাছের পরিবর্তে হাজার হাজার জেলিফিশ আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। বাজারমূল্য না থাকায় জেলেরা এসব মৃত জেলিফিশ সাগরে ফেলে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধি, পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া, উপকূলীয় উন্নয়ন এবং অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণেও জেলিফিশ ব্লুমের জন্য দায়ী করা হয়। জেলিফিশকে ‘ফিশ’ বলা হলেও মূলত এটি মাছ নয়। এটি এক ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণী। একটি জেলিফিশ এক কেজি থেকে ১৪-১৫ কেজি ওজন পর্যন্ত হয়ে থাকে। বিশ্বে আড়াই থেকে তিন হাজার প্রজাতির জেলিফিশ রয়েছে। দুর্বল প্রকৃতির এই প্রাণী সামান্য আঘাতে কিংবা জালে আটকা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায়।
এই সমুদ্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়া জেলিফিশ বিষাক্ত না হলেও এগুলো রপ্তানি করার মতো অবকাঠামো দেশে গড়ে ওঠেনি। ফলে বাজারমূল্য না থাকায় জেলেরা মৃত জেলিফিশ সাগরে ফেলে দেয়। এতে সাগরের পরিবেশ এবং জোয়ারে ভেসে এসে উপকূলের পরিবেশ নষ্ট করে।’
সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর আরও বলেন, ‘বিশ্বে জেলিফিশের ৩৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজারমূল্য রয়েছে। চীন, হংকং ও কোরিয়াসহ বিভিন্ন উন্নত দেশ এর প্রধান বাজার। এতে অবহেলিত সামুদ্রিক এই পণ্যের স্থানীয় বাজার সৃষ্টিসহ রপ্তানি করে দেশ সুনীল অর্থনীতিতে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে।’
কক্সবাজার বিমানবন্দরের মূল ফটকের উল্টো দিকে দেশের অন্যতম সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণকেন্দ্র। গভীর সমুদ্র ও উপকূল থেকে আহরিত মাছ এই কেন্দ্র থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকায় যায়। এতে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যবসায়ী ও মৎস্যজীবীদের আনাগোনায় সরগরম থাকে এ কেন্দ্র। কিন্তু দুই-আড়াইমাস ধরে এই কেন্দ্রের সেই চিত্রে চিড় ধরেছে।
বাঁকখালী নদীর মোহনায় এ কেন্দ্রের ৬ নম্বর জেটিতে সারি সারি নোঙর করে রাখা হয়েছে কয়েক শ মাছ ধরার ট্রলার। সাগরে ইলিশের প্রজনন মৌসুমের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২ নভেম্বর থেকে ২০ মে পর্যন্ত সামুদ্রিক মাছ শিকারের ভর মৌসুম ধরা হয়। চলতি মৌসুমের শুরুতে জেলেরা সাগরে ইলিশসহ অন্যান্য মাছ পেলেও জানুয়ারিতে এসে মাছ আহরণে ভাটা পড়েছে।
সম্প্রতি সাগরে জেলিফিশের আধিক্য বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জেলে ও ট্রলার মালিকরা বলেন, ‘সাগরে কোথাও জাল ফেলা যাচ্ছে না। জাল ফেললেই উঠে আসছে জেলিফিশ। এতে মাছ না পাওয়ায় সাগরে নামতে সাহস করছেন না জেলেরা।’
সমুদ্রবিজ্ঞানী ও গবেষকেরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধি, পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া, সামুদ্রিক কচ্ছপের বিচরণ ও সংখ্যা কমে যাওয়া এবং অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণে ‘জেলিফিশ ব্লুম’ বা উচ্চ প্রজনন হারের ঘটনা ঘটছে।
আজ শনিবার নুনিয়ারছড়া ৬ নম্বর ঘাটে অলস সময় কাটাচ্ছিলেন এফবি মায়ের দোয়ার মাঝি সৈয়দ আহমদসহ কয়েকজন জেলে। সৈয়দ আহমদ বলেন, ‘তিন-চার দফা সাগরে গিয়ে মাছ না পেয়ে শূন্য হাতে ফিরে এসেছি। সাগরে নুইন্যা (জেলিফিশ) ছাড়া মাছই উঠে না। অবস্থা ভালো হলে সাগরে যাওয়ার অপেক্ষায় আছি।’
জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজার মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে। দুই-আড়াই মাস ধরে অধিকাংশ ট্রলার সাগরে নেমে মাছ না পেয়ে ফিরে আসছে। অল্প-সল্প যা পায় তাতে জ্বালানি খরচও উঠছে না।’
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. বদরুদ্দোজা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চলতি মাসে ১ থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত এ কেন্দ্রে ১৫৬ টন ইলিশ, ১৩ টন রিটা, ৯ টন চান্দা ও ১৭৩ টন মিশ্রিত মাছ এসেছে। এর আগে ফেব্রুয়ারি মাসে ২৬৭ দশমিক ৮৮ টন ইলিশ ও অন্যান্য মাছসহ শুধু মাত্র ৪৭১ টন মাছ আহরণ হয়েছে। জানুয়ারি মাসে আহরণ হয়েছিল ৪২৪ দশমিক ৫৩ মেট্রিক টন ইলিশসহ ৭১৯ টন মাছ।’
সামুদ্রিক মাছের এই আকাল চোখে পড়ে কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া, বড় বাজার ও কালুর দোকান ঘুরে। এই তিন বাজারে উল্লেখযোগ্য সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ নেই। যা আছে তাঁর দাম শুনলে চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা। আগে যেই কালো চান্দা সর্বোচ্চ ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতো সেই মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরের ফুল পোয়া বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকায়, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।
কালুর দোকানের মাছ বিক্রেতা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘সাগরে মাছ মিলছে না। যা সরবরাহ আছে তা চড়া দামে কিনতে হচ্ছে।’
দেশে প্রায় ৪৫ লাখ টন মাছের চাহিদার মধ্যে ৭ লাখ টন মাছের যোগান আসে সাগর থেকে। চলতি মৌসুমে মাছ ধরা শেষ হচ্ছে ২০ মে। এরপর সামুদ্রিক মাছের প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিনের জন্য সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এই পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকলে চলতি মৌসুম সামুদ্রিক মাছের ঘাটতি দিয়েই শেষ হবে।
জেলিফিশ খাওয়ার উপযোগী, আছে অর্থনৈতিক মূল্য
কক্সবাজার সমুদ্র উপকূলে দুই বছর ধরে মরা জেলিফিশ ভেসে আসছে। কয়েকদিন ধরে সৈকতের নাজিরারটেক, ডায়াবেটিক, শৈবাল, লাবণী, সুগন্ধা, কলাতলী, দরিয়ানগর ও হিমছড়ি পয়েন্টসহ বিস্তৃত উপকূল জুড়ে ভেসে আসে মৃত জেলিফিশ। সাগরে জেলেদের জালে আটকা পড়ে জেলিফিশ মারা পড়ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জেলিফিশ খাওয়ার তালিকায় থাকলেও বাংলাদেশে এখনও বাজার সৃষ্টি হয়নি।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট (বোরি) জেলিফিশ সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও বাজার সৃষ্টি নিয়ে ৬ মাস ধরে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌমিত্র চৌধুরী। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগরে ২২ প্রজাতির জেলিফিশ শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে অধিকাংশ খাওয়ার উপযোগী। এর মধ্যে জেলিফিশের উচ্চ প্রজননের বিষয়ে গবেষণা শুরু হয়েছে।
সাগরে জেলিফিশ বেড়ে যাওয়ার কয়েকটি কারণের মধ্যে সামুদ্রিক কাছিমের বিচরণ কমে যাওয়া অন্যতম কারণ বলে মনে করেন বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের চেয়ারম্যান ও সমুদ্রবিজ্ঞানী সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জেলিফিশ কাছিমের প্রধান খাদ্য। কাছিম কমে গেলে জেলিফিশের আধিক্য স্বাভাবিক বেড়ে যায়। সাম্প্রতিক সাগর-মহাসাগরে ‘জেলিফিশ ব্লুম’ বা উচ্চ প্রজনন জেলেদের দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে জেলেদের জালে মাছের পরিবর্তে হাজার হাজার জেলিফিশ আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। বাজারমূল্য না থাকায় জেলেরা এসব মৃত জেলিফিশ সাগরে ফেলে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধি, পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়া, উপকূলীয় উন্নয়ন এবং অতিরিক্ত মাছ ধরার কারণেও জেলিফিশ ব্লুমের জন্য দায়ী করা হয়। জেলিফিশকে ‘ফিশ’ বলা হলেও মূলত এটি মাছ নয়। এটি এক ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণী। একটি জেলিফিশ এক কেজি থেকে ১৪-১৫ কেজি ওজন পর্যন্ত হয়ে থাকে। বিশ্বে আড়াই থেকে তিন হাজার প্রজাতির জেলিফিশ রয়েছে। দুর্বল প্রকৃতির এই প্রাণী সামান্য আঘাতে কিংবা জালে আটকা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায়।
এই সমুদ্রবিজ্ঞানী বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে ধরা পড়া জেলিফিশ বিষাক্ত না হলেও এগুলো রপ্তানি করার মতো অবকাঠামো দেশে গড়ে ওঠেনি। ফলে বাজারমূল্য না থাকায় জেলেরা মৃত জেলিফিশ সাগরে ফেলে দেয়। এতে সাগরের পরিবেশ এবং জোয়ারে ভেসে এসে উপকূলের পরিবেশ নষ্ট করে।’
সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর আরও বলেন, ‘বিশ্বে জেলিফিশের ৩৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাজারমূল্য রয়েছে। চীন, হংকং ও কোরিয়াসহ বিভিন্ন উন্নত দেশ এর প্রধান বাজার। এতে অবহেলিত সামুদ্রিক এই পণ্যের স্থানীয় বাজার সৃষ্টিসহ রপ্তানি করে দেশ সুনীল অর্থনীতিতে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে।’
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বাবুরহাট বাজারে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার এক মাস যেতে না যেতেই উঠে যাচ্ছে সড়কের আরসিসি ঢালাই। এ ছাড়া সড়কটির সম্প্রসারণ জয়েন্টগুলোতে আঁকাবাঁকা ফাটল দেখা দিয়েছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে সংশ্লিষ্টরা তাড়াহুড়া করে বিটুমিন দিয়ে ফাটল বন্ধের চেষ্টা চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।
৬ ঘণ্টা আগেতিন পার্বত্য জেলার মধ্যে আগে থেকেই চিকিৎসাসেবায় পিছিয়ে খাগড়াছড়ি। তার ওপর বছরের পর বছর চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট থাকায় খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।
৬ ঘণ্টা আগেনেত্রকোনার দুর্গাপুরে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ফয়সাল আহমেদ ওরফে দুর্জয় (২৪) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। আটক ফয়সাল আহমেদ ওরফে দুর্জয় দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান...
৬ ঘণ্টা আগেরাজধানীর খিলগাঁওয়ে একটি নির্মাণাধীন ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তবে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই আগুন নিভে গেছে। এতে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
৮ ঘণ্টা আগে