Ajker Patrika

ঈদের ছুটিতে প্রাণ ফিরেছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২৩, ১১: ১৫
ঈদের ছুটিতে প্রাণ ফিরেছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে

পুরো রমজান মাস পর্যটন নগরী কক্সবাজার অনেকটা পর্যটক শূন্য ছিল। পর্যটকের সেই খরা কেটেছে ঈদের দিন থেকে। আজ রোববার ঈদের দ্বিতীয় দিনে ভরপুর পর্যটকে প্রাণ ফিরে পেয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।

সারা দিন তপ্ত রোদ। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। সৈকতের বালিয়াড়িতে পা ফেলার জো নেই। তবে দখিন হাওয়া ও সমুদ্রের নীলজলরাশি গরমের অস্বস্তি ভুলিয়ে দেয় পর্যটকদের।

বরাবরই দেশের মানুষের বেড়ানোর পছন্দের জায়গা বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। বিশেষ দিন ও টানা ছুটিতে এখানকার পাহাড়-সমুদ্র, নদী ও ঝরনা দেখতে ভিড় করেন পর্যটকেরা। এ বছর রমজান মাসেই পড়েছে মহান স্বাধীনতা দিবস ও পয়লা বৈশাখ। যে কারণে এই দুই বিশেষ দিনেও পর্যটকের দেখা মেলেনি। তবে ঈদের দিন শনিবার থেকে পর্যটকেরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন।

ঈদের দ্বিতীয় দিনে ভরপুর পর্যটকে প্রাণ ফিরে পেয়েছে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতএর আগে ঈদকে সামনে রেখে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টগুলো নান্দনিক সাজে প্রস্তুত করা হয়েছে। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, ঈদের দিন থেকে হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁগুলো খুলেছে। আজ থেকে অধিকাংশ দোকানপাটও খুলেছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে সমুদ্র সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণি পয়েন্ট পর্যটক নামতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকও বাড়তে থাকে। সকাল থেকে পাঁচ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতে অন্তত ৫০ হাজার পর্যটক নেমেছেন।

রোববার বিকেলে সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন বয়সের মানুষ সাগরের নোনাজলে গোসলে নেমেছেন। কেউ সৈকতে ঘোড়ায় চড়ে সমুদ্র দর্শন করছেন, কেউ আবার ওয়াটার বাইক ও বিচ বাইকে সৈকত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। আবার কেউ কিটকটে (চেয়ার-ছাতা) গা এলিয়ে দিগন্ত ছোঁয়া নীলজলরাশিতে মজে আছেন। কেউ কেউ বালুচরে দাঁড়িয়ে প্রিয়জনদের এসব আনন্দঘন মুহূর্ত ক্যামেরা বন্দী রাখছেন।

ঈদের ছুটিতে সমুদ্রসৈকতে মেতে উঠেছে শিশু-কিশোরেরাশহরের বাইরে পর্যটকেরা কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক ও টেকনাফ সৈকতে ছুটে বেড়াচ্ছে। এই সড়কে সমুদ্র সৈকত ছাড়াও আছে পাহাড়-ঝরনা, প্রাকৃতিক গুহা ও নানা দর্শনীয় স্থান। এ ছাড়া সাগরদ্বীপ মহেশখালী ও সোনাদিয়া, রামু বৌদ্ধ বিহার, চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক ও নিভৃতে নিসর্গে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে।

কক্সবাজারে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের প্রবল আগ্রহ থাকে। কিন্তু সেন্ট মার্টিন-টেকনাফ নৌ পথে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে যেতে পারছেন না।

জেলা প্রশাসনের ইনানী সৈকতে দায়িত্বরত সৈকত কর্মী বেলাল হোসেন বলেন, ‘স্থানীয়দের পাশাপাশি রোববার সকাল থেকে পর্যটকেরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। 

পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছেপর্যটন উদ্যোক্তা তৌহিদুল ইসলাম তোহা বলেন, ‘পর্যটকদের আকর্ষণ করতে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে কক্সবাজারকে। হোটেল-মোটেল ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে।’

ফেডারেশন অব টুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস, রিসোর্ট ও কটেজের ৭৫ শতাংশ কক্ষ অগ্রিম বুকিং হয়েছে। কক্ষভাড়ায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হচ্ছে। কক্সবাজার শহরের হোটেলগুলোতে ১ লাখ ৬০ হাজার মানুষ থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।’

টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় টুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। পর্যটকদের চাপ সামলাতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত