Ajker Patrika

উদ্যানে আবার বাণিজ্যিক স্থাপনা

  • গণশুনানি, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ২৫ বছরের চুক্তি।
  • একতলা ভবনকে চারতলা করার সুযোগ পেয়েছে চুক্তিকারী প্রতিষ্ঠান।
  • চুয়েটের গবেষকেরা বলছেন, এই উদ্যান এখন কংক্রিটের জঞ্জাল।
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর এলাকার উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র বিপ্লব উদ্যান। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর এলাকার উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র বিপ্লব উদ্যান। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘বিপ্লব উদ্যানে কোনো নতুন স্থাপনা হবে না। এখানে সবুজের সমারোহ হবে। এখানে আবারও পাখি ডাকবে। মানুষ হাঁটবে ও অক্সিজেন নেবে। এখানে একটি গ্রিন পার্ক করব’। কথাগুলো চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের। কথাগুলো খুব বেশি দিনের নয়। গত ৭ নভেম্বর বিপ্লব উদ্যানে দাঁড়িয়ে এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। মাত্র ৭ মাসের ব্যবধানে এই উদ্যানের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে নতুন করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে সিটি করপোরেশন। এতে একতলার স্থাপনাগুলো চারতলা পর্যন্ত করতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।

৩ জুন সিটি করপোরেশনের সঙ্গে নূর হাফিজ প্রপার্টিজ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির মেয়াদ ২৫ বছর। চুক্তিতে আরও বলা হয়েছে, উদ্যানে বর্তমানে থাকা ২১টি দোকান ও ২টি শৌচাগার নতুন প্রতিষ্ঠানটির হাতে তুলে দেওয়া হবে। দোকানমালিকদের নতুন করে চুক্তি করতে হবে। প্রতিষ্ঠানটি উদ্যানে বিদ্যমান একতলার স্থাপনাগুলো বর্ধিত করে চারতলা পর্যন্ত করতে পারবে। উদ্যান তদারকির জন্য দেড় হাজার বর্গফুটের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর নির্মাণ করা হবে। উদ্যানের পূর্ব পাশে ডিজিটাল স্ক্রিন, বিলবোর্ড, মেগা সাইন থাকবে। প্রকল্প এলাকায় দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক প্রচার ও সহায়তা-সংক্রান্ত ডিজিটাল স্ক্রিন, এটিএম বুথ ও কিয়স্ক স্থাপন করতে পারবে।

এ নিয়ে গত সাত বছরে বিপ্লব উদ্যানের সৌন্দর্যবর্ধন, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে তিনটি চুক্তি করল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। ২০১৮ সালে তৎকালীন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন এবং ২০২৩ সালে সাবেক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দুইটি চুক্তি করেছিলেন। তবে আদালত উদ্যানে অবকাঠামো নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। এরপর চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি চুক্তি বাতিল করে সিটি করপোরেশন। তবে নতুন মেয়র আবারও সেই পুরোনো পথেই হাঁটলেন। স্মৃতিবিজড়িত বিপ্লব উদ্যানে বহুতল বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ার পর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।

সরকারি নথি বলছে, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বিপ্লব উদ্যান থেকে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা দিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রাম শহরের গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম ২ নম্বর গেট এলাকায় এক একর জায়গায় বিপ্লব উদ্যান গড়ে তোলা হয়। সিটি করপোরেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, গত বছরের ৩ অক্টোবর সিটি করপোরেশন আয়োজিত এক গণশুনানিতে বিপ্লব উদ্যানে নতুন করে কোনো স্থাপনা বা অবকাঠামো না করার বিষয়ে মত দিয়েছিলেন বক্তারা। নতুন করে চুক্তি করার ক্ষেত্রে সেই মতামত উপেক্ষা করা হলো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ২৫ বছরের চুক্তিতে নতুন করে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণে বারণ আছে। আগের যে জায়গায় একতলা দোকান রয়েছে সেখানে চারতলা হবে। তবে এ জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অনুমতি নিতে হবে।

একতলা ভবনকে চারতলা পর্যন্ত বর্ধিত করা এবং নতুন স্থাপনা নির্মাণের মধ্যে কোনো পার্থক্য রয়েছে কি না, জানতে চাইলে শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি মাথায় রেখেই আসলে মেয়র মহোদয় নূর হাফিজ প্রপার্টিজকে ২৫ বছরের চুক্তিতে উদ্যানটি দিয়েছেন। মেয়র বর্তমানে কানাডায় রয়েছেন। উনি এলে বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনার সুযোগ রয়েছে।’

সংশ্লিষ্ট পরিবেশবাদীরা জানিয়েছেন, উদ্যানে বহুতল বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা হলে এখানে অধিক সংখ্যক মানুষজনের আসা-যাওয়া হবে। অনেক বর্জ্যের সৃষ্টি হবে। উদ্যানের সার্বিক পরিবেশ বিনষ্ট হবে।

বিপ্লব উদ্যানকে গ্রিন পার্ক করার মেয়রের ঘোষণার ৭ মাসের ব্যবধানে এ ধরনের চুক্তিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) সমন্বয়ক মুনিরা পারভিন রুবা। তিনি বলেন, ‘বিপ্লব উদ্যানে কোনো ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ ও সম্প্রসারণে উচ্চ আদালতের বারণ আছে। এর ব্যত্যয় করা হলে আদালত থেকে আন্দোলনের মাঠ সব খানে আমরা সরব থাকব।’

এদিকে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) একদল গবেষকের জরিপের তথ্য অনুযায়ী, বিপ্লব উদ্যান কার্যত কংক্রিটের জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। এখানে কংক্রিট অবকাঠামোর পরিমাণ ৫৫ শতাংশ। অথচ ইমারত নির্মাণ বিধিমালা অনুযায়ী, উদ্যানে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশের বেশি কংক্রিট অবকাঠামো থাকতে পারবে না। আর আন্তর্জাতিকভাবে ২ শতাংশও অনুমোদন করে না। এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, নগরের কোথাও ভালোভাবে নিশ্বাস নেওয়ার উন্মুক্ত পরিসর, খালি জায়গা ও মাঠ অবশিষ্ট নেই। বিপ্লব উদ্যান নিয়ে মেয়র শাহাদাত হোসেনও আগের মেয়রদের অনুসরণ করছেন। যার পুরোটাই বাণিজ্য ছাড়া আর কোনো উদ্দেশ্য আছে বলে মনে হয় না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পর্যটকের বাড়তি চাপে ঠাঁই নেই হোটেল-মোটেলে

  • তিন দিনের ছুটিতে হোটেল-মোটেলের প্রায় সব কক্ষ বুকড
  • ২০২৫-কে বিদায় ও ২০২৬-কে স্বাগত জানাতে পর্যটকের চাপ আরও বাড়বে
  • বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কক্সবাজারে যানজট
কক্সবাজার প্রতিনিধি
টানা তিন দিনের ছুটির কারণে কক্সবাজারে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল দুপুরে সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা
টানা তিন দিনের ছুটির কারণে কক্সবাজারে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল দুপুরে সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন অফিস-আদালতে ছুটি চলছে। বার্ষিক পরীক্ষা শেষে কয়েক দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ। এই লম্বা ছুটি কিংবা বিশেষ দিনে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে বের হয়েছেন। বরাবরের মতোই অবকাশযাপনে ভ্রমণপিপাসুরা এবারও দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন।

পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, শনিবার পর্যন্ত অন্তত ৫ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে ভ্রমণ করবেন। তবে শনিবারেই চাপ কমবে না। পর্যটকের এই ঢল আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকবে। এর মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পর্যটকেরা ভিড় করবেন।

হোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসের মালিকেরা বলছেন, বুধবার বিকেল থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। ইতিমধ্যে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলোয় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগামী শনিবার পর্যন্ত শহরের তারকা মানের হোটেলগুলোয় শতভাগ কক্ষ বুকিং রয়েছে। মাঝারি মানের হোটেল ও রিসোর্টগুলোয় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।

সাগরপারের তারকা মানের হোটেল কক্স টুডেতে কক্ষ আছে ২৪৫টি। তাদের প্রায় সব কক্ষ শনিবার পর্যন্ত বুকিং আছে। হোটেলটির মহাব্যবস্থাপক (রিজার্ভেশন) আবু তালেব শাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিন দিনের ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক ভ্রমণে এসেছেন।

কক্সবাজার শহর, মেরিন ড্রাইভ, সেন্ট মার্টিন ও আশপাশের এলাকার ৬০০ হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউসে প্রায় দুই লাখ পর্যটকের রাতযাপনের সুযোগ আছে। হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বছরের শেষ সময়ে আশানুরূপ পর্যটকের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বিপুল পর্যটক সমাগমে যেন কেউ থাকা-খাওয়ায় বাড়তি অর্থ আদায় না করে তার জন্য পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সমুদ্রসৈকতের কলাতলী, লাবণী ও সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকের আনাগোনায় তিন কিলোমিটার সৈকত মুখর। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। শান্ত সৈকতে কেউ গোসলে নেমেছেন, কেউ জেটস্কি করে দূর সাগরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ আবার চেয়ার-ছাতায় বসে প্রিয়জনদের সঙ্গে সমুদ্র দর্শনে সময় কাটাচ্ছেন। গোসলে নামা বিপুল পর্যটকদের নানাভাবে সতর্ক করছেন লাইফগার্ড ও বিচকর্মীরা। এ দিন সকাল থেকেই পর্যটকের বাড়তি চাপে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে কলাতলী সড়ক, মেরিন ড্রাইভ ও শহরের প্রধান সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

পর্যটকেরা শহরের এই তিন পয়েন্টের পাশাপাশি মেরিন ড্রাইভ ধরে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক, টেকনাফ সৈকতে ভিড় করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন।

কুমিল্লার হোমনা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন সরকারি কর্মকর্তা আবিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এর মধ্যে বড়দিনের সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি পড়েছে। ফলে বাচ্চাদের নিয়ে তিন দিনের জন্য ঘুরতে বেরিয়ে পড়লাম।’ তাঁর মতো পরিবার নিয়ে অনেকেই বেড়ানোর জন্য বের হয়েছেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছুটিতে পর্যটকদের চাপ বাড়বে—বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছেন। কোথাও পর্যটক হয়রানির খবর পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় আটক ৭

সিলেট প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেলে সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইল ১ নম্বর রোডের মারুফ টি স্টল নামক দোকানে অভিযান পরিচালনা করে তির শিলং-জাতীয় জুয়া খেলা অবস্থায় তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইলের সজীব মিয়ার কলোনির রমিজ আলীর ছেলে তাহের মিয়া (৩০), উসমান মিয়ার ছেলে শামীম (২০), ইমন মিয়ার কলোনির মো. আব্দুল করিম তালুকদারের ছেলে মো. স্বপন মিয়া (৫৫), রঙ্গ মিয়ার ছেলে জসিম (৪৫), জামাল উদ্দিনের ছেলে আল আমিন (২৭), আব্দুর রশিদের ছেলে মো. বাদল (৩৮) এবং আবুল কালামের ছেলে সুজাত মিয়া (৩৫)।

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় মা হত্যায় ছেলে গ্রেপ্তার

খুলনা প্রতিনিধি
মো. রিয়াদ খান।  ছবি: সংগৃহীত
মো. রিয়াদ খান। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় শিউলী বেগম হত্যা মামলায় ছেলে মো. রিয়াদ খানকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাঁকে খুলনা র‌্যাব-৬ এবং ৭-এর যৌথ অভিযানে ফেনী জেলার সদর থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার রিয়াদ শিউলী বেগমের একমাত্র ছেলে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ২ লাখ ৫ হাজার ৮০ টাকা, দুটি আইফোন, একটি স্মার্টফোন ও একটি এয়ারপড জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের পাঠানো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, নিহত শিউলি বেগম সৌদি আরবপ্রবাসী ছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর দুই মাসের ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন। পরে নগরীর ট্যাংক রোডের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের বাড়ির নিচতলায় ছেলে রিয়াদ খান এবং দ্বিতীয় স্বামী সাগরকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন।

দেশে আসার ১০-১২ দিন পরে উত্তরা ব্যাংক খুলনা শাখা থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আলমারিতে রেখে দেন।

৯ ডিসেম্বর রাতে শিউলী বেগমের বড় মেয়ে রুবিনা আক্তার এবং তাঁর স্বামী রাজিব রাতের খাবার খেয়ে বাড়িতে চলে যান। ১০ ডিসেম্বর সকাল থেকে শিউলী বেগমকে ফোনে না পেয়ে রুবিনা আক্তারকে খোঁজ নিতে বলেন তাঁর স্বামী।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে তাঁর সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতে স্থানীয়দের সহায়তায় তালা ভেঙে ঘর থেকে শিউলী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে তাঁর ঘর থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উধাও হয়ে যায়। শিউলী বেগম হত্যার পর থেকে একমাত্র ছেলে রিয়াদ খানেরও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই রায়হান গাজী বাদী হয়ে শিউলী বেগমের ছেলে রিয়াদ খানকে আসামি করে মামলা করেন। উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাব খুলনা-৬ ও ৭-এর একটি দল তাঁকে ফেনী সদর থেকে গ্রেপ্তার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত