Ajker Patrika

‘যে বাতাসে লুঙ্গি ওড়ে না, সেই বাতাসের ভয়েই বিদ্যুৎ পালায়’

ফরিদগঞ্জ (চাঁদপুর) প্রতিনিধি 
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের সাবস্টেশন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের সাবস্টেশন। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় টানা তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে তেতে উঠেছে পথঘাট। তাপমাত্রার পারদ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁই ছুঁই। অসহনীয় এই গরমের মধ্যে বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় দেড় লাখ গ্রাহকের পরিবার। গড়ে দিনে-রাতে পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না।

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে (লোডশেডিং) বিঘ্ন হচ্ছে হাটবাজার ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। দিনে তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। যদিও বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, তাদের কোনো লোডশেডিং নেই, ফ্রিকোয়েন্সি সমস্যা ও ওভার লোডের কারণে এই অবস্থা।

পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক গাজীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘দিনে-রাতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা ঠিকমতো পাঁচ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। একটু বাতাস দেখলেই টানা কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকে। যে বাতাসে লুঙ্গি ওড়ে না, সেই বাতাসের ভয়েই বিদ্যুৎ পালায়।’

শাহজাহান গাজী নামে পশ্চিম পোয়া এলাকার আরেক গ্রাহক বলেন, ‘সারা দিনে কতবার বিদ্যুৎ যায়, তার হিসাব রাখা কষ্টকর। লোডশেডিংয়ের কারণে বাচ্চাদের পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।’

লোডশেডিংয়ের কারণে লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে জানিয়ে কলেজশিক্ষার্থী আব্দুর রহমান ও স্কুলশিক্ষার্থী তাওহীদুল ইসলাম বলে, ‘গরমের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে কোথাও পড়তে বসতে পারি না। বিদ্যুতের সমস্যা দ্রুত সমাধান করা জরুরি।’

মোহছেনা আক্তারসহ কয়েকজন গৃহবধূ বলেন, আগে বিদ্যুতের লোডশেডিং হলেও তাঁদের এমন কষ্ট হতো না। রাতের বেলা বিদ্যুৎ চলে গেলে বাচ্চারা গরমে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। বাচ্চাদের সারা শরীর ঘামে ভিজে যায়, এভাবেই চলছে।

চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, ছয় লক্ষাধিক মানুষের বসবাসের এই উপজেলায়। ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস ও একই উপজেলার আওতাধীন কামতা জোনাল অফিস মিলিয়ে ১ লাখ ৪৫ হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন। ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের ২১ মেগাওয়াটের চাহিদার তাঁরা সবটুকুই পাচ্ছেন। অন্যদিকে কামতা জোনাল অফিস চাহিদা ১৩ মেগাওয়াটের বিপরীতে ওভার লোডের চাহিদার ৭-৮ মেগাওয়াট পাচ্ছে।

পল্লী বিদ্যুতের ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্রাহকদের অভিযোগ আংশিক সত্য। তবে আমাদের বিদ্যুৎ ঘাটতি নেই। ফ্রিকোয়েন্সির কারণে বিদ্যুতের বারবার শাটডাউন হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত