Ajker Patrika

ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ, জেলেদের মুখে হাসির ঝিলিক

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০২২, ১১: ৫৯
ঝাঁকে ঝাঁকে রূপালি ইলিশ, জেলেদের মুখে হাসির ঝিলিক

নিষেধাজ্ঞার ২২ দিন পর লক্ষ্মীপুরের মেঘনা নদীতে পুরোদমে শুরু হয়েছে মাছ ধরা। নদীতে জাল ফেলা ও মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। মাছঘাটেও ব্যস্ততা বেড়েছে আড়তদারদের। জেলায় প্রায় ৩০টি ছোট-বড় মাছঘাট রয়েছে। প্রতিটি ঘাটই এখন সরগরম। এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রথম দিনেই জালে আশানুরূপ ইলিশ ধরা পড়ছে।

মৎস্য কর্মকর্তা জানান, এবার সিত্রাংয়ের কারণে নদীতে পানি বেড়েছে। এতে সাগর থেকে মেঘনার মোহনায় ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। ফলে নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে ইলিশ। এদিকে প্রচুর পরিমাণ মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে। মাছের আকার বেশ বড়। দুই থেকে তিন কেজি ওজনের মাছও পাওয়া যাচ্ছে।

এই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রশাসন, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও মৎস্য বিভাগের যৌথ অভিযান এবার সফল হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবার ইলিশ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ হাজার মেট্রিকটন, যা গত বছরের চেয়ে ৩ হাজার মেট্রিকটন বেশি হবে বলে আশা মৎস্য বিভাগের।

জেলেরা জানান, ২২ দিন পর মধ্যরাত থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় নদীতে মাছ শিকারে নেমে তাঁরা উচ্ছ্বসিত। জালে ধরা পড়ছে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ। মাছের আকারও বড়। মাছের পেটে ডিম রয়েছে। মা ইলিশ পুরোপুরি ডিম ছাড়তে পারেনি। দামও ক্রেতার নাগালের ভেতরে।

তাঁরা বলেন, প্রথম দিনের মতো সব সময় একই পরিমাণ ইলিশ পাওয়া গেলে কিস্তির টাকা শোধ করতে পারবেন। সংসার চালাতেও কোনো কষ্ট হবে না।

জেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনাল পর্যন্ত মেঘনা নদীর ১০০ কিলোমিটার ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষিত এলাকা। এই এলাকায় প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর ২২ দিন ইলিশসহ সব প্রকার মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এ সময় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুত বন্ধ ছিল।

মৎস্য কার্যালয় আরও জানায়, এই জেলায় ৫২ হাজার জেলে রয়েছেন। তাঁরা মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। নিষেধাজ্ঞার সময় জেলেদের মধ্যে ১ হাজার মেট্রিকটন ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২২ দিনে মেঘনায় ৩০০-এর বেশি অভিযান পরিচালনা করে প্রায় ২৫ লাখ মিটার কারেন্ট জাল ও ১ হাজার কেজি মা ইলিশ জব্দ এবং ২১ জেলেকে কারাগারে পাঠানো হয়।

মজুচৌধুরীরহাট ঘাটের জেলে কালাম মারফত উল্যাহ বলেন, ‘দীর্ঘ ২২ দিন অলস সময় কাটিয়েছি। এখন মাছ শিকারে ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে। জালে ধরা পড়ছে রূপালি ইলিশ। মাছ ধরা পড়ায় খুশি লাগছে। আজকে যে মাছ পাওয়া গেছে, তা গত কয়েক বছরের তুলনায় আকারে অনেক বড়।

মতিরহাটের আড়তদার লিটন বলেন, মাছ পাওয়া যাচ্ছে। দামও তুলনামূলক ক্রেতা ও বিক্রেতার নাগালের ভেতরে। এ হাটে সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রায় ২০ লাখ টাকার মাছ আমদানি ও রপ্তানি হচ্ছে। প্রতিদিন কোটি টাকার মাছ বিক্রির আশা করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত