Ajker Patrika

ইউজিসিকে পাল্টা ‘চ্যালেঞ্জ’ দিল চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৩: ৩৮
ইউজিসিকে পাল্টা ‘চ্যালেঞ্জ’ দিল চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (আইআইইউসি) থেকে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও তাঁর স্ত্রীর (ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য) মাসে ১৪ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়টি অবৈধ উল্লেখ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ বিষয়ে ইউজিসির ব্যাখ্যা চাওয়ার এক দিনের মাথায় পাল্টা ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়ে দিয়েছে আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ। এটিকে উল্টো বিএনপি-জামায়াতের ষড়যন্ত্র আখ্যা দিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এক হাত নিল আইআইইউসি।

গত শনিবার রাতে আইআইইউসি গণমাধ্যমে একটি ব্যাখ্যা পাঠায়। ওই ব্যাখ্যায় ইউজিসি ও দুদকের প্রতি ক্ষোভ ঝাড়ে আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ।

আইআইইউসির ব্যাখ্যা কয়েকটি গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশ করা হয়। তবে ওই ব্যাখ্যার চিঠিতে আইআইইউসির রেজিস্ট্রারের কোনো স্বাক্ষর নেই। এই প্রথম নতুনভাবে আইআইইউসির ‘পাবলিক রিলেশন অফিস’ নামের একটি বিভাগ থেকে ব্যাখ্যা এল। চিঠিতে পাবলিক রিলেশন অফিসের একটি স্বাক্ষর থাকলেও এটি কোন কর্মকর্তা তাঁর নাম নেই।

এ বিষয়ে মতামত জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল আজিম আরিফ ও রেজিস্ট্রার আকতারুজ্জামান কায়সারের ফোন নম্বরে দুদিন ধরে কল দিলেও সাড়া মেলেনি। খুদে বার্তা পাঠিয়েও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

গত ৮ ডিসেম্বর আইআইইউসি থেকে এমপি নদভী ও তাঁর স্ত্রী প্রতি মাসে সম্মানী বাবদ ৭ লাখ করে মোট ১৪ লাখ ও গাড়ির তেল খরচ বাবদ ২ লাখ টাকা নেওয়ার বিষয়ে আপত্তি জানায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। ইউজিসি মূলত নদভী ও তাঁর স্ত্রী রিজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চেয়েছে চিঠিতে। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) আসে অভিযোগটি। এটি তদন্ত করতে ইউজিসির কাছে পাঠায় দুদক। এরপর ইউজিসি আইআইইউসির কাছে ব্যাখ্যা চায়।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ধারা ৪৪ (৭) মোতাবেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ তহবিলের অর্থ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যয় করা যাবে না বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। আইন অনুযায়ী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের আর্থিক সুবিধা গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। এ বিষয়ে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায় ইউজিসি।

নদভী ও তার স্ত্রী। ছবি সংগৃহীতএরপর গত ৯ ডিসেম্বর আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেয়। আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর বিরুদ্ধে দুদকে পাঠানো একটি বেনামি, উড়োচিঠির ভিত্তিতে ব্যাখ্যা চাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় চিঠিতে। চিঠিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ কিছুতেই লঙ্ঘন করেনি বলে দাবি করা হয়।

অথচ দুদকের মুখপাত্র আখতার উল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বেনামি বা উড়োচিঠির ওপর ভিত্তি করে দুদক অনুসন্ধান চালাতে পারে। অনেক সময় অভিযোগদাতা নিরাপত্তার স্বার্থে নিজের নাম গোপন করে। সে ক্ষেত্রে অভিযোগটি গুরুত্বপূর্ণ মনে হলে আমরা অনুসন্ধান চালাই।’

ইউজিসির বিষয়ে আইআইইউসির ক্ষোভের কারণ জানতে চাইলে জবাবে ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আইআইইউসি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্য টাকা নেওয়ার বিষয়ে দুদক অনুসন্ধান করতে একটি চিঠি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দেয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেটি আমাদের কাছে পাঠায়। তারপর আমরা এ বিষয়ে আইআইইউসির কাছে ব্যাখ্যা চাই। আমরা জামায়াত-বিএনপি হতে যাব কেন?’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত