Ajker Patrika

কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কাল, ফলকে থাকছে না প্রধান উপদেষ্টার নাম

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের বহুল প্রতীক্ষিত নতুন কালুরঘাট সেতুর (রেল কাম সড়ক) ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হতে যাচ্ছে আগামীকাল বুধবার। এদিন দুপুরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস থেকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। তবে অতীতের রেওয়াজমতো এবার ফলকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকারীর নাম থাকছে না।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল সকালে প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনে যাবেন। সেখানে তিনি নৌপরিবহন, বন্দর ও সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মকর্তা এবং বন্দর ব্যবহারকারী সংগঠনগুলোর সঙ্গে এক সভায় যোগ দেবেন। এরপর ব্যস্ত সফরসূচির কারণে সার্কিট হাউসে এসে সেখান থেকে সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে কালুরঘাটে রেল ও সড়ক সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন।

সূত্রমতে, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে সেতু বাস্তবায়নকারী রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে কারও নাম না দিয়ে ফলক তৈরির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বিকেলে তিনি পৈতৃক বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে যাবেন। সেখানে তিনি এলাকাবাসী ও আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কুশল বিনিময় করবেন বলে কথা রয়েছে।

কালুরঘাট সেতুর বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আবদুল কালাম চৌধুরী বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। ইতিমধ্যে সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। সম্ভাব্যতা যাচাই সম্পন্ন হয়েছে। পরামর্শক নিয়োগের টেন্ডারও আহ্বান করা হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমে (আগস্ট-সেপ্টেম্বর) ভরা জোয়ারের সময় নদী শাসনসংক্রান্ত সমীক্ষার কাজ হবে। সব মিলিয়ে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মাণকাজ দৃশ্যমান হবে বলে আশা করছি।’

এদিকে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমবারের মতো জন্মস্থান চট্টগ্রামে আসছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর সফর উপলক্ষে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সফর ঘিরে বিশেষত কালুরঘাট সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর নিয়ে চট্টগ্রামে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর ওপর যে সেতুটি আছে, এর বয়স প্রায় শত বছর। এ সেতুকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে একটি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য দক্ষিণ চট্টগ্রামের কোটি মানুষের গত সাড়ে তিন দশকের স্বপ্ন। রাজনৈতিক সরকারগুলোর আমলে নানা জটিলতার কারণে দীর্ঘসূত্রতার পর অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৪ সালের ৭ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় নতুন সেতু নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করে। এতে ব্যয় ধরা হয় ১১ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, যা বাস্তবায়ন করবে রেল কর্তৃপক্ষ।

প্রস্তাবিত নকশা অনুযায়ী, পুরোনো সেতুর ৭০ মিটার উজানে নতুন সেতু নির্মিত হবে। সেতুর দুই পাশে দুই লেন করে চার লেন হবে। এক পাশে চলবে ট্রেন, অন্য পাশে বাস-ট্রাকসহ সাধারণ যানবাহন। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য হবে ৭০০ মিটার। পানি থেকে সেতুর উচ্চতা থাকবে ১২ দশমিক ২ মিটার। ভায়াডাক্টসহ সেতুর দৈর্ঘ্য হবে প্রায় ৬ কিলোমিটার।

সমীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন সেতু দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পথে প্রতিদিন ২০ জোড়া ট্রেন এবং প্রায় ১৫ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। এর মাধ্যমে আনুমানিক ১ কোটি মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত