Ajker Patrika

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেন বন্ধের প্রতিবাদ সচেতন নাগরিক সমাজের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেন বন্ধের প্রতিবাদ সচেতন নাগরিক সমাজের

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে চলাচল করা স্পেশাল ট্রেন ‘কক্সবাজার’ ১২ দিন চালানোর পর আবারও বন্ধ করতে চাচ্ছে রেলওয়ে বিভাগ। এটি বন্ধ করে মান্ধাতা আমলের কর্ণফুলী এক্সপ্রেস নামের লোকাল ট্রেনটি চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ‘সচেতন নাগরিক সমাজ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার’। তারা আজ এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেনটি চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

স্পেশাল ট্রেন বন্ধের প্রতিবাদে আজ রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের কক্সবাজারের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী।

লিখিত বক্তব্যে নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, “২০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আমাদের জন্য বিশাল এক পাওনা। ‘পর্যটন এক্সপ্রেস’ ও ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ নামক দুটি ট্রেন ঢাকা থেকে আসছে। ফলে মানুষ তার গন্তব্যে নিরাপদে ও নির্ভয়ে যাতায়াত করছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের সুবিধা হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় যে, একটি ট্রেন বহু অনুরোধে বিশেষ ট্রেন হিসেবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার লাইনে চলাচল করছিল।”

নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, ‘রেলওয়ে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপূর্ণ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে জানতে পারি, এই বিশেষ ট্রেনটি ঈদে বাড়তি যাত্রী বহনে সুবিধা দিয়েছে। গত ২৪ মে থেকে এই ট্রেনটি খুবই খোঁড়া যুক্তিতে বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। ফলে টিকিট বিক্রি এরই মধ্যে বন্ধ। দোহাজারী-কক্সবাজার ট্রেন চলাচলের ওয়ার্কিং টাইমটেবিল ৫৩ নম্বর অনুসারে এখানে তূর্ণা এক্সপ্রেস, মহানগর গোধূলি এক্সপ্রেস ও মেঘনা এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার যাত্রীসেবা দেওয়ার চুক্তি হয়েছিল।’

আওয়ামী লীগের এই নেত্রী আরও বলেন, ‘জনস্বার্থ অনুসন্ধানে জানতে পারি যে, প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ যাত্রী ট্রেনের টিকিট পেতে ইচ্ছুক হয়েও অনলাইনে তা পেতে ব্যর্থ হচ্ছে। চট্টগ্রামে বসবাসরত কর্মজীবী, সাধারণ নাগরিক, রোগী, বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা রেলওয়ের এই সিদ্ধান্তে নির্বাক। অথচ পাশের দেশগুলোতে রেলওয়ে জনগণের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য যোগাযোগ মাধ্যম ও লাভজনক খাত। যেখানে ৭২ থেকে ১৫০ ঘণ্টা পর্যন্ত হাজার হাজার কিলোমিটার ট্রেন চলাচল হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাজনীন সরওয়ার কাবেরী বলেন, “বাংলাদেশ রেলওয়েকে অর্থনৈতিক ‘লাভহীন’ প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করার জন্য রেলওয়েতে অবস্থানরত একটি ঘাপটি মারা কুচক্রী মহল চক্রান্ত করছে। তারা বিভিন্ন প্রাইভেট পরিবহন সংস্থার সঙ্গে আঁতাত করে এডিবির সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পকে অলাভজনক ও অকার্যকর করার কাজে মেতে আছে।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি চৌধুরী ফরিদ, সাধারণ সম্পাদক দেব দুলাল ভৌমিক, স্থপতি আশিক ইমরান প্রমুখ।

এদিকে অভিযোগ রয়েছে, বাস মালিকদের ‘প্রেসক্রিপশনে’ কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনটি বন্ধ করে দিতে যাচ্ছে রেলওয়ে। অর্থাৎ এই রুটে স্পেশাল ট্রেনটি চালু হওয়ার পর থেকে যাত্রী-খরায় ছিলেন বাস মালিকেরা। এখন বাস মালিকেরা রেলপথ মন্ত্রণালয়কে ম্যানেজ করে ট্রেনটি বন্ধ করে দিতে চায় বলে অভিযোগ বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামসুদ্দিন চৌধুরীর। তিনি বলেন, এখন নতুন করে মান্ধাতা আমলের কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু করার চেষ্টা চলছে।

রেলওয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ঘোষণা অনুযায়ী ট্রেনটি ২৪ জুন পর্যন্ত চলবে। আমরা আরও ২০ দিন সময় বাড়ানোর আবেদন করেছি। না চালানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিলে আমাদের কিছু করার নেই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন কক্সবাজার পর্যন্ত চালানোর বিষয়ে এখনো কোনো চিঠি পাইনি।’

তবে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ করেনি) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কর্ণফুলী এক্সপ্রেস ট্রেন চালানোর বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা নিচ্ছে। এটি খুব বাজে সিদ্ধান্ত হবে। অনেকটা হাইওয়েতে গরুর গাড়ি চালানোর মতো হবে। এই ট্রেনটি কিছুক্ষণ পরপর বন্ধ হয়ে যায়। ট্রেনটি অনেকটা অকেজো। এমনকি ট্রেন চালকেরা এই ট্রেনটি চালাতেও চায় না।’

পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই ঈদুল আজহায় ১০ দিনে স্পেশাল ট্রেনটির আয় ২৯ লাখ ৩৫ হাজার ৮৮০ টাকা। যাত্রী পরিবহন করেছে ১৫ হাজার ৯৯৭ জন। আগের ঈদে মাত্র ২৫ দিনে ৬০ লাখ টাকার বেশি আয় হয়। যাত্রী পরিবহন করে প্রায় ১ লাখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পিটুনিতে নিহত সেই শামীম মোল্লাকে বহিষ্কার করল জাবি প্রশাসন, সমালোচনার ঝড়

১০-১২তম গ্রেডে নিয়োগ: প্রতি পদের বিপরীতে দুজন থাকবেন অপেক্ষমাণ

জনবল-সরঞ্জাম বেশি হলেও সমরশক্তিতে ভারত কি পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে

মধুপুরে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষককে জুতাপেটা

র‍্যাবকে ব্যক্তিস্বার্থে ব্যবহার ঠেকাতে হচ্ছে নতুন আইন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত