Ajker Patrika

রামগড়ে শিক্ষকের ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ মিথ্যা, দাবি পরিবারের

রামগড় (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ মে ২০২২, ১৯: ৫৫
রামগড়ে শিক্ষকের ওপর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ মিথ্যা, দাবি পরিবারের

খাগড়াছড়ির রামগড়ে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগকে মিথ্যা এবং সাজানো নাটক দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবার। তারা দাবি করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং তাঁর সহযোগী রুপম ত্রিপুরা ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করে এ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক নাটক সাজিয়েছেন। 

আজ রোববার রামগড় লেকভিউ রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী আয়েশা বেগম ও পিতা নুরুল হুদা। 

সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা বেগম জানান, থানাচন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী বেগমের সঙ্গে তাঁর স্বামীর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব রয়েছে। কয়েক বছর আগে ইন্দ্রানী দেবী ভৃগুরাম কার্বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকাকালীন বেলায়েত হোসেনের ভাগনে তারেক হোসেনকে হাত বেঁধে বেদম প্রহার করে। তখন বেলায়েত হোসেন বিভিন্ন পর্যায়ে এ নির্যাতনের প্রতিবাদ জানালে ইন্দ্রানী দেবীকে শাস্তিমূলকভাবে জালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করা হয়। এ ঘটনার জন্য ইন্দ্রানী দেবী সব সময় বেলায়েত হোসেনকে দায়ী করে আসেন। 

ঘটনার কিছুদিন পর ইন্দ্রানী দেবী বদলি হয়ে বেলায়েত হোসেনের বর্তমান কর্মস্থল থানাচন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন। বিদ্যালয়ের কাজকর্মে উদাসীনতা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে প্রায় সময় তাঁর স্বামী এবং প্রধান শিক্ষকের মাঝে বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়গুলো তাঁর স্বামী রামগড় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের অনেকজনকে অবহিত করেন। যেকোনো সমস্যায় পড়তে পারেন বলে বিভিন্ন জায়গায় আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা আরও জানান, রুপম ত্রিপুরা নামের স্থানীয় এক বখাটে প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর প্রভাব খাটিয়ে সব সময় বিনা অনুমতিতে ১০-১২ জন নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করত। এবং তাদের মোবাইল ফোন চার্জ দিত। কিছুদিন আগে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে বেলায়েত হোসেন ও রুপম ত্রিপুরার মাঝে তুমুল বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। রুপম ত্রিপুরা তখন বেলায়েত হোসেনকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন। তার কিছুদিন পর রুপম ত্রিপুরাকে বিদ্যালয়ে দপ্তরি পদে নিয়োগ দিতে চাইলে বেলায়েত হোসেন এর প্রতিবাদ জানান। এতে রুপম ত্রিপুরা তাঁর ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন। 

সংবাদ সম্মেলনে বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা দাবি করেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে নিরীহ এক উপজাতি মেয়েকে দিয়ে তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। এর জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং রুপম ত্রিপুরাকে দায়ী করেন তিনি। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও দাবি করেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা ফুলবানু ত্রিপুরা অভিযুক্ত শিক্ষক বেলায়েত হোসেনকে মোবাইল ফোনে জানান, তিনি পরিস্থিতির স্বীকার। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মামলা না করলে রুপম ত্রিপুরা তাঁদের পরিবারকে সমাজচ্যুত করবেন বলে জানান। ভয়ে তিনি মামলা করেছেন। 

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা, স্ত্রী আয়েশা বেগম, ভাই মামুন হোসাইন ও তাঁর দুই কন্যা। 

থানাচন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি নুরুল আমীনেরর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না। শিক্ষার্থীর পরিবার এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি তাঁকে জানায়নি। ঘটনাটি তাঁর কাছে মিথ্যা এবং সাজানো নাটক মনে হয়েছে। 

উল্লেখ্য, ১২ মে থানাচন্দ্রপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে রামগড় থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মামলা করেন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মা ফুলবানু ত্রিপুরা। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত