Ajker Patrika

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

বিক্ষোভে অশান্ত বিশ্ববিদ্যালয়

  • প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ ছাত্রদল ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের।
  • প্রশাসনিক ভবনের নাম বদলে ‘নিয়োগ-বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখলেন আন্দোলনকারীরা।
  • হাটহাজারী উপজেলা জামায়াতের আমির সিরাজুল ইসলামকে পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দল।
  • সাত দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে থাকা শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমের অবস্থার উন্নতি।
চবি প্রতিনিধি 
আপডেট : ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭: ৩৬
স্থানীয় ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ। গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে। শাখা ছাত্রদল ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এ কর্মসূচির আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা
স্থানীয় ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ। গতকাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে। শাখা ছাত্রদল ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট এ কর্মসূচির আয়োজন করে। ছবি: আজকের পত্রিকা

শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকেই উত্তাল রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাস। এ ঘটনায় ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে গতকাল রোববার বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। এদিন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন। ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টরকে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে।

এদিকে গত শনিবার বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সমালোচনা থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নামফলক মুছে ‘নিয়োগ-বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দিয়েছেন কয়েক শিক্ষার্থী। এ ছাড়া ‘আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না।’ বলা সেই জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ দাবি

সম্প্রতি চবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জোবরা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকেই ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগের দাবিতে গতকাল বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভ মিছিল থেকে দাবি করা হয়, বারবার স্থানীয়দের হাতে শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হলেও প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। বরং আহতদের চিকিৎসা না দিয়ে প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, প্রশাসন পদত্যাগ না করলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।

এদিকে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘আমাদের বিভাগের শিক্ষক নুরুল হামিদকে গত শনিবার বামপন্থী শিক্ষার্থীরা অযথা লাঞ্ছিত ও হেনস্তা করেছেন। এর প্রতিবাদেই তাঁরা মানববন্ধন করেছেন। গত ৩১ আগস্ট সংঘর্ষের ঘটনায় স্যারের ভূমিকাকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছিল, কিন্তু তিনি ইতিমধ্যেই নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। তারপরও তাঁকে উদ্দেশ্য করে অপমানজনক আচরণ ও মব করার চেষ্টা করা হয়েছে, যা আমাদের গভীরভাবে দুঃখিত করেছে। আমরা ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

এদিকে বিক্ষোভ করেছেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের অভিযোগ, বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলাকারী ব্যক্তিরা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো কোনো সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারেনি। এই ঘটনায় যারা দোষী, তাদের দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

প্রশাসনিক ভবনের নাম বদল

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নামফলক মুছে ‘নিয়োগ-বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। নামফলক পরিবর্তনের পর ছবি তোলায় দুই ছাত্রীর মা-বাবাকে ডাকার হুমকির অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আক্তারের বিরুদ্ধে।

গত শনিবার বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের নাম লাল রঙে কেটে ‘নিয়োগ-বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দেন অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী। উপাচার্যের হুমকির বিষয়ে এক নারী শিক্ষার্থীর বক্তব্য, ‘আমি শুধু লেখা দেখে ছবি তুলছিলাম। উপাচার্য স্যার আমার আইডি কার্ড নিয়ে বলেন, “তোমাদের পরিবারকে ডাকব।” অথচ আমি কিছুই লিখিনি। তিনি বলেন, “দাঁড়িয়ে দেখা মানেই সমান অপরাধী। তোমার পরিবারকে ডেকে এমনভাবে আপ্যায়ন করব, চা খাওয়াব, যাতে তাঁরা খুশি হয়ে যাবেন।” কিন্তু স্যারের এই কথা আমার কাছে হুমকি মনে হয়েছে।’

এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘আইডি কার্ড শিক্ষার্থীর পরিচয়, সেটি নেওয়ার অধিকার আমার রয়েছে। কোথায় নিয়োগ-বাণিজ্য হয়েছে, যদি প্রমাণ দিতে না পারে, তবে অভিভাবককে ডাকব। এখানে হুমকি দেওয়ার কী আছে?’

ভবনের নাম পরিবর্তনের সময় উপস্থিত ছিলেন শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির। তিনি বলেন, ‘আমরা জেনেছি, প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ-বাণিজ্য হয়েছে। তাই এটি করেছি।’

জামায়াত নেতা সিরাজুলকে অব্যাহতি

‘আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার’ বলে মন্তব্য করা হাটহাজারী উপজেলা জামায়াত আমির সিরাজুল ইসলামকে গতকাল পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াত। উত্তর জেলা জামায়াতের প্রচার সম্পাদক অধ্যাপক ফজলুল করিম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কেন্দ্রের নির্দেশনা ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আমির মো. আলাউদ্দিন সিকদারের সভাপতিত্বে জরুরি জেলা কর্মপরিষদ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিরাজুলকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁর আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্য শুনেছি। এ বিষয়টি তদন্তে একটি কমিটি করা হয়েছে।’

গত বৃহস্পতিবার জোবরা গ্রামবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সিরাজুল বলেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের পৈতৃক সম্পত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মালিক। আমরা জমিদার, জমিদারের ওপর কেউ হস্তক্ষেপ করবে, এটা আমরা মেনে নেব না। এই বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বুকের ওপর। আমরা এই জায়গার মালিক, তাই অন্যায় কিছু মেনে নেব না। আমাদের সম্মান করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় যথাযথ সম্মান না করলে আমরা জনগণ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’

সিরাজুলের বিতর্কিত ওই বক্তব্যের পরে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে তাঁর কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। বক্তব্যের জেরে ক্ষমা চেয়ে শনিবার রাতেই পোস্ট দেন সিরাজুল।

সায়েমের অবস্থার উন্নতি

সংঘর্ষে গুরুতর আহত বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ আহমেদ সায়েমের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। সাত দিন ধরে লাইফ সাপোর্টে থাকার পর শনিবার মা-বাবা বলে ডাক দিয়েছেন তিনি।

নগরীর পার্কভিউ হাসপাতালের উপমহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘শনিবার বেলা সোয়া ১১টা থেকে দুপুর ১২টা ৪৫ পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা ধরে স্যাররা রিসার্চ করেছেন। রোগী আগের চেয়ে ইমপ্রুভ করেছেন। তাঁর সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। এটাও আগের চেয়ে ভালো আছে। সিদ্ধান্ত নিয়ে স্যাররা উপস্থিত থেকে লাইফ সাপোর্ট খুলে দিয়েছেন। এটি খোলার পর তিনি ভালোই রেসপন্স করছেন, নিজে নিজে শ্বাসপ্রশ্বাস নিচ্ছেন। লাইফ সাপোর্ট খোলার আগে জ্ঞানের লেভেল ছিল ৮। এখন এটা আরও বাড়বে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পিরোজপুরে সাবেক মেম্বারের বাড়িতে চুরি

পিরোজপুর প্রতিনিধি
গ্রিল কেটে স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রিল কেটে স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরি। ছবি: আজকের পত্রিকা

পিরোজপুরে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্যের (মেম্বার) বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে সদর উপজেলার কলাখালী ইউনিয়নের দাউদপুরে সাবেক ইউপি মেম্বার আসাদ খানের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া গত এক সপ্তাহে জেলা শহরে অন্তত ছয়টি চুরির ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

আসাদ খানের পরিবার জানায়, পিরোজপুর-কলাখালী সড়কের পাশে ওই বাড়ির জানালার গ্রিল কেটে চোর ঢুকে বেশ কিছু স্বর্ণালংকার ও টাকা নিয়ে গেছে। আসাদ ও তাঁর স্ত্রী এ সময় বাড়িটিতে ছিলেন না।

আসাদের কলেজপড়ুয়া মেয়ে চৈতি জানান, তিনি ও তাঁর দাদি এ সময় বাড়িতে ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩টার দিকে তাঁদের ঘরের জানালার গ্রিল কেটে চোর ঘরের মধ্যে ঢুকে স্বর্ণালংকার ও টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে আসাদ মেম্বর জানিয়েছেন, তিনি থানায় মামলা করবেন।

এদিকে জানা গেছে, পিরোজপুর শহরের আদর্শপাড়ায় ২২ থেকে ২৫ অক্টোবর সময়ের মধ্যে অন্তত ৬টি চুরির ঘটনা ঘটে। চোরেরা ওই পাড়া নিবাসী পিরোজপুর সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা বকুল, আদর্শ স্কুলের সাবেক শিক্ষক আ. লতিফ, আফজাল হুসাইন লাভলু ও নয়নের বাড়িতে চুরি হয়। এ ছাড়া শহরের মসিদ বাড়ি এলাকায়ও দিনে-দুপুরে চুরির ঘটনা ঘটে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল ইসলাম জানান, ওই সব চুরির ঘটনা সম্পর্কে পুলিশ অবগত আছে। ভুক্তভোগীরা কেউ কোনো মামলা না করলেও পুলিশ ৫-৬ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করেছে। রাতে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ফেসবুকে প্রবাসীদের কামলা বলায় সওজের উপসহকারী প্রকৌশলীকে শোকজ

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
উপসহকারী প্রকৌশলী আনিছুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
উপসহকারী প্রকৌশলী আনিছুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী আনিছুর রহমানকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি পোস্টে প্রবাসীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সওজের জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমিরী খান তাঁকে এ নোটিশ দেন।

জানা গেছে, সম্প্রতি সওজের অধীনে সখীপুর-সাগরদীঘি আঞ্চলিক মহাসড়কের কার্পেটিংয়ের কাজ চলছিল। ওই সড়কের কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে না অভিযোগ তুলে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুক পেজে ভিডিও পোস্ট করেন। তাতে জাহিদ হাসান নামের এক প্রবাসীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় সওজের মির্জাপুর সড়ক উপবিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আনিছুর রহমান লেখেন, ‘বিদেশি কামলারাও যদি ইঞ্জিনিয়ার হন, তাহলে তো দেশের ১৮টা বাজবে।’

এর পর থেকে সখীপুরের প্রবাসীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁরা গত শুক্রবার উপসহকারী প্রকৌশলী আনিছুর রহমানের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এদিকে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণার পর অভিযুক্ত আনিছুর রহমান তাঁর ফেসবুকের মন্তব্যটি অনাকাঙ্ক্ষিত বলে দাবি করেন। তাঁর পরিবারের সদস্যও প্রবাসী রয়েছেন বলে উল্লেখ করে ভুল-বোঝাবুঝির অবসান চান।

অন্যদিকে প্রবাসীদের নিয়ে তাঁর ওই অশালীন মন্তব্য ভাইরাল হতে থাকে। আজ দুপুরে টাঙ্গাইল সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সিনথিয়া আজমিরী খান তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। নোটিশে আনিছুর রহমানকে জানানো হয়, ‘আপনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করেছেন। যা “সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯” আলোকে সরকারের গণকর্মচারী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে অনুসরণীয় বিষয়সমূহের পরিপন্থী। এমতাবস্থায়, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করায় কেন আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ করা হবে না, তার জবাব পত্র প্রাপ্তির ৩ কর্মদিবসের মধ্যে দাখিল করার জন্য বলা হলো।’

এ প্রসঙ্গে উপসহকারী প্রকৌশলী আনিছুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে আমার মন্তব্যের বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছি। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের নিয়ে অশালীন মন্তব্যের বিষয়ে আমি সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’ এ ছাড়া শোকজের চিঠি তিনি হাতে পেয়েছেন বলেও জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আইআইইউসির ১৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ, নদভী দম্পতিসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও তাঁর স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত
আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী ও তাঁর স্ত্রী রিজিয়া সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সাবেক চেয়ারম্যান আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার সংস্থার উপসহকারী পরিচালক কমল চক্রবর্তী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) ট্রাস্ট পরিচালিত আইআইইউসি টাওয়ার থেকে প্রায় ১২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে দুদক চট্টগ্রামের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ জানান, মামলায় নদভী দম্পতিসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া তদন্তকালে এই অপরাধের সঙ্গে অন্যান্য কারও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আসামি করা হবে বলে জানান তিনি।

আসামিরা হলেন সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী, সাবেক উপাচার্য প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম আরিফ, ট্রাস্টের সাবেক সদস্য প্রফেসর ড. কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সালেহ জহুর, ড. ইঞ্জিনিয়ার রশিদ আহমেদ চৌধুরী, মোহাম্মদ খালেদ মাহমুদ, প্রফেসর ড. মো. ফসিউল আলম, প্রফেসর মো. আবদুর রহিম, ড. মো. শামসুজ্জামান, মোহাম্মদ বদিউল আলম, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মুহাম্মদ শফিউর রহমান, অধ্যাপক ড. মাহি উদ্দিন, অধ্যাপক আফজল আহমদ, নদভীর সহধর্মিণী রিজিয়া সুলতানা ও ড. মোজাফফর হোছাইন নদভী।

দুদকের এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ৬ মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ট্রাস্টের ১২ কোটি ৭৯ লাখ ৪১ হাজার ৫৫৬ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

আইআইইউসি ট্রাস্ট একটি অলাভজনক ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান। যার আয় শিক্ষাবৃত্তি, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের সহায়তা, ইসলামি গবেষণা ও সমাজকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করার কথা। কিন্তু আসামিরা ট্রাস্ট আইন ও বিধি উপেক্ষা করে ওই অর্থ নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চট্টগ্রামে অবৈধ বালু উত্তোলন, আটক ৩

ফটিকছড়ি সংবাদদাতা
আটক ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত
আটক ব্যক্তিরা। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভার ব্রাহ্মণহাট এলাকায় হালদা নদীতে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে তিন যুবককে আটক করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। এ সময় দুটি গাড়িও জব্দ করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম মো. নজরুল ইসলাম।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বলেন, ‘অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। এ ধরনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান নিয়মিত চলবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত