গৃহকর্মীকে মারধর করে শরীরে গরম পানি, ছাদ থেকে লাফিয়ে বাঁচার চেষ্টা

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ধর্মপুর এলাকায় এক কিশোরী (১২) গৃহকর্মীকে মারধর করে শরীর গরম পানি দিয়ে ঝলসে দেওয়া হয়েছে। এ সময় নির্যাতন সইতে না পেরে ওই কিশোরী দোতলা থেকে লাফ দেয়। 

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুমিল্লার ধর্মপুর ভিক্টোরিয়া কলেজসংলগ্ন পূর্ব দৌলতপুর এলাকার এসআরটি প্যালেস বাসায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একই দিন রাতে কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহেরের স্ত্রী তাহমিনা তুহিনকে আটক করেছে কোতোয়ালী মডেল থানার পুলিশ। 

জানা যায়, মারধর করে শরীরে গরম পানি দেওয়ার সময় প্রাণ বাঁচাতে মেয়েটি দোতলা থেকে লাফিয়ে পড়ে। পরে পাশের ভবনের কয়েকজন মেয়েটিকে উদ্ধার করে ৯৯৯-এ কল দেয়। তখন পুলিশ দগ্ধ ওই কিশোরীকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যায়। 

ভুক্তভোগী ওই কিশোরী বলে, ‘কুমিল্লার ওই বাসায় চার বছর ধরে কাজ করছি। কাজে দেরি হলে তাহেরের স্ত্রী ও মেয়ে ফাহমিদা তাহের তিমু আমাকে মারধর করে এবং গরম পানি ঢালে। গত কয়েক দিন ধরে আমাকে নির্যাতন করছিল। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারধর করে পর গরম পানি ঢালতে চাইলে দোতলা থেকে লাফ দেই। পরে পাশের মেয়েদের হোস্টেলে গিয়ে আশ্রয় নেই।’ 

প্রতিবেশী পাশের হোস্টেলের জারা আক্তার নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা ওপরে চিৎকার-চেঁচামেচি শুনি। পরে দেখি ছোট একটি মেয়ে আমাদের ভবনের রুমে প্রবেশ করে আশ্রয় চায়। তার পা ঝলসানো ছিল। পরে আমরা পুলিশকে বিষয়টি জানাই।’ 

অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আবু তাহের বলেন, ‘আমি ঢাকায় আছি। শুনেছি বাসায় নাকি ঝামেলা হয়েছে। তবে আমার স্ত্রী জানিয়েছে, সে কাজের মেয়েকে মারধর করেনি।’ 

কুমিল্লার কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোর্শেদ বলেন, ‘পুলিশ মেয়েটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছে। মেয়েটির পা ঝলসে গেছে। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।’