Ajker Patrika

রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে হামলা: প্রধান আসামি চসিকের সাবেক কাউন্সিলর জসিম অবশেষে গ্রেপ্তার

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে হামলা মামলার প্রধান আসামি চসিকের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা জহুরুল আলম জসিম। ছবি: সংগৃহীত
পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে হামলা মামলার প্রধান আসামি চসিকের সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা জহুরুল আলম জসিম। ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরীর আকবরশাহ এলাকার শাহেনশাহ হিসেবে পরিচিত পাহাড়খেকো, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা জহুরুল আলম জসিমকে অবশেষে ঢাকার বনশ্রী থেকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাঁকে বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় রাখা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (জনসংযোগ) মাহমুদা বেগম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গ্রেপ্তার জহুরুল আলম চসিকের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের (উত্তর পাহাড়তলী) সাবেক কাউন্সিলর এবং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি বর্তমান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়িতে ঢিল ছুড়ে ও হামলা করে আলোচনায় এসেছিলেন। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় তিনি প্রধান আসামি। পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তিনি বরখাস্ত হন।

পুলিশ কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম বলেন, বুধবার দিবাগত রাতে সাবেক কাউন্সিলর জসিমকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে চট্টগ্রামে আনা হয়। তবে তাঁর বিরুদ্ধে কয়টি মামলা রয়েছে তাৎক্ষণিক নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জহুরুল আলম জসিম নগরে ‘ভূমিদস্যু’ এবং ‘পাহাড়খেকো’র তকমা নিয়ে আকবরশাহ থানার শাহেনশাহ হিসেবে পরিচিত। তিনি সরকারি পাহাড়, ছড়া, খাস জায়গা, রেলওয়ের জায়গা দখল থেকে শুরু করে পাহাড় কেটে নেন। নিজস্ব বাহিনী দিয়ে পাহাড় কেটে বানিয়েছেন আবাসিক প্লট, বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজির নিয়ন্ত্রণ করেছেন। অনেককে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েও বিতর্কিত হন জসিম। তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে পাহাড় কাটার অপরাধে পরিবেশ আইনে বেশ কিছু মামলা বিচারাধীন। তাঁর বিরুদ্ধে নগরীর বিভিন্ন থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, গুলি ও অর্থ দিয়ে সহায়তার অভিযোগে একাধিক মামলা হয়েছে।

এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলর জসিমকে গ্রেপ্তারে রাতভর আকবর শাহ এলাকার একটি ভবনে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তবে সেদিন সেখানে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে মধ্যরাত ১২টার দিকে একে খান এলাকার একটি বাসা থেকে আকবরশাহ থানা পুলিশের একটি দল জসিমের স্ত্রী তাসলিমা বেগমকে গ্রেপ্তার করে।

জসিমের গ্রেপ্তার সম্পর্কে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, জসিমকে পাচঁলাইশ থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে থানায় রাখা হয়েছে। এ নিয়ে আগামীকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

রাউজানের শীর্ষ সন্ত্রাসী মেজর ইকবাল গ্রেপ্তার

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেন চৌধুরী ওরফে মেজর ইকবাল। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেন চৌধুরী ওরফে মেজর ইকবাল। ছবি: আজকের পত্রিকা

চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী ইকবাল হোসেন চৌধুরী ওরফে মেজর ইকবালকে (৫২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বেলা ৩টায় রাউজান পৌরসভা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া।

গ্রেপ্তার ইকবাল রাউজান পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতানপুর এলাকার আব্দুল কুদ্দুস প্রকাশ কালু মেম্বারের ছেলে।

পুলিশ জানায়, থানার নথিপত্র অনুযায়ী মেজর ইকবালের বিরুদ্ধে ছয়টি হত্যা মামলা, দাঙ্গা-মারামারি, অপহরণ, চাঁদাবাজিসহ ১১টি মামলার বিবরণ রয়েছে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি জানিয়েছেন, রাউজান, ফটিকছড়ি ও রাঙ্গুনিয়া থানায় তাঁর নামে ৪০টির বেশি মামলা রয়েছে।

পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তার ইকবাল স্থানীয়ভাবে পরিচিত ছিলেন একজন ভয়ংকর অপরাধী হিসেবে। তিনি শ্যামল হত্যা, আমান হত্যা, ভিপি বাবু হত্যা ও মুজিব হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। তিনি একটি সক্রিয় ডাকাত দলের নেতৃত্ব দিতেন এবং দীর্ঘদিন ধরে রাউজান, ফটিকছড়ি ও রাঙ্গুনিয়া এলাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, মেজর ইকবাল দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা থাকলেও তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। গতকাল তাঁকে গোপন সংবাদের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওসি আরও বলেন, এটি পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানের অংশ। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সন্ত্রাস ও অপরাধ দমনে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বগুড়ায় তোজাম্মেল হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় তোজাম্মেল হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়ায় তোজাম্মেল হত্যা মামলায় ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড। ছবি: আজকের পত্রিকা

বগুড়ার গাবতলীতে ব্যবসায়ী তোজাম্মেল হক (৪৫) হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড ও তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

দীর্ঘ আট বছরের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শাজাহান কবীর এ রায় দেন। একই সঙ্গে রায়ে প্রত্যেক আসামির এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন বাবুল প্রাং ওরফে আবুল কালাম আজাদ, মানিক ও মনিরুজ্জামান ওরফে মিশু। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন পিন্টু ওরফে মাজেদুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন ও আশিক।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) আব্দুল বাছেদ এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর ব্যবসায়ী ও দুর্গাহাটা ইউপি চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তোজাম্মেল বৈঠাভাঙ্গা গ্রামে চাচাতো ভাইয়ের বিয়ের দাওয়াতে যান। সেখান থেকে মোটরসাইকেলে তিনি ও তাঁর চাচাতো ভাই নয়ন, আসাদ বাড়িতে ফিরছিলেন।

তাঁরা দক্ষিণপাড়া এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে। এ সময় দুর্বৃত্তরা তোজাম্মেল ও নয়নকে কুপিয়ে জখম করে। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নেওয়ার পথে তোজাম্মেল মারা যান।

তিনি আরও জানান, রায়ে চার্জশিটভুক্ত তিন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই মামলায় আরও তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কেবল যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পিন্টু আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা আদালতে হাজির হননি। গ্রেপ্তারের পর থেকে তাঁদের সাজা কার্যকর হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

টেকনাফে অস্ত্রসহ রোহিঙ্গা ডাকাত আটক

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
অস্ত্রসহ আটক মোহাম্মদ আয়ুব। ছবি: আজকের পত্রিকা
অস্ত্রসহ আটক মোহাম্মদ আয়ুব। ছবি: আজকের পত্রিকা

কক্সবাজারের টেকনাফে নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে রোহিঙ্গা ডাকাত নূর কামাল গ্রুপের সদস্য মোহাম্মদ আয়ুবকে (২৩) অস্ত্রসহ আটক করেছে ১৬ আর্মড পুলিশ।

গ্রেপ্তার আয়ুব নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের এইচ ব্লকের বাসিন্দা সৈয়দের ছেলে।

আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ১৬ এপিবিএনের অধিনায়ক (অতিরিক্ত ডিআইজি) কাউছার সিকদার।

কাউছার সিকদার জানান, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর মিলে যে একটি সংঘবদ্ধ রোহিঙ্গা ডাকাত দল ওই এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন খবর পেয়ে এপিবিএন পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। অভিযানের সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে ধাওয়া দিয়ে মোহাম্মদ আয়ুবকে আটক করা হয়। পরে তাঁর লুঙ্গির ভাঁজের অংশ থেকে একটি দেশীয় তৈরি ওয়ান শুটার গান ও একটি গুলি উদ্ধার করা হয়। আটক যুবক ও তাঁর পলাতক সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে চুরি, সাংবাদিক পরিচয়ধারী পাঁচজন গ্রেপ্তার

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
গ্রেপ্তার পাঁচজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
গ্রেপ্তার পাঁচজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিনের অফিসকক্ষ থেকে ব্যাগ চুরির অভিযোগে ৫ কথিত সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা-পুলিশ। আজ মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে শহরের সদর থানা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন দৈনিক ঢাকা পত্রিকার স্টাফ করেসপনডেন্ট খন্দকার জিন্নাতুন নেছা মৌসুমী, রাজধানী টিভির স্টাফ রিপোর্টার হারুন অর রশিদ, দৈনিক বিজনেস ফাইলের প্রতিনিধি বজলুর রহমান, গ্লোবাল ন্যাশন পত্রিকার প্রতিনিধি শামীম হোসেন ও সাইফুল ইসলাম।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে গ্রেপ্তার ৫ জনসহ মোট ৯ জন তত্ত্বাবধায়কের অফিসে যান। এ সময় তাঁরা ডা. বাহাউদ্দিনের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন। পরে বের হওয়ার সময় তাঁদের একজন তত্ত্বাবধায়কের ব্যবহৃত ব্যাগটি চুরি করে নিয়ে যান।

ব্যাগের ভেতরে প্রায় ৪০ হাজার টাকা, বাসা ও অফিসের চাবি এবং বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিল। অভিযোগে বলা হয়, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, সাদা শার্ট পরিহিত আসামি শামীম হোসেন কাঁধে ব্যাগটি নিয়ে চলে যাচ্ছেন।

তত্ত্বাবধায়ক বাহাউদ্দিন জানান, কথোপকথনের একপর্যায়ে মৌসুমী ও হারুন নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাঁকে ভিজিটিং কার্ড দেন। পরে তাঁদের দেওয়া ফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানান, বিষয়টি দেখা হচ্ছে। পরে আবার ফোন করলে তাঁরা দাবি করেন, ব্যাগটি মুক্তিযোদ্ধা সংসদে রাখা আছে, লোক পাঠিয়ে নিয়ে আসতে পারেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন জানান, এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত