Ajker Patrika

চবির ৯ শিক্ষার্থীর অনশন চলছেই

চবি প্রতিনিধি 
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) দুই নারী শিক্ষার্থীসহ ৯ জন। অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বাম সংগঠন ও কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী এ কর্মসূচি পালন করছেন।

গতকাল বুধবার বেলা ১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে অনশনে বসেন তাঁরা। দীর্ঘক্ষণ অনশনে থাকায় দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে।

অনশনরত ৯ শিক্ষার্থী হলেন বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, সংগীত বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, একই বিভাগের দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহজান, বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ধ্রুব বড়ুয়া, মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, সংগীত বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে এবং বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।

দীর্ঘক্ষণ অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়া দুই শিক্ষার্থী হলেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা। এ ছাড়া অনশনে থাকা দুই নারী শিক্ষার্থীও দুর্বল হয়ে পড়েছেন।

প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ ছাড়াও অনশনরত শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো—আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ, নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা করা, আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া, উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরপরাধ এলাকাবাসীর হয়রানি বন্ধ করা, বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয় পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা এবং ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা, সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী নাইম শাহজাহান বলেন, ‘আমরা প্রশাসনকে সাত দফা দাবি দিয়েছিলাম। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে আমাদের বিভিন্নভাবে বোঝানো হয়। মূলত দাবির কিছুই পূরণ হয়নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের সঙ্গে প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর দেখা করতে এসেছে। প্রশাসন যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা আমাদের মনঃপূত না হওয়ায় আমরা আমাদের অনশন চালিয়ে যাচ্ছি।’

অনশনে বসা শিক্ষার্থী সুমাইয়া শিকদার বলেন, ‘মানসিকভাবে সবাই ফিট, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আছি। দাবি আদায়ের আগে এখান থেকে উঠব না।’ আরও এক নারী শিক্ষার্থী ঈশা দে বলেন, ‘এই অনশন ভাঙার জন্য আমাদের দুটো শর্ত—প্রথমত, প্রক্টরিয়াল বডিকে পদত্যাগ বা অপসারণ করতে হবে এবং অন্য ছয়টা দাবি পূরণের জন্য যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসতে হবে।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন। ছবি: আজকের পত্রিকা

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘আমি অনশনের কথা শুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জি এস হাবিবকে দায়িত্ব দিয়েছি তাদের আমার কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে। আমি বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও কোনো শিক্ষার্থী আসেনি। আজকে (বৃহস্পতিবার) বিভিন্ন কাজের কারণে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। যখন শুনেছি শিক্ষার্থীরা এখনো অনশনে, তখনই আমি, উপউপাচার্য ড. কামাল উদ্দিন, ছাত্র উপদেষ্টাসহ পাঁচ-ছয় শিক্ষক আসছি তাদের সঙ্গে কথা বলতে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনার পরও তাদের অনশন ভাঙাতে পারিনি। বারবার বলেছি আগামী রোববার বিকেল ৩টায় তোমাদের সঙ্গে বসব। কিন্তু তারা তাদের কথায় অটল।’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন। ছবি: আজকের পত্রিকা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন। ছবি: আজকের পত্রিকা

উপউপাচার্য বলেন, ‘তারা (অনশনরত শিক্ষার্থীরা) বারবার বলছে, প্রক্টরের পদত্যাগ ও দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেহেতু একটা নিয়ম আছে, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তও করছি। আমরা আর কীভাবে ওদের দাবি অনুযায়ী কাজ করব? আমাদের তদন্তের রিপোর্টে যদি প্রক্টর দোষী হয়, তাহলে অবশ্যই তাঁকে অপসারণ করা হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেটা মানছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে মহিলা মাদ্রাসার ৭ শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাদ থেকে নিচে পড়ে যাওয়া কাপড় আনতে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে একটি মহিলা মাদ্রাসার সাত শিক্ষার্থী ও একজন আয়া। জানালা দিয়ে বিদ্যুতের লাইনে স্পর্শ লেগে তারা আহত হয়। আহত আটজনের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার ভাদুঘর এলাকায় দারুন নাজাত মহিলা মাদ্রাসায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, মাদ্রাসার চারতলার ছাদ থেকে একটি কাপড় বাইরে থাকা বিদ্যুতের তারের ওপর পড়ে গিয়েছিল। কাপড়টি আনার জন্য মাদ্রাসার আয়ার দায়িত্বে থাকা আলেয়া (৩০) জানালা দিয়ে একটি স্টিলের লম্বা পাইপ ব্যবহার করেন। পাইপটি বিদ্যুতের তারে লাগার সঙ্গে সঙ্গেই শক লেগে আলেয়ার শরীরে বিদ্যুতায়িত হয়। বিদ্যুতের তার থেকে সৃষ্ট আগুন বাষ্পীয় হয়ে দ্রুত রুমের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে এবং কাছাকাছি থাকা ছাত্রীদের শরীরে লাগে।

আহত শিক্ষার্থীরা হলো নবীনগর উপজেলার তালগাটি গ্রামের নুরুল হকের মেয়ে নুসরাত (১০), সিরাজগঞ্জ জেলার আবু সাইদের মেয়ে সাদিয়া খাতুন (৬), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর গ্রামের মজনু মিয়ার মেয়ে রওজা আক্তার (১২), ভাদুঘর গ্রামের কবির হোসেনের মেয়ে নুসরাত (১০), একই এলাকার কাবির মিয়ার মেয়ে জান্নাতুল মাওয়া (৮), কসবা উপজেলার শিমরাইল গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে উম্মে তাইসান (০৫) এবং মাদ্রাসার আয়ার দায়িত্বে থাকা ভাদুঘর এলাকার তুফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী আলেয়া (৩০)।

দারুন নাজাত মহিলা মাদ্রাসার কারি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা আহত শিক্ষার্থীদের সদর হাসপাতালের নিয়ে এসেছি। ছয়জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠাচ্ছি। বাকি দুজনকেও ঢাকা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স হাসিম খান বলেন, ‘মাদ্রাসার আট ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। তারা সবাই বার্নের পেশেন্ট। এর মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর দুজন সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে।

এই ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘খবর নিচ্ছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাজীপুরে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ বিএনপি নেতার ভাই-ভাতিজা আটক

গাজীপুর প্রতিনিধি
বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ আটক বাবা-ছেলে। ছবি: সংগৃহীত
বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ আটক বাবা-ছেলে। ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানাধীন নাওজোর এলাকায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ বাবা-ছেলেকে আটক করা হয়েছে। আটক মো. তসলিম সিরাজ (৫৪) নাওজোর এলাকার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে। অপরজন তাঁর ছেলে মো. মুশফিক তসলিম (২৭)। তাঁরা দুজনই গাজীপুর মহানগর বিএনপির বাসন থানার সভাপতি তানভীর সিরাজের ভাই ও ভাতিজা।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর সেনাক্যাম্প (১৪ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি) থেকে পাঠানো এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

সূত্র জানায়, বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পৌনে ৫টা পর্যন্ত গাজীপুর সেনাক্যাম্পের নেতৃত্বে যৌথ বাহিনী বাসন থানার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের নাওজোর এলাকায় মো. তসলিম সিরাজের বাড়িতে অভিযান চালায়। অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও মাদকদ্রব্যসহ মো. তসলিম সিরাজ (৫৪) ও তাঁর ছেলে মো. মুশফিক তসলিমকে (২৭) আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ৮টি বড় ছোরা, ১৯টি ছোট ছোরা, ৫টি বড় চাপাতি, ৫টি ছোট চাপাতি, ২টি হাঁসুয়া, ৫টি রামদা, ১টি সোজা রামদা এবং ২৭টি নকল ডায়মন্ড (অস্ত্র ধার করার উপকরণ)। এ ছাড়াও প্রায় ৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার ও জব্দ করা হয়।

অভিযান শেষে যৌথ বাহিনী আটক দুজনকে গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানায় হস্তান্তর করে।

জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র, গাঁজাসহ বাবা-ছেলেকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সখীপুরে মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে ওসির হুঁশিয়ারি: মাদক ছাড়বে, না হয় এলাকা ছাড়বে

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
মাদকবিরোধী সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন ওসি আবুল কালাম ভূঞা। ছবি: আজকের পত্রিকা
মাদকবিরোধী সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন ওসি আবুল কালাম ভূঞা। ছবি: আজকের পত্রিকা

টাঙ্গাইলের সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা মাদক কারবারিদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মাদক কারবারিরা মাদক ছাড়বে, তা না হলে এলাকা ছাড়বে। গতকাল বুধবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার প্রতিমা বংকী ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা মাঠে এলাকাবাসী আয়োজিত এক সুধী সমাবেশে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। মাদক, ইভ টিজিং, বাল্যবিবাহ, ধর্ষণ, চুরি ও সন্ত্রাসবিরোধী এই সমাবেশে তিন শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা উপস্থিত ছিলেন।

সুধী সমাবেশে উপস্থিত জনতাকে উদ্দেশ করে ওসি আবুল কালাম ভূঞা বলেন, ‘আমরা কি মাদকের বিরুদ্ধে সবাই আছি?’ এ সময় সমবেত জনতা হাত তুলে সম্মতি দেয়। ওসি বলেন, ‘যেহেতু আপনারা ওয়াদা দিয়েছেন, তাই আজকের পর থেকে মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি। ওরা মাদক ছাড়বে, না হয় এলাকা ছাড়বে। মাদক না ছাড়লে এলাকাছাড়া করব আমরা সবাই মিলে।

সখীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাদকবিরোধী সমাবেশে অংশ নেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা
সখীপুরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে মাদকবিরোধী সমাবেশে অংশ নেন এলাকাবাসী। ছবি: আজকের পত্রিকা

কোনো অবস্থায়ই সে এলাকায় থাকবে না, কোনো মাদকসেবী এই এলাকায় থাকবে না। মাদক বিক্রির সময় পিছমোড়া দিয়ে বেঁধে রাখবেন, খবর দেবেন, আমি এসে ধরে নিয়ে যাব।’

ওসি আরও বলেন, ‘মাদক ও চুরি ঠেকাতে সামাজিক আন্দোলন খুবই প্রয়োজন। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেলে দেখবেন এক সপ্তাহের মধ্যে সমাজের আমূল পরিবর্তন হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘অনেকেই পুলিশের সীমাবদ্ধতা জানে না। যার যেটা প্রয়োজন সবকিছু পুলিশের কাছে আশা করে। কিন্তু পুলিশের যে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আছে, এটা জানে না। এরপরও বলে যাচ্ছি, যেকোনো সমস্যায় যাবেন, আমার যতটুকু সক্ষমতা আছে, সর্বোচ্চটা দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করব।’

সুধী সমাবেশে সখীপুর সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এম এ গফুরের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন উদয়ন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান মিয়া, স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি সোহরাব আলী, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম, লাল মিয়া, সাবেক ইউপি সদস্য জিন্নাত আলী, আলতাব হোসেন, বিএনপি নেতা সামছুল আলম, সালমান কবির, সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম সানি, যুব আন্দোলন নেতা আবু রায়হান প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পারিবারিক কলহ: শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া সেই যুবকের মৃত্যু

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি 
অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া যুবক রায়হান মিয়া। ছবি: সংগৃহীত
অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া যুবক রায়হান মিয়া। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় পারিবারিক কলহ ও পরকীয়ায় আসক্তির জেরে নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন দেওয়া যুবক মো. রায়হান মিয়া (২৭) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভোরের দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে তাঁর মৃত্যু হয়। ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোকলেছুর রহমান মণ্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত মো. রায়হান মিয়া উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর ধোপাডাঙ্গা গ্রামের মো. চান মিয়ার ছেলে। তিনি স্ত্রী আদুরী বেগম ও দুই সন্তান নিয়ে সংসার করতেন।

রায়হান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে জুয়া ও অন্য নারীর প্রতি আসক্ত ছিলেন। দুই মাস আগে স্থানীয় এক নারীর সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা করতে গিয়ে তিনি ধরা পড়েন। শাশুড়ির চাপে স্ত্রী আদুরী নিজের গয়না বিক্রি করে সে সময় স্বামীকে ছাড়িয়ে আনেন। এরপর রায়হান আরেক নারীকে বিয়ে করার জন্য স্ত্রীকে চাপ দেন। স্ত্রী রাজি না হলে তাঁদের মধ্যে মনোমালিন্য শুরু হয় এবং রায়হান তাঁর স্ত্রীর ওপর পাশবিক নির্যাতন চালান।

অত্যাচার সইতে না পেরে আদুরী বেগম সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান। গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সকালের দিকে রায়হান মিয়ার বাবা চান মিয়া বড় শ্যালককে নিয়ে পুত্রবধূ আদুরীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি যান। প্রথমে আদুরী আসতে না চাইলেও শ্বশুরের জোরালো চাপে তিনি শর্ত সাপেক্ষে রাজি হন যে রায়হান তাঁকে মারধর করতে পারবেন না এবং জুয়া খেলা বন্ধ করতে হবে।

এই পরিস্থিতিতে মো. রায়হান মিয়া মোবাইল ফোনে বাবাকে হুমকি দেন এবং স্ত্রীকে আনতে নিষেধ করেন। এরপরই ক্ষোভে বেলা ১১টার দিকে তিনি নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুন জ্বলতে থাকলে তিনি দ্রুত পুকুরের পানিতে লাফ দেন।

গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় রায়হানকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার ভোরে তিনি মারা যান।

মো. রায়হান মিয়ার বাড়িতে গেলে দেখা হয় তাঁর দুলাভাই মো. সবুজ মিয়ার সঙ্গে। তিনি কথা বলতে রাজি হননি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে। পরে দেখা হয় রায়হান মিয়ার কলেজপড়ুয়া বোনের সঙ্গে। গণমাধ্যমকর্মীদের দেখে চটে যান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো কোনো কাগজপত্র পাইনি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত