Ajker Patrika

কক্সবাজারের চকরিয়া: মাতামুহুরীতে বেড়া দিয়ে মাছ চাষ বিএনপি নেতার

  • দলীয় পরিচয়ে নয়, এলাকার মুরব্বিরাসহ মিলেমিশে ৩২ জন মাছ চাষ করতে নদীতে বেড়া দিয়েছি।
  • রেজাউল করিম সাবেক ইউপি সদস্য ও বিএনপি নেতা।
বাপ্পী শাহরিয়ার, চকরিয়া (কক্সবাজার) 
আপডেট : ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৩৬
নদীতে বাঁশের বেড়া ও জাল দিয়ে তৈরি ঘেরে এভাবেই চলছে মাছ চাষ। এতে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জেলেরা। গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা
নদীতে বাঁশের বেড়া ও জাল দিয়ে তৈরি ঘেরে এভাবেই চলছে মাছ চাষ। এতে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন স্থানীয় জেলেরা। গত শনিবার দুপুর ১২টার দিকে তোলা। ছবি: আজকের পত্রিকা

নদীতে আড়াআড়ি বাঁশ, বেড়া ও জাল দিয়ে ঘের তৈরি করা হয়েছে। সেখানে করা হচ্ছে মাছ চাষ। এমন ঘটনা ঘটছে কক্সবাজারের চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীতে। আর এর পেছনে রয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতা। এর ফলে জেলে কিংবা স্থানীয়রা মাছ ধরতে পারছেন না। ব্যাহত হচ্ছে মাছের বংশবিস্তার।

চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের বাটাখালী সেতু এলাকায় ঘের তৈরি করার হয়েছে। এই উপজেলার বিভিন্ন স্থান দিয়ে বয়ে গেছে খরস্রোতা মাতামুহুরী নদী। নদীটি মাছ আহরণের জন্য উন্মুক্ত।

মিয়ানমার সীমান্তের মাইভার পর্বত থেকে মাতামুহুরীর উৎপত্তি। এরপর নদীটি বান্দরবানের আলীকদম, লামা ও কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যানুযায়ী নদীটির দৈর্ঘ্য ১৪৬ কিলোমিটার। চকরিয়া উপজেলায় নদীটির ৪০ কিলোমিটার পড়েছে।

বাটাখালী ও জলদাশপাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাছ চাষ করার জন্য বাঁশের বেড়া দিয়ে নদী দখলে নিয়েছেন মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আনোয়ারুল হাসান, আবু জাফর, জামাল উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম বাবুল, মোহাম্মদ মানিকসহ ৩২ জন। নদী দখলে জড়িত ৩২ জনের বেশির ভাগই বিএনপির ওয়ার্ড পর্যায়ের কর্মী ও সমর্থক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চকরিয়া-বদরখালী কে বি জালাল উদ্দিন সড়কের উপজেলার সাহারবিল এলাকায় মাতামুহুরী নদী দখল করে বাটাখালী সেতুর নিচে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে। এই বেড়ার মধ্যে তাঁরা অবৈধভাবে মাছচাষ করবেন। বেড়া দিয়ে নদী দখলের কারণে স্বাভাবিক পানি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সেখানে একটি খুপরিঘরও বানানো হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নদীর পাশে চকরিয়া পৌরসভা ও সাহারবিল জলদাশপাড়ার প্রায় ৪০০ জেলে পরিবার বাস করে। তারা মাতামুহুরী ও খাল থেকে মাছ আহরণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এখন রাজনৈতিক আশ্রয়ে নদীতে বেড়া দিয়ে দখল শুরু হয়েছে। তাই ভয়ে অনেকে নদীতে মাছ ধরতে যায় না। বাঁশের বেড়া দেওয়ার কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা নদীতে গোসল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কোনো কাজ করতে পারছে না।

এই বিষয়ে জেলে আলী আকবর বলেন, ‘৮-৯ দিন ধরে নদীর বুকে আড়াআড়িভাবে বাঁশের তৈরি বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করতে একটি প্রভাবশালী চক্র দখল করেছে। এভাবে নদীতে বেড়া দেওয়া শুরু হলে মাতামুহুরীর কোনো অংশই বাদ যাবে না। আমরা জেলেরা মাছ আহরণ করতে পারব না।’

তবে নদী দখলকারীদের একজন আবু জাফর বলেন, ‘আমরা এলাকার বেকার যুবকদের নিয়ে মাছ চাষ করতে নদীর একপাশে বাঁশের বেড়া দিয়েছি। এখানে নদীর কোনো ক্ষতি হচ্ছে না, বাঁধও দিচ্ছি না। এ ব্যাপারে উপজেলার একজন কর্মচারী আমাদের মৌখিক অনুমতি দেন।’

আর দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে মাতামুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, ‘আগামী তিন মাসের জন্য মাতামুহুরী নদীতে রাবার ড্যাম ফোলানো হলে পানি বাড়বে। দলীয় পরিচয়ে নয়, এলাকার মুরব্বিরাসহ মিলেমিশে ৩২ জন মাছ চাষ করতে নদীতে বেড়া দিয়েছি। আমরা নদীও দখল করছি না, ব্যবসাও করছি না।’

চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল আমিন বলেন, ‘নদীতে বাঁশের বেড়া দিয়ে দখল করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন দেলোয়ার বলেন, ‘এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসন থেকে লোক পাঠানো হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

চাটমোহরে সমতল জমিতে কমলা চাষে সম্ভাবনা, সফল কৃষক খয়বর

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি 
নিজ বাগানের গাছে ফলন দেখাচ্ছেন চাটমোহরের আগশোয়াইল গ্রামের কৃষক খয়বর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিজ বাগানের গাছে ফলন দেখাচ্ছেন চাটমোহরের আগশোয়াইল গ্রামের কৃষক খয়বর রহমান। ছবি: আজকের পত্রিকা

সমতল ভূমিতে কমলা চাষ সাধারণত অপ্রচলিত হলেও পাবনার চাটমোহরে এর বাণিজ্যিক চাষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। শখের বসে করা কৃষক খয়বর রহমানের কমলাবাগান এখন বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে। প্রথম বছরেই আশানুরূপ ফলন পাওয়ায় কৃষক যেমন সফলতার স্বপ্ন দেখছেন, তেমনি কৃষি বিভাগও আশা করছে তাঁর দেখানো পথে কমলা চাষের বিস্তার ঘটবে।

সাইট্রাসজাতীয় ফল মাল্টা ও কমলা মূলত পাহাড়ি অঞ্চলের হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চাটমোহরে মাল্টা চাষের প্রসার ঘটেছে। তবে কমলা চাষ এত দিন শখের ছাদবাগানেই সীমাবদ্ধ ছিল। কাঙ্ক্ষিত সফলতা না পাওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ তেমন বিস্তার লাভ করেনি। এই অবস্থায় কৃষক খয়বর রহমানের বাণিজ্যিক চাষে সফলতা অন্য কৃষকদের কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের আগশোয়াইল গ্রামের কৃষক খয়বর রহমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও দেখে কমলা চাষে আগ্রহী হন। পরে কৃষি বিভাগের পরামর্শে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার এক কৃষকের কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে তিনি ২১ শতক জমিতে কমলার বাগান গড়ে তোলেন। ২০২২ সালে ৫০টি চারা দিয়ে বাগান শুরু করেন তিনি। উপজেলা কৃষি অফিসের তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে চলতি মৌসুমে প্রথমবারের মতো তাঁর বাগানে ফুল আসে। পরীক্ষামূলকভাবে কিছু গাছে ফল রাখলে সেগুলো পরিপক্ব হয়।

কমলাচাষি খয়বর রহমান জানান, তাঁর বাগানের ১১টি গাছে বর্তমানে ১০০ কেজির বেশি কমলা রয়েছে। শুরুতে নিছক শখের বসে বাগান করলেও এখন এটি লাভজনক হবে বলে আশা করছেন তিনি। চলতি মৌসুমে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করতে পারবেন বলে ধারণা তাঁর। আগামী বছর পূর্ণমাত্রায় ফলন এলে বিক্রি ১ লাখ টাকার বেশি হবে বলে আশা করছেন।

উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইদুর রহমান সাঈদ বলেন, চাটমোহরে কমলা চাষ একেবারেই নতুন উদ্যোগ। খয়বর রহমানের বাগানে উৎপাদিত কমলার মান ও গুণগত বৈশিষ্ট্য বাজারে পাওয়া কমলার মতোই ভালো। প্রতিটি গাছে যে পরিমাণ ফল এসেছে, তাতে বাগানটি লাভজনক হবে বলে মনে করছেন তিনি। এই সাফল্য অন্য কৃষকদেরও অনুপ্রাণিত করবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুন্তলা ঘোষ বলেন, অপ্রচলিত কমলা প্রথমবারের মতো চাষ করে খয়বর রহমান যে সাফল্য পেয়েছেন, তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে কমলা চাষকে বাণিজ্যিকভাবে রূপ দিতে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তাঁর সাফল্য দেখে আরও অনেক কৃষক কমলা চাষে আগ্রহী হবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ইসলামপুরে পুলিশের অভিযানে আওয়ামী লীগের তিন নেতা আটক

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
আটক করা আওয়ামী লীগের তিন নেতা। ছবি: সংগৃহীত
আটক করা আওয়ামী লীগের তিন নেতা। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের ইসলামপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে আটক করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন পলবান্ধা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্রাম হোসেন মাস্টার, কুলকান্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসমত আলী সরদার এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোনাহার সরকার।

এ বিষয়ে ইসলামপুর থানার ডিউটি অফিসার ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) অমৃত চন্দ্র সেন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা হাসমত আলী সরদারকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের শাখা-২ (ডিবি) সদস্যরা আটক করে মঙ্গলবার রাতে থানায় হস্তান্তর করেন। এ ছাড়া একই দিন রাতে পৃথক অভিযানে আক্রাম হোসেন মাস্টার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সোনাহার সরকারকে আটক করা হয়েছে।

অমৃত চন্দ্র সেন আরও বলেন, আটক তিনজনের বিরুদ্ধে ইসলামপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রয়েছে। ওই মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে জামালপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির দলীয় স্লোগান, নিষেধ করায় তোপের মুখে ইউএনও

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি হোসেনপুর সংবাদদাতা
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১: ০১
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে মহান বিজয় দিবস ২০২৫ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান নিষিদ্ধ করাকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাহিদ ইভাকে তোপের মুখে পড়তে হয়েছে। এই ঘটনায় অনুষ্ঠানে কিছু সময়ের জন্য উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের আগে একটি মিছিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ‘স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া—লও লও লও সালাম’ স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় মঞ্চের একপাশ থেকে ইউএনও কাজী নাহিদ ইভা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান না দিতে নির্দেশ দেন।

ইউএনওর এই নির্দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। একপর্যায়ে তাঁরা ইউএনওকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে হট্টগোল শুরু করেন। এতে অনুষ্ঠানের স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হয়। পরিস্থিতির একপর্যায়ে ইউএনওর বদলির দাবিও তোলেন বিএনপির কিছু নেতা-কর্মী।

ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তেজনার কারণে কিছু সময়ের জন্য অনুষ্ঠান স্থগিত থাকে। পরে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এরপর বাকি অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল হক রাজন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক হোসেনপুর পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক সাহেদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হাসিম সবুজসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতা-কর্মীকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের আমরাই মাঠের ভেতরে আর মিছিল করতে নিষেধ করতে ছিলাম। তবু ইউএনও মহোদয় রেগে এসে এখানে কোনো দলীয় স্লোগান হবে না বলে স্লোগান বন্ধ করতে নিষেধ করেন। তাঁর আচরণটা রূঢ় ছিল, যা আমরা একজন প্রশাসনের দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে প্রত্যাশা করি না। দলীয় লোকজন তো তখন এমনিতেই স্লোগান বন্ধ করে অনুষ্ঠান স্থলে বসে পড়ত। আমরাও তো অনুষ্ঠান উপভোগ করতে গিয়েছিলাম।’ তিনি আরও বলেন, ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় বিষয়টি বড় আকার ধারণ করেছে।

উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল হক রাজন বলেন, ইউএনওর আচরণ তাঁদের কাছে ভালো মনে হয়নি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে তিনি আর মন্তব্য করতে চাননি।

ইউএনও কাজী নাহিদ ইভার বক্তব্য জানতে তাঁর সরকারি নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। পরে হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহসী মাসনাদ বলেন, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে দলীয় স্লোগান কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি প্রশাসনকে হেয় করার শামিল। এটি রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ বিভাজনের ফলও হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

নড়াইল-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা বিএনপি নেতা নাগিবের

নড়াইল প্রতিনিধি 
ছোটকালিয়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে কথা বলেন অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
ছোটকালিয়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে কথা বলেন অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-১ আসনে (কালিয়া ও নড়াইল সদর উপজেলার একাংশ) বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করা না হলে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি ও জিয়া পরিষদের নেতা অধ্যাপক বি এম নাগিব হোসেন। তিনি বি এম বাকির হোসেন স্মৃতি সংসদের সভাপতি।

মঙ্গলবার সকালে কালিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর ছোটকালিয়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সভায় তিনি এই ঘোষণা দেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কালিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরদার আনোয়ার হোসেন, কালিয়া পৌর বিএনপির সহসভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, কালিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া মিঠু, জেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি এম রেজাউল করিম, বড়নাল-ইলিয়াছাবাদ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোল্যা খায়রুজ্জামান, নড়াইল পৌর বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মো. আজিজুর রহমান, কালিয়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাহিনুর ইসলাম মাহি, জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক এস এম ইকরাম রেজাসহ বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে অধ্যাপক নাগিব হোসেন বলেন, নড়াইল-১ আসনে বিএনপির যাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, তিনি জনবিচ্ছিন্ন একজন নেতা। তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর তেমন কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ কারণেই তিনি আগেও এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কাছে বড় ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। বারবার পরাজয়ের ফলে কালিয়ায় বিএনপি অনেকটা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

নাগিব হোসেন আরও বলেন, ‘আমিসহ প্রকৃত ত্যাগী বিএনপি নেতারা দল কিংবা ধানের শীষের বিপক্ষে নই। আমরা দলকে তৃণমূলে সুসংগঠিত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।’

দলের সর্বস্তরের নেতাদের সমর্থন পাওয়ায় একটি পরিবারের বিরাগভাজন হয়েছেন দাবি করে অধ্যাপক নাগিব বলেন, ওই পরিবারের সদস্য ও তাঁদের কয়েকজন অনুসারী তাঁকে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে নানা ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। বিষয়টি তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করেছেন।

অধ্যাপক নাগিব আরও বলেন, নির্বাচিত হলে এলাকার সড়ক যোগাযোগ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, দুর্নীতি নির্মূল, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, বেকার সমস্যা সমাধান, স্বনির্ভরতা অর্জন এবং মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নে কাজ করবেন।

উল্লেখ্য, নড়াইল-১ আসনে বিএনপির হাইকমান্ড ঘোষিত প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী জেলা সেক্রেটারি মাওলানা ওবায়দুল্লাহ কায়সার এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী মাওলানা আব্দুল আজিজ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত