জমির উদ্দিন, টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ থেকে
এক মাস আগে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উল্টে একটি করে পা হারায় দুই ছেলে। দুই শিশুর পা এখনো ব্যান্ডেজ মোড়ানো। দুর্ঘটনায় মায়ের ডান হাতে ক্ষত। এর মধ্যে খবর পান ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানবে। পা হারানো দুই ছেলে নিয়ে যেতে পারেননি আশ্রয়কেন্দ্রে। বাতাসে চাল উড়ে গেছে, ছোট ঝুপড়ি ঘরটিতে গাছ ভেঙে পড়েছে। কিন্তু দুই ছেলেকে বুকে আঁকড়ে ধরে রাত পার করেছেন মা। ছেলেদের গায়ে ঘূর্ণিঝড়ের এতটুকুও আঁচ লাগতে দেননি।
গল্পটি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুর জাহান বেগমের। তাঁর নিয়তিই যেন এক দুর্যোগ। গত এক মাস আগে টেকনাফ থেকে বাড়িতে আসার পথে ব্যাটারিচালিত রিকশা উল্টে যায়। এতে নুরজাহান বেগমের ডান হাতে ক্ষত হয়। এখনো ওই হাতে ভারী কোনো কাজ করতে পারেন না তিনি। চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে তিন ছেলেই দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে গেছে। কেবল ছোট মেয়েই সুস্থ।
পাঁচ বছরের রমজান শরীফের বাম পা কোমর পর্যন্ত পুরোটা কেটে ফেলতে হয়েছে। তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুরেরও বাম পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোমর পর্যন্ত ব্যান্ডেজ মোড়ানো, পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত কাটা। সবার বড় রশিদ আহমেদ। তারও বাম পায়ে রড লাগানো। ২ বছর আগে স্কুলের ছাদ থেকে পড়ে বাম পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনো পুরোপুরি হাঁটতে পারে না সে।
অসুস্থ তিন ছেলেকে নিয়ে কীভাবে মা নুরজাহান বেগম যাবেন আশ্রয়কেন্দ্রে। তাই সন্তানদের জন্য ঘরেই থেকে যান। স্বামী মো. ইউনুচেরও একই অবস্থা। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন।
মোখার তাণ্ডবলীলা দেখেছেন নুরজাহান বেগম। বর্ণনা দিয়েছেন আজকের পত্রিকাকে। তিনি বলেন, ‘মোখার আঘাত হানার খবর জানতাম। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টাও করেছি। কিন্তু দুই ছেলে অসুস্থ হওয়ায় যেতে পারিনি। প্রতি মুহূর্তে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। গতকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে বাতাস শুরু হয়। দুপুরের পর বাতাসের গতি বেড়ে যায়। তিনটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাতাসের তীব্রতা এত বেশি ছিল; ঘরের মধ্যেই চিৎকার করেছি। কিন্তু পাশের লোকজন কেউ শোনেনি।’
নুরজাহান বেগম বলেন, ‘ঝড়ে ঘরের চাল উড়ে যায়। এ সময় গাছের ডাল সোজা গায়ের ওপর পড়ে। ডান হাত ভাঙা, এরপর আবারও আঘাত। মাথার ওপর ছাদ না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজে যাই। প্রায় ৬ ঘণ্টা দুই ছেলেকে বুকে আঁকড়ে রাখি। গায়ের ওপর বৃষ্টি পড়েছে, গাছের ডাল পড়েছে, তবুও সন্তানদের ছাড়িনি।’
নুরজাহান বেগম বলেন, ‘গতকাল থেকে আজ সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জল ছাড়া কিছুই মুখে পড়েনি। প্রশাসনের লোকজনও এসে কোনো সাহায্য করেনি।’
নুরজাহান বেগমের প্রতিবেশী ফাতেমা বেগম। তাঁর স্বামী কথা বলতে পারেন না। চার ছেলে ও মেয়ে। ছোট ছেলেটির বয়স দুই বছর। তাঁদের ঘর পুরোটা মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। রাত কাটিয়েছেন খোলা আকাশের নিচে। প্রতিবেশী কেউ কেউ শুকনো খাবার দিয়েছেন। তবে তা অপ্রতুল। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদক।
ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী বাক্প্রতিবন্ধী। দিনমজুরের কাজ করে। মালিক যা দেয় তা দিয়ে সংসার চলে। মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁইটিও নিয়ে গেছে মোখা। স্বামী দুদিন ঘরে বসে থাকায় খাওয়া-দাওয়াও কিছু হয়নি।’
আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে কীভাবে যাব? কোলে ছোট বাচ্চা। বাকি তিন ছেলেও ছোট। মনে করেছিলাম কিছু হবে না। কিন্তু গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যে তাণ্ডবলীলা চলেছে মনে হচ্ছিল সবাই মারাই যাব।’
শুধু নুরজাহান কিংবা ফাতেমা বেগম নন। শাহপরীর দ্বীপের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ২ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত এক হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ আসেনি বলে দাবি তাঁদের।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ওয়ার্ডে ২ হাজার পরিবার বসবাস। ঘূর্ণিঝড়ে সবারই বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তালিকা করছি, সবাইকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কাজ চলছে।’
এক মাস আগে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উল্টে একটি করে পা হারায় দুই ছেলে। দুই শিশুর পা এখনো ব্যান্ডেজ মোড়ানো। দুর্ঘটনায় মায়ের ডান হাতে ক্ষত। এর মধ্যে খবর পান ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত হানবে। পা হারানো দুই ছেলে নিয়ে যেতে পারেননি আশ্রয়কেন্দ্রে। বাতাসে চাল উড়ে গেছে, ছোট ঝুপড়ি ঘরটিতে গাছ ভেঙে পড়েছে। কিন্তু দুই ছেলেকে বুকে আঁকড়ে ধরে রাত পার করেছেন মা। ছেলেদের গায়ে ঘূর্ণিঝড়ের এতটুকুও আঁচ লাগতে দেননি।
গল্পটি টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নুর জাহান বেগমের। তাঁর নিয়তিই যেন এক দুর্যোগ। গত এক মাস আগে টেকনাফ থেকে বাড়িতে আসার পথে ব্যাটারিচালিত রিকশা উল্টে যায়। এতে নুরজাহান বেগমের ডান হাতে ক্ষত হয়। এখনো ওই হাতে ভারী কোনো কাজ করতে পারেন না তিনি। চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে তিন ছেলেই দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে গেছে। কেবল ছোট মেয়েই সুস্থ।
পাঁচ বছরের রমজান শরীফের বাম পা কোমর পর্যন্ত পুরোটা কেটে ফেলতে হয়েছে। তার বড় ভাই আব্দুস শুক্কুরেরও বাম পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কোমর পর্যন্ত ব্যান্ডেজ মোড়ানো, পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত কাটা। সবার বড় রশিদ আহমেদ। তারও বাম পায়ে রড লাগানো। ২ বছর আগে স্কুলের ছাদ থেকে পড়ে বাম পা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনো পুরোপুরি হাঁটতে পারে না সে।
অসুস্থ তিন ছেলেকে নিয়ে কীভাবে মা নুরজাহান বেগম যাবেন আশ্রয়কেন্দ্রে। তাই সন্তানদের জন্য ঘরেই থেকে যান। স্বামী মো. ইউনুচেরও একই অবস্থা। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়ে আছেন।
মোখার তাণ্ডবলীলা দেখেছেন নুরজাহান বেগম। বর্ণনা দিয়েছেন আজকের পত্রিকাকে। তিনি বলেন, ‘মোখার আঘাত হানার খবর জানতাম। আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টাও করেছি। কিন্তু দুই ছেলে অসুস্থ হওয়ায় যেতে পারিনি। প্রতি মুহূর্তে নিজের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি। গতকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে বাতাস শুরু হয়। দুপুরের পর বাতাসের গতি বেড়ে যায়। তিনটা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাতাসের তীব্রতা এত বেশি ছিল; ঘরের মধ্যেই চিৎকার করেছি। কিন্তু পাশের লোকজন কেউ শোনেনি।’
নুরজাহান বেগম বলেন, ‘ঝড়ে ঘরের চাল উড়ে যায়। এ সময় গাছের ডাল সোজা গায়ের ওপর পড়ে। ডান হাত ভাঙা, এরপর আবারও আঘাত। মাথার ওপর ছাদ না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজে যাই। প্রায় ৬ ঘণ্টা দুই ছেলেকে বুকে আঁকড়ে রাখি। গায়ের ওপর বৃষ্টি পড়েছে, গাছের ডাল পড়েছে, তবুও সন্তানদের ছাড়িনি।’
নুরজাহান বেগম বলেন, ‘গতকাল থেকে আজ সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জল ছাড়া কিছুই মুখে পড়েনি। প্রশাসনের লোকজনও এসে কোনো সাহায্য করেনি।’
নুরজাহান বেগমের প্রতিবেশী ফাতেমা বেগম। তাঁর স্বামী কথা বলতে পারেন না। চার ছেলে ও মেয়ে। ছোট ছেলেটির বয়স দুই বছর। তাঁদের ঘর পুরোটা মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। রাত কাটিয়েছেন খোলা আকাশের নিচে। প্রতিবেশী কেউ কেউ শুকনো খাবার দিয়েছেন। তবে তা অপ্রতুল। তাঁর সঙ্গে কথা বলেন আজকের পত্রিকার এই প্রতিবেদক।
ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী বাক্প্রতিবন্ধী। দিনমজুরের কাজ করে। মালিক যা দেয় তা দিয়ে সংসার চলে। মাথা গোঁজার একমাত্র ঠাঁইটিও নিয়ে গেছে মোখা। স্বামী দুদিন ঘরে বসে থাকায় খাওয়া-দাওয়াও কিছু হয়নি।’
আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আশ্রয়কেন্দ্রে কীভাবে যাব? কোলে ছোট বাচ্চা। বাকি তিন ছেলেও ছোট। মনে করেছিলাম কিছু হবে না। কিন্তু গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত যে তাণ্ডবলীলা চলেছে মনে হচ্ছিল সবাই মারাই যাব।’
শুধু নুরজাহান কিংবা ফাতেমা বেগম নন। শাহপরীর দ্বীপের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ২ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এদের মধ্যে অন্তত এক হাজার মানুষ খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ আসেনি বলে দাবি তাঁদের।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুস সালাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ ওয়ার্ডে ২ হাজার পরিবার বসবাস। ঘূর্ণিঝড়ে সবারই বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা তালিকা করছি, সবাইকে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কাজ চলছে।’
রাজধানীর ফকিরাপুলে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় মতিন মিয়া (৩৫) নামে এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফকিরাপুল মোড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।
২৪ মিনিট আগেনারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মারীখালী নদী থেকে অজ্ঞাত এক নারীর হাত-পা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার দুপুরে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের জিয়ানগর এলাকায় মারীখালি নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেআলু সংরক্ষণ করা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বগুড়ার কৃষকেরা। পর্যাপ্ত হিমাগার না থাকায় কৃষকের বাড়িতেই আলু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে কম দামে আলু বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক। যে কারণে আলু চাষ করে লোকসান গুনতে হচ্ছে এই অঞ্চলের কৃষকদের।
১ ঘণ্টা আগেগাজীপুরের শ্রীপুরে ঘুমন্ত মাদকাসক্ত ছেলেকে ধারালো বটি দিয়ে গলা কেটে হত্যার পর থানায় এসে বৃদ্ধ বাবা আত্মসমর্পণ করেছেন। মাদকাসক্ত ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে এঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বৃদ্ধ বাবা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন মণ্ডল।
১ ঘণ্টা আগে