Ajker Patrika

হাত-পা বেঁধে বস্তায় ঢুকে পানিতে ভেসে থাকেন মোসাদ্দেক

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
হাত-পা বেঁধে বস্তায় ঢুকে পানিতে ভেসে থাকেন মোসাদ্দেক

হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা। পুরো শরীর ঢোকানো বস্তার ভেতরে। এভাবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে ভাসতে পারেন রাজশাহীর মোসাদ্দেক হোসেন বাচ্চু। শুধু তা-ই নয়, হাত-পা না নাড়িয়ে পানির ওপর ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুয়ে থাকতে পারেন তিনি। হাত-পা বেঁধে দিলেও কাটতে পারেন সাঁতার। ৭১ বছর বয়সী মোসাদ্দেক রাজশাহী নগরীর তেরোখাদিয়া মহল্লার বাসিন্দা।

মোসাদ্দেকের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দাদনচক গ্রামে। ছোটবেলায় ওই গ্রামেই পদ্মার একটি নালায় সাঁতার শেখেন তিনি। ১৯৮১ সালের দিকে মোসাদ্দেক যখন যুবক, তখন হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটা এবং বস্তায় ঢুকে ভেসে থাকার কৌশল রপ্ত করেন। চাকরির সুবাদে রাজশাহী চলে আসার পর আর সেভাবে সাঁতার কাটা হতো না। চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর কয়েক মাস ধরে আবার তাঁর সাঁতারের প্রতি ঝোঁক বেড়েছে। সাঁতারের পাশাপাশি ছেলেবেলায় ফুটবল, ক্রিকেট ও হ্যান্ডবল ভালো খেলতেন মোসাদ্দেক।

সম্প্রতি মোসাদ্দেক হোসেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আহমেদের কাছে গিয়ে তাঁর সাঁতারের দক্ষতার কথা জানান। তখন জেলা প্রশাসক তাঁর সাঁতার দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। গতকাল শনিবার বিকেলে রাজশাহী জেলা সুইমিং পুলে মোসাদ্দেক হোসেন জেলা প্রশাসককে সাঁতার কেটে দেখান। জেলা প্রশাসক মোসাদ্দেকের পানিতে ভেসে থাকা এবং হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটা দেখেন। তবে তিনি নিরাপত্তার কথা ভেবে হাত-পা বেঁধে বস্তায় ঢুকে ভেসে থাকা দেখতে চাননি। যদিও মোসাদ্দেকের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলছিলেন, ‘ভয় নেই।’

বস্তায় ভেসে থাকা মোসাদ্দেকজেলা প্রশাসক চলে যাওয়ার পর মোসাদ্দেক হোসেন বস্তায় ঢুকেও পানিতে ভেসে থাকা দেখান। ওই সময় পানিতে নামানোর আগে মোসাদ্দেকের হাত-পা নাইলনের দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। তারপর তাঁকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় প্লাস্টিকের বস্তায়। মাথার ওপর বস্তার মুখও বেঁধে দেওয়া হয়। শ্বাস নেওয়ার জন্য মুখের সামনের অংশের বস্তাটুকু কেটে দেওয়া হয়। তারপর কয়েকজন মিলে বস্তাসহ মোসাদ্দেককে পুলের পানিতে ভাসিয়ে দেয়। নিরাপত্তার জন্য সুইমিং পুলের কয়েকজন সাঁতারু তাঁকে ঘিরে রাখেন। তবে কারও সহায়তা প্রয়োজন হয়নি মোসাদ্দেকের। তিনি ভেসে থাকেন পানিতে। প্রায় ৩০ মিনিট পর উপস্থিত দর্শকেরা মোসাদ্দেককে তুলে আনতে বলেন। তখন কয়েকজন মিলে তাঁকে পানি থেকে তুলে আনেন। মোসাদ্দেকের দাবি, এভাবে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে ভেসে থাকতে পারবেন।

মোসাদ্দেক বলেন, ‘যুবক বয়সে গ্রামে নিজেদের মধ্যে সাঁতারের প্রতিযোগিতা হতো। তখনই আমি হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতাম। আমার সঙ্গে যারা হাত-পা না বেঁধে সাঁতার কাটত, তারাও আমার সঙ্গে পারত না।’ তিনি বলেন, ‘একটু ব্যতিক্রম না হলে আমার সাঁতার মানুষকে আকর্ষণ করবে না। কেউ সাঁতার দেখবেও না। তাই একটু আকর্ষণীয় করতে গিয়েই আমি এভাবে সাঁতার শিখেছি। প্রথমবার বস্তায় ঢুকেছিলাম ১৯৮১ সালের ২৯ মে।’

হাত-পা না নাড়িয়ে পানিতে ভেসে আছেন তিনিমোসাদ্দেকের এই সাঁতার দেখতে এসেছিলেন গোলাম মাওলা। তিনি বলেন, ‘তিন বছর আগে মোসাদ্দেক হোসেনের সঙ্গে আমার পরিচয়। সম্প্রতি একদিন দুজন স্টেডিয়ামে বসে গল্প করছিলাম। তখন তিনি বলেন, মাঠ থেকে তিনি বল মেরে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটের বাল্ব ভেঙে দিতে পারবেন। সারা দিন হ্যান্ডবল খেললেও বল পড়বে না। হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতে পারেন। বস্তায় ঢুকেও ভেসে থাকতে পারেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। তাঁর কথা শুনে আমি অবাক হয়ে যাই। তারপর পরীক্ষা করতে গত ১৬ মে পদ্মা নদীতে নিয়ে যাই। সেখানে স্ত্রী মমতাজ বেগমের উপস্থিতিতে হাত-পা বেঁধে নদীর উজানে সাঁতার কাটেন মোসাদ্দেক। হাত-পা বেঁধে বস্তায় ঢুকিয়ে দেওয়া হলেও তিনি ভেসে থাকেন।’

মোসাদ্দেকের স্ত্রী মমতাজ বেগম বলেন, ‘আমাদের ৪০ বছরের দাম্পত্য জীবন। বিয়ের আগে তিনি এভাবে সাঁতার কাটতেন। সকাল ৭টায় পানিতে নেমে সন্ধ্যা ৭টায় উঠেছেন। বিয়ের পর আর সাঁতার কাটতেন না। কিছুদিন ধরে তিনি আবার সাঁতার কাটা শুরু করেছেন। হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বস্তায় ঢুকে তিনি পানিতে ভেসে থাকলেও ভয় লাগে না। কারণ তিনি এটা পারেন।’

সাঁতারে নামার আগে মোসাদ্দেককে বস্তায় ভরা হয়জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ এদিন নিরাপত্তার কথা ভেবে তাঁর উপস্থিতিতে মোসাদ্দেককে বস্তায় ঢুকে পানিতে ভাসতে দেননি। তবে তাঁর পানিতে ভেসে থাকা এবং হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটা উপভোগ করেন। জেলা প্রশাসক বলেন, ‘এই বয়সে মোসাদ্দেক যা দেখালেন তা প্রশংসনীয়। আমরা মনে করি, সাধারণ সাঁতারুদের চেয়ে তিনি অসাধারণ। ৭১ বছর বয়সেও যদি তিনি এভাবে সাঁতার কাটতে পারেন, তাহলে যুবক বয়সে আরও ভালো পারতেন নিশ্চয়ই। এখন তাঁর বয়স হয়েছে, তিনি যেন ডাক্তারি পরামর্শ গ্রহণ করেই সাঁতার কাটেন। আমরা যারা দেখব, তাঁকে উৎসব দেব। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থাটাও বিবেচনায় রাখব।’

মোসাদ্দেক হোসেনের ছেলে সফিউল্লাহ সুলতান রাজশাহীর বাঘা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। মেয়ে মুসলিমা খাতুন জনতা ব্যাংকের কর্মকর্তা। মোসাদ্দেক হোসেন রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের প্রধান সহকারী ছিলেন। ২০১৬ সালের অক্টোবরে অবসর নিয়েছেন। মোসাদ্দেকের সাঁতারের দক্ষতা একদিন গিনেস বুকে জায়গা করে নেবে, এটি তাঁর আশা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বিকাশ ও নগদ ছাড়াই দেশে আন্তএমএফএস লেনদেন চালু

টানা তৃতীয়বার জামায়াতের আমির হলেন শফিকুর রহমান

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

রাজশাহীতে ‘বই পড়ি, স্বপ্ন আঁকি’ স্লোগানে বুক অলিম্পিয়াড

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শিশু-কিশোরদের মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করার লক্ষ্যে ‘বই পড়ি, স্বপ্ন আঁকি’ স্লোগানে রাজশাহীর পবা উপজেলার নওহাটা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড। গতকাল শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে মুক্ত আসরের উদ্যোগে বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড কমিটি এই আয়োজন করে।

বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক রহমান রাজু।

অধ্যাপক রহমান রাজু বলেন, বুক অলিম্পিয়াড একটি স্বপ্ন অভিযাত্রা, যেখানে স্বপ্নের ডানা মেলার আয়োজন নিহিত রয়েছে। এই আয়োজনের মধ্যে লুকিয়ে আছে আগামীর সম্ভাবনার বীজ। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পাঠপ্রেম জাগিয়ে তোলার পাশাপাশি এটি সমাজে জ্ঞাননির্ভর, প্রগতিশীল ও মানবিক মনন গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। চিন্তা ও বুদ্ধির সমন্বয়ে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে এবং নির্মাণের পথে এগিয়ে নিতে বুক অলিম্পিয়াড এক অনন্য উদ্যোগ।

রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আজিজুর রহমান দীপু বলেন, বুক অলিম্পিয়াড বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার এক অসাধারণ উদ্যোগ। ক্লাসের বই অনেক সময় বাধ্য হয়েই পড়া হয়, কিন্তু বুক অলিম্পিয়াড শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ের গণ্ডি পেরিয়ে জ্ঞানের নতুন দিগন্তে নিয়ে যাবে। এই বই পড়া অভ্যাসই তাদের মানবিক ও চিন্তাশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে।

নওহাটা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. ওমর আলী আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ জাগিয়েছে, যা ভবিষ্যতে তাদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়তা করবে।

বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াড কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ বলেন, ‘সারা দেশে বুক অলিম্পিয়াডের আলোকছটা ছড়িয়ে দিতে আমরা রাজশাহীতে এই আয়োজন করেছি। বইয়ের ভেতরেই লুকিয়ে আছে জ্ঞানের আলো আর সেই আলোকে প্রতিটি শিক্ষার্থী ও প্রান্তিক অঞ্চলে পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছি।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. আজিজুর রহমান দীপু, নওহাটা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম, জালাল উদ্দিন, আকতার ফারুক, সার্ক কৃষিকেন্দ্রের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার ও বাংলাদেশ বুক অলিম্পিয়াডের যোগাযোগবিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক আবুল বাশার মিরাজ, লেখক সুফিয়া ডেইজি প্রমুখ।

অনুষ্ঠানটির সহযোগী হিসেবে ছিল স্বপ্ন ’৭১ প্রকাশন, বইচারিতা, কাঠবিড়ালি প্রকাশন ও শব্দঘর।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বিকাশ ও নগদ ছাড়াই দেশে আন্তএমএফএস লেনদেন চালু

টানা তৃতীয়বার জামায়াতের আমির হলেন শফিকুর রহমান

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির দায়ে জরিমানা

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অভিযান। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির দায়ে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

রোববার (২ নভেম্বর) বিকেল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত সদর উপজেলার বাগমামুদালিপাড়া এলাকায় অভিযান চালান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মুন্সিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আসিফ আল আজাদ।

এ সময় সহকারী পরিচালক বলেন, রেইনবো মিনি সুপার শপে বিভিন্ন ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য বিক্রির জন্য প্রদর্শন ও সংরক্ষণ করায় দোকানটির মালিক মো. মাসুফ উদ্দিনকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এ ছাড়া তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয়, ভবিষ্যতে দোকানে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য সংরক্ষণ বা বিক্রি করা যাবে না।

অভিযানে সহযোগিতা করেন উপজেলা স্যানিটারি পরিদর্শক মো. জামাল উদ্দিন মোল্লা ও ব্যাটালিয়ন আনসারের একটি টিম।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বিকাশ ও নগদ ছাড়াই দেশে আন্তএমএফএস লেনদেন চালু

টানা তৃতীয়বার জামায়াতের আমির হলেন শফিকুর রহমান

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

অনার্সে ফরম পূরণে টাকা বাড়ানোর প্রতিবাদে বিএম কলেজে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা
শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন। ছবি: আজকের পত্রিকা

অনার্স তৃতীয় বর্ষে ফরম পূরণে এ বছর ২ থেকে ৩ হাজার টাকা বাড়িয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণে এমন অস্বাভাবিক ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা।

রোববার (২ নভেম্বর) কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন শেষে কলেজের অধ্যক্ষের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ৫ দফা দাবিসংবলিত স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

দাবিগুলো হলো—জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম পূরণের অযৌক্তিক ও অতিরিক্ত ফি কমাতে হবে; মানোন্নয়ন ফি কমাতে হবে, পুনর্নিরীক্ষণ ফি কমাতে হবে, উত্তরপত্রের যথাযথ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা খাতে সরকারি ভর্তুকি বৃদ্ধি করতে হবে।

এ প্রসঙ্গে বিএম কলেজের সমাজকর্ম তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সাইফুল ইসলাম বলেন, গত ২৮ অক্টোবর থেকে ফরম পূরণ শুরু হয়েছে। এটি চলবে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এ বছর নানা খাতে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা ফি বৃদ্ধি করেছে। তাঁকে দিতে হবে ৭ হাজার ১০০ টাকা। বিজ্ঞান বিভাগে ৯ হাজার টাকা; যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এত অর্থ মেটানো সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে সম্ভব নয় বলে জানান সাইফুল।

অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আগের চেয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ৩ হাজার টাকা ফি বাড়িয়েছে। আমরা চাই আগের প্রচলিত ফি নির্ধারিত থাক। ফি কমানো না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।’ একই কথা জানিয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মেহেদী তানজিল, দর্শনের সুমি আক্তার।

এ ব্যাপারে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. তাজুল ইসলাম বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ফি বাড়িয়েছে। নিয়মিত ছাত্রদের ক্ষেত্রে প্রায় ২ হাজার এবং অনিয়মিত ছাত্রদের ক্ষেত্রে আরও বেশি ফি ধরা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা তাঁর কাছে এসে ফরম পূরণের ফি পরিশোধে তাঁদের কষ্টের কথা জানিয়েছেন। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ছাত্রছাত্রীদের স্মারকলিপি পাঠিয়ে দিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বিকাশ ও নগদ ছাড়াই দেশে আন্তএমএফএস লেনদেন চালু

টানা তৃতীয়বার জামায়াতের আমির হলেন শফিকুর রহমান

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বরিশালে আ.লীগ ও জাপার ৯ নেতা-কর্মী কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশালে আ.লীগ ও জাপার ৯ নেতা-কর্মী কারাগারে

বরিশালে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ৯ জন নেতা-কর্মীকে আজ রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার মামলায় জাতীয় পার্টির চারজন এবং হিজলা উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় আওয়ামী লীগের পাঁচজন নেতা-কর্মী রয়েছেন।

একই দিন বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মহাসিনুল ইসলাম হাবুলের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) ইসরাত জাহান এই আদেশ দিন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুল ইসলাম জানান, জেলহাজতে পাঠানো জাতীয় পার্টির চার নেতা-কর্মী হলেন—আক্তার রহমান সপ্রু, মো. জুম্মান, রফিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩১ মে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর সদর রোড এলাকায় জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-মিছিল করে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ স্লোগান না দেওয়ার অনুরোধ জানালে উভয় পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের বরিশাল মহানগরের সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম সাগর বাদী হয়ে দুই থেকে আড়াই শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় চার নেতাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে অপর এক মামলায় হিজলা উপজেলায় বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা-কর্মীকে। তাঁরা হলেন—মো. শাহাবুদ্দিন পণ্ডিত, মোশারফ হোসেন তালুকদার, লিয়াকত কাজী, হুমায়ুন কবির ও ইলিয়াস মোল্লা। চলতি বছরের ২২ জুলাই হিজলা উপজেলা বিএনপি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শিক্ষিকা থাকেন ঢাকায়, খালিয়াজুরীতে তাঁর নামে স্বাক্ষর করেন স্নাতকপড়ুয়া

দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে কারখানায় মিলল ৬ দিন আগে নিখোঁজ তরুণ-তরুণীর লাশ

বিকাশ ও নগদ ছাড়াই দেশে আন্তএমএফএস লেনদেন চালু

টানা তৃতীয়বার জামায়াতের আমির হলেন শফিকুর রহমান

বাবার ব্যবসায়িক সমস্যায় জামায়াত প্রার্থীর সিদ্ধান্তে নাখোশ শিবির নেতার পদত্যাগ

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত