Ajker Patrika

ইউটিউব দেখে শেখা, এখন সফল ড্রাগন ফল চাষি

সাদ্দাম হোসেন, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৩, ১৩: ৫৬
ইউটিউব দেখে শেখা, এখন সফল ড্রাগন ফল চাষি

বছর দুয়েক আগের কথা। ইউটিউব দেখেই শেখা হয় ড্রাগন ফল চাষের খুঁটিনাটি। এরপর শখের বশে  ১০০ পিলার দিয়ে শুরু হয় চাষ। শুরুতে শখ হলেও এখন প্রায় সাত বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে চাষ করেন ড্রাগন ফল। নিজের ড্রাগন ফলচাষি হয়ে ওঠার পেছনের কথাগুলো বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আসমা বেগম।

ইচ্ছা আর অদম্য চেষ্টা থাকলে কোনো কাজই যে অসম্ভব নয় তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন আসমা বেগম। দুই বছরের অদম্য চেষ্টায় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ করে পেয়েছেন ব্যাপক সফলতা। পরিচিত ফসল চাষের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে ড্রাগন ফলের চাষ করে উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের আদমপুর এলাকায় আলোড়ন তুলেছেন তিনি। পথ দেখাচ্ছেন বেকার যুবক-যুবতীদের।

সরেজমিন দেখা গেছে, ১০০ পিলার দিয়ে ড্রাগন চাষ শুরু করেছিলেন আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের মো. ইদ্রিস মিয়ার মেয়ে আসমা বেগম। বর্তমানে সাড়ে সাত বিঘা জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন চাষ করেন তিনি। বাগানে ৭০০ পিলারে সাড়ে ৬ হাজার ড্রাগন গাছ রয়েছে তাঁর।

আসমা জানান, নিবিড় পরিচর্যায় চারাগুলোতে ফুল-ফল দেওয়া শুরু হয়। নিজের চাহিদা মিটিয়ে সুমিষ্ট ও সুস্বাদু এ ফল বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায়, ভালো দামও পাচ্ছেন তিনি। তাঁর চাষ দেখে এলাকার অন্যদের মাঝে ড্রাগন ফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে। প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে উৎসুক মানুষ তাঁর এই ড্রাগন ফলের বাগান দেখতে আসছেন। বর্তমানে তাঁর বাগানের প্রতিটি গাছে শোভা পাচ্ছে হলুদ ও লাল রঙের ড্রাগন ফল। 

তিনি আরও জানান, রোগবালাই কম হওয়ার পাশাপাশি চাষ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় এবং বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় বিদেশি এ ফল চাষে এরই মধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এলাকার অন্য চাষিরা। চলতি মৌসুমে বাণিজ্যিকভাবে ড্রাগন বাজারজাত শুরু করেছেন এই নারী উদ্যোক্তা। এ বছরে ৫ লাখ টাকার ড্রাগন বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তিনি।

আসমা বেগমের ড্রাগন ফলের বাগানআসমার প্রবাসফেরত স্বামী দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বিদেশে থাকা অবস্থায় আমার স্ত্রী একদিন আমাকে বললেন ড্রাগন ফলের বাগান করবেন। প্রথমে আমি মানা করলেও স্ত্রীর আগ্রহ দেখে পরে রাজি হলাম। বর্তমানে তাঁর বাগানে দুজন কর্মচারী কাজ করছেন।’  

মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের এত সুন্দর একটি ব্যতিক্রম উদ্যোগ দেখে আমিও খুশি। আসলেই নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই, তার প্রমাণ আসমা বেগম।’ 

আসমার এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এলাকার অনেকেই। নিজের ইতিবাচক চেতনা আর পরিশ্রমে পাল্টে গেছে সমাজের চিত্র। কৃষি কাজে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এই নারী উদ্যোক্তা। নিয়মিত ড্রাগন চাষে অন্যদেরও উৎসাহ দিচ্ছেন আসমা। মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও খামারিদের বিদেশি ফল চাষের ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলতে পারলে একদিকে যেমন বিদেশি ফলের আমদানিনির্ভরতা কমে আসবে, অন্যদিকে ফল চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হতে পারবেন বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। 

ড্রাগন চাষে সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানা বেগম। তিনি আরও জানান, আখাউড়ায় প্রথম সাহসী একজন উদ্যোক্তা আসমা বেগম। এ উপজেলায় আসমার মতো ড্রাগন ফল চাষের জন্য আমরা অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করছি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

পাঁচ দাবিতে পল্টন মোড়ে জামায়াতসহ আট দলের গণসমাবেশ শুরু

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
পল্টনে সমাবেশ করছেন জামায়াতসহ ৮ দলের নেতাকর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টনে সমাবেশ করছেন জামায়াতসহ ৮ দলের নেতাকর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ পাঁচ দাবিতে রাজধানীর পল্টন মোড়ে আট দলের গণসমাবেশ শুরু হয়েছে। সমাবেশ সঞ্চালনা করছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

পল্টন মোড়ে তিনটি পিকআপ ভ্যান একসঙ্গে করে মঞ্চ বানানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টা থেকে সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের ভিড় বাড়তে শুরু করে। ঢাকা ও আশপাশের এলাকাগুলো থেকে মিছিল নিয়ে আসেন নেতাকর্মীরা। সমাবেশে উপস্থিত রয়েছেন আটটি দলের প্রধান নেতারা।

দুপুর ২টায় কোরআন তিলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে এই সমাবেশ শুরু হয়। কোরআন তিলাওয়াতের পর সংগীত পরিবেশন করে মহানগর শিল্পীগোষ্ঠী।

এদিকে এ সমাবেশের ফলে পল্টনের আশপাশের এলাকায় কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যাওয়া অনেকেই দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। গুলিস্তানে অফিসগামী হানিফ মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, অফিস-আদালত খোলা দিনে এমন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এমন সমাবেশ কাম্য নয় ৷ এইসব বড় সমাবেশ উন্মুক্ত খোলা জায়গায় আয়োজন করা উচিত।

পল্টনে সমাবেশ করছেন জামায়াতসহ ৮ দলের নেতাকর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টনে সমাবেশ করছেন জামায়াতসহ ৮ দলের নেতাকর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এর আগে দলগুলো জানায়, সমাবেশ উপস্থিত থাকবেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করিম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাও. সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) সিনিয়র সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, খেলাফত মজলিসের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট পার্টির সভাপতি এ্যডভোকেট আনোয়ারুল হক চাঁন।

দলগুলোর পাঁচ দফা দাবি হলো—জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

পল্টনে সমাবেশ করছেন জামায়াতসহ ৮ দলের নেতাকর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
পল্টনে সমাবেশ করছেন জামায়াতসহ ৮ দলের নেতাকর্মীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বসতঘরে স্বামী ও স্ত্রীর লাশ, এলাকায় চাঞ্চল্য

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
নিহত হওয়ার ঘটনাস্থলে উৎসুক মানুষের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নিহত হওয়ার ঘটনাস্থলে উৎসুক মানুষের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মহিপুরে একটি বসতঘর থেকে স্বামী সিরাজউদ্দিন খান (৭৫) ও তাঁর স্ত্রী আকলিমা বেগমের (৬৫) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে মহিপুর থানার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের পেয়ারপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিরাজউদ্দিনের বাড়ি পাশের মহিপুর ইউনিয়নের মোয়াজ্জেমপুর গ্রামে হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে পেয়ারপুর গ্রাম-সংলগ্ন আন্ধারমানিক নদে খেয়া (নৌকা) চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সেখানেই নদীর তীরে একটি ঝুপড়িতে স্ত্রী আকলিমাকে নিয়ে বসবাস করতেন।

প্রতিদিনের মতো ফজরের নামাজে না যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা সকাল ৬টার দিকে খোঁজ নিতে যান। ঘরের সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে তাঁরা ভেতরে ঢুকে চৌকিতে আকলিমার ও নিচে সিরাজউদ্দিনের মরদেহ দেখতে পান। স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য, সিরাজউদ্দিনের গলার নিচে ও শরীরে কালো দাগ এবং আকলিমার শরীরে রক্তাক্ত চিহ্ন দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা বাদল তালুকদার বলেন, ‘সকালে ফজরের নামাজ পড়তে যাওয়ার সময় সিরাজউদ্দিনকে না দেখে আমি তাঁদের ঘরে যাই। দেখি, সিরাজউদ্দিন মাটিতে পড়ে আছেন আর তাঁর স্ত্রী চৌকিতে শুয়ে আছেন। পরে আমার চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসে।’

এ বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে সিআইডি টিম তদন্ত শুরু করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালীর মর্গে পাঠানো হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গরু চুরি করে পালানোর সময় গণপিটুনি: একজন নিহত, আহত ৭

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
গণপিটুনিতে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গণপিটুনিতে আহত ব্যক্তিরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে গরু চুরি করে পালানোর সময় গণপিটুনিতে শামিম মিয়া (৪২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ওই চক্রের আরও সাতজন। আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে মুকসুদপুর উপজেলার পশারগাতী ইউনিয়নের হাজীবাগ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত শামিম মিয়া গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ফুলারপাড় গ্রামের মুন্নু মিয়ার ছেলে। জানা গেছে, নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার ভোরের দিকে মুকসুদপুর উপজেলার লখাইড়চর গ্রামের ঝিল্লু কাজীর বসতবাড়ির গোয়ালঘর থেকে একটি গাভি ও একটি বাছুর চুরি করে ট্রাকে নিয়ে পালিয়ে যেতে থাকে আট সদস্যের একটি গরুচোর চক্র। এ সময় ট্রাকটি উপজেলার পশারগাতী ইউনিয়নের হাজীবাগ গ্রামে পৌঁছালে স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ হলে তারা গরুসহ আট চোরকে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে খবর পেয়ে মুকসুদপুর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।’

ওসি মোস্তফা কামাল আরও বলেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামিম মিয়াকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মারাত্মক আহত লিটন, সুমন হাওলাদার, ইলিয়াছ সরদার, ফারুক শেখ, সোহাগ, বিপ্লব সরকার ও ফয়সাল মিয়া পুলিশি পাহারায় মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

যারা সংস্কার বাধাগ্রস্ত করছে, তাদের সঙ্গে এনসিপির জোট সম্ভব নয়: হাসনাত আবদুল্লাহ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডে এনসিপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা
নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডে এনসিপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি: আজকের পত্রিকা

এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণ) হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘আমাদের নাহিদ ইসলাম স্পষ্ট করে বলেছেন, যারা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নেবে, আমরা তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে পারি। সংস্কারের পক্ষে, ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষের শক্তিগুলো যদি আমাদের সঙ্গে আসতে চায়, তাদের সঙ্গে জোট করতে পারি। কিন্তু যারা দেশের সংস্কার কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে, তাদের সঙ্গে এনসিপির কোনো নির্বাচনী জোট সম্ভব নয়।’

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় নারায়ণগঞ্জ শহরের বিবি রোডে এনসিপির জেলা কার্যালয় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে এই মন্তব্য করেন তিনি। হাসনাত বলেন, ‘আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রার্থী তালিকা নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যেই প্রকাশ করা হবে। নাহিদ ইসলাম ইতিমধ্যে ১৫ নভেম্বরের কথা বলেছেন।’

আওয়ামী লীগের অগ্নিসন্ত্রাস প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশে অপ্রাসঙ্গিক। আমাদের সামনের দিকে ভাবতে হবে। আমরা দেখেছি টক শোতে আওয়ামী লীগের ল্যাসপেন্সার, ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী, সুবিধাভোগীরা আওয়ামী লীগের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করেছিল। কিন্তু গত দুই দিনের কার্যক্রমে বোঝা উচিত, তারা কখনো গণমানুষের দল ছিল না। আওয়ামী লীগের পতন ব্যালটে হয়নি, তাকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই। গণ-অভ্যুত্থান সংগঠিত তখনই হয়, যখন তার রাজনৈতিক অবস্থান ফুরিয়ে যায়। এ দলটিকে ফিরিয়ে আনার পক্ষে যারা বৈধতা উৎপাদন করছে, তারা মূলত আগুন-সন্ত্রাসের পক্ষে বৈধতা উৎপাদন করছে। তারা বুলেট, ব্যাংক লুট, গুম, খুন, মাইনরিটি নির্যাতনের পক্ষে বৈধতা দিচ্ছে।’

সংস্কারের বিষয়ে হাসনাত বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ফিরতে চাই। ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রতিটি দল-মতকে আমরা ধারণ করি। আবার যদি মধ্যরাতে ডিসি ভাগাভাগি হয়, পুলিশকে দাঁড় করিয়ে রেখে নির্বাচন হয়, নির্বাচন যদি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণের হাতিয়ার হয়, তাহলে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে না। আমরা চাই জনগণের ক্ষমতায়ন।’

গণমাধ্যম বিষয়ে হাসনাত বলেন, ‘সাংবাদিকদের মধ্যে একধরনের ব্যক্তি প্রোপাগান্ডা ও ফ্যাসিবাদের পক্ষে মতামত উৎপাদন করে। তারা আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার মতামত উৎপাদন করে। সাংবাদিকেরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও মিডিয়া মাফিয়ারা ব্যর্থ করতে চায়।’ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে হাসনাত বলেন, ‘প্রশাসনকে সতর্ক হতে হবে, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুসংহত যদি করতে না পারি, তাহলে কোনো সময়েই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব না।’

হাসনাত আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের যে ঐতিহ্য রয়েছে, সেটা রাজনৈতিকভাবে কলুষিত করা হয়েছে। গডফাদারের রাজনীতি এসব কলুষিত করেছে। এনসিপি নারায়ণগঞ্জে ঐতিহ্য অক্ষুণ্ন রেখে জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।

অনুষ্ঠানে এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল আমিনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আহমেদুর রহমান তনু, জাতীয় যুবশক্তির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তুহিন মাহমুদ প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত