Ajker Patrika

বগুড়ায় ১৫১ ধারায় চলছে গ্রেপ্তার-বাণিজ্য

  • সাত মাসে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে চার শতাধিক।
  • বেশির ভাগের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে পারেনি পুলিশ।
  • সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে গ্রেপ্তার ব্যক্তি।
গনেশ দাস, বগুড়া 
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৫, ০৮: ৩৯
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ার শাজাহানপুর থানা-পুলিশ ১ আগস্ট দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে টেঙ্গামাগুর এলাকা থেকে রনি আহমেদ নামের এক যুবককে আটক করে। পরদিন তাঁকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় পুলিশ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টহল পুলিশ দেখে ওই যুবক পালানোর সময় তাঁকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

জামিন শুনানিতে বিচারক আসামির অপরাধ জানতে চাইলে রনি জানান, সেবন করার উদ্দেশ্যে তাঁর কাছে দুটি ইয়াবা বড়ি ছিল। আসামির বক্তব্য এবং পুলিশ প্রতিবেদনে মিল না থাকায় বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরদিন তাঁকে জামিন দেন আদালত। ইয়াবা পাওয়ার পরেও ১৫১ ধারায় কেন চালান দেওয়া হলো, তা নিয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি আদালত পুলিশের সাধারণ রেকর্ড অফিসার (জিআরও) আশরাফুল ইসলাম। এদিকে রনিকে আটককারী শাজাহানপুর থানার এসআই আল আমিন বলেন, ‘ইয়াবা পাওয়া গেলে মাদক আইনে মামলা হবে। রনির কাছে কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।’

শুধু রনি নয়, বগুড়ায় গত সাত মাসে চার শতাধিক ব্যক্তিকে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। তাঁরা সবাই জামিনে মুক্ত হলেও কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে পারেনি পুলিশ। পাবলিক প্রসিকিউটর এবং মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, শুধু ঘুষের জন্য এ কাজ করছে পুলিশ।

এমন আরেকটি ঘটনা ঘটে গত ২১ জুলাই ভোরে। জেলার শেরপুর থানার মহিপুর ইউনিয়নের জামতলা গ্রামে ঘোরাফেরার সময় স্থানীয়রা শাহজামাল প্রামাণিক, শাহীন আহম্মেদ ও তরিকুল ইসলাম বিপ্লব নামের তিন যুবককে চোর সন্দেহ আটক করে পুলিশে দেয়। পুলিশ তাঁদের ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দেয়। ওদিনই আদালত থেকে তাঁরা জামিনে মুক্ত হন। এ ঘটনার ১৫ দিন পরেও শেরপুর থানা-পুলিশ ওই তিনজনের নামে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে পারেনি। ওই তিনজনকে গ্রেপ্তারকারী এসআই সারাফত জামান। তিনিও এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার তিনজনের বাড়ি শাজাহানপুর থানায়। তাঁদের সম্পর্কে জানতে চেয়ে শাজাহানপুর থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছে। বার্তার জবাবের ভিত্তিতে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বগুড়া জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল বাছেদের মতে, ‘যাঁকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়, তিনি যেমন সুবিধা পান, পাশাপাশি পুলিশও তাঁর কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে থাকে। পুলিশের চরিত্রে এখনো কোনো পরিবর্তন আসেনি।’

আর মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সদরুল আনাম রঞ্জু বলেন, ‘১৫১ ধারা নিয়ে পুলিশ রীতিমতো বাণিজ্য করছে। ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আদালতে দাখিল করা না হলে সেই ব্যক্তি পরে পুলিশের বিরুদ্ধে ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা করতে পারেন।’

জেলা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত জেলার ১২টি থানা-পুলিশ ৪১৫ জনকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান করে। যাদের প্রত্যেকে জামিনে মুক্ত হয়েছে ওই দিনই বা তার পরের দিন। ১২ থানার মধ্যে শাজাহানপুর থানায় সাত মাসে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ১৯০ জনকে। এ ছাড়া বগুড়া সদর থানায় ৭৮ জন, শিবগঞ্জ থানায় ২, শেরপুর থানায় ২৩, সোনাতলা থানায় ১৩, গাবতলী থানায় ২৩, সারিয়াকান্দি থানায় ১১, ধুনট থানায় ১১, নন্দীগ্রাম থানায় ১০, আদমদীঘি থানায় ১০, দুপচাঁচিয়া থানায় ২৬ জন এবং কাহালু থানায় ১৮ জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এদিকে ফৌজদারি কার্যবিধিতে উল্লেখ রয়েছে, কোনো ব্যক্তি আমলযোগ্য অপরাধ সংঘটিত করতে পারে বা পরিকল্পনা করছে এমন আশঙ্কা থাকলে পুলিশ তাকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করতে পারে। তবে এই ধারায় গ্রেপ্তার ব্যক্তির বিচার বা শাস্তির বিধান নেই।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিকে দ্রুত ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট অভিযোগের সত্যতা পেলে তাকে কারাগারে পাঠাতে পারেন। বগুড়া আদালতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার হওয়া অধিকাংশের বিরুদ্ধে পুলিশ সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ না এনে অব্যাহতি দিয়ে দেয়।

১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, ‘অনেক সময় জনগণ কাউকে আটক করে পুলিশে দেয়, পরে আর মামলা করে না। এসব ব্যক্তিকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ছাড়া শাজাহানপুর থানা এলাকায় বগুড়া শহরের কিছু অংশ রয়েছে। এসব এলাকায় সন্দেহভাজন ঘোরাঘুরি করে অনেকে। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে ১৫১ ধারায় চালান দিয়ে থাকে।’

সাউথ এশিয়ান ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটসের অ্যাডভাইজিং কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সদরুল আনাম রঞ্জু বলেন, ‘হাইকোর্টের আপিলেট ডিভিশনের রায় অনুযায়ী ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ এবং ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার করলে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে হবে; কিন্তু পুলিশ তা করছে না। ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তারের নামে পুলিশের বাণিজ্য অব্যাহত রয়েছে। ১৫১ ধারায় কাউকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে ব্যর্থ হলে ভুক্তভোগী পুলিশের বিরুদ্ধে অবৈধ গ্রেপ্তারের মামলা করতে পারেন।’

বগুড়া জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল বাছেদ বলেন, পুলিশের চরিত্রে এখনো কোনো পরিবর্তন আসেনি। ১৫১ ধারায় যে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়, সে-ও আইনের কাছে সুবিধা পায়, পুলিশও তার কাছ থেকে সুবিধা নেয়

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পর্যটকের বাড়তি চাপে ঠাঁই নেই হোটেল-মোটেলে

  • তিন দিনের ছুটিতে হোটেল-মোটেলের প্রায় সব কক্ষ বুকড
  • ২০২৫-কে বিদায় ও ২০২৬-কে স্বাগত জানাতে পর্যটকের চাপ আরও বাড়বে
  • বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কক্সবাজারে যানজট
কক্সবাজার প্রতিনিধি
টানা তিন দিনের ছুটির কারণে কক্সবাজারে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল দুপুরে সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা
টানা তিন দিনের ছুটির কারণে কক্সবাজারে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। গতকাল দুপুরে সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে। ছবি: আজকের পত্রিকা

বড়দিন ও সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত টানা তিন দিন অফিস-আদালতে ছুটি চলছে। বার্ষিক পরীক্ষা শেষে কয়েক দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ। এই লম্বা ছুটি কিংবা বিশেষ দিনে অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেড়াতে বের হয়েছেন। বরাবরের মতোই অবকাশযাপনে ভ্রমণপিপাসুরা এবারও দেশের প্রধান পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারে ছুটে এসেছেন।

পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, শনিবার পর্যন্ত অন্তত ৫ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে ভ্রমণ করবেন। তবে শনিবারেই চাপ কমবে না। পর্যটকের এই ঢল আগামী ১ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকবে। এর মধ্যে ৩১ ডিসেম্বর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পর্যটকেরা ভিড় করবেন।

হোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসের মালিকেরা বলছেন, বুধবার বিকেল থেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা কক্সবাজারমুখী হয়েছেন। ইতিমধ্যে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউসগুলোয় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, আগামী শনিবার পর্যন্ত শহরের তারকা মানের হোটেলগুলোয় শতভাগ কক্ষ বুকিং রয়েছে। মাঝারি মানের হোটেল ও রিসোর্টগুলোয় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।

সাগরপারের তারকা মানের হোটেল কক্স টুডেতে কক্ষ আছে ২৪৫টি। তাদের প্রায় সব কক্ষ শনিবার পর্যন্ত বুকিং আছে। হোটেলটির মহাব্যবস্থাপক (রিজার্ভেশন) আবু তালেব শাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিন দিনের ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক ভ্রমণে এসেছেন।

কক্সবাজার শহর, মেরিন ড্রাইভ, সেন্ট মার্টিন ও আশপাশের এলাকার ৬০০ হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট, গেস্ট হাউসে প্রায় দুই লাখ পর্যটকের রাতযাপনের সুযোগ আছে। হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বছরের শেষ সময়ে আশানুরূপ পর্যটকের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। বিপুল পর্যটক সমাগমে যেন কেউ থাকা-খাওয়ায় বাড়তি অর্থ আদায় না করে তার জন্য পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সমুদ্রসৈকতের কলাতলী, লাবণী ও সুগন্ধা পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকের আনাগোনায় তিন কিলোমিটার সৈকত মুখর। কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই নেই। শান্ত সৈকতে কেউ গোসলে নেমেছেন, কেউ জেটস্কি করে দূর সাগরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ আবার চেয়ার-ছাতায় বসে প্রিয়জনদের সঙ্গে সমুদ্র দর্শনে সময় কাটাচ্ছেন। গোসলে নামা বিপুল পর্যটকদের নানাভাবে সতর্ক করছেন লাইফগার্ড ও বিচকর্মীরা। এ দিন সকাল থেকেই পর্যটকের বাড়তি চাপে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল থেকে কলাতলী সড়ক, মেরিন ড্রাইভ ও শহরের প্রধান সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

পর্যটকেরা শহরের এই তিন পয়েন্টের পাশাপাশি মেরিন ড্রাইভ ধরে দরিয়ানগর, হিমছড়ি, ইনানী, পাটুয়ারটেক, টেকনাফ সৈকতে ভিড় করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন।

কুমিল্লার হোমনা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন সরকারি কর্মকর্তা আবিদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। এর মধ্যে বড়দিনের সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি পড়েছে। ফলে বাচ্চাদের নিয়ে তিন দিনের জন্য ঘুরতে বেরিয়ে পড়লাম।’ তাঁর মতো পরিবার নিয়ে অনেকেই বেড়ানোর জন্য বের হয়েছেন।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ছুটিতে পর্যটকদের চাপ বাড়বে—বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সার্বক্ষণিক টহলে রয়েছেন। কোথাও পর্যটক হয়রানির খবর পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় আটক ৭

সিলেট প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সিলেটে জুয়া খেলা অবস্থায় ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

পুলিশ জানায়, বুধবার বিকেলে সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইল ১ নম্বর রোডের মারুফ টি স্টল নামক দোকানে অভিযান পরিচালনা করে তির শিলং-জাতীয় জুয়া খেলা অবস্থায় তাঁদের আটক করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন কানিশাইলের সজীব মিয়ার কলোনির রমিজ আলীর ছেলে তাহের মিয়া (৩০), উসমান মিয়ার ছেলে শামীম (২০), ইমন মিয়ার কলোনির মো. আব্দুল করিম তালুকদারের ছেলে মো. স্বপন মিয়া (৫৫), রঙ্গ মিয়ার ছেলে জসিম (৪৫), জামাল উদ্দিনের ছেলে আল আমিন (২৭), আব্দুর রশিদের ছেলে মো. বাদল (৩৮) এবং আবুল কালামের ছেলে সুজাত মিয়া (৩৫)।

মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় মা হত্যায় ছেলে গ্রেপ্তার

খুলনা প্রতিনিধি
মো. রিয়াদ খান।  ছবি: সংগৃহীত
মো. রিয়াদ খান। ছবি: সংগৃহীত

খুলনায় শিউলী বেগম হত্যা মামলায় ছেলে মো. রিয়াদ খানকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাঁকে খুলনা র‌্যাব-৬ এবং ৭-এর যৌথ অভিযানে ফেনী জেলার সদর থানা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার রিয়াদ শিউলী বেগমের একমাত্র ছেলে। এ সময় তাঁর কাছ থেকে ২ লাখ ৫ হাজার ৮০ টাকা, দুটি আইফোন, একটি স্মার্টফোন ও একটি এয়ারপড জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের পাঠানো বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা গেছে, নিহত শিউলি বেগম সৌদি আরবপ্রবাসী ছিলেন। গত ২৭ অক্টোবর দুই মাসের ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন। পরে নগরীর ট্যাংক রোডের বাসিন্দা রবিউল ইসলামের বাড়ির নিচতলায় ছেলে রিয়াদ খান এবং দ্বিতীয় স্বামী সাগরকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন।

দেশে আসার ১০-১২ দিন পরে উত্তরা ব্যাংক খুলনা শাখা থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে আলমারিতে রেখে দেন।

৯ ডিসেম্বর রাতে শিউলী বেগমের বড় মেয়ে রুবিনা আক্তার এবং তাঁর স্বামী রাজিব রাতের খাবার খেয়ে বাড়িতে চলে যান। ১০ ডিসেম্বর সকাল থেকে শিউলী বেগমকে ফোনে না পেয়ে রুবিনা আক্তারকে খোঁজ নিতে বলেন তাঁর স্বামী।

কিন্তু খোঁজ নিয়ে তাঁর সন্ধান না পেয়ে ওই দিন রাতে স্থানীয়দের সহায়তায় তালা ভেঙে ঘর থেকে শিউলী বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে তাঁর ঘর থেকে পৌনে ৭ লাখ টাকা উধাও হয়ে যায়। শিউলী বেগম হত্যার পর থেকে একমাত্র ছেলে রিয়াদ খানেরও কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই রায়হান গাজী বাদী হয়ে শিউলী বেগমের ছেলে রিয়াদ খানকে আসামি করে মামলা করেন। উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় র‌্যাব খুলনা-৬ ও ৭-এর একটি দল তাঁকে ফেনী সদর থেকে গ্রেপ্তার করে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নরসিংদীতে তিন চোখ ও দুই মুখের বাছুরের জন্ম, এলাকায় চাঞ্চল্য

নরসিংদী প্রতিনিধি
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা
পুবেরগাঁও গ্রামের একটি খামারে বাছুরটির জন্ম। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীতে অদ্ভুত আকৃতির বাছুরের জন্ম হয়েছে। বাছুরটির রয়েছে দুটি মুখ, দুটি জিহ্বা, দুটি কান ও তিনটি চোখ। এর মধ্যে একটি চোখ বাছুরের কপালের মাঝখানে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

২৩ ডিসেম্বর রাতে শিবপুর উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের পুবেরগাঁও গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাশেম খানের খামারে বাছুরটির জন্ম।

খামারমালিক কাশেম খান বলেন, বাছুরটি জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। স্বাভাবিকভাবে দুধ পান করতে না পারায় ফিডারের মাধ্যমে দুধ খাওয়াতে হচ্ছে।

তিনি জানান, তাঁর খামারের একটি গাভি বাছুরটির জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, এর আগেও গাভিটির বাছুর হয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এমন অদ্ভুদ বাছুর আগে কখনো হয়নি।

ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই বাছুরটিকে একনজর দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষ খামারে আসছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল জলিল বলেন, ‘আমরা ছোটবেলা থেকে গরু-ছাগল দেখছি। কিন্তু তিন চোখ আর দুই মুখের বাছুর এই প্রথম দেখলাম। খবর পেয়ে দূর থেকে এসেছি।’

আরেক স্থানীয় নারী জরিনা বেগম বলেন, ‘বাছুরটা দেখতে অদ্ভুত লাগলেও মায়া হচ্ছে। বাছুরটির স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। অনেকেই দ্রুত প্রাণিসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিচ্ছেন।’

এর আগে এ ধরনের বাছুর জন্মের বিষয়ে প্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাধারণত জেনেটিকস ডিফেক্টের কারণে গাভির এমন ত্রুটিপূর্ণ বাচ্চার জন্ম হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত