Ajker Patrika

আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ২১ নারী-পুরুষ কারাগারে, এসআই প্রত্যাহার

বগুড়া প্রতিনিধি
আওয়ামী লীগ নেতা রেজ্জাকুল ইসলাম রাজু। ছবি: সংগৃহীত
আওয়ামী লীগ নেতা রেজ্জাকুল ইসলাম রাজু। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার শিবগঞ্জে পুলিশের কাছ থেকে হাতকড়াসহ আওয়ামী লীগ নেতা রেজ্জাকুল ইসলাম রাজুকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ২১ জন নারী-পুরুষকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুজ্জামান। তবে ছিনিয়ে নেওয়া ব্যক্তিকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

অপর দিকে এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুনকে শিবগঞ্জ থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আসামিকে গ্রেপ্তার না করার আশ্বাস দিয়ে লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আসাদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত শনিবার রাতে শিবগঞ্জ উপজেলার চক ভোলাখাঁ গ্রামে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেজ্জাকুল ইসলাম রাজুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় গ্রামের নারী-পুরুষ পুলিশের ওপর গোবর ও কাদা নিক্ষেপ করে রাজুকে হাতকড়াসহ ছিনিয়ে নেন।

এ ঘটনায় ওই রাতেই এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুন বাদী হয়ে রেজ্জাকুল ইসলাম রাজুসহ দুই শতাধিক নারী-পুরুষের নামে থানায় মামলা করেন। গতকাল রোববার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পুলিশ কয়েক দফা অভিযান চালায়। এ সময় গ্রেপ্তার করা হয় ১১ জন নারী ও ১০ জন পুরুষকে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা সবাই চক ভোলাখাঁ গ্রামের বাসিন্দা। তাঁরা পেশায় ভ্যানচালক ও দিনমজুর। আর নারীরা সবাই গৃহিণী।

এদিকে আজ সোমবার চক ভোলাখাঁ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ বাড়িতে তালা। কাউকে গ্রেপ্তার আবার কেউ গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়িতে নেই। শিশু আর বৃদ্ধ ছাড়া গ্রামে কেউ নেই।

ঘটনার দিন (শনিবার) রাতের প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন স্কুলছাত্র জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা রেজ্জাকুল ইসলাম রাজুর বাড়ির পাশের বাড়িতে তাঁর মামাতো ভাইয়ের বিবাহোত্তর বউভাত অনুষ্ঠান শেষ হয় সন্ধ্যায়। এ কারণে বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের ভিড় ছিল। রাত ৮টার দিকে রাজু বাড়ির পেছনে একটি মুদিদোকানে বসেছিলেন। এ সময় মোটরসাইকেলে সাদা পোশাকে এক ব্যক্তি এসে রাজুকে আটক করে এক হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে নিয়ে যেতে চান।

সে সময় আসিফ নামের এক যুবক এসে পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেন এবং রাস্তায় বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার থেকে বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এতে ওই মহল্লা অন্ধকার হয়ে গেলে রাজু এক হাতে হ্যান্ডকাফ নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যান। রাজুর চিৎকারে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা এসে ওই ব্যক্তির চোখেমুখে গোবর ও কাদা নিক্ষেপ শুরু করেন। কিছুক্ষণ পর থানা-পুলিশের গাড়ি এসে তাঁকে উদ্ধার করে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিবগঞ্জ থানার এক কর্মকর্তা জানান, আওয়ামী লীগ নেতা রাজু বিয়ের অনুষ্ঠানে আছেন—এমন তথ্য পেয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে থানার এসআই রাজীব কৃষ্ণ ধরের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের পুলিশের একটি দল গাড়িযোগে চক ভোলাখাঁ গ্রামের দিকে রওনা দেয়। কিন্তু তার আগে এসআই মামুন থানার কাউকে না জানিয়ে সাদা পোশাকে একাই মোটরসাইকেলযোগে সেখানে গিয়ে রাজুকে আটক করেন।

প্রতিবেশীরা জানান, রাজু বাড়িতেই থাকতেন। থানা-পুলিশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল। গ্রেপ্তার না করার জন্য এক সপ্তাহ আগে এসআই মামুন রাজুর কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়েছেন। তারপরে এসআই মামুন একাই এসে রাজুকে আটক করায় তাঁর বাড়ির লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের ওপর গোবর ও কাদামাটি নিক্ষেপ করে হাতকড়াসহ পালাতে সুযোগ করে দেন।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, এসআই আব্দুল্লাহ আল মামুনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করার পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শেখ হাসিনার বিষয়ে ঢাকার সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত নয়াদিল্লি: ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিব

আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বিএনপি একাই সরকার গঠন করবে: ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে তারেক রহমান

বুলবুলই আবার বিসিবি সভাপতি, সহসভাপতি পদে চমক

এবার মাউশি মহাপরিচালক খুঁজতে বিজ্ঞপ্তি দিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বিরল খনিজের প্রথম চালান যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাল পাকিস্তান

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত