Ajker Patrika

বিএনপি নেতার দোকানের ভাড়া তোলেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতারা, মামলা করায় মারধরের অভিযোগ

গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ জুন ২০২৩, ১৫: ২৯
বিএনপি নেতার দোকানের ভাড়া তোলেন ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতারা, মামলা করায় মারধরের অভিযোগ

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বিএনপির সভাপতি মো. আমিনুল হক ওরফে শাহীনের উপজেলার বার্থী বাজারে তিনটি দোকান রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, গত ছয় মাস ধরে দোকানগুলোর ভাড়া তুলে নেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতারা। এ ঘটনায় আমিনুল হক বাদী হয়ে একটি মামলাও করেছেন। আর এই মামলা করায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতারা হামলা চালিয়ে তাঁকে আহত করেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। বর্তমানে তিনি বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তি রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে থানার পুলিশ জানিয়েছে, গত ছয় মাস ধরে শাহীনের বার্থী বাজারের তিনটি দোকানের ভাড়া তুলে নেন স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় গত রোববার আমিনুল হক বাদী হয়ে সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল হাওলাদার (৩০), বার্থী ইউনিয়ন যুবলীগ সদস্য মো. শাহ আলী বয়াতি (২৮) ও আব্দুল কাদের সরদারসহ (২৭) ১০ জনকে আসামি করে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল আমলি আদালতে একটি মামলা করেন।

মো. আমিনুল হক বলেন, ‘আমার বার্থী বাজারের তিনটি দোকান দখল করে গত ছয় মাস ধরে প্রতি মাসে সাড়ে ৪ হাজার টাকা করে ভাড়া তুলে নেন সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল হাওলাদার, বার্থী ইউনিয়ন যুবলীগ সদস্য মো. শাহ আলী বয়াতি ও আব্দুল কাদের সরদার। এ ঘটনায় আমি মামলা করে ঢাকায় চলে যাই। মামলা করায় মোবাইল ফোনে ছাত্রলীগ নেতা রাসেল আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। গতকাল ঢাকা থেকে বাড়ি আসার পথে রাত সাড়ে ৭টায় গৌরনদীর বার্থী বাজারে পৌঁছালে বার্থী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন প্যাদা, রাসেল হাওলাদার, শাহ আলী বয়াতি ও আব্দুল কাদের সরদারের নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী লাঠিসোঁটা, রড, জিআই পাইপ ও ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে অতর্কিতভাবে আমার ওপর হামলা চালান। একপর্যায়ে আমাকে পিটিয়ে আটকে রাখেন তাঁরা। এ দৃশ্য বাজারের শত শত মানুষ দেখলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেননি। খবর পেয়ে আমার স্ত্রী আয়শা আক্তার ছেলে সফিকুল হকসহ আত্মীয়স্বজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিতে চাইলে হামলাকারীরা হাসপাতালে নিতে বাধা দেন। পরে স্বজনেরা পুলিশের সহায়তা নিয়ে রাত ৯টায় আমাকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।’

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে বার্থী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন প্যাদা, সদস্য মো. শাহ আলী বয়াতি ও আব্দুল কাদের সরদারকে কল দিলে তাঁরা ধরেননি। পরে খুদেবার্তা পাঠালেও কোনো সাড়া মেলেনি।

মো. রাসেল হাওলাদারের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি দোকানঘর থেকে ভাড়া তুলে নেওয়া এবং হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে বলেন, বিএনপি নেতার ওপর হামলার কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে কল পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম পাঠিয়ে আহতকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। হামলার ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নিখিল কুমার জানান, রোগীর অবস্থার অবনতি হলে আজ দুপুর ১২টার দিকে তাঁকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত