Ajker Patrika

বরিশালে বেপরোয়া ছাত্রদল

  • পদধারীরা কেউ ছাত্র নেই, অনেকে ঠিকাদার, আইনজীবী হয়েছেন
  • নেতারা মানছেন না কেউ কাউকে। কর্মসূচি পালন করছেন পৃথকভাবে
  • নিজেদের মধ্যেও মারামারির অভিযোগ রয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশালে বেপরোয়া ছাত্রদল

ছাত্রদলের বরিশাল জেলা ও মহানগর কমিটির মেয়াদ ৭ বছর পেরিয়ে গেলেও সম্মেলন হয়নি। অনেক নেতাই হয়ে উঠেছেন বেপরোয়া। মানছেন না কেউ কাউকে। এমনকি দলীয় অনেক কর্মসূচি পালন করছেন পৃথকভাবে। দলের একাধিক নেতা জানান, ঘুণে ধরা ছাত্রদলের শীর্ষ নেতারা এখন আর কেউ ছাত্র নেই। তাঁদের কেউ ঠিকাদার, কেউ আইনজীবী হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৭ বছর ধরে একই কমিটি থাকায় মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের অধিকাংশ নেতা ঠিকাদারিতে জড়িয়ে পড়েছেন। কেউ আইনজীবী কিংবা ব্যবসায়ী হয়েছেন। স্থান পেয়েছেন মূল দলের কমিটিতেও। যে কারণে মহানগর ও জেলা ছাত্রদল অনেকটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে। যদিও সংগঠন দুটিকে গোছাতে কেন্দ্রীয় নেতার নেতৃত্বে একটি টিম গঠন করা হয়েছে; কিন্তু এক বছরেও নেই কোনো অগ্রগতি। তাই সেই টিমের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ছাত্রদলের মাঠপর্যায়ের নেতারা।

মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাবিদ রহমান তুষার বলেন, ‘দীর্ঘদিন এক কমিটি এবং একই লোক থাকায় বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। আমরা যাঁরা কমিটি চাই তাঁরা আলাদা কর্মসূচি পালন করি। সংগঠনে শৃঙ্খলা ফেরাতে নতুন নেতৃত্ব দরকার।’

মহানগর ছাত্রদল সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হাসান তাসনিম বলেন, ‘আমরাও নতুন নেতৃত্বের প্রত্যাশী। ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট যে কমিটি হয়েছিল, সেই কমিটি এখনো থাকায় এখন আর কেউ কাউকে মানছেন না।’

জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আসিফ আল মামুন বলেন, নতুন কমিটি হয়নি বহু বছর। দলের জন্য সময় দেওয়ার সময় নেই শীর্ষ নেতাদের। কারণ তাঁরা ঠিকাদারি কাজে ব্যস্ত।

এদিকে বালুমহাল নিয়ে বিবাদের জেরে পদ স্থগিত রয়েছে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মাহফুজুল ইসলাম মিঠুর। এর আগে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক মন্তব্য করায় মহানগর ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতিকে অব্যাহতিও দেওয়া হয়েছিল।

জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আসিফ আল মামুন বলেন, জেলার সভাপতি মাহফুজুল আলম মিঠুর পদ বালুমহাল-কাণ্ডে স্থগিত। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক আল ইমরান আইনজীবী ও সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য। সাধারণ সম্পাদক কামরুল আহসান বর্তমানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক। ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তৌফিক আল ইমরান জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের গাড়িচালক। এভাবে কী করে জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নেতৃত্ব চলে?

মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি অকপটে নগর ছাত্রদলের কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ২ বছরমেয়াদি নগর কমিটি অনেক বছর হয়েছে। অনেক জটিলতার কারণে মূল কমিটিও হচ্ছে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ও বরিশালের টিম লিডার রিয়াদ রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কমিটির যে মেয়াদ শেষ হয়েছে, তা কোথায় লেখা আছে? ৭ বছর হলেও সেই কমিটি তো এখনো চলছে।

এদিকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটছে। এ বিষয়ে রিয়াদ রহমান বলেন, কলেজের বাইরে মারামারি-হানাহানি হলে সেটা তাঁর দেখার বিষয় নয়। মহানগর ও জেলা ছাত্রদলের বিষয় কেন্দ্রীয় সভাপতি-সম্পাদককে জিজ্ঞেস করেন।

এ ব্যাপারে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আকন কুদ্দুসুর রহমান বলেন, যারা কোপাকুপি, মারামারি, বিশৃঙ্খলায় জড়িত তাদের নাম সুনির্দিষ্টভাবে বলা হলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলকে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে। দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রেখেই ছাত্রদলকে চলতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে দল কাউকে ছাড় দেবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্নে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর জবাব ভাইরাল

১% এর টাকায় ২৫% ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠা সেই ইউএনওকে বদলি

যুক্তরাষ্ট্র ভিসা বাতিলের পর কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট বললেন, দরকার নেই

থালাপতি বিজয়ের সমাবেশে হুড়োহুড়ি, পদদলিত হয়ে শিশুসহ অন্তত ৩৪ জন নিহত

৪১ জনকে যুক্তরাজ্যে নেওয়ার সুপারিশ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লেবার মেয়রের

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত