গৌরনদী (বরিশাল) প্রতিনিধি
অভাবের সংসারে অর্ধাহারে-অনাহারে কাটে পরিবারের ৫ সদস্যর জীবন। চিকিৎসা ও পেটের দায়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে ঠাঁই নিতে হয়েছে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে। দুবেলা ভাত জোটাও অসম্ভব হয়ে পড়লে মেধাবী আরাফাতের লেখাপড়া বন্ধ করে দেন বাবা-মা। এ অবস্থায় একান্ত নিজের ইচ্ছায় পড়াশোনা করে এবার সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে হাফিজুর রহমান ওরফে আরাফাত।
এই ফল অর্জন করতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর বিজয়পুর গ্রামের আরাফাতকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। এর মাঝে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন আরাফাত ও তার পরিবারের। এর বাইরে দেখা দিয়েছে আরেক সমস্যা। অভাবে না খাওয়ার অভ্যাস থেকে আরাফাত ভাত না খাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। সে এখন আর ভাত খেতে চায় না।
আরাফাতের বাবা মনিরুজ্জামান সরদার (৫৫) জানান, এক সময় রেডিও মেরামত করে পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোই ছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে রেডিওর প্রচলন উঠে যাওয়ায় তাঁর জীবিকার পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৫ সালে স্ত্রী রোজিনা আক্তার (৪৫) অসুস্থ হলে তাঁর চিকিৎসা ও পেটের দায়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে সর্বস্ব খুইয়েছেন। ছেলেদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল; তারা পড়াশোনা করে অনেক বড় হবে। তবে অর্থের অভাবে সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। ভিটেমাটি বিক্রির পরে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডের লিজ নেওয়া সামান্য জমিতে মাথা গোঁজার আশ্রয় ছিল। ২০১৬ সালে তাও আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই অবস্থা কেটে উঠতে না উঠতেই ২০১৯ সালে দেশে শুরু হয় মহামারি করোনা। বাধ্য হয়ে বড় ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে হয়।
২০১৬ সালে অর্থের অভাবে ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করতে হয়। কিন্তু জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার পরে আরাফাতের মনোবল বেড়ে যায়। সে নিজের চেষ্টাতে লেখাপড়া করতে চায়। সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. বাদশা সিকদার বলেন, আরাফাত খুবই মেধাবী। ২০১৫ সালে ৫ম ও ২০১৮ সালে জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে। জেএসসির ফল দেখে তার লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারছিলাম না। তাই স্কুলে পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে স্কুলে ফিরিয়ে আনি। আরাফাতের পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহ ও তার কঠোর পরিশ্রমে সে সফল হয়েছে। সে এবারে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
আরাফাত জানায়, বাবা লেখাপড়া বন্ধ করতে চাইলে আমি বিষয়টি মানতে পারি নাই। আমি নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট পরিয়ে পড়ার খরচ জোগাড় করব বলে বাবাকে নিজের ইচ্ছার কথা জানাই। কিন্তু তাতেও বাবা রাজি হননি। পরে স্কুলের স্যারেরা বাবাকে বুঝিয়ে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিলে বাবা লেখাপড়া করার অনুমতি দেন। তখন থেকে আমি দিনে প্রাইভেট পড়িয়ে রাতে নিজের পড়াশোনা করেছি। ঠিকমতো বই খাতা কলমও কিনতে পারি নাই। সহপাঠীদের কাছ থেকে বই এনে নোট করে পড়াশোনা করেছি।
ভাত খাওয়ার অনভ্যাস বিষয়ে আরাফাত জানায়, ছোট বেলা থেকে ঘরে খাবার থাকত না বলে না খাইয়ে স্কুলে যেত হয়েছে। সেই অভ্যাস থেকে ভাত না খাওয়ায় আমি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। লক্ষ্য পূরণের জন্য এই কষ্ট আমার কাছে কষ্ট মনে হয়নি। আজ সব কষ্ট ভুলে গেছি।
জিপিএ-৫ পাওয়ার আনন্দের কথা জানাতেই মুহূর্তেই তার চেহারা বিষণ্নতায় ভরে যায়। এর কারণ জানতে চাইলে আরাফাত জানান, এসএসসিতে সফল হয়েছি কিন্তু কলেজে কী করে ভর্তি হবো। আর কী করেইবা খরচ যুগিয়ে পড়াশোনা করবো। একজন প্রকৌশলী হওয়ার সাধ আছে কিন্তু সাধ্য কোথায়? মনে হয় প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে না। পড়াশোনার সুযোগ পেলে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের জন্য কাজ করব এবং বাবা-মায়ের দুঃখ ঘুচাবে। একই সঙ্গে অর্থের অভাবে যাদের পড়াশোনা বন্ধ হবে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে পড়াশোনায় সহায়তা করব। তবে অভাবের কারণে সে আশা পূরণ হওয়া নিয়েও তাঁর শঙ্কা রয়েছে।
আরাফাতের মা রোজিনা আক্তার (৪৫) বলেন, ‘এত কষ্টের মধ্যেও মোর বাজানে যে পরীক্ষার ভালো পাস করছে, এইয়া আল্লার দয়া ছাড়া আর কিছুই না। কলেজে লেহাপড়ার লাইগ্যা মুই সকলের কাছে সাহায্য চাই।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. অলি উল্লাহ বলেন, আরাফাত খুবই মেধাবী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও তার ভালো পারফরমেন্স রয়েছে। তাকে পৃষ্ঠপোষকতা দিলে ভবিষ্যতে অনেক ভালো করতে পারবে। তাকে সহযোগিতার জন্য তিনি সমাজের বৃত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান।
অভাবের সংসারে অর্ধাহারে-অনাহারে কাটে পরিবারের ৫ সদস্যর জীবন। চিকিৎসা ও পেটের দায়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে ঠাঁই নিতে হয়েছে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে। দুবেলা ভাত জোটাও অসম্ভব হয়ে পড়লে মেধাবী আরাফাতের লেখাপড়া বন্ধ করে দেন বাবা-মা। এ অবস্থায় একান্ত নিজের ইচ্ছায় পড়াশোনা করে এবার সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়েছে হাফিজুর রহমান ওরফে আরাফাত।
এই ফল অর্জন করতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর বিজয়পুর গ্রামের আরাফাতকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। এর মাঝে উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছেন আরাফাত ও তার পরিবারের। এর বাইরে দেখা দিয়েছে আরেক সমস্যা। অভাবে না খাওয়ার অভ্যাস থেকে আরাফাত ভাত না খাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। সে এখন আর ভাত খেতে চায় না।
আরাফাতের বাবা মনিরুজ্জামান সরদার (৫৫) জানান, এক সময় রেডিও মেরামত করে পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোই ছিলেন। কিন্তু ধীরে ধীরে রেডিওর প্রচলন উঠে যাওয়ায় তাঁর জীবিকার পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৫ সালে স্ত্রী রোজিনা আক্তার (৪৫) অসুস্থ হলে তাঁর চিকিৎসা ও পেটের দায়ে ভিটেমাটি বিক্রি করে সর্বস্ব খুইয়েছেন। ছেলেদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল; তারা পড়াশোনা করে অনেক বড় হবে। তবে অর্থের অভাবে সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। ভিটেমাটি বিক্রির পরে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডের লিজ নেওয়া সামান্য জমিতে মাথা গোঁজার আশ্রয় ছিল। ২০১৬ সালে তাও আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই অবস্থা কেটে উঠতে না উঠতেই ২০১৯ সালে দেশে শুরু হয় মহামারি করোনা। বাধ্য হয়ে বড় ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে হয়।
২০১৬ সালে অর্থের অভাবে ছেলের লেখাপড়া বন্ধ করতে হয়। কিন্তু জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়ার পরে আরাফাতের মনোবল বেড়ে যায়। সে নিজের চেষ্টাতে লেখাপড়া করতে চায়। সরকারি গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. বাদশা সিকদার বলেন, আরাফাত খুবই মেধাবী। ২০১৫ সালে ৫ম ও ২০১৮ সালে জুনিয়র সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করে। জেএসসির ফল দেখে তার লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার বিষয়টি আমরা মেনে নিতে পারছিলাম না। তাই স্কুলে পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে স্কুলে ফিরিয়ে আনি। আরাফাতের পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহ ও তার কঠোর পরিশ্রমে সে সফল হয়েছে। সে এবারে এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে।
আরাফাত জানায়, বাবা লেখাপড়া বন্ধ করতে চাইলে আমি বিষয়টি মানতে পারি নাই। আমি নিজে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট পরিয়ে পড়ার খরচ জোগাড় করব বলে বাবাকে নিজের ইচ্ছার কথা জানাই। কিন্তু তাতেও বাবা রাজি হননি। পরে স্কুলের স্যারেরা বাবাকে বুঝিয়ে আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিলে বাবা লেখাপড়া করার অনুমতি দেন। তখন থেকে আমি দিনে প্রাইভেট পড়িয়ে রাতে নিজের পড়াশোনা করেছি। ঠিকমতো বই খাতা কলমও কিনতে পারি নাই। সহপাঠীদের কাছ থেকে বই এনে নোট করে পড়াশোনা করেছি।
ভাত খাওয়ার অনভ্যাস বিষয়ে আরাফাত জানায়, ছোট বেলা থেকে ঘরে খাবার থাকত না বলে না খাইয়ে স্কুলে যেত হয়েছে। সেই অভ্যাস থেকে ভাত না খাওয়ায় আমি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি। লক্ষ্য পূরণের জন্য এই কষ্ট আমার কাছে কষ্ট মনে হয়নি। আজ সব কষ্ট ভুলে গেছি।
জিপিএ-৫ পাওয়ার আনন্দের কথা জানাতেই মুহূর্তেই তার চেহারা বিষণ্নতায় ভরে যায়। এর কারণ জানতে চাইলে আরাফাত জানান, এসএসসিতে সফল হয়েছি কিন্তু কলেজে কী করে ভর্তি হবো। আর কী করেইবা খরচ যুগিয়ে পড়াশোনা করবো। একজন প্রকৌশলী হওয়ার সাধ আছে কিন্তু সাধ্য কোথায়? মনে হয় প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে না। পড়াশোনার সুযোগ পেলে ইঞ্জিনিয়ার হয়ে দেশের জন্য কাজ করব এবং বাবা-মায়ের দুঃখ ঘুচাবে। একই সঙ্গে অর্থের অভাবে যাদের পড়াশোনা বন্ধ হবে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে পড়াশোনায় সহায়তা করব। তবে অভাবের কারণে সে আশা পূরণ হওয়া নিয়েও তাঁর শঙ্কা রয়েছে।
আরাফাতের মা রোজিনা আক্তার (৪৫) বলেন, ‘এত কষ্টের মধ্যেও মোর বাজানে যে পরীক্ষার ভালো পাস করছে, এইয়া আল্লার দয়া ছাড়া আর কিছুই না। কলেজে লেহাপড়ার লাইগ্যা মুই সকলের কাছে সাহায্য চাই।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. অলি উল্লাহ বলেন, আরাফাত খুবই মেধাবী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও তার ভালো পারফরমেন্স রয়েছে। তাকে পৃষ্ঠপোষকতা দিলে ভবিষ্যতে অনেক ভালো করতে পারবে। তাকে সহযোগিতার জন্য তিনি সমাজের বৃত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান।
রাজধানীর রামপুরা ব্রিজের দুই রেলিং ঢুকে আছে একটি বাসের মাঝ বরাবর। যাত্রী নিতে আরেক বাসের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে ‘রইছ’ নামের বাসটির এই দশা হয়। ৪ জুন সকালের এই দুর্ঘটনায় বাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। যাত্রী বেশি নিতে বাসচালকদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা, লক্কড়ঝক্কড় ও ফিটনেসবিহীন বাস দুর্ঘটনা
১ ঘণ্টা আগেগোপালগঞ্জ জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়কে বছরের পর বছর বাস, ট্রাক ও মাইক্রোবাস পার্ক করে রাখা হচ্ছে। বিভিন্ন সড়কের এক লেন দখল করে রাখা হচ্ছে এসব যানবাহন। এতে প্রতিদিন যানজটসহ নানা ভোগান্তিতে পড়ছে মানুষ। মালিক-শ্রমিকেরা বলছেন, নির্ধারিত স্ট্যান্ড না থাকায় বাধ্য হয়ে রাস্তায় গাড়ি রাখছেন তাঁরা।
২ ঘণ্টা আগেআলুতে বছরের পর বছর লাভ করে অভ্যস্ত জয়পুরহাটের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। তবে এবার পড়েছেন বড় ধরনের বিপাকে। একদিকে বাজারে আলুর দাম অস্থির, অন্যদিকে হিমাগারে সংরক্ষণ ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খাচ্ছেন সবাই। সংরক্ষণ মৌসুমের শুরুতে স্থানীয় প্রশাসনের চাপে ভাড়া না বাড়াতে বাধ্য হলেও পরে কিছু হিমাগারের মালিক নানা অজুহা
২ ঘণ্টা আগেনীলফামারীর সৈয়দপুরে চলছে জুয়ার জমজমাট আসর। উপজেলার দেড় শতাধিক স্থানে এসব আসর বসে বলে জানা গেছে। প্রতিদিন ২০-৩০ লাখ টাকা লেনদেন হয় এসব আসরে। সেই হিসাবে প্রতি মাসে জুয়াড়িদের কাছে হাতবদল হয় ৬ থেকে ৯ কোটি টাকা। এদিকে, জুয়ার কারণে অনেক পরিবার সর্বস্বান্ত হচ্ছে। জুয়ার টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে এলাকায় বেড়েছে
২ ঘণ্টা আগে