Ajker Patrika

বরিশাল নগরী

পাইপলাইনে ঢুকবে বালু, পুকুর-জলাশয়ের সর্বনাশ

  • পরিবেশের সর্বনাশ হওয়ার শঙ্কা পরিবেশবাদীদের।
  • ২০১৩ সালে তৎকালীন মেয়র পাইপলাইনে বালু সরবরাহ বন্ধ করেন।
  • পরিবেশের ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টি দেখা হবে: বিসিসি।
  • পুকুর, জলাশয় কোনোভাবেই ভরাট করতে দেওয়া হবে না: পরিবেশ অধিদপ্তর।
খান রফিক, বরিশাল 
পাইপলাইনে ঢুকবে বালু, পুকুর-জলাশয়ের সর্বনাশ

দীর্ঘ এক যুগ পর বরিশাল নগরীতে পাইপলাইনের মাধ্যমে বালু সরবরাহের অনুমোদন দিতে যাচ্ছে বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি)। তবে এ ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না সরকারি নির্দেশনা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দরপত্র প্রক্রিয়া ছাড়াই ২০ লাখ টাকা করে জামানত নিয়ে দেওয়া হচ্ছে বালু সরবরাহের ইজারা। ইতিমধ্যে ২২ জন ইজারাদার জামানতের টাকা দিয়েছেন।

এদিকে হঠাৎ বরিশাল নগরে বালু প্রবেশের অবাধ স্বাধীনতা দেওয়ায় পরিবেশের সর্বনাশের আশঙ্কা করছেন পরিবেশবাদীরা। তাঁদের মতে, এটা কার্যকর হলে পুকুর, জলাশয়, কৃষিজমি ভরে শেষ করে দেবে অসাধু চক্র।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারামের দিঘিটি ভরাটের চেষ্টা চলছে কয়েক বছর ধরে। স্থানীয় আলী চেয়ারম্যান রাতের আঁধারে একটু একটু করে ভরাটের চেষ্টা করলে কয়েকবারই বাধা দিয়েছে সিটি করপোরেশন। ড্রেজার দিয়ে পাইপলাইনে ভরাট করতে পারলে দিঘিটি বহু আগেই ভরাট হয়ে যেত। কীর্তনখোলা নদীতীরের ত্রিশ গোডাউন পুকুরটিও অর্ধেক ভরাটের পর বাধার মুখে তা বন্ধ হয়ে যায়। এক যুগ ধরে এভাবে নগরীতে বালু দিয়ে ভরাট কার্যক্রমে অনেকটা চাপের মুখে ছিল বালুখেকোরা। কিন্তু সম্প্রতি সিটি করপোরেশন নতুন করে পাইপলাইনের মাধ্যমে নগরীতে বালু সরবরাহের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ইজারায় অংশ নেওয়া ড্রেজার ব্যবসায়ী মো. কিরণ বলেন, তাঁরা আবেদন করে ২০ লাখ টাকা জামানত দিয়েছেন। এর মাধ্যমেই বালু সরবরাহ করতে পারবেন। বিভিন্ন নদীর ২৬টি পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন করতে পারবেন। এর মধ্যে কীর্তনখোলাও রয়েছে।

বিসিসির উচ্ছেদ শাখার প্রধান এবং পাইপলাইনে বালু সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, ‘তাঁরা আনলোড ড্রেজারের মাধ্যমে নগরীতে পাইপলাইনে বালু সরবরাহের জন্য আবেদন নিচ্ছেন। এ পর্যন্ত ২২টি আবেদন পড়েছে। এ জন্য ২০ লাখ টাকা করে জামানত গ্রহণ করেছেন। টেন্ডার কার্যক্রমে নয়, আবেদন জমা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি জানান, প্রতি ঘনফুট বালুর বিপরীতে ১ টাকা করে দিতে হবে বিসিসিকে।

পাইপলাইনে বালু প্রবেশ বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে স্বপন বলেন, ‘সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরন ২০১০ সালে বালু প্রবেশের অনুমোদন দিয়েছিলেন। এরপর আর বালু ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পুকুর, জলাশয় ভরাট না হয় এবং পরিবেশ আইন মেনে বিভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে নগরীতে পাইপলাইনে বালু সরবরাহের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।’

জানা গেছে, ২০১৩ সালে তৎকালীন মেয়র আহসান হাবিব কামাল পাইপলাইনে বালু সরবরাহ বন্ধ করেন। এরপর সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবং সবশেষ আবুল খায়ের আবদুল্লাহর সময়ও বন্ধ ছিল।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বরিশালের সমন্বয়ক রফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা চার-পাঁচ বছর আগে এক জরিপে নগরীতে ২০০ পুকুরের অস্তিত্ব পেয়েছি। কিন্তু এখন গরমিল দেখছি। বেলা সম্প্রতি নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে কতটি পুকুর, জলাশয় আছে, তা চিহ্নিত করার জন্য কমিটি করেছিল। তাতে নগরীতে এ পর্যন্ত ১০০ থেকে ১২৫টি পুকুর খুঁজে পাওয়া গেছে। এই কয়েক বছরে সিটি করপোরেশনের বিধিনিষেধ সত্ত্বেও অনেক পুকুর ভরাট হয়েছে। এমনকি সরকারি পুকুরও ভরাট হয়েছে। এ অবস্থায় ড্রেজারের মাধ্যমে পাইপলাইনে বালু প্রবেশের অবাধ স্বাধীনতা দেওয়া হলে পরিবেশের সর্বনাশ হয়ে যাবে।’

রফিকুল বলেন, ‘ইজারাদাররা একটা স্পট ভরাটের অনুমতি নিয়ে ভরবে ২০টি। রাতের আঁধারে পুকুর, জলাশয়, কৃষিজমি শেষ করে দেবে। এমনটা হলে পরিবেশবাদীরা সামাজিক মুভমেন্ট এবং আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবে।’

বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, ‘তাঁরা নগরীতে বালু প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন। এ জন্য কোনো টেন্ডার আহ্বান করা হয়নি। তবে ২০ লাখ টাকার পে-অর্ডার নেওয়া হচ্ছে। শর্ত সাপেক্ষে বালু ঢোকার অনুমতি দিচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে পরিবেশের যাতে ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টি দেখা হবে।’

পরিবেশ অধিদপ্তর বরিশাল জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, ‘পাইপলাইনে বালু সরবরাহ করা হলে তাতে ডোবা, নালা কিংবা কারও বাড়ির নিচু জমি ভরাট করতে পারবে। কিন্তু এই সুযোগে পুকুর কিংবা জলাশয় কোনোভাবেই ভরাট করতে দেওয়া হবে না। আমরা ধরতে পারলে জরিমানা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পিস্তল দিয়ে বাবলার পিঠে এলোপাতাড়ি গুলি করে মুহূর্তেই সটকে পড়ে মুখোশধারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২৩: ৪৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম নগরের চালিতাতলী এলাকার মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে নেতা-কর্মীদের নিয়ে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ঢুকেছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ। হাত থেকে লিফলেট দিয়ে দোকানদারের সঙ্গে কুশল বিনিময়ে ব্যস্ত ছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন ১৫–২০ জন নেতা-কর্মী।

বিএনপি প্রার্থীর খুব কাছাকাছি ছিলেন এক ডজনের বেশি মামলার আসামি সরওয়ার বাবলা (৪৩)। তাঁর গায়ে ছিল সাদা প্যান্ট ও গেঞ্জি। গেঞ্জির পেছনে বড় অক্ষরের ইংরেজি লেখা। বাবলার পিঠের কাছাকাছি একজন সেলফিতে ব্যস্ত, আচমকা পেছন থেকে একটি হাত ওঠে, বাড়ন্ত ওই হাতে ছিল স্বয়ংক্রিয় পিস্তল। কেউ কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঠাস ঠাস আওয়াজ। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বাবলা। মুহূর্তের মধ্যে সটকে পড়ে হামলাকারীরা। সবার মুখে মাস্ক ছিল। সংখ্যায় তাঁরা আটজনের মতো ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী মো. শাহাবুদ্দিন ও মো. ইসমাইল জানান, গণসংযোগকালে সাত থেকে আটজনের একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ খুব কাছ থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে।

ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবলাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পিতা আবদুল কাদের ও ভাই মো. আজিজ আহাজারি করে বলেন, ‘এভাবে গুলি করে বাবলাকে মারার ঘটনা নজিরবিহীন। কার কাছে বিচার চাইব?’

ঘটনা সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী মো. শাহাবুদ্দিন জানান, গণসংযোগের প্রচারণা দলের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। কেউ কোনো কিছু আঁচ করতে পারেনি এ কারণে।

এ ঘটনায় পাশে থাকা বিএনপি প্রার্থী এরশাদের সঙ্গে শান্ত নামের আরও একজন গুলিবিদ্ধ হন। সবাইকে কাছাকাছি এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। দায়িত্বরত চিকিৎসকেরা বাবলাকে মৃত ঘোষণা করেন। অপর দুজন আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এভারকেয়ার হাসপাতালের এজিএম রাম প্রসাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, তিনজনের মধ্যে সরোয়ার বাবলা মারা গেছেন। অন্য দুজনের অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে বায়েজিদ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তবে কাউকে ঘটনাস্থল থেকে কিংবা অন্য কোনো স্থান থেকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘গোলাগুলির ঘটনায় একজন মারা গেছেন। আহত দুজনের অবস্থা শঙ্কামুক্ত। ঘটনার বিষয়ে আমরা তদন্ত শুরু করেছি।’ যেকোনো মূল্যে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হবে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রামে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর সঙ্গে নির্বাচনী গণসংযোগে অংশ নেয় সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলা। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নগরের বেসরকারি এভারকেয়ার হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে মাগরিবের নামাজের পরপর শুরু হওয়া নির্বাচনী গণসংযোগে এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনা ঘটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় যুবক খুন, স্ত্রী ও তাঁর মামাতো ভাই গ্রেপ্তার

বগুড়া প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বগুড়ায় জহুরুল ইসলাম (৩৮) নামের এক যুবককে খুনের অভিযোগে তাঁর স্ত্রীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বগুড়া সদরের হাজরাদীঘি গ্রামের বাসিন্দা জহুরুল ইসলামের রক্তাক্ত লাশ গতকাল মঙ্গলবার সকালে ওই গ্রামের একটি ধানখেত থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) ভোরে নিহত যুবকের স্ত্রী শামিমা বেগম (২৮) ও বিপুল হোসেন (৩৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বিপুল শামিমার মামাতো ভাই।

বগুড়া সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহফুজার রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ জানায়, গতকাল সকালে হাজরাদীঘি গ্রামের একটি ধানখেতে জহুরুল ইসলামের রক্তাক্ত মরদেহ দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। নিহত যুবকের মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের একাধিক চিহ্ন ছিল। লাশ উদ্ধারের পর নিহত যুবকের স্ত্রী পুলিশকে জানান, গত সোমবার রাত ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে কে বা কারা জহুরুলকে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর রাতে জহুরুল আর ফিরে আসেননি। কিন্তু পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তিগত তদন্ত করে নিহত যুবকের স্ত্রী শামিমা ও তাঁর মামাতো ভাই পার্শ্ববর্তী অন্তাহার গ্রামের হামিদুর রহমানের ছেলে বিপুল হোসেনকে সন্দেহ করে। পরে আজ ভোরে নিহত জহুরুলের বাড়ি থেকে তাঁর স্ত্রী শামিমা ও বিপুলকে আটক করে।

থানায় দুজনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করলে বের হয় চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিহত যুবকের স্ত্রী শামিমা পুলিশকে জানান, তাঁরা স্বামী-স্ত্রী একে অপরের মামাতো-ফুফাতো ভাই-বোন। আর জহুরুল ও বিপুল একে অপরের খালাতো ভাই। জহুরুল ইসলামের বাড়ি কাহালু উপজেলায় হলেও বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর ছোটবেলা থেকেই তিনি মামার বাড়ি হাজরাদীঘি গ্রামে বসবাস করতেন। তিনি পেশায় বেকারি পণ্যসামগ্রী পরিবহনের ভ্যানচালক আর বিপুল পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক। জহুরুলের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় ১৫ বছর আগে। তাঁদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। জহুরুলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার আগে থেকেই বিপুলের সঙ্গে শামিমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিয়ের পরেও তাঁরা প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন। বিপুল মাঝেমধ্যে শামিমার বাড়িতে আসতেন। শামিমার বাবা বিপুল ও জহুরুলের মামা হওয়ার কারণে গ্রামের লোকজন বিষয়টি সন্দেহের চোখে দেখতেন না। কিন্তু বিপুলের যাতায়াত পছন্দ করতেন না জহুরুল। এ নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে জহুরুলের দাম্পত্যকলহ লেগেই থাকত। শামিমার সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বিপুল তাঁকে একটি ছোট মোবাইল ফোন কিনে দেন। সেই ফোনটি শামিমা লুকিয়ে রাখতেন। এভাবে দীর্ঘদিন সম্পর্ক চলার একপর্যায় স্বামীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বিপুলের সঙ্গে পরামর্শ করেন শামিমা। দুজনের পরিকল্পনা অনুযায়ী গত সোমবার রাতে শামিমা দুধের সঙ্গে কৌশলে তাঁর স্বামীকে ১৫টি ঘুমের বড়ি সেবন করান। কিছুক্ষণ পর অচেতন হয়ে পড়লে রাত ১১টার দিকে বিপুল শামিমার বাড়ি আসেন। এরপর বিপুল কাঁধে করে জহুরুলকে বাড়ি থেকে বের করে গ্রামের একটি মাঠে পরিত্যক্ত বাড়ির কাছে নিয়ে যান। এ সময় সঙ্গে শামিমাও সেখানে যান। এরপর জহুরুলের মাথা পরিত্যক্ত বাড়ির দেয়ালের সঙ্গে কয়েকবার আঘাত করেন। একপর্যায়ে একটি পুরোনো স্যানিটারি প্যানের পরিত্যক্ত ভাঙা অংশ দিয়ে জহুরুলের মাথায় একাধিক আঘাত করে পাশের ধানখেতে ফেলে রেখে দুজন চলে যান।

পুলিশ পরিদর্শক মাহফুজার রহমান জানান, নিহত জহুরুলের মা-বাবার সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ না থাকায় এ ঘটনায় গ্রেপ্তার শামিমার বাবা শাহিনুর রহমান বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। সেই মামলায় দুজনকে আদালতে হাজির করা হয়েছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করার জন্য।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নেছারাবাদে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি।
প্রতীকী ছবি।

পিরোজপুরের নেছারাবাদে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে (৯) দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় মামলা দায়ের করেন।

এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন নয়ন (২০), অপূর্ব (২০) ও দুর্জয় হালদার (২০)।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পিরোজপুর সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রতিবেশী দুর্জয় হালদারের ঘরে মোবাইল চার্জার আনতে গেলে মুখে গামছা বেঁধে নয়ন, অপূর্ব ও দুর্জয় জোরপূর্বক তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ছাড়া আসামিরা বিভিন্ন সময়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

নেছারাবাদ থানার ওসি মো. বনি আমিন বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সিভিল সার্জন অফিসে পাঠানো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

টেকনাফে কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়কের লাশ উদ্ধারের পর সম্পাদক পলাতক

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি 
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত
নিহত মো. ইউনুস। ছবি: সংগৃহীত

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউনুস সিকদারের (৫০) লাশ উদ্ধারের পর থেকে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম সবুর মিয়া পলাতক রয়েছেন।

উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গিখালী এলাকার একটি সেতুর নিচ থেকে বুধবার সকাল ৮টার দিকে ইউনুস সিকদারের লাশ উদ্ধার করা হয়। ইউনুস উপজেলার সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন।

পরিবারের অভিযোগ, ইউনুস গতকাল মঙ্গলবার রাতে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম সবুর মিয়ার বাড়িতে আমন্ত্রণে গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়। ঘটনার পর থেকে সবুর মিয়া পলাতক।

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর জানান, সেতুর নিচ থেকে ভাসমান অবস্থায় একজন পুরুষের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ওপরে তুলে শনাক্ত করেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গ পাঠিয়েছে।

ওসি জানান, ধারণা করা হচ্ছে, লেনদেনসংক্রান্ত পাওনা টাকা আদায়ের জন্য এই হত্যাকাণ্ড। এ বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

টেকনাফ পৌর বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আব্দুস সালাম বলেন, ইউনুসকে কমিটির কথা বলে সবুর মিয়া আমন্ত্রণ জানান। মঙ্গলবার রাতে যাওয়ার পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে মরদেহ সেতুর নিচে ফেলে দেওয়া হয়। ঘটনার পর সবুর মিয়া পলাতক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রঙ্গিখালী এলাকার একাধিক বাসিন্দা জানান, ইউনুস প্রায়ই সবুর মিয়ার বাড়িতে আসা-যাওয়া করতেন। সবুর মিয়া, আবছার উদ্দিন, আনোয়ার হোসাইন ওরফে লেটাইয়্যা, মিজানুর রহমান ওরফে বাড়ু মিজানসহ কয়েকজন মিলে এলাকার দোকানে আড্ডাও দিতেন। কয়েক দিন ধরে ইয়াবাসংক্রান্ত পাওয়া টাকার বিরোধের জেরেই তাঁদের মধ্যে প্রকাশ্যে কথা-কাটাকাটির ঘটনা শোনা গেছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে সবুর মিয়ার বাড়িতে ইউনুসকে আটকে ব্যাপক নির্যাতন চালানো হয়। এতে মারা যাওয়ার পর লাশ সেতুর নিচে রেখে বাড়িতে তালা দিয়ে সবুরসহ অভিযুক্তরা পালিয়ে যান।

নিহতের স্ত্রী কোহিনুর আক্তার বলেন, ‘আমার স্বামীকে দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কোনো প্রকার টাকার লেনদেন নেই। আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।’

ওসি জানান, পাওয়া টাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে কী লেনদেনের টাকা, জানা যায়নি। যাঁদের নাম বলা হচ্ছে, তাঁদের ধরতে চেষ্টা চলছে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত