Ajker Patrika

ইসিতে পাল্টাপাল্টি আবেদন

আসন পুনর্বিন্যাস ঘিরে হিজলা-মুলাদীর লড়াই

  • বাবুগঞ্জ ও মুলাদী নিয়ে বরিশাল-৩ এবং হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ নিয়ে বরিশাল-৪ আসন গঠিত।
  • আসন পুনর্বিন্যাসের জন্য মুলাদী সমিতির ব্যানারে গত ১৫ মে ইসি সচিবালয়ে আবেদন করা হয়।
  • গত মাসে ইসিতে পাল্টা আবেদন করেছেন হিজলার বিএনপি নেতা তারেক হোসেন।
খান রফিক, বরিশাল 
আসন পুনর্বিন্যাস ঘিরে হিজলা-মুলাদীর লড়াই

বরিশালের সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাস চেয়ে হিজলা ও মুলাদী উপজেলার বাসিন্দাদের মধ্যে মনস্তাত্ত্বিক লড়াই চলছে। মুলাদীর মানুষের দাবি, স্বাধীনতার আগে ১৯৫৯ সালের নির্বাচন থেকে হিজলা-মুলাদী একসঙ্গে ছিল। ২০০৮ সালের পর তাঁদের বিচ্ছিন্ন করা হয়। এখন মুলাদী সমিতির পক্ষে হিজলাকে তাঁদের সঙ্গে যুক্ত করতে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করা হয়েছে। অন্যদিকে হিজলার একটি অংশ এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ইসিতে পাল্টা আবেদন দিয়েছে।

বর্তমানে বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলা নিয়ে বরিশাল-৩ এবং হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ নিয়ে বরিশাল-৪ সংসদীয় আসন গঠিত। এই আসন পুনর্বিন্যাসের জন্য মুলাদী সমিতির ব্যানারে গত ১৫ মে ইসি সচিবালয়ে আবেদন করা হয়। এনামুল হক বিপ্লব স্বাক্ষরিত আবেদনে বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ ও মুলাদী) আসনকে পুনর্বিন্যাস করে বরিশাল-৩ (হিজলা ও মুলাদী) করার দাবি জানানো হয়।

এ প্রসঙ্গে বিপ্লব বলেন, ‘হিজলা ও মুলাদীর মধ্যে আমাদের সামাজিক, ভৌগোলিক ও পারিবারিক মিল রয়েছে। ভ্রাতৃত্বের এই সম্পর্ক অটুট রাখতে আমরা এমন দাবি করেছি। আমাদের মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থাও ভালো।’

অন্যদিকে হিজলা যেন মেহেন্দীগঞ্জের সঙ্গেই থাকে এ জন্য গত মাসে ইসিতে পাল্টা আবেদন করেছেন হিজলা উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়ন বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক হোসেন। তিনি বলেন, ‘সাবেক এমপি মোশাররফ হোসেন মঙ্গুর সময় আমরা হিজলাবাসী বৈষম্যের শিকার হতাম। কিন্তু হিজলা এখন মেহেন্দীগঞ্জের সঙ্গে থাকায় সামাজিক, সাংস্কৃতিক দিক থেকে উপকৃত হচ্ছি। আমাদের দুই উপজেলার সম্পর্কও ভালো।’ এ জন্য তিনি বর্তমান বিন্যাস অনুযায়ী বরিশাল-৪ (হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ) আসন বহাল রাখার দাবি জানান।

এ নিয়ে কথা হলে মুলাদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী আব্দুস ছত্তার খান বলেন, ‘১৯৬৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত হিজলা উপজেলা মুলাদীর সঙ্গে সংসদীয় আসনে ছিল। সেই থেকে হিজলার সঙ্গে মুলাদীবাসীর হৃদ্যতার সম্পর্ক। কিন্তু ২০০৮ সালে পুনর্বিন্যাসের নামে হিজলাকে মেহেন্দীগঞ্জের সঙ্গে যুক্ত করে মেঘনার মাঝে ফেলে দেওয়া হয়েছে।’

অবশ্য বরিশাল-৪ (হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজবাউদ্দিন ফরহাদ বলেন, ‘আমরা হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জবাসী একই সেতুবন্ধনে আবদ্ধ থাকতে চাই। দুই উপজেলাবাসী বিচ্ছিন্ন হতে চায় না। এই আসনে পুনর্বিন্যাসের দরকার নেই। এটি করলে নতুন করে মানুষের মধ্যে পার্থক্য দেখা দেবে।’

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসন পুনর্বিন্যাস হলে সামনের নির্বাচনে অনেক হেভিওয়েট নেতা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন। ভোটের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যাবে। এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান মুন্সি আজকের পত্রিকাকে জানান, আসন পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা তিনি পাননি। আবেদন নির্বাচন কমিশনে করা হতে পারে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত