Ajker Patrika

বনভূমি যাচ্ছে ২০ ইটভাটার পেটে

মুলাদী (বরিশাল) প্রতিনিধি 
বরিশালের মুলাদী উপজেলার গলইভাঙা গ্রামের একটি ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য রাখা কাঠ। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশালের মুলাদী উপজেলার গলইভাঙা গ্রামের একটি ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য রাখা কাঠ। ছবি: আজকের পত্রিকা

বরিশালের মুলাদীতে ২০টি ইটভাটায় খনিজ কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কয়েকটি ভাটায় নামমাত্র কয়লা থাকলেও চুল্লিতে প্রধান জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ। এতে ইটভাটার ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, একই সঙ্গে উপজেলার বনভূমির পরিমাণও কমছে। স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে ভাটামালিকদের দাবি, কয়লা কেনায় খরচ বেশি হওয়ায় কাঠ পোড়াচ্ছেন তাঁরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রতিটি ইটভাটা কিংবা সংলগ্ন এলাকায় মালিকেরা করাতকল (সমিল) বসিয়ে নিয়েছেন। অপেক্ষাকৃত কম দামে কাঠ কিনে সমিলে চেরাই করে সহজেই ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করেন তাঁরা। কয়লার দাম বেশি এবং কাঠের দাম কম হওয়ায় মালিকেরা কয়লা ব্যবহার করেন না বলে দাবি করেছেন ইটভাটার শ্রমিকেরা। অনেক মালিক নামমাত্র কয়লা এনে ভাটায় রাখলেও কাঠ দিয়েই পোড়াচ্ছেন ইট।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইটভাটামালিক বলেন, খনিজ কয়লা কিনতে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক সময় পাওয়া গেলেও ব্যয়বহুল ও পরিবহন খরচ বেশি হয়। ১ টন কাঠের দাম যেখানে ৫-৬ হাজার টাকা, সেখানে ১ টন কয়লার দাম প্রায় ২৪-২৫ হাজার টাকা। তাই কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো অনেকটা সাশ্রয়ী ও সহজলভ্য। তিনি আরও বলেন, উপজেলার প্রায় ভাটাতেই কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানো হয়। কয়লা দিয়ে পোড়ালে প্রতি হাজার ইট কমপক্ষে ১৩ টাকায় বিক্রি করতে হবে। আর কাঠ দিয়ে পোড়ালে প্রতি হাজার ইট ৯ হাজার টাকার বিক্রি করা সম্ভব। ক্রেতারা কম দামে ইট পেলে বেশি দামে কিনবেন না।

গলইভাঙা গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, গলইভাঙা বাজার এলাকায় ২-৩টি ড্রাম চিমনির ইটভাটা রয়েছে। কম উচ্চতার চিমনির ভাটায় কাঠ দিয়ে

ইট পোড়ানোর ফলে আশপাশের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। কালো ধোঁয়ায় ঘরবাড়ি, বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাধারণ মানুষ কাশি-শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. খলিলুর রহমান বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় একটি এলাকায় কমপক্ষে ২৫ শতাংশ বনভূমি প্রয়োজন। মুলাদী উপজেলায় সামাজিক বনায়ন ও ব্যক্তিমালিকানাধীন মিলিয়ে ৮-৯ শতাংশ বনভূমি রয়েছে। ইটভাটায় অবাধে কাঠ পোড়ালে বনভূমি আরও কমে যাবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, ইটভাটায় সমিল স্থাপন করা এবং কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ অবৈধ। এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরিশাল বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী সাইফুদ্দিন বলেন, ইটভাটার আইন অমান্য করে মালিকেরা কাঠ পোড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিছুদিনের মধ্যে ঢাকা থেকে বিশেষ একটি টিম নিয়ে মুলাদী উপজেলায় অভিযান চালানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

জামালপুরে ধর্ষণ মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

জামালপুর প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জামালপুর সদর উপজেলায় গৃহবধূকে অপহরণের পর ধর্ষণের দায়ে চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে জামালপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মেলান্দহ উপজেলার ভাংগুনী ডাঙ্গা এলাকার মোন্নাফের ছেলে মো. মজনু মিয়া (২৫) ও ইমান আলীর ছেলে মো. জহুরুল ইসলাম (৪০)। একই উপজেলার রান্ধনি গাছা এলাকার হানিফ খন্দকার (৫৯) ও মো. মমিন মিয়া (৪০)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে স্বামীর বাড়ি যাওয়ার পথে জামালপুর সদর উপজেলার রশিদপুর এলাকা থেকে অপহরণ করেন দণ্ডপ্রাপ্তরা। পরে হানিফ খন্দকারের বাড়ি থেকে গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা করেন। সেই মামলায় চারজন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া শেষে আদালত রায় দেন।  

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফজলুল হক বলেন, ধর্ষণ মামলায় চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শেরপুরে চালকলের গুদামে মিলল ৪ টন সরকারি চাল, গ্রেপ্তার ১

শেরপুর প্রতিনিধি
শেরপুর জেলা শহরের নবীনগর এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি চালকলের গুদামে অভিযান চালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
শেরপুর জেলা শহরের নবীনগর এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে একটি চালকলের গুদামে অভিযান চালানো হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

শেরপুরে চালকলের গুদাম থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৩ হাজার ৮৪০ কেজি চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ ও খাদ্য অধিদপ্তরের যৌথ দল। এ ঘটনায় এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত পৌর শহরের নবীনগর এলাকার মেসার্স ওয়াজকুরুনী রাইস মিলের গুদামে এই অভিযান চালানো হয়। আটক ব্যক্তির নাম এনামুল হক। তিনি গুদামের পরিচালক বলে পুলিশকে জানিয়েছেন।

জানা গেছে, চালকলের ভেতর দুটি অটোরিকশায় রাখা খাদ্য অধিদপ্তরের সিলযুক্ত পাটের ১২ বস্তা ও প্লাস্টিকের আটটি বস্তাভর্তি চাল জব্দ করা হয়। এ ছাড়া গুদামের ভেতরে রাখা খোলা চাল নতুন মোড়কে ভর্তি করা হচ্ছিল। সেখান থেকে সব মিলিয়ে ৩ হাজার ৮৪০ কেজি চাল জব্দ করা হয়। তবে অভিযানের আগেই অটোরিকশা দুটির চালকেরা পালিয়ে যান।

শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়দুল আলম চাল বলেন, চালকলের গুদাম থেকে সরকারি চাল উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা এবং একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কীভাবে, কারা এই সরকারি চাল গুদামে নিয়েছেন, তা নিশ্চিত জানতে তদন্ত চলছে।

শেরপুর খাদ্য বিভাগের কারিগরি খাদ্য পরিদর্শক মানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক পরীক্ষা করে প্রমাণ পেয়েছি, গুদামের চালগুলো দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল।’

শেরপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরেজমিনে চালগুলো আমরা দেখেছি। এগুলো খাদ্য অধিদপ্তরের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল। এসব চাল বাইরে ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

চালবোঝাই ট্রলিচাপায় স্বামী-স্ত্রী নিহত

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
রণজিৎ দাস ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস। ছবি: সংগৃহীত
রণজিৎ দাস ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস। ছবি: সংগৃহীত

যশোরের মনিরামপুরে চালবোঝাই ট্রলির নিচে চাপা পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী এক দম্পতি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার দুপুরে মনিরামপুর-ঝিকরগাছা সড়কের বাকোশপোল মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত দম্পতি হলেন উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের মৃত অনন্ত দাসের ছেলে রণজিৎ দাস (৫০) ও তাঁর স্ত্রী পাপিয়া দাস (৪০)। রণজিতের স্থানীয় চাঁদপুর নতুন বাজারে ধান-পাটের আড়ত রয়েছে। পাপিয়া মনিরামপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের মেকানিক ছিলেন।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাকোশপোল মোড় ঘুরতে গিয়ে মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্বামী-স্ত্রী রাস্তায় পড়ে যান। এ সময় চালবোঝাই ট্রলি তাঁদের চাপা দেয়। পরে তাঁদের উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে বেলা ২টার দিকে চিকিৎসক ওই দম্পতিকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বাকোশপোল মোড়ের চা-দোকানি ইকবাল হোসেন জানান, ঘটনার সময় চালবোঝাই একটি ট্রলি ঝিকরগাছার দিক থেকে মনিরামপুরের দিকে আসছিল। আর স্ত্রীকে পেছনে বসিয়ে মোটরসাইকেলটি স্বামী চালাচ্ছিলেন। মোটরসাইকেলটি বাকোশপোল মোড় ঘুরতে গিয়ে সামনে আচমকা ট্রলি দেখে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন তিনি। এতে স্বামী-স্ত্রী দুজন পাকা রাস্তার ওপর পড়ে যান। এ সময় চালক ট্রলি নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে চাপা দেন।

ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আমি দ্রুত পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল করেছি। অ্যাম্বুলেন্স আসতে দেরি হওয়ায় আহত স্বামী-স্ত্রীকে ইঞ্জিন ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছি। পরে পুলিশ এসে ট্রলিসহ চালককে ধরে থানায় নিয়ে গেছে।’

মনিরামপুর উপজেলা জনস্বাস্থ্য দপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী জয়দেব দত্ত বলেন, ‘পাপিয়া আমার দপ্তরে মেকানিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে গভীর নলকূপ স্থাপনের কাজ তিনি তদারকি করতেন। আজ স্বামীর মোটরসাইকেলে চড়ে তিনি কাশিমনগর ইউনিয়নে নলকূপ স্থাপনের কাজ তদারকি করতে যাচ্ছিলেন। বাকোশপোল মোড় পার হওয়ার সময় ট্রলির নিচে চাপা পড়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনে নিহত হয়েছেন। পাপিয়ার মৃত্যুতে আমাদের দপ্তরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান বলেন, ‘ট্রলির নিচে চাপা পড়ে আহত মোটরসাইকেল আরোহী দম্পতিকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাঁদের মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আমরা চালকসহ ট্রলি আটক করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শিক্ষার্থীদের ধাওয়ার মুখে স্কুলে ঢুকতে পারলেন না সাবেক প্রধান শিক্ষক

বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি 
উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক প্রধান শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা
উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন সাবেক প্রধান শিক্ষক। ছবি: আজকের পত্রিকা

নওগাঁর বদলগাছীতে এক সাবেক প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ে ঢুকতে বাধা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের তাড়া খেয়ে স্থান ত্যাগ করতে বাধ্য হন তিনি। আজ বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চবিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ জুলাই ওই বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক শাদাত হোসেন শামীম ও সহকারী শিক্ষক রিফাত আরার ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে এলাকাজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয়দের দাবিতে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড শিক্ষক শামীমকে বরখাস্ত করে। পরবর্তী সময়ে রেজাউল করিম নামের এক শিক্ষককে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। আজ হঠাৎ করে শাদাত হোসেন শামীম তাঁর গ্রামের কিছু লোকজন নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্লোগান দেয় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে শামীম দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাদাত হোসেন বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অন্যায়ভাবে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। আমি হাইকোর্টে মামলা করলে আদালত আমার পক্ষে রায় দেন এবং বকেয়া বেতনসহ পদে যোগদানের নির্দেশ দেন। সেই রায়ের কাগজ উপজেলা নির্বাহী অফিস ও থানায় জমা দিয়েছি। বিদ্যালয়ে গেলে কিছু শিক্ষকের ইন্ধনে শিক্ষার্থীরা আমার ওপর হামলা চালায়। আমি আত্মরক্ষার জন্য স্থান ত্যাগ করি।’

অন্যদিকে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, ‘হাইকোর্টের যে রায় দেখানো হয়েছে, সেটি ভুয়া বলে আমরা সন্দেহ করছি। আজ সে গ্রামের কিছু লোক নিয়ে জোর করে প্রতিষ্ঠানে ঢোকার চেষ্টা করে এবং শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। সাতজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা তাকে বিদ্যালয়ে ফিরতে দেব না।’

একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘শিক্ষক সমাজের আদর্শ মানুষ। তাদের কাছ থেকে এমন আচরণ মানা যায় না। আমরা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এত বড় ঘটনার পর সে কীভাবে আবার বিদ্যালয়ে আসতে পারে?’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, ‘আমি বর্তমানে ছুটিতে ঢাকায় আছি। কোনো চিঠি এসেছে কি না, সে বিষয়ে অবগত নই।’

বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিছুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাইকোর্টের রায়সংক্রান্ত কাগজপত্র প্রধান শিক্ষক আমাকে দেখিয়েছেন। বিষয়টি তদন্তাধীন আছে। সবাইকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান ছনি বলেন, ‘ঘটনার বিস্তারিত এখনো পাইনি। তবে হাইকোর্টের রায়ের কথা শুনেছি। ট্রেনিং শেষে এসে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত