Ajker Patrika

সুন্দরবন: শিকারিদের দৌরাত্ম্যে হুমকিতে হরিণ

এস এস শোহান, বাগেরহাট আবুল আহসান টিটু, ফকিরহাট (বাগেরহাট) 
আপডেট : ১৭ জুলাই ২০২৫, ০৭: ৩৬
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চান্দেশ্বর এলাকায় সম্প্রতি বনরক্ষীদের অভিযানে জব্দ করা ফাঁদ। ছবি: আজকের পত্রিকা
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চান্দেশ্বর এলাকায় সম্প্রতি বনরক্ষীদের অভিযানে জব্দ করা ফাঁদ। ছবি: আজকের পত্রিকা

মৎস্য ও বন্য প্রাণীর প্রজনন, বংশ বৃদ্ধি ও বিচরণ কার্যক্রমের সুরক্ষার জন্য ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিন মাস বনজীবীদের সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা চলছে। কিন্তু এই সময়ে থেমে নেই হরিণশিকারিরা। তাঁরা নানা কৌশলে বন থেকে হরিণ শিকার করে লোকালয়ে এনে মাংস বিক্রি করছেন চড়া দামে। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্যে হুমকির মুখে সুন্দরবনের হরিণ।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বাগেরহাটের শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপাল, খুলনার দাকোপ এবং বরগুনার পাথরঘাটায় অনেকগুলো শিকারি চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। শিকারিরা বনরক্ষীদের চোখ ফাঁকি দিতে জেলে সেজে খণ্ড খণ্ডভাবে সরঞ্জাম বনের ভেতর নিয়ে পরে একত্র করে ফাঁদ তৈরি করে। বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মী ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় চলে এই শিকার।

শরণখোলা, মোংলা ও মোরেলগঞ্জের বাসিন্দারা জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে তাঁরা প্রকাশ্যে হরিণ শিকার করতেন। পরে বন বিভাগের নানা নিষেধাজ্ঞা ও মামলা দেওয়ায় এসব এলাকার সাধারণ মানুষ শিকার বন্ধ করলেও চোরা শিকারি এবং অতি মুনাফালোভীরা শিকার অব্যাহত রাখে। সাম্প্রতিক সময়ে বরগুনার চরদোয়ানি, জ্ঞানপাড়া ও খুলনার কয়রা এলাকার মানুষ বেশি জড়াচ্ছে এই অপরাধে। তাদের শিকার করা হরিণের মাংস বিক্রি হয় খুলনা, পিরোজপুর ও বাগেরহাট শহরের টাকাওয়ালা মানুষের কাছে।

শরণখোলার বৃদ্ধ শামসুর রহমান বলেন, ‘একটা সময় মাসে দু-চারটা হরিণ আমাদের গ্রামে চলে আসত। অনেকে ধরে জবাই করে খেত। কিন্তু অন্তত ১০ বছর হলো, আমাদের এলাকার মানুষ হরিণ শিকারের কথা চিন্তাও করে না। কারণ, একবার মামলা হলে ছাড়াতে অনেক টাকা লাগে। তবে বর্তমানে বরগুনা ও কয়রার লোকজন হরিণ শিকার করে নিয়ে যায়। ওরা নদীপথে এসে নদীপথেই নিয়ে যায়। বনরক্ষীদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ রয়েছে।’

সুন্দরবনের পাশের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, বিশেষ অনুষ্ঠান, আপ্যায়ন, উপঢৌকন ও ঘুষ হিসেবে হরিণের মাংস ব্যবহৃত হয়। বিশেষ ব্যক্তির মাধ্যমে ফোনে অর্ডার করলেই মেলে মাংস। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ১২০০ থেকে ১৮০০ টাকায়। বিভিন্ন পক্ষকে হাত করে চলে এই ব্যবসা। অনেক ক্ষেত্রে চামড়াসহ মাংস কেটে গ্রাহকের কাছে পাঠানো হয় প্রমাণ হিসেবে। হরিণের মাংস বিক্রির জন্য গড়ে উঠেছে অবৈধ নেটওয়ার্ক। অপরিচিত বা সন্দেহজনক কারও কাছে স্বীকার না করলেও সিন্ডিকেট সদস্যদের মাধ্যমে সহজে মেলে এটি।

এ নিয়ে কথা হলে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, মাংসের চাহিদা বন্ধ না হলে সুন্দরবনের হরিণ শিকার বন্ধ হবে না। তিনি জানান, সুন্দরবনের বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণ। সুন্দরবন টিকিয়ে রাখতে হলে হরিণ রক্ষা খুবই জরুরি। তাই হরিণ শিকার বন্ধে আইনের প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং ভোক্তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

ফাঁদ ও বিষ: হরিণ শিকারের জন্য মালা, ছিটকা ও হাঁটা নামের তিন ধরনের ফাঁদ ব্যবহার করে শিকারিরা। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় মালা। এই ফাঁদ বনের মধ্যে গাছের সঙ্গে নির্দিষ্ট উচ্চতায় মালার মতো করে পাতা থাকে। হরিণ হেঁটে যাওয়ার সময় ফাঁদে মাথা প্রবেশ করালেই আটকে পড়ে। আর ছিটকা হচ্ছে লম্বা ও চিকন গাছের মাথা নিচু করে বেঁধে রাখা একটি ফাঁদ। যখন হরিণ ওই গাছের পাতা খাওয়া শুরু করে এবং নাড়া লাগে, তখন ফাঁদ সক্রিয় হয়ে হরিণের গলায় ফাঁস পড়ে যায়। হাঁটা ফাঁদ এমনভাবে পাতা থাকে যে হরিণ হেঁটে গেলেই আটকে পড়ে যায়।

ফাঁদ তৈরিতে আগে শুধু নাইলনের রশি ব্যবহার করলেও বর্তমানে সিলভারের তৈরি চিকন তার ব্যবহার করা হয়; যাতে সহজে হরিণ বা বনরক্ষীদের চোখে না পড়ে। এ ছাড়া বনের মধ্যে ছোট ছোট গর্তে জমে থাকা পানিতে বিষ দিয়ে রাখেন শিকারিরা। ওই পানি খেলে কিছুক্ষণের মধ্যে হরিণের শরীর অবশ হয়ে যায়, তখন সেগুলোকে ধরে জবাই করে শিকারিরা।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, মে-জুন মাসে চাঁদপাই ও শরণখোলা রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ৮৬টি অভিযান পরিচালনা করেন বনকর্মীরা। এসব অভিযান থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফাঁদ জব্দ করা হয়। সেই সঙ্গে শিকারের কাজে ব্যবহৃত ৫৩টি ট্রলার ও নৌকা জব্দ হয়। এই সময়ে ৩৪ জনকে আটক এবং ৭৯ জনকে আসামি করে ৫৪টি মামলা করা হয়। পাশাপাশি ৮৪ কেজি হরিণের মাংস, ছয়টি হরিণের মাথা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বন বিভাগ।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ হরিণ শিকারের সঙ্গে জড়িত ১৫০ জনের তালিকা তৈরি করেছে। তালিকায় নাম আসা ব্যক্তিদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে বন বিভাগ।

প্যারালাল লাইন সার্চিং: সুন্দরবনে প্রাণী ও বনজ সম্পদ রক্ষায় সাধারণভাবে নদী-খালে নৌযানের মাধ্যমে টহল কার্যক্রম চলে বেশি। তবে এবার প্রথম বনে চোরা শিকারি ও অপরাধীদের ধরতে প্যারালাল লাইন সার্চিং (একসঙ্গে অনেক বনরক্ষীর সমতলে হেঁটে হেঁটে তল্লাশি) শুরু করেন বনরক্ষীরা। এতে সফলতাও মেলে। বনের মধ্যে নির্দিষ্ট উচ্চতায় শিকারিদের পেতে রাখা ও মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা ফাঁদ জব্দ করেছেন বনরক্ষীরা। এ ছাড়া সম্প্রতি বনের মধ্যে অপরাধীদের শনাক্তের জন্য ড্রোন ব্যবহার শুরু হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘যুগ যুগ ধরে সুন্দরবনে চোরা শিকারিরা হরিণ শিকার করে আসছে। সম্প্রতি আমরা প্যারালাল লাইন সার্চিং পদ্ধতিতে টহল জোরদার করায় শিকারিদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমেছে। দীর্ঘদিনের পেতে রাখা ফাঁদও পেয়েছি। বনের মধ্যে টহল বাড়ানো হচ্ছে। অপরাধমুক্ত সুন্দরবন গড়তে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যারা হরিণের মাংস খায়, তাদেরও মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। তাদের সামাজিকভাবে বর্জন করা দরকার।’

এই কর্মকর্তা আরও জানান, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগে জনবলের সংকট রয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর বনের জন্য আছেন মাত্র একজন বনকর্মী। তাঁর অধীনে ১০০টি শূন্য পদ রয়েছে। এই পদগুলোতে জনবল নিয়োগ হলে কাজের তৎপরতা আরও বাড়বে। শিকার বন্ধ করতে পারলে হরিণের সংখ্যা দ্রুত বাড়বে। হরিণ বাঘের প্রধান খাবার। বনের পরিবেশ এবং হরিণের সংখ্যা বাড়াতে পারলে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যাও বাড়বে নিশ্চয়। বন বিভাগ সেই লক্ষ্যে কাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট থেকে নিখোঁজ ৪ শিশু ঢাকায় খাবার হোটেলে কাজ করছিল

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি
রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার চার শিশু। ছবি: ডিএমপি

‎সিলেট থেকে নিখোঁজ হওয়া চার শিশুকে রাজধানীর শাহজাহানপুর রেলওয়ে কলোনি থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেলে রেলওয়ে কলোনির একটি খাবার হোটেল থেকে এদের উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া শিশুদের বয়স ১২ থেকে ১৩ বছরের মধ্য বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।

‎শাহজাহানপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানার অধিযাচনপত্রের (রিকুইজিশন) ভিত্তিতে শাহজাহানপুর থানার একটি দল গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে রেলওয়ে কলোনির একটি হোটেলে অভিযান চালায়। অভিযানে ওই হোটেল থেকে চার শিশুকে উদ্ধার করা হয়।

‎পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শিশুরা জানিয়েছে তারা সিলেট থেকে ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এসে পথ হারিয়ে ফেলে। এরপর ছয় দিন ধরে বিভিন্ন হোটেলে বয়ের কাজ করছিল।

‎উদ্ধারের পর শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তাদের প্রকৃত অভিভাবকের কাছে ফিরিয়ে দিতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেটে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

সিলেট প্রতিনিধি
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত
ইমরান আহমদ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের জকিগঞ্জে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব। সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছেন র‍্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ।

গ্রেপ্তার হওয়া ইমরান আহমদ (৩০) জকিগঞ্জ উপজেলার নিদনপুর গ্রামের খছরুজ্জামানের ছেলে।

র‍্যাব-৯ জানায়, সিলেটের জকিগঞ্জ থানার বারহাল এহিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী গত ২৬ জুলাই সকালে জকিগঞ্জ থানাধীন ফারুক মিয়ার পরিত্যক্ত আদিম ব্রিকস ফিল্ডে ঘুরতে যাওয়ার পর আসামিরা গোপনে ভিকটিম এবং তার বন্ধুর ছবি তোলে। আসামিরা ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেবে বলে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখায় এবং অনৈতিক প্রস্তাব করে। ভিকটিম তাতে রাজি না হলে আসামিরা তাকে ও তার বন্ধুকে জোরপূর্বক মুখ চেপে ধরে ব্রিকস ফিল্ডের ভেতরে নিয়ে যায়। ভিকটিমের বন্ধু তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে আসামিরা তাকে প্রাণে হত্যার ভয় দেখায় এবং তাকে আটকে রাখে।

পরবর্তী সময়ে ভিকটিমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দলবদ্ধ ধর্ষণ করে এবং ভিকটিমকে ওই বিষয়টি কাউকে বা পুলিশকে না জানানোর জন্য হত্যার হুমকি দেয়।

বিষয়টি ভিকটিম ভয়ে কাউকে জানায়নি। কিন্তু পরে অসুস্থ হয়ে গেলে পরিবারের লোকজনকে জানানোর পর ভিকটিম নিজে বাদী হয়ে জকিগঞ্জ থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করে।

পরবর্তী সময়ে রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার গোয়াইনঘাট বাইপাস বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ধর্ষণ মামলার এজাহারভুক্ত ১ নম্বর আসামি ইমরান আহমদকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এর আগে এই মামলার এজাহারভুক্ত ৩ নম্বর আসামি শাকের আহমদকে গত ২০ আগস্ট গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ আরও জানান, পরবর্তী আইনিব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেপ্তার আসামিকে সিলেট জেলার জকিগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়াও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র‍্যাব-৯-এর চলমান গোয়েন্দা তৎপরতা ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

কুমিল্লা সীমান্ত থেকে কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ

 কুমিল্লা প্রতিনিধি 
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত
জব্দ করা পণ্য। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা সেক্টরের সুলতানপুর ব্যাটালিয়ন (৬০ বিজিবি) সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ১ কোটি ৫ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় অবৈধ পণ্য জব্দ করেছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুলতানপুর ব্যাটালিয়নের (৬০ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. জিয়াউর রহমান। তিনি জানান, সোমবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত পৃথক অভিযানে কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর ও ব্রাহ্মণপাড়া এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় সীমান্তঘেঁষা এলাকা থেকে ভারতীয় পণ্য জব্দ করা হয়। জব্দ করা পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রায় ৭৯ লাখ ৫২ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় মোবাইল ফোনের ডিসপ্লে এবং ২৫ লাখ ৪৮ হাজার টাকা মূল্যের ভারতীয় খাদ্যসামগ্রী।

লে. কর্নেল জিয়াউর রহমান আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় অবৈধ পণ্য পাচার প্রতিরোধে বিজিবি কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে। সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

জব্দ করা পণ্যগুলো আইনিপ্রক্রিয়া শেষে সংশ্লিষ্ট কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা, তদন্তে ডিবি

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ৫৯
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আজ সোমবার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে কাজী মুকিতুজ্জামান বাদী হয়ে এই মামলা করেন। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা।

আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মাহাদী হাসান জুয়েল জানান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়নকে নিয়ে মন্তব্য করায় এই মামলা করা হয়েছে।

মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর আসামি নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী দল বিএনপি ও বিএনপির নেতৃত্ব প্রদানকারী ব্যক্তিদের সুনাম ক্ষুণ্ন ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার লক্ষ্যে ইচ্ছাকৃত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে বিভিন্ন মিথ্যা, বানোয়াট, বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।

গত ১ নভেম্বর যুবদল নেতা নয়নকে নিয়ে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন,“জুলাই সনদ নিয়ে একটি বড় দল গুন্ডামি করছে, ঢাকা মহানগরের একজন নেতা আছে নয়ন একা যে পরিমাণ চাঁদাবাজি করেছে এবং দুর্নীতি করেছে— এই টাকা দিয়েও বাংলাদেশে একটা গণভোট সম্ভব। আমরা ওনাদেরকে এত দিন জমজমের পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে চেষ্টা করেছি, ওনাদের মাথা ক্লিন হয় নাই, বডিও ক্লিন হয় নাই। এখন আমার মনে হয় ওনাদেরকে বুড়িগঙ্গার পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।”

মামলার আরজিতে বাদী বলেন, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বক্তব্য বাদীর দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে, দলের নেতার নামে কুৎসা রটিয়ে তাঁর মানহানি করেছে। একই সঙ্গে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে, যা মানহানিকর অপরাধ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত