Ajker Patrika

শাহেদ কায়েসের একগুচ্ছ কবিতা

শাহেদ কায়েস 
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২২, ১৫: ০৬
শাহেদ কায়েসের একগুচ্ছ কবিতা

শূন্যতা

নির্বাক কবরস্থানে জোনাক-জ্বলা সন্ধ্যায়—
ফেলে এসেছি আমার শৈশব; পাশেই শীর্ণ 
ব্রহ্মপুত্র নদ—শুনি জলের অধরা বিস্মৃতি

আমাকে জানে ওই শতবর্ষী বট, যে দুঃখ না
পাওয়ার দুঃখে ঝুঁকে থাকে ব্রহ্মপুত্রের জলে 

কুমারীপথ, শৈল্পিক বাঁক, ট্রেনের হুইসেল
গেল কি বিশ্রামে—বটগাছটির আড়ালে? 

দল বেঁধে শূন্যতা ঝাঁপ দেয় নবীন কবরে
সারা রাত গোরখোদকদের আলাপ শুনি

সেই জোনাকিদের কোথাও দেখি না আর। 

ফেরা 

লতাগুল্মে ঢেকেছে ব্যক্তিগত ডাকবাক্স 
সংগোপনে থেকে যাক পাতাঝরার মুহূর্ত 

মুখর হয়ে ওঠে মৃদঙ্গ ও মন্দিরা;—
                  এল কী পিঙ্গলা? 
শূন্য কাঞ্চনমঞ্চ—কোথায় অতিরথ? 

দূরে উড়ে যেতে-যেতে, যে বাঁশির সুরে—
শরৎ মেঘের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলে
তার তো থাকে না কোনো প্রতিঠিকানা 

কী সুর ছিল কলাবতী চোখের দৃষ্টিতে! 
ঝরে পড়ল সংসারবিমুখ একটি পাতা 

স্বাক্ষর করেছি নীবারা নদীর জলপত্রে
ফিরে যাও, সারথি—এসেছ যে পথে। 

অসম্পূর্ণ কথা 

বিচিত্র দৈর্ঘ্যের অসম্পূর্ণ কথার পালক 
এল হাওয়ার সাইকেলে ভ্রমণ সেরে 
তখনো আলো ফোটেনি ভালো, নামতা
পাঠে মশগুল ভোরের নভেরা বাতাস! 

পাশে কারুশিল্পের পুকুরে স্নান সারে—
হিজলের লাজুক ছায়া; ঝুঁকে আছে কে! 

অজানাই থেকে যায়, কোন কেন্দ্রাতিক 
বলে বাওকুড়ানি বাতাসে কেন যে ঘোরে 
নিমগ্ন হয়ে অসম্পূর্ণ কথার ইলেকট্রন! 

নুলিয়া মেয়েটি 

স্পর্শেরা সব কোথায় যায়! স্পর্শের কি আছে 
স্মৃতি?—ভেজাতে পারে অসময়ের বৃষ্টি হয়ে! 

গভীর সমুদ্রে ছুটে চলা জাহাজের পিছু নেয়—
যেসব সি-গাল, তারা কি জানে নোনা হাওয়ায় 
কেন এই অস্থিরতা? কেন অহেতুক ছুটে চলা! 

শঙ্খের গভীরে দুঃখ লুকিয়ে বাতাস কুড়াত
যে মেয়েটি—তাকে আর কোথাও দেখি না। 

বাতাসের উত্তাল ঢেউয়ে আন্দোলিত হাত
সমুদ্র ফসফরাসে মিশে যাচ্ছে হাতের সংকেত 

হারিয়ে গেল কি সে জীবিকার নোনাজলে? 
জীবিকারা ঘুমায় নিভৃতে গার্মেন্টস গলিতে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত