ইশতিয়াক হাসান

কল্পকাহিনির অনেক চরিত্রের অনুপ্রেরণা বাস্তবের কোনো মানুষ। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলও তাঁর বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন বাস্তবের একজন মানুষে অনুপ্রাণিত হয়ে। কোনান ডয়েলের ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই মানুষের গল্পই জানাব আজ।
তবে মূল লেখা শুরুর আগে বরং স্যার আর্থার কোনান ডয়েলকে নিয়ে দু-চারটি কথা বলা যাক। ১৮৫৯ সালের ২২ মে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় জন্ম তাঁর। এই ব্রিটিশ লেখক এবং চিকিৎসক নানা ধরনের গল্প-উপন্যাস রচনা করলেও তাঁকে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি এনে দেয় শার্লক হোমসই। এই গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে ডয়েল লেখেন চারটি উপন্যাস এবং ৫৮টি ছোট গল্প। ১৮৮৭ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে প্রকাশিত হয় এগুলো।
এ ছাড়া কোনান ডয়েলের আরেকটি খুব জনপ্রিয় চরিত্র প্রোফেসর চ্যালেঞ্জার। ডয়েলের বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য লস্ট ওয়ার্ল্ড’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র এই চ্যালেঞ্জারই। ১৯৩০ সালের ৭ জুলাই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন কোনান ডয়েল।
এবার মূল গল্পে আসা যাক। ড. জোসেফ বেল ছিলেন এডিনবরার এক শৈল চিকিৎসক ও ফরেনসিক গোয়েন্দা। তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণক্ষমতার জন্য নাম ছিল বেলের। রোগীদের চেহারা ও আচরণ দেখে পেশা, কোথায় থাকেন এমন নানা তথ্য দিয়ে কখনো কখনো চমকে দিতেন ছাত্রদের। বেলের এই ছাত্রদের একজন ছিলেন আর্থার কোনান ডয়েল। পাঠক নিশ্চয় বুঝে গেছেন, এই ড. জোসেফ বেলের চরিত্রে অনুপ্রাণিত হয়েই স্যার আর্থার কোনান ডয়েল সৃষ্টি করেন তাঁর অসাধারণ চরিত্র শার্লক হোমস।
১৮৭৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা মেডিকেল স্কুলে জোসেফ বেলের সঙ্গে কোনান ডয়েলের পরিচয়। ডয়েল ওখানে ডাক্তারি পড়ছিলেন আর বেল ছিলেন তাঁর শিক্ষকদের একজন। প্রথম যখন তাঁর একটা লেকচার শোনেন ডয়েল, তখন বেলের বয়স ৩৯। শরীরটা ঝাঁকি দিয়ে প্রতিটি কদম ফেলতেন তিনি, এতে প্রচুর শক্তি ব্যয় হয় বলে মনে হতো। চোখজোড়ায় বুদ্ধির ঝিলিক টের পাওয়া যেত। অসাধারণ একজন শল্য চিকিৎসক হিসেবে নাম কামালেও বেল ছিলেন শখের লেখক, খেলোয়াড় এবং বার্ড ওয়াচার।
ডয়েলের পড়ালেখাজীবনের দ্বিতীয় বছরের শেষ দিকে তাঁকে ওয়ার্ডে একজন সহকারী হিসেবে মনোনীত করেন বেল। তখনই জোসেফ বেলের অসাধারণ পর্যবেক্ষণ জ্ঞান আরও কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় ডয়েলের। রোগীদের উচ্চারণের সামান্যতম তারতম্য বিশ্লেষণ করে কোন জায়গা থেকে এসেছেন তা নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারতেন বেল। হাতের ত্বক দেখে অনায়াসে অনুমান করে নিতেন তিনি একজন কাঠমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি নাকি গির্জার ঘণ্টা বাজিয়ে। চলার ধরন থেকে অবলীলায় বলে দিতেন সৈনিক নাকি নাবিক। আবার নাবিক হিসেবে শনাক্ত করে ফেললে শরীরে উল্কির খোঁজ করতেন, যেটা বুঝতে সাহায্য করবে ওই নাবিক জাহাজ নিয়ে কোন বন্দরে ভেড়েন।
খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মানুষটিকে দেখা, রোগীকে পরীক্ষা করা—এসবের ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য উপসংহারে পৌঁছাতেন বেল সব সময়। কোনান ডয়েল শার্লক হোমসের মধ্যে এসব বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটিয়েছেন। তবে কালজয়ী চরিত্রটি যে অসাধারণ এই প্রফেসরে অনুপ্রাণিত, এ নিয়ে কোনো লুকোছাপা করেননি, ‘এতে সন্দেহ নেই যে এ ধরনের একটি চরিত্রের সংস্পর্শে আসার পর, অপরাধীর ভুল নয় বরং নিজের জ্ঞান দিয়ে রহস্য সমাধান করতে পারঙ্গম এমন একজন বৈজ্ঞানিক চিন্তার গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টিতে আমি তাঁর কৌশল ব্যবহার করেছি।’
প্রফেসরের সঙ্গে কোনান ডয়েলের পরিচয়ের ১০ বছর পর ১৮৮৭ সালে আ স্টাডি ইন স্কারলেটের মাধ্যমে প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে শার্লক হোমসের। ১৮৯১ সালে দ্য স্ট্যান্ড ম্যাগাজিনে চরিত্রটি নিয়ে ছোটগল্পের প্রথম কিস্তি প্রকাশের পর বৃহস্পতি তুঙ্গে উঠে যায় হোমসের। বলা চলে, দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর খ্যাতি। মজার ঘটনা, এই গোয়েন্দায় আগ্রহী ছিলেন স্বয়ং ড. বেলও। এমনকি তাঁর প্রাক্তন ছাত্রকে পরামর্শও দিয়েছিলেন কখনো কখনো, যদিও সেগুলো বাস্তবসম্মত নয় মনে করায় সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন ডয়েল।
অবশ্য স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লিটল জনেরও শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টিতে কিছুটা হলেও ভূমিকা আছে। ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা মেডিকেল স্কুলে কোনান ডয়েল যখন চিকিৎসাবিদ্যায় পড়ালেখা শুরু করেন, তখন বেল ও লিটল জন ছিলেন সেখানকার সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র। বিভিন্ন তদন্তে পুলিশকেও সহায়তা করতেন লিটল জন। বিশেষ করে রহস্যজনক মৃত্যু হলে তাঁর ডাক পড়ত প্রথমে। এ ধরনের বিভিন্ন কেসে বেল ও লিটল জন একসঙ্গে কাজও করেছেন।
কোনান ডয়েল হোমস চরিত্রটি সৃষ্টির পেছনে বেলের অবদানের কথা সব সময় বললেও লিটল জনের কথা প্রথম উল্লেখ করেন এই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের মৃত্যুর কয়েক বছর বাদে, ১৯২৯ সালে। এর এক বছর বাদে অবশ্য কোনান ডায়েল নিজেই মারা যান। ১৯২৯ সালে কেনিয়ার নাইরোবি ভ্রমণের সময় প্রথম তিনি উল্লেখ করেন, বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা-ভাবনা থেকে একটি গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টির বিষয়ে বেল ও লিটল জনের কৌশল প্রথম উৎসাহী করে তোলে তাঁকে।
যাক, আবার ফিরে আসা যাক বেলের প্রসঙ্গে। হোমসের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠেন বেলও। এডিনবরা পুলিশ একপর্যায়ে রহস্য সমাধানে তাঁর সাহায্য চেয়ে বসে। ১৮৮৮ সালে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার জ্যাক দ্য রিপারের তালাশের সময়ও জোসেফ বেলের পরামর্শ নেয় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। কথিত আছে, বেল এমনকি একজন সন্দেহভাজনের নাম জানিয়েছিলেনও, তবে সেটা জনসমক্ষে আনা হয়নি।
তবে বেল কখনোই হোমসের সঙ্গে তাঁকে মেলানোর পক্ষপাতি ছিলেন না। অসাধারণ মস্তিষ্ক ছাড়া বেল ও হোমসের চরিত্রগত মিলও ছিল কমই। চেহারা-সুরতেও বিস্তর ফারাক ছিল। তা ছাড়া হোমসের মতো অগোছালো ছিলেন না বেল মোটেই। কোকেনে আসক্তি ছিল না তাঁর, তেমনি ভায়োলিনও বাজাতেন না। তাই চরিত্র সৃষ্টির সমস্ত কৃতিত্ব দিয়েছেন ছাত্রকেই।
১৯১১ সালে ৭৪ বছর বয়সে মারা যান ড. জোসেফ বেল, কোনান ডয়েলের শার্লক হোমসকে নিয়ে শেষ বই প্রকাশের ১৬ বছর আগে।
সূত্র: দ্য আর্থার কোনান ডয়েল এনসাইক্লোপিডিয়া, উইকিপিডিয়া, অ্যামেরিকান ইউরোলজিকেল অ্যাসোসিয়েশন, পাবলিশার উইকলি ডট কম

কল্পকাহিনির অনেক চরিত্রের অনুপ্রেরণা বাস্তবের কোনো মানুষ। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলও তাঁর বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন বাস্তবের একজন মানুষে অনুপ্রাণিত হয়ে। কোনান ডয়েলের ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই মানুষের গল্পই জানাব আজ।
তবে মূল লেখা শুরুর আগে বরং স্যার আর্থার কোনান ডয়েলকে নিয়ে দু-চারটি কথা বলা যাক। ১৮৫৯ সালের ২২ মে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় জন্ম তাঁর। এই ব্রিটিশ লেখক এবং চিকিৎসক নানা ধরনের গল্প-উপন্যাস রচনা করলেও তাঁকে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি এনে দেয় শার্লক হোমসই। এই গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে ডয়েল লেখেন চারটি উপন্যাস এবং ৫৮টি ছোট গল্প। ১৮৮৭ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে প্রকাশিত হয় এগুলো।
এ ছাড়া কোনান ডয়েলের আরেকটি খুব জনপ্রিয় চরিত্র প্রোফেসর চ্যালেঞ্জার। ডয়েলের বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য লস্ট ওয়ার্ল্ড’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র এই চ্যালেঞ্জারই। ১৯৩০ সালের ৭ জুলাই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন কোনান ডয়েল।
এবার মূল গল্পে আসা যাক। ড. জোসেফ বেল ছিলেন এডিনবরার এক শৈল চিকিৎসক ও ফরেনসিক গোয়েন্দা। তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণক্ষমতার জন্য নাম ছিল বেলের। রোগীদের চেহারা ও আচরণ দেখে পেশা, কোথায় থাকেন এমন নানা তথ্য দিয়ে কখনো কখনো চমকে দিতেন ছাত্রদের। বেলের এই ছাত্রদের একজন ছিলেন আর্থার কোনান ডয়েল। পাঠক নিশ্চয় বুঝে গেছেন, এই ড. জোসেফ বেলের চরিত্রে অনুপ্রাণিত হয়েই স্যার আর্থার কোনান ডয়েল সৃষ্টি করেন তাঁর অসাধারণ চরিত্র শার্লক হোমস।
১৮৭৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা মেডিকেল স্কুলে জোসেফ বেলের সঙ্গে কোনান ডয়েলের পরিচয়। ডয়েল ওখানে ডাক্তারি পড়ছিলেন আর বেল ছিলেন তাঁর শিক্ষকদের একজন। প্রথম যখন তাঁর একটা লেকচার শোনেন ডয়েল, তখন বেলের বয়স ৩৯। শরীরটা ঝাঁকি দিয়ে প্রতিটি কদম ফেলতেন তিনি, এতে প্রচুর শক্তি ব্যয় হয় বলে মনে হতো। চোখজোড়ায় বুদ্ধির ঝিলিক টের পাওয়া যেত। অসাধারণ একজন শল্য চিকিৎসক হিসেবে নাম কামালেও বেল ছিলেন শখের লেখক, খেলোয়াড় এবং বার্ড ওয়াচার।
ডয়েলের পড়ালেখাজীবনের দ্বিতীয় বছরের শেষ দিকে তাঁকে ওয়ার্ডে একজন সহকারী হিসেবে মনোনীত করেন বেল। তখনই জোসেফ বেলের অসাধারণ পর্যবেক্ষণ জ্ঞান আরও কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় ডয়েলের। রোগীদের উচ্চারণের সামান্যতম তারতম্য বিশ্লেষণ করে কোন জায়গা থেকে এসেছেন তা নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারতেন বেল। হাতের ত্বক দেখে অনায়াসে অনুমান করে নিতেন তিনি একজন কাঠমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি নাকি গির্জার ঘণ্টা বাজিয়ে। চলার ধরন থেকে অবলীলায় বলে দিতেন সৈনিক নাকি নাবিক। আবার নাবিক হিসেবে শনাক্ত করে ফেললে শরীরে উল্কির খোঁজ করতেন, যেটা বুঝতে সাহায্য করবে ওই নাবিক জাহাজ নিয়ে কোন বন্দরে ভেড়েন।
খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মানুষটিকে দেখা, রোগীকে পরীক্ষা করা—এসবের ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য উপসংহারে পৌঁছাতেন বেল সব সময়। কোনান ডয়েল শার্লক হোমসের মধ্যে এসব বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটিয়েছেন। তবে কালজয়ী চরিত্রটি যে অসাধারণ এই প্রফেসরে অনুপ্রাণিত, এ নিয়ে কোনো লুকোছাপা করেননি, ‘এতে সন্দেহ নেই যে এ ধরনের একটি চরিত্রের সংস্পর্শে আসার পর, অপরাধীর ভুল নয় বরং নিজের জ্ঞান দিয়ে রহস্য সমাধান করতে পারঙ্গম এমন একজন বৈজ্ঞানিক চিন্তার গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টিতে আমি তাঁর কৌশল ব্যবহার করেছি।’
প্রফেসরের সঙ্গে কোনান ডয়েলের পরিচয়ের ১০ বছর পর ১৮৮৭ সালে আ স্টাডি ইন স্কারলেটের মাধ্যমে প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে শার্লক হোমসের। ১৮৯১ সালে দ্য স্ট্যান্ড ম্যাগাজিনে চরিত্রটি নিয়ে ছোটগল্পের প্রথম কিস্তি প্রকাশের পর বৃহস্পতি তুঙ্গে উঠে যায় হোমসের। বলা চলে, দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর খ্যাতি। মজার ঘটনা, এই গোয়েন্দায় আগ্রহী ছিলেন স্বয়ং ড. বেলও। এমনকি তাঁর প্রাক্তন ছাত্রকে পরামর্শও দিয়েছিলেন কখনো কখনো, যদিও সেগুলো বাস্তবসম্মত নয় মনে করায় সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন ডয়েল।
অবশ্য স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লিটল জনেরও শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টিতে কিছুটা হলেও ভূমিকা আছে। ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা মেডিকেল স্কুলে কোনান ডয়েল যখন চিকিৎসাবিদ্যায় পড়ালেখা শুরু করেন, তখন বেল ও লিটল জন ছিলেন সেখানকার সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র। বিভিন্ন তদন্তে পুলিশকেও সহায়তা করতেন লিটল জন। বিশেষ করে রহস্যজনক মৃত্যু হলে তাঁর ডাক পড়ত প্রথমে। এ ধরনের বিভিন্ন কেসে বেল ও লিটল জন একসঙ্গে কাজও করেছেন।
কোনান ডয়েল হোমস চরিত্রটি সৃষ্টির পেছনে বেলের অবদানের কথা সব সময় বললেও লিটল জনের কথা প্রথম উল্লেখ করেন এই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের মৃত্যুর কয়েক বছর বাদে, ১৯২৯ সালে। এর এক বছর বাদে অবশ্য কোনান ডায়েল নিজেই মারা যান। ১৯২৯ সালে কেনিয়ার নাইরোবি ভ্রমণের সময় প্রথম তিনি উল্লেখ করেন, বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা-ভাবনা থেকে একটি গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টির বিষয়ে বেল ও লিটল জনের কৌশল প্রথম উৎসাহী করে তোলে তাঁকে।
যাক, আবার ফিরে আসা যাক বেলের প্রসঙ্গে। হোমসের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠেন বেলও। এডিনবরা পুলিশ একপর্যায়ে রহস্য সমাধানে তাঁর সাহায্য চেয়ে বসে। ১৮৮৮ সালে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার জ্যাক দ্য রিপারের তালাশের সময়ও জোসেফ বেলের পরামর্শ নেয় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। কথিত আছে, বেল এমনকি একজন সন্দেহভাজনের নাম জানিয়েছিলেনও, তবে সেটা জনসমক্ষে আনা হয়নি।
তবে বেল কখনোই হোমসের সঙ্গে তাঁকে মেলানোর পক্ষপাতি ছিলেন না। অসাধারণ মস্তিষ্ক ছাড়া বেল ও হোমসের চরিত্রগত মিলও ছিল কমই। চেহারা-সুরতেও বিস্তর ফারাক ছিল। তা ছাড়া হোমসের মতো অগোছালো ছিলেন না বেল মোটেই। কোকেনে আসক্তি ছিল না তাঁর, তেমনি ভায়োলিনও বাজাতেন না। তাই চরিত্র সৃষ্টির সমস্ত কৃতিত্ব দিয়েছেন ছাত্রকেই।
১৯১১ সালে ৭৪ বছর বয়সে মারা যান ড. জোসেফ বেল, কোনান ডয়েলের শার্লক হোমসকে নিয়ে শেষ বই প্রকাশের ১৬ বছর আগে।
সূত্র: দ্য আর্থার কোনান ডয়েল এনসাইক্লোপিডিয়া, উইকিপিডিয়া, অ্যামেরিকান ইউরোলজিকেল অ্যাসোসিয়েশন, পাবলিশার উইকলি ডট কম
ইশতিয়াক হাসান

কল্পকাহিনির অনেক চরিত্রের অনুপ্রেরণা বাস্তবের কোনো মানুষ। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলও তাঁর বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন বাস্তবের একজন মানুষে অনুপ্রাণিত হয়ে। কোনান ডয়েলের ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই মানুষের গল্পই জানাব আজ।
তবে মূল লেখা শুরুর আগে বরং স্যার আর্থার কোনান ডয়েলকে নিয়ে দু-চারটি কথা বলা যাক। ১৮৫৯ সালের ২২ মে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় জন্ম তাঁর। এই ব্রিটিশ লেখক এবং চিকিৎসক নানা ধরনের গল্প-উপন্যাস রচনা করলেও তাঁকে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি এনে দেয় শার্লক হোমসই। এই গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে ডয়েল লেখেন চারটি উপন্যাস এবং ৫৮টি ছোট গল্প। ১৮৮৭ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে প্রকাশিত হয় এগুলো।
এ ছাড়া কোনান ডয়েলের আরেকটি খুব জনপ্রিয় চরিত্র প্রোফেসর চ্যালেঞ্জার। ডয়েলের বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য লস্ট ওয়ার্ল্ড’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র এই চ্যালেঞ্জারই। ১৯৩০ সালের ৭ জুলাই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন কোনান ডয়েল।
এবার মূল গল্পে আসা যাক। ড. জোসেফ বেল ছিলেন এডিনবরার এক শৈল চিকিৎসক ও ফরেনসিক গোয়েন্দা। তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণক্ষমতার জন্য নাম ছিল বেলের। রোগীদের চেহারা ও আচরণ দেখে পেশা, কোথায় থাকেন এমন নানা তথ্য দিয়ে কখনো কখনো চমকে দিতেন ছাত্রদের। বেলের এই ছাত্রদের একজন ছিলেন আর্থার কোনান ডয়েল। পাঠক নিশ্চয় বুঝে গেছেন, এই ড. জোসেফ বেলের চরিত্রে অনুপ্রাণিত হয়েই স্যার আর্থার কোনান ডয়েল সৃষ্টি করেন তাঁর অসাধারণ চরিত্র শার্লক হোমস।
১৮৭৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা মেডিকেল স্কুলে জোসেফ বেলের সঙ্গে কোনান ডয়েলের পরিচয়। ডয়েল ওখানে ডাক্তারি পড়ছিলেন আর বেল ছিলেন তাঁর শিক্ষকদের একজন। প্রথম যখন তাঁর একটা লেকচার শোনেন ডয়েল, তখন বেলের বয়স ৩৯। শরীরটা ঝাঁকি দিয়ে প্রতিটি কদম ফেলতেন তিনি, এতে প্রচুর শক্তি ব্যয় হয় বলে মনে হতো। চোখজোড়ায় বুদ্ধির ঝিলিক টের পাওয়া যেত। অসাধারণ একজন শল্য চিকিৎসক হিসেবে নাম কামালেও বেল ছিলেন শখের লেখক, খেলোয়াড় এবং বার্ড ওয়াচার।
ডয়েলের পড়ালেখাজীবনের দ্বিতীয় বছরের শেষ দিকে তাঁকে ওয়ার্ডে একজন সহকারী হিসেবে মনোনীত করেন বেল। তখনই জোসেফ বেলের অসাধারণ পর্যবেক্ষণ জ্ঞান আরও কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় ডয়েলের। রোগীদের উচ্চারণের সামান্যতম তারতম্য বিশ্লেষণ করে কোন জায়গা থেকে এসেছেন তা নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারতেন বেল। হাতের ত্বক দেখে অনায়াসে অনুমান করে নিতেন তিনি একজন কাঠমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি নাকি গির্জার ঘণ্টা বাজিয়ে। চলার ধরন থেকে অবলীলায় বলে দিতেন সৈনিক নাকি নাবিক। আবার নাবিক হিসেবে শনাক্ত করে ফেললে শরীরে উল্কির খোঁজ করতেন, যেটা বুঝতে সাহায্য করবে ওই নাবিক জাহাজ নিয়ে কোন বন্দরে ভেড়েন।
খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মানুষটিকে দেখা, রোগীকে পরীক্ষা করা—এসবের ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য উপসংহারে পৌঁছাতেন বেল সব সময়। কোনান ডয়েল শার্লক হোমসের মধ্যে এসব বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটিয়েছেন। তবে কালজয়ী চরিত্রটি যে অসাধারণ এই প্রফেসরে অনুপ্রাণিত, এ নিয়ে কোনো লুকোছাপা করেননি, ‘এতে সন্দেহ নেই যে এ ধরনের একটি চরিত্রের সংস্পর্শে আসার পর, অপরাধীর ভুল নয় বরং নিজের জ্ঞান দিয়ে রহস্য সমাধান করতে পারঙ্গম এমন একজন বৈজ্ঞানিক চিন্তার গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টিতে আমি তাঁর কৌশল ব্যবহার করেছি।’
প্রফেসরের সঙ্গে কোনান ডয়েলের পরিচয়ের ১০ বছর পর ১৮৮৭ সালে আ স্টাডি ইন স্কারলেটের মাধ্যমে প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে শার্লক হোমসের। ১৮৯১ সালে দ্য স্ট্যান্ড ম্যাগাজিনে চরিত্রটি নিয়ে ছোটগল্পের প্রথম কিস্তি প্রকাশের পর বৃহস্পতি তুঙ্গে উঠে যায় হোমসের। বলা চলে, দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর খ্যাতি। মজার ঘটনা, এই গোয়েন্দায় আগ্রহী ছিলেন স্বয়ং ড. বেলও। এমনকি তাঁর প্রাক্তন ছাত্রকে পরামর্শও দিয়েছিলেন কখনো কখনো, যদিও সেগুলো বাস্তবসম্মত নয় মনে করায় সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন ডয়েল।
অবশ্য স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লিটল জনেরও শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টিতে কিছুটা হলেও ভূমিকা আছে। ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা মেডিকেল স্কুলে কোনান ডয়েল যখন চিকিৎসাবিদ্যায় পড়ালেখা শুরু করেন, তখন বেল ও লিটল জন ছিলেন সেখানকার সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র। বিভিন্ন তদন্তে পুলিশকেও সহায়তা করতেন লিটল জন। বিশেষ করে রহস্যজনক মৃত্যু হলে তাঁর ডাক পড়ত প্রথমে। এ ধরনের বিভিন্ন কেসে বেল ও লিটল জন একসঙ্গে কাজও করেছেন।
কোনান ডয়েল হোমস চরিত্রটি সৃষ্টির পেছনে বেলের অবদানের কথা সব সময় বললেও লিটল জনের কথা প্রথম উল্লেখ করেন এই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের মৃত্যুর কয়েক বছর বাদে, ১৯২৯ সালে। এর এক বছর বাদে অবশ্য কোনান ডায়েল নিজেই মারা যান। ১৯২৯ সালে কেনিয়ার নাইরোবি ভ্রমণের সময় প্রথম তিনি উল্লেখ করেন, বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা-ভাবনা থেকে একটি গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টির বিষয়ে বেল ও লিটল জনের কৌশল প্রথম উৎসাহী করে তোলে তাঁকে।
যাক, আবার ফিরে আসা যাক বেলের প্রসঙ্গে। হোমসের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠেন বেলও। এডিনবরা পুলিশ একপর্যায়ে রহস্য সমাধানে তাঁর সাহায্য চেয়ে বসে। ১৮৮৮ সালে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার জ্যাক দ্য রিপারের তালাশের সময়ও জোসেফ বেলের পরামর্শ নেয় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। কথিত আছে, বেল এমনকি একজন সন্দেহভাজনের নাম জানিয়েছিলেনও, তবে সেটা জনসমক্ষে আনা হয়নি।
তবে বেল কখনোই হোমসের সঙ্গে তাঁকে মেলানোর পক্ষপাতি ছিলেন না। অসাধারণ মস্তিষ্ক ছাড়া বেল ও হোমসের চরিত্রগত মিলও ছিল কমই। চেহারা-সুরতেও বিস্তর ফারাক ছিল। তা ছাড়া হোমসের মতো অগোছালো ছিলেন না বেল মোটেই। কোকেনে আসক্তি ছিল না তাঁর, তেমনি ভায়োলিনও বাজাতেন না। তাই চরিত্র সৃষ্টির সমস্ত কৃতিত্ব দিয়েছেন ছাত্রকেই।
১৯১১ সালে ৭৪ বছর বয়সে মারা যান ড. জোসেফ বেল, কোনান ডয়েলের শার্লক হোমসকে নিয়ে শেষ বই প্রকাশের ১৬ বছর আগে।
সূত্র: দ্য আর্থার কোনান ডয়েল এনসাইক্লোপিডিয়া, উইকিপিডিয়া, অ্যামেরিকান ইউরোলজিকেল অ্যাসোসিয়েশন, পাবলিশার উইকলি ডট কম

কল্পকাহিনির অনেক চরিত্রের অনুপ্রেরণা বাস্তবের কোনো মানুষ। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলও তাঁর বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন বাস্তবের একজন মানুষে অনুপ্রাণিত হয়ে। কোনান ডয়েলের ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই মানুষের গল্পই জানাব আজ।
তবে মূল লেখা শুরুর আগে বরং স্যার আর্থার কোনান ডয়েলকে নিয়ে দু-চারটি কথা বলা যাক। ১৮৫৯ সালের ২২ মে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় জন্ম তাঁর। এই ব্রিটিশ লেখক এবং চিকিৎসক নানা ধরনের গল্প-উপন্যাস রচনা করলেও তাঁকে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি এনে দেয় শার্লক হোমসই। এই গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে ডয়েল লেখেন চারটি উপন্যাস এবং ৫৮টি ছোট গল্প। ১৮৮৭ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে প্রকাশিত হয় এগুলো।
এ ছাড়া কোনান ডয়েলের আরেকটি খুব জনপ্রিয় চরিত্র প্রোফেসর চ্যালেঞ্জার। ডয়েলের বিখ্যাত উপন্যাস ‘দ্য লস্ট ওয়ার্ল্ড’-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র এই চ্যালেঞ্জারই। ১৯৩০ সালের ৭ জুলাই পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেন কোনান ডয়েল।
এবার মূল গল্পে আসা যাক। ড. জোসেফ বেল ছিলেন এডিনবরার এক শৈল চিকিৎসক ও ফরেনসিক গোয়েন্দা। তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণক্ষমতার জন্য নাম ছিল বেলের। রোগীদের চেহারা ও আচরণ দেখে পেশা, কোথায় থাকেন এমন নানা তথ্য দিয়ে কখনো কখনো চমকে দিতেন ছাত্রদের। বেলের এই ছাত্রদের একজন ছিলেন আর্থার কোনান ডয়েল। পাঠক নিশ্চয় বুঝে গেছেন, এই ড. জোসেফ বেলের চরিত্রে অনুপ্রাণিত হয়েই স্যার আর্থার কোনান ডয়েল সৃষ্টি করেন তাঁর অসাধারণ চরিত্র শার্লক হোমস।
১৮৭৭ সালে ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা মেডিকেল স্কুলে জোসেফ বেলের সঙ্গে কোনান ডয়েলের পরিচয়। ডয়েল ওখানে ডাক্তারি পড়ছিলেন আর বেল ছিলেন তাঁর শিক্ষকদের একজন। প্রথম যখন তাঁর একটা লেকচার শোনেন ডয়েল, তখন বেলের বয়স ৩৯। শরীরটা ঝাঁকি দিয়ে প্রতিটি কদম ফেলতেন তিনি, এতে প্রচুর শক্তি ব্যয় হয় বলে মনে হতো। চোখজোড়ায় বুদ্ধির ঝিলিক টের পাওয়া যেত। অসাধারণ একজন শল্য চিকিৎসক হিসেবে নাম কামালেও বেল ছিলেন শখের লেখক, খেলোয়াড় এবং বার্ড ওয়াচার।
ডয়েলের পড়ালেখাজীবনের দ্বিতীয় বছরের শেষ দিকে তাঁকে ওয়ার্ডে একজন সহকারী হিসেবে মনোনীত করেন বেল। তখনই জোসেফ বেলের অসাধারণ পর্যবেক্ষণ জ্ঞান আরও কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় ডয়েলের। রোগীদের উচ্চারণের সামান্যতম তারতম্য বিশ্লেষণ করে কোন জায়গা থেকে এসেছেন তা নির্ভুলভাবে বলে দিতে পারতেন বেল। হাতের ত্বক দেখে অনায়াসে অনুমান করে নিতেন তিনি একজন কাঠমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি নাকি গির্জার ঘণ্টা বাজিয়ে। চলার ধরন থেকে অবলীলায় বলে দিতেন সৈনিক নাকি নাবিক। আবার নাবিক হিসেবে শনাক্ত করে ফেললে শরীরে উল্কির খোঁজ করতেন, যেটা বুঝতে সাহায্য করবে ওই নাবিক জাহাজ নিয়ে কোন বন্দরে ভেড়েন।
খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মানুষটিকে দেখা, রোগীকে পরীক্ষা করা—এসবের ওপর গুরুত্ব দিয়ে একটি গ্রহণযোগ্য উপসংহারে পৌঁছাতেন বেল সব সময়। কোনান ডয়েল শার্লক হোমসের মধ্যে এসব বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটিয়েছেন। তবে কালজয়ী চরিত্রটি যে অসাধারণ এই প্রফেসরে অনুপ্রাণিত, এ নিয়ে কোনো লুকোছাপা করেননি, ‘এতে সন্দেহ নেই যে এ ধরনের একটি চরিত্রের সংস্পর্শে আসার পর, অপরাধীর ভুল নয় বরং নিজের জ্ঞান দিয়ে রহস্য সমাধান করতে পারঙ্গম এমন একজন বৈজ্ঞানিক চিন্তার গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টিতে আমি তাঁর কৌশল ব্যবহার করেছি।’
প্রফেসরের সঙ্গে কোনান ডয়েলের পরিচয়ের ১০ বছর পর ১৮৮৭ সালে আ স্টাডি ইন স্কারলেটের মাধ্যমে প্রথম আত্মপ্রকাশ ঘটে শার্লক হোমসের। ১৮৯১ সালে দ্য স্ট্যান্ড ম্যাগাজিনে চরিত্রটি নিয়ে ছোটগল্পের প্রথম কিস্তি প্রকাশের পর বৃহস্পতি তুঙ্গে উঠে যায় হোমসের। বলা চলে, দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তাঁর খ্যাতি। মজার ঘটনা, এই গোয়েন্দায় আগ্রহী ছিলেন স্বয়ং ড. বেলও। এমনকি তাঁর প্রাক্তন ছাত্রকে পরামর্শও দিয়েছিলেন কখনো কখনো, যদিও সেগুলো বাস্তবসম্মত নয় মনে করায় সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করেন ডয়েল।
অবশ্য স্কটল্যান্ডের বিখ্যাত ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ লিটল জনেরও শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টিতে কিছুটা হলেও ভূমিকা আছে। ইউনিভার্সিটি অব এডিনবরা মেডিকেল স্কুলে কোনান ডয়েল যখন চিকিৎসাবিদ্যায় পড়ালেখা শুরু করেন, তখন বেল ও লিটল জন ছিলেন সেখানকার সবচেয়ে বিখ্যাত চরিত্র। বিভিন্ন তদন্তে পুলিশকেও সহায়তা করতেন লিটল জন। বিশেষ করে রহস্যজনক মৃত্যু হলে তাঁর ডাক পড়ত প্রথমে। এ ধরনের বিভিন্ন কেসে বেল ও লিটল জন একসঙ্গে কাজও করেছেন।
কোনান ডয়েল হোমস চরিত্রটি সৃষ্টির পেছনে বেলের অবদানের কথা সব সময় বললেও লিটল জনের কথা প্রথম উল্লেখ করেন এই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের মৃত্যুর কয়েক বছর বাদে, ১৯২৯ সালে। এর এক বছর বাদে অবশ্য কোনান ডায়েল নিজেই মারা যান। ১৯২৯ সালে কেনিয়ার নাইরোবি ভ্রমণের সময় প্রথম তিনি উল্লেখ করেন, বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা-ভাবনা থেকে একটি গোয়েন্দা চরিত্র সৃষ্টির বিষয়ে বেল ও লিটল জনের কৌশল প্রথম উৎসাহী করে তোলে তাঁকে।
যাক, আবার ফিরে আসা যাক বেলের প্রসঙ্গে। হোমসের জনপ্রিয়তা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিচিত হয়ে ওঠেন বেলও। এডিনবরা পুলিশ একপর্যায়ে রহস্য সমাধানে তাঁর সাহায্য চেয়ে বসে। ১৮৮৮ সালে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার জ্যাক দ্য রিপারের তালাশের সময়ও জোসেফ বেলের পরামর্শ নেয় স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। কথিত আছে, বেল এমনকি একজন সন্দেহভাজনের নাম জানিয়েছিলেনও, তবে সেটা জনসমক্ষে আনা হয়নি।
তবে বেল কখনোই হোমসের সঙ্গে তাঁকে মেলানোর পক্ষপাতি ছিলেন না। অসাধারণ মস্তিষ্ক ছাড়া বেল ও হোমসের চরিত্রগত মিলও ছিল কমই। চেহারা-সুরতেও বিস্তর ফারাক ছিল। তা ছাড়া হোমসের মতো অগোছালো ছিলেন না বেল মোটেই। কোকেনে আসক্তি ছিল না তাঁর, তেমনি ভায়োলিনও বাজাতেন না। তাই চরিত্র সৃষ্টির সমস্ত কৃতিত্ব দিয়েছেন ছাত্রকেই।
১৯১১ সালে ৭৪ বছর বয়সে মারা যান ড. জোসেফ বেল, কোনান ডয়েলের শার্লক হোমসকে নিয়ে শেষ বই প্রকাশের ১৬ বছর আগে।
সূত্র: দ্য আর্থার কোনান ডয়েল এনসাইক্লোপিডিয়া, উইকিপিডিয়া, অ্যামেরিকান ইউরোলজিকেল অ্যাসোসিয়েশন, পাবলিশার উইকলি ডট কম

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
১ দিন আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।
হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

কল্পকাহিনির অনেক চরিত্রের অনুপ্রেরণা বাস্তবের কোনো মানুষ। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলও তাঁর বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন বাস্তবের একজন মানুষে অনুপ্রাণিত হয়ে। কোনান ডয়েলের ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই মানুষের গল্পই জানাব আজ।
০৭ জুলাই ২০২৪
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।
প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।
কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’
গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।
ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’
মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’
মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

কল্পকাহিনির অনেক চরিত্রের অনুপ্রেরণা বাস্তবের কোনো মানুষ। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলও তাঁর বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন বাস্তবের একজন মানুষে অনুপ্রাণিত হয়ে। কোনান ডয়েলের ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই মানুষের গল্পই জানাব আজ।
০৭ জুলাই ২০২৪
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
১ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৫ অক্টোবর ২০২৫
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
রকিব হাসানের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর। তিনি সেবা প্রকাশনীর প্রতিষ্ঠাতা কাজী আনোয়ার হোসেনের ছোট ছেলে কাজী মায়মুর হোসেনের স্ত্রী।
মাসুমা মায়মুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘তিন গোয়েন্দা ও সেবা প্রকাশনীর পাঠকদেরকে আন্তরিক দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছুক্ষণ আগে রকিব হাসান সাহেব পরলোক গমন করেছেন। ডায়ালাইসিস চলাকালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওনার জীবনাবসান ঘটে। আপনারা ওনার পবিত্র আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। সেখান থেকে স্কুলজীবন শেষ করে ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও অফিসের বাঁধাধরা জীবনে তাঁর মন টেকেনি। অবশেষে তিনি লেখালেখিকে বেছে নেন জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে।

সেবা প্রকাশনী থেকে তাঁর লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে বিশ্বসেরা ক্ল্যাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন তিনি। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তাঁর পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো তিন গোয়েন্দা সিরিজ। এই সিরিজ বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
মূলত রবার্ট আর্থারের থ্রি ইনভেস্টিগেটরস সিরিজ অবলম্বনে তিন গোয়েন্দার সূচনা হয়। তবে রকিব হাসানের লেখনশৈলীতে এটি পেয়েছে একেবারে নতুন রূপ। বাংলাদেশি সাহিত্য হয়ে উঠেছে এটি। এই সিরিজের মাধ্যমে তিনি হয়ে ওঠেন হাজারো কিশোর পাঠকের প্রিয় লেখক।
নিজ নামে লেখার পাশাপাশি তিনি ব্যবহার করেছেন বিভিন্ন ছদ্মনাম। শামসুদ্দীন নওয়াব নামে তিনি অনুবাদ করেছিলেন জুল ভার্নের বইগুলো।
বাংলাদেশের পাঠকদের কাছে রকিব হাসান শুধু একজন গোয়েন্দা লেখক নন, তিনি কয়েক প্রজন্মের শৈশব-কৈশোরের ভালোবাসার মানুষ।

কল্পকাহিনির অনেক চরিত্রের অনুপ্রেরণা বাস্তবের কোনো মানুষ। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলও তাঁর বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন বাস্তবের একজন মানুষে অনুপ্রাণিত হয়ে। কোনান ডয়েলের ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই মানুষের গল্পই জানাব আজ।
০৭ জুলাই ২০২৪
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
১ দিন আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ দিন আগে
হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য।
১০ অক্টোবর ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

হাঙ্গেরির ঔপন্যাসিক লাসলো ক্রাসনাহোরকাই এবার (২০২৫ সালে) সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেলেন তাঁর দীর্ঘ, দার্শনিক বাক্য ও মানবজীবনের বিশৃঙ্খলার গভীর অনুসন্ধানী সাহিত্যকর্মের জন্য। সুইডিশ একাডেমি তাঁকে সম্মান জানিয়েছে ‘শিল্পের শক্তিকে পুনরায় প্রতিষ্ঠিত করার’ জন্য। লেখক সুসান সনটাগ অবশ্য তাঁকে একসময় ‘মহাপ্রলয়ের হাঙ্গেরিয়ান গুরু’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
সাহিত্যজগতে অনেকের কাছে ক্রাসনাহোরকাইয়ের নোবেল পাওয়ার এই ঘোষণাটি যেন কয়েক দশক ধরে চলা একটি বাক্যের সমাপ্তি।
১৯৫৪ সালে হাঙ্গেরির ছোট শহর জিউলা-তে জন্ম নেওয়া ক্রাসনাহোরকাই ১৯৮০-এর দশকের শুরুতে গল্প লেখা শুরু করেন। তাঁর প্রথম উপন্যাস স্যাটানট্যাঙ্গো (১৯৮৫) একটি বৃষ্টিস্নাত, ধ্বংসপ্রায় গ্রামের কাহিনি—যেখানে প্রতারক, মাতাল ও হতাশ মানুষেরা মিথ্যা আশায় আঁকড়ে থাকে। পরিচালক বেলা-তার তাঁর এই উপন্যাসটিকে দীর্ঘ ৭ ঘণ্টার এক সাদাকালো চলচ্চিত্রে রূপ দেন। এই বইতেই ধরা পড়ে ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখার বৈশিষ্ট্যসমূহ, যেমন—অবিরাম দীর্ঘ বাক্য, দার্শনিক হাস্যরস ও পতনের কিনারায় দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের প্রতিচ্ছবি।
তাঁর পরবর্তী উপন্যাসগুলো—দ্য মেলানকোলি অব রেজিস্ট্যান্স (১৯৮৯), ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার (১৯৯৯) ও সেইবো দেয়ার বিলো (২০০৮)—তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গিকে মহাজাগতিক পরিসরে বিস্তৃত করেছে। ‘ওয়ার অ্যান্ড ওয়ার’–এ তিনি এক নথি প্রহরীর গল্প বলেছেন, যিনি রহস্যময় এক পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে নিউইয়র্কে পালিয়ে যান এবং আত্মহত্যা করেন—যেন ক্রম বিলীন পৃথিবীতে অর্থ ধরে রাখার এক মরিয়া চেষ্টা তাঁর।
ক্রাসনাহোরকাইয়ের লেখায় কাহিনি প্রায় সময়ই বাক্যের ভেতর হারিয়ে যায়। তিনি লিখেছেন এমন বাক্য, যা একাধিক পৃষ্ঠা জুড়ে পাঠককে টেনে নেয় অবচেতনে, অবিরাম প্রবাহে।
তাঁর সাহিত্যে হাস্যরস ও ট্র্যাজেডি পাশাপাশি চলে। স্যাটানট্যাঙ্গো–এর মাতাল নাচের দৃশ্য যেমন নিঃশেষের প্রতীক, তেমনি ‘ব্যারন ওয়েঙ্কহাইমস হোমকামিং’ (২০১৬)-এ দেখা যায়, ফিরে আসা এক পরাজিত অভিজাতকে। যার মাধ্যমে প্রকাশ পায় সভ্যতার পচন ও মানুষের হাস্যকর ভ্রান্তি।
২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার পাওয়ার মধ্য দিয়েই প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান ক্রাসনাহোরকাই। অনুবাদক জর্জ সির্টেস ও ওটিলি মুলজেট তাঁর জটিল হাঙ্গেরিয়ান ভাষাকে ইংরেজিতে রূপ দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ‘হাডসন রিভিউ’ তাঁকে বর্ণনা করেছিল ‘অন্তহীন বাক্যের ভ্রমণশিল্পী’ হিসেবে।
চল্লিশ বছরের সৃষ্টিতে ক্রাসনাহোরকাইয়ের ভুবন চিত্র, সংগীত, দর্শন ও ভাষার মিলনে বিস্তৃত। সাম্প্রতিক উপন্যাস ‘হার্শট ০৭৭৬৯’ (২০২৪)–এ তিনি এক প্রবাহিত বাক্যে লিখেছেন নব্য-নাৎসি, নেকড়ে আর এক হতভাগ্য পদার্থবিদের কাহিনি—আধুনিক ইউরোপের নৈতিক পক্ষাঘাতের রূপক হিসেবে।
তাঁর সমগ্র সাহিত্যজগৎ এক অন্ধকার ও ধ্যানমগ্ন মহাবিশ্ব—যেখানে পতন, শূন্যতা ও করুণা পাশাপাশি থাকে। ‘সেইবো দেয়ার বিলো’ বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘সৌন্দর্য, যত ক্ষণস্থায়ীই হোক না কেন, তা পবিত্রতার প্রতিবিম্ব।’ এই বিশ্বাসই লাসলো ক্রাসনাহোরকাইকে সেই বিরল লেখক করে তুলেছে, যাঁর নৈরাশ্যও মুক্তির মতো দীপ্ত।

কল্পকাহিনির অনেক চরিত্রের অনুপ্রেরণা বাস্তবের কোনো মানুষ। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলও তাঁর বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র শার্লক হোমস চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন বাস্তবের একজন মানুষে অনুপ্রাণিত হয়ে। কোনান ডয়েলের ৯৪তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সেই মানুষের গল্পই জানাব আজ।
০৭ জুলাই ২০২৪
প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।
১ দিন আগে
জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল।
২০ দিন আগে
জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ তিন গোয়েন্দার স্রষ্টা রকিব হাসান মারা গেছেন। আজ বুধবার রাজধানীর একটি হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলাকালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
১৫ অক্টোবর ২০২৫