Ajker Patrika

প্রেম অথবা রহস্যগল্প

জাকির তালুকদার
আপডেট : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ২২: ০৮
প্রেম অথবা রহস্যগল্প

এক ঘণ্টা আগেও জানতাম না অচেনা যুবতী আর আমি একই রাতে, একই সময়ে একই স্বপ্ন দেখেছি।

বেশির ভাগ স্বপ্ন মানুষ আর মনে রাখতে পারে না ঘুম ভেঙে গেলে। আর কিছু স্বপ্ন ঘুম ভাঙিয়ে মানুষকে জাগিয়ে রাখে পরের কয়েকটি দিন এবং রাত পর্যন্ত। তার মানে আর সবকিছুর মতো স্বপ্নের গুরুত্বেও অনেক তারতম্য আছে।

ফোনটা এল যখন আমি বিছানা না ছেড়ে স্বপ্নটার কথাই ভাবছি। স্ক্রিনে কোনো নাম বা নম্বর নেই। খুব অবাক হওয়ার মতো বিষয় নয়। অনেক ভিআইপি বা গোয়েন্দা সংস্থার লোকের ফোন নম্বর ওঠে না স্ক্রিনে। তাই খুব বেশি অবাক না হলেও একটু সতর্ক হয়েই রিসিভ করতে হয়। কণ্ঠে যেন ঘুমের আমেজ না বোঝা যায়। মোটামুটি স্বাভাবিক কণ্ঠ, তবে সর্দি-লাগলে যেমন ভারী শোনায়, শেষের অক্ষরটির উচ্চারণ অস্পষ্ট হয়ে যায়, ঠিক সে রকম মনে হলো।

হ্যালো বলল না, কোনো সম্ভাষণ করল না, আমি রিসিভ বাটন চাপ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বলল—মেয়েটির ফোন নম্বর বলছি শুনুন।

বললাম—একটু হোল্ড করুন। কাগজ-কলম নিয়ে আসি। লিখে রাখতে হবে। নইলে এগারোটা ডিজিট মনে রাখতে পারব না।

উত্তর এল—ভুলবেন না।

মানে? আপনি কি আমাকে নম্বরটি টেক্সট করে পাঠাবেন?

তারও দরকার নেই।

নম্বরটা বলা হলো আমাকে। তারপর সেই কণ্ঠ খুব আকুতি মিশিয়ে বলল—মনে রাখবেন আজ সূর্যাস্তের মধ্যেই আপনাদের দুজনকে করতে হবে কাজটি। নইলে কিন্তু সমূহ বিপদ! কোনো দ্বিধা রাখবেন না, প্লিজ। মনে কোনো সন্দেহ রাখবেন না। পৃথিবীর অস্তিত্ব নির্ভর করছে আপনাদের ওপর।

তারপর মোবাইল নীরব।

তবে একটু পরেই মেয়েটির ফোন।

আমার নাম জাহরা।

জানি।

তার মানে আপনিও রাতে সেই একই স্বপ্ন দেখেছেন?

একই স্বপ্ন কি না, জানি না। তবে একটি স্বপ্ন দেখেছি।

বুঝেছি। একই স্বপ্ন দেখেছি আমরা।

কীভাবে বুঝলেন?

উত্তর না দিয়ে প্রশ্ন আসে—আমার মোবাইল নম্বরটি বলুন তো?

আমি একমুহূর্ত না থেমে এগারোটি ডিজিট বলে যাই। নিজেই অবাক হই স্মৃতি আমার এত ঝকঝকে হলো কেমন করে! একবার শুনেই মুখস্থ হয়ে গেছে নম্বর!

মেয়েটি বলে—আর কোনো সন্দেহ নেই। আমি তৈরি হয়ে বেরিয়ে পড়ব পনেরো মিনিটের মধ্যে। বলুন কোথায় দেখা হবে আমাদের?

আমি বলি—দাঁড়ান, দাঁড়ান! স্বপ্নটা তো নিছক স্বপ্নই হতে পারে।

তা পারে। কিন্তু যদি সত্যি হয়ে থাকে? তাহলে কাজটা না করলে যে পৃথিবী বাঁচবে না! এত বড় রিস্ক আমরা নেব?

এবার সত্যিই আমার ভেতরটা কেঁপে ওঠে। তবু বলি—কিন্তু পৃথিবীতে আট শ কোটি মানুষ থাকতে আমাদের দুজনকেই কেন বেছে নেওয়া হলো? কী আছে আমাদের মধ্যে?

সেগুলো পরে ভাবা যাবে। আপনি বেরিয়ে আসুন।

আমি ঈষৎ বিরক্তি প্রকাশ করি—আপনি কিন্তু আমাকে জোর করছেন!

জাহরা এ কথায় পাল্টা বিরক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায় না। বলে, আমাকে ফোনে সেই কণ্ঠ এটা করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। বলেছে, আপনি নিজে থেকে আমাকে ফোন না-ও করতে পারেন। কারণ মেয়েদের কাছে ছোট হতে আপনার খুব অনিচ্ছা বলেই আপনি এখন পর্যন্ত প্রেমহীন। আপনি আগ বাড়িয়ে কোনো মেয়েকে ফোন করবেন না হয়তো। সে কারণেই উদ্যোগী আমাকেই হতে হয়েছে।

একটু চুপ থেকে বলি—আমি বেরোচ্ছি। আপনিই বলুন কোথায় দেখা হবে আমাদের?

পাবলিক লাইব্রেরির গেটে আসুন।

দেখার সঙ্গে সঙ্গেই চিনতে পারলাম জাহরাকে। জাহরাও আমাকে। কে যে চেনাল কে জানে! আমার চেহারা নিতান্তই সাধারণ। ভিড়ের মধ্যে আলাদা করে চোখে পড়ার মতো নয়। আর জাহরাকেও আমি আগে কোনো দিন দেখেছি বলে মনে পড়ে না। উদ্বিগ্ন সুন্দর জাহরা। তবু চিনলাম।

জাহরা কাছে এসে দাঁড়াল। সোজাসুজি চলে এল কাজের কথায়—কোথায় যাব আমরা?

এবার তার দুই গালে একটু লালিমা। উদ্বেগের সঙ্গে লজ্জার মিশেল—কোথায় গিয়ে কাজটা...মানে ওইটা...মানে...কাজটা করব আমরা?

আমি তো জানি না।

আপনার বাসায়?

কথা যত এগোচ্ছে জাহরা তত লাল হয়ে উঠছে লজ্জায়।

সম্ভব না। মা আছে, রিটায়ার্ড বাবা প্রায় সব সময় বাসাতেই থাকেন, বড় ভাইয়ের বউ-ছেলে-মেয়ে আছে। আপনার বাসার কী অবস্থা?

জাহরা বলে—একই।

আমি একটু শব্দ করে হাসি—আমাদের কোনো ‘লিটনের ফ্ল্যাট’ নেই।

সে-ও হেসে ফেলে—আমরা ব্যাকডেটেড। তবু আমাদের ওপরই কেন যে পড়ল এই কাজের ভার! চলেন আমরা বরং পার্ক, উদ্যানগুলো ঘুরে ঘুরে দেখি। কোথাও না কোথাও সুযোগ পেয়ে যাব।

কাজ। মানে পরস্পরকে চুম্বন করা। মাত্র একবার। স্বপ্নে দেখেছি পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে হলে আমাদের দুজনকে মাত্র একবার পরস্পরকে নিবিড় চুম্বন করতে হবে। এমন চুম্বন যখন দুজন পৃথিবী ভুলে যাবে। আমাকে কেন বেছে নেওয়া হলো? কারণ আমি আজ পর্যন্ত কোনো নারীর ঠোঁটে চুম্বন করিনি। জাহরাকেও সেই একই কারণে বেছে নেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের দুজনেরই গোপন আফসোসের জায়গা। অন্তত আমার। কিন্তু সেটিই হলো আজ আমাদের যোগ্যতা।

আমি বলি—দাঁড়ান। জায়গা খুঁজে পেলেও আমি কিন্তু প্রেমহীন চুম্বন করতে রাজি নই। আমাদের মধ্যে প্রেম তৈরি হয়নি। এত তাড়াতাড়ি তা তৈরির সুযোগও নেই।

জাহরা একটু ঝাঁজালো কণ্ঠে বলে—সে সমস্যা তো আমারও। প্রেমহীন চুম্বন চাই না, স্পর্শ চাই না বলেই তো আমার ঠোঁট এখনো ভার্জিন।

চলেন, জায়গা খুঁজি। যদি এই সময়ের মধ্যে মনে প্রেমের অনুভূতি না তৈরি হয়, তাহলে কাজটা না করেই ফিরে যাব যে যার ঘরে।

আমরা পার্ক বা উদ্যানে নির্জন জায়গার সন্ধানে বেরিয়ে পড়ি। রিকশায়, সিএনজিতে, হেঁটে ঘুরতে থাকি শহরের এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত। কিন্তু সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়, দুপুর পেরিয়ে বিকেল হয়, আমরা একটি পবিত্র চুম্বনের জন্য কোনো নির্জন স্থান পাই না। তখন আমাদের উদ্বেগ বাড়তে থাকে। পেটে হয়তো খিধে। কিন্তু আমরা নিজেদের হাতের বোতলের পানিতে মাঝে মাঝে চুমুক দেওয়া ছাড়া অন্য খাবারের জন্য সময় নষ্ট করিনি। কোনো জায়গা না পেয়ে আমরা গুগল সার্চ দিই। শহরের আর কোনো পার্ক বা উদ্যান বাকি আছে কি না, খুঁজি। না নেই। তখন আমাদের দুজনের দিশেহারা অবস্থা। জাহরার চোখ-মুখ হতাশায় আচ্ছন্ন। আমি মরিয়া হয়ে একটা সিএনজি ডাকি। উঠে বসে বলি, সোজা উত্তরে যেতে। সিএনজি চলে আর আমরা বারবার সূর্যের দিকে তাকাই। সূর্য যখন প্রায় পশ্চিমের কাছাকাছি, তখন আমরা শহর ছাড়িয়ে চলে এসেছি শহরতলিতে। হঠাৎ রাস্তা থেকে একটু দূরে একটা নিঃসঙ্গ ঘর চোখে পড়ে আমার। দূর থেকেও বোঝা যায় ঘরটি জীর্ণ। আমি প্রায় চিৎকার করে সিএনজিকে থামতে বলি। মিটারে কত টাকা উঠেছে জিজ্ঞেস না করে এক হাজার টাকার নোট ড্রাইভারের হাতে গুঁজে দিয়ে জাহরাকে বলি—তাড়াতাড়ি নামেন।

তার হাত ধরে প্রায় ছুটতে থাকি নিঃসঙ্গ ঘরটির দিকে। মনের মধ্যে শঙ্কা। ওখানেও যদি মানুষ থাকে!

ধাক্কা দিতেই নড়বড়ে দরজা খুলে যায়। মনের মধ্যে স্বস্তির বাতাস অনুভব করি। ঘরে কোনো লোক নেই। ভেতরে পা রাখতে গিয়ে জাহরার হাতের টানে থমকে যাই আমি। একটু বিরক্ত হয়েই বলি—কী হলো?

জাহরা ঘরের মেঝের দিকে আঙুল নির্দেশ করে—মেঝেতে অন্তত আট-দশটি সাপ।

এখন!

সূর্যের দিকে তাকাই। অল্পক্ষণের মধ্যেই ডুবে যাবে। আমাদের আর কোনো সুযোগ নেই। কী যে হয়, আমি জাহরাকে হাত ধরে টানি—চলো ঘরের মধ্যে চলো! যা হয় হবে। সাপ কামড়ালে কামড়াবে। কিন্তু আমরা কাজটা এখানেই শেষ করব। আমরা মরলেও পৃথিবীটা বাঁচবে।

জাহরা আমার চোখের দিকে তাকায়। বলে—আমাকে জড়িয়ে ধরো।

আমরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরে সাপগুলোর পাশে পা রাখি। অবাক হয়ে দেখি ওরা আমাদের দেখে ফণা তুলে তেড়ে না এসে সড়াৎ সড়াৎ করে পাশ কেটে বেরিয়ে যাচ্ছে দরজা দিয়ে বাইরে।

জাহরা আছড়ে পড়ে আমার বুকে—ওগো, প্রেমের এমন শক্তি আগে কোনো দিন ভাবিনি।

আমাদের দুই জোড়া ঠোঁট তখন পরস্পরের মধ্যে হারিয়ে গেছে।

পৃথিবী বাঁচবে। বেঁচে থাকবে। কেননা প্রেম অন্তরিক্ষ থেকে নেমে এসেছে মানব-মানবীর বুকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

তৌহিদুল হকের গুচ্ছ কবিতা

তৌহিদুল হক
তৌহিদুল হকের গুচ্ছ কবিতা

রক্ত লাল

আলসেমি শরীরে এদিক-ওদিক চেয়ে আটকে

গেল চোখ পশ্চিমান্তে। রক্তিম সূর্যের বিদায়

ধীর গতিতে। খুব লাল হয়েছে, সারা দিনের

জ্বলন্ত প্রহরে পেয়েছে এক অপূর্ব রূপ।

যা স্বভাববিদ্ধ, তবে কতটা উপকারী বা বাঁচিয়ে

রাখার নিরলস অভিপ্রায়। মানুষের তরে

প্রাণীর অফুরন্ত প্রাচুর্য বিস্তৃতকরণে, কিংবা

উদ্ভিদের অন্তিম প্রেমে বসন্তের অভিষেকে।

কতটা জ্বলতে হয় পরের জন্য, কতটা ফুটন্ত

শরীর নিয়ে চালিয়ে যায় সেবার পরিধি।

এক চিরন্তন শিক্ষা, আবার উদিত হয়

দিনের শুরুতে, বিদায় প্রান্তিক অপূর্ব

মায়ায়-দিনের শেষ প্রান্তে।

এতটুকু কার্পণ্য রেখে যায়নি, হয়তো মুখ

ফিরিয়ে নিবে না কোনো দিন। তবে ভাবনার

অন্তিমে শেষ দৃশ্যের সংলাপে ভেসে

ওঠে জনদরদি রাজার মুখ। যেখানে রক্ত ঝরে

বন্যার বেগে সেখানেও প্রতিদিন ফুল ফোটে ফুল হয়ে।

যত দেখি

যত দেখি তৃপ্ত হই, শীতল হয়ে

জড়িয়ে পড়ি তোমার সমস্ত শরীরে। এক অজানা

শিহরণ ছুঁয়ে যায় হৃদয়ের সমস্ত পৃষ্ঠা জুড়ে।

যেন দীর্ঘদিনের শুষ্কতা ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছে দূরে।

হারিয়ে যাওয়া রস ফিরছে মূলে, নিয়ে যাচ্ছে আদিপর্বে।

যেমন নেয় নদীর কূল, জোয়ারের ফেনা।

ভাবনার অতলে অদ্ভুত মায়া, দীর্ঘক্ষণ মোহগ্রস্ত

করে রাখে চোখের পলক, তাকিয়ে থাকি মায়ার মায়ায়। কী অপরূপ মায়া!

সেখানেও দেখি তৃষ্ণার ব্যাকুলতা নিয়ে অপেক্ষারত কান্না।

জীবনের তল্লাটে হারিয়ে খুঁজি আজ

আমারও জীবন ছিল। মায়ায় ভরা নির্বিঘ্ন আয়োজন, কলমিলতার মতো নিষ্পাপ।

তৃপ্ত হই ঘাসে, বাতাসের বেহায়া আঘাতে

অভিমানের মোড়ক ছুড়ে ফেলে হাতে তুলে নেই

কচু পাতায় টলোমলো জলের লজ্জা। এ জীবনের চাহিদা তোমায় দেখার

প্রয়োজনে তপ্ত, হয় উত্তপ্ত অথবা সহ্যের অতীত শীতল।

এ যেন কেমন

গহিন অরণ্যে সবুজ পাতার মতো, মগজে

চিন্তার রাজ্যে ভাবের উদয়, আকুল বিন্যাসে

একটু একটু করে এগিয়ে নেয়, আবার ভরা কলসির

মতো বসিয়ে রাখে-ভবের রাজ্যে। একদিন সমস্ত ভাবনা থেকে মুক্ত হয়ে

এদিক-ওদিক চলন, জীবন্ত মরণ! মানুষ

কেন বাঁচে, কীভাবে বাঁচে-প্রশ্নের সমাধা

আজ তর্কপ্রিয় সন্ধানে, মূর্ত প্রার্থনা।

সকল প্রিয়জন পরিত্যাগে, নিগূঢ় যত্নে হৃদয়ে প্রবেশ করে

নিজের অপরিচিত চেহারা, সব জিজ্ঞাসার

অন্ত-ক্রিয়ার এক উচ্চতম বিলাস।

জীবনের মানে অর্থশুন্য ভবিতব্য! এ কী হয়?

চোখের পলকে নিষ্পাপ দৃশ্যলোক-পেছন ডাকে বারবার

যেখানে থাকে আবার দেখার ইচ্ছা, নামে যে মুক্তকরণ। মিলনকান্তির আবাস।

চতুর্মুখ সমীকরণে খেলে যায় সময়ের ঝাঁজালো সিদ্ধান্ত। কেউ কী অপ্রিয় হয় কারও?

যেখানে ভেসে ওঠে নীলপদ্ম, অতীতের নিটোল কিতাব। সে-তো মানুষের ছবি!

চলে আসুন সবজি বাজারে

মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেখেছি অনেক কিছু

যা মানুষের নয়। অ-মানুষের জন্ম-উত্তর বাঁচার

উপায় হতে পারে। পোশাকে সজ্জিত দেহ কতভাবে

হিংস্র হয়, গোপনে, অন্ধের গহনে।

প্রবেশের আগেই পেয়েছি সংকেত। কত নোংরা, পচা, আবর্জনায় ভরা একটি থালার মতো

পড়ে আছে সম্মুখে। কেউ কি দেখেছে?

হয়তো মেনে নিয়েছে সবাই, সবার আগে সে

যে ভেবেছে, কী বা আছে উপায়!

চারপাশে কত কিছুর ঘ্রাণ, চোখ যা বলে তা কি মেনে নেয় স্বাস্থ্যবার্তা

ফুটে আছে ফুলের মতো দোকানের পসরা। খেতে বা কেনায় বারণ বালাই নেই।

যা পাচ্ছে নিচ্ছে, অনেকে। কেউ গায়ে কেউ পেটে।

আহা! দেখার কেউ নেই!

এক অন্ধকারে হাঁটছে আমাদের পা।

কেউ কি আছে কোথাও, আলো নিয়ে হাতে? ভেবেছে কি কেউ

কেন আমাদের আয়োজনে সবাই নেই?

কেউ এসে শুধু একবার বলুক, এই নিন-আপনাদের জীবন টিকিট যা উত্তরণ।

চলে আসুন সবজির বাজারে, সবুজের খোঁজে।

ইতিহাস

আজ স্পষ্ট ঘোষণা, আমার চোখের সামনে কেউ নেই

নেই কেউ ভাবের অন্তিম ঘরে। এক অস্পৃশ্য অনুভব

ছুঁয়ে চলে, ভাসিয়ে দেয় অগণিত স্রোতের তুমুল আলিঙ্গনে।

আজ কিছু ভেবে বলছি না, সরাসরি জবাব---

আমি নই কারও!

সব বাতাসের সাথে মিশে থাকা চোখের প্রেম

ভাবনার বিলাসে জড়িয়ে পড়ার বাসনা----সকলের অগোচরে

অথবা সকলের মাঝে। জীবনের অর্থে হৃদয়ের গুড়গুড় আলাপ

ঘুটঘুটে অন্ধকারে হৃদয়ে খোলা আকাশ, শুধু

এক মুখচ্ছবি।

আজ কোনো ক্ষমা নেই---নিজের প্রতি! নিজের পাপে

হাঁটি আমি, সবার মাঝে একলা হয়ে। বেদনার

কালো রং নিয়ে। শুধু দেখে যাই, শুধু দেখতে যাই।

কত রং বিরাজ করে ভাবনার গরমিলে, স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রই।

দাঁড়িয়ে থেকেও হেঁটে যাই!

আজকের না বলা কথা, কোনো দিন বলা হবে না

হবে না দাঁড়িয়ে আবার ভাবা আর একটু বসলে

ভালো হতো। যে বসিয়ে রাখে যে আশায় বসে থাকে

সবকিছুর-ই সময় থাকে---

এরপর---ইতিহাস!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জন্মদিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি

বিদায় নেওয়া হুমায়ূন এখনো আছেন

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪২
হুমায়ূন আহমেদ
হুমায়ূন আহমেদ

হুমায়ূন আহমেদ তখন ক্যানসার আক্রান্ত। যুক্তরাষ্ট্রে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। হঠাৎ চিকিৎসকের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে এলেন নুহাশপল্লীতে। নাটক বানাবেন। অভিনেতা ফারুক আহমেদকে ডাকলেন। নুহাশপল্লীতে নাটকের শুটিংয়ের ফাঁকে গল্প করছিলেন হুমায়ূন ও ফারুক। হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘কী আশ্চর্য, তাই না ফারুক!’ জবাবে ফারুক বললেন, ‘কী আশ্চর্য ভাই?’ হুমায়ূন আহমেদ বললেন, ‘এই যে প্রকৃতি, জোছনা, বৃষ্টি, নদী— কী সুন্দর! একদিন হয়তো আমি এসব আর দেখতে পারব না। একুশের বইমেলা হবে। লোকেদের ভিড়, আড্ডা; আমি সেখানে থাকব না। এটা কি মেনে নেওয়া যায়! হায় রে জীবন!’

‘আমার না বলা কথা’ বইয়ে ফারুক আহমেদ এই স্মৃতিচারণ করেছেন। লিখেছেন, ‘আমি কিছু না বলে মূর্তির মতো বসে রইলাম। একসময় তাকিয়ে দেখলাম, হুমায়ূন ভাইয়ের দুচোখের কোনায় পানি।’

হুমায়ূন আহমেদ নেই। তবে তিনি রয়েছেন দেশের তরুণদের মনে। যে বইমেলায় তিনি থাকবেন না বলে আক্ষেপ, সেই বইমেলায় তাঁর বইয়ের স্টলে তরুণদের ঢলের মধ্যে আছেন।

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে হুমায়ূন আহমেদের জন্ম এই দিনে (১৩ নভেম্বর); ভারত ভাগের এক বছর পরে ১৯৪৮ সালে। ছোট সময়ে তাঁর নাম ছিল শামসুর রহমান। তাঁর বাবা ছেলেমেয়েদের নাম পাল্টে ফেলতেন। তাঁর নাম পাল্টে রাখেন হুমায়ূন আহমেদ। হিমু, মিসির আলি, শুভ্রর মতো চরিত্রের স্রষ্টা তিনি। শুধু কথাসাহিত্যেই নয়; ‘বহুব্রীহি’, ‘অয়োময়’, ‘কোথাও কেউ নেই’,

‘আজ রবিবার’-এর মতো নাটক বানিয়েছেন, তৈরি করেছেন ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’র মতো চলচ্চিত্র।

হুমায়ূন আহমেদ বৃষ্টি, জোছনা ভালোবাসতেন। তাঁর লেখায় সেসব উঠে এসেছে বারবার। ২০১২ সালের জুলাইয়ে বর্ষাতেই তিনি পাড়ি জমিয়েছিলেন ওপারে।

তিনি নেই। কিন্তু তাঁর লেখায় উঠে আসা চান্নিপসর, বৃষ্টি বিলাস আজও আছে তরুণদের মনে। ফারুক আহমেদ তাঁর ওই বইয়ে হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে আরেকটি স্মৃতিচারণ করেছিলেন এভাবে—‘এক বিকেলে শুটিং শেষে তাঁর প্রিয় লিচুগাছের দিকে তাকিয়ে আছেন হুমায়ূন। সেখানে ঝুলছে পাকা লিচু। তিনি তাঁর কেয়ারটেকার মুশাররফকে ডেকে গ্রামের ছোট ছেলেমেয়েদের ডেকে নিয়ে এলেন। তাদের বললেন, গাছে উঠে যে যত পারে লিচু খেতে। বাচ্চারা কেউ গাছে উঠে লিচু খাচ্ছে, হইচই করছে। কেউ পকেটে ভরছে। হুমায়ূন আহমেদ অবাক হয়ে সেই লিচু খাওয়া দেখতে লাগলেন।’

ফারুক আহমেদ লিখেছেন, ‘হুমায়ূন ভাই একসময় আমাকে বললেন, এমন সুন্দর দৃশ্য তুমি কখনো দেখেছো? এমন ভালো লাগার অনুভূতি কি অন্য কোনোভাবে পাওয়া যায়? আমি কী বলব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ বললাম, না ভাই এমন ভালো লাগার অনুভূতি কোনোভাবেই পাওয়া যায় না।’

হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন ঘিরে রাজধানীসহ জন্মস্থান নেত্রকোনাতে রয়েছে নানা আয়োজন। নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের কুতুবপুরে হুমায়ূন আহমেদ প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালন করা হবে। সকালে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোরআন খতম করবেন। এরপর শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলাকাবাসী এবং হুমায়ূনভক্তদের আনন্দ শোভাযাত্রা বের হবে। পরে লেখকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা, বৃক্ষরোপণ, কুইজ, হুমায়ূন আহমেদের রচিত নাটক ও সিনেমার অংশবিশেষ নিয়ে অভিনয়, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া রাজধানীতে হুমায়ূন আহমেদের চলচ্চিত্র নিয়ে চলচ্চিত্র সপ্তাহ, হুমায়ূন প্রতিযোগিতা, হুমায়ূন জন্মোৎসব, টেলিভিশন চ্যানেলে নাটক ও অনুষ্ঠান প্রচারসহ নানা আয়োজনে মুখর থাকছে দিনটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘হীরক রাজার দেশে’ মঞ্চস্থ করল স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
গতকাল শুক্রবার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল শুক্রবার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করেছে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার নাটক, সংগীত ও নৃত্যকলা ক্লাবের উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক নাট্যানুষ্ঠানে এটি মঞ্চস্থ করা হয়।

মঞ্চনাট্যটি স্কলাস্টিকার প্রতিষ্ঠাতা ইয়াসমিন মুরশেদকে উৎসর্গ করা হয়।

গতকাল শুক্রবার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা
গতকাল শুক্রবার প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ চলচ্চিত্র মঞ্চস্থ করে স্কলাস্টিকার শিক্ষার্থীরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

স্কুলের এসটিএম মিলনায়তন প্রতিষ্ঠার রজতজয়ন্তী উদ্‌যাপনকে সামনে রেখে আয়োজিত এ নাট্যানুষ্ঠানের সমাপনী দিনে বিশেষ অতিথি ছিলেন নাট্যব্যক্তিত্ব আবুল হায়াত, দিলারা জামান ও আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন স্কলাস্টিকা উত্তরা সিনিয়র শাখার অধ্যক্ষ ফারাহ্ সোফিয়া আহমেদ।

হীরক রাজার দেশে নাটকটির নির্দেশনায় ছিলেন কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন। প্রোডাকশন ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন শৈলী পারমিতা নীলপদ্ম। সংগীত পরিচালনা করেন গাজী মুন্নোফ, ইলিয়াস খান ও পলাশ নাথ লোচন। নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন শাম্মী ইয়াসমিন ঝিনুক ও ফরহাদ আহমেদ শামিম।

নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নাজিফা ওয়াযিহা আহমেদ, আরিয়াদ রহমান, আজিয়াদ রহমান, বাজনীন রহমান, মোহম্মদ সফির চৌধুরী, ফাহিম আহম্মেদ, সৈয়দ কাফশাত তাইয়ুশ হামদ ও তাজরীবা নওফাত প্রমুখ।

শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পরিবেশিত অভিনয়, গান ও নাচ উপভোগ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গবেষণায় বেরিয়ে এল আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’র গল্প

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় উপস্থাপিত আরবি সাহিত্য নিয়ে সাম্প্রতিক এক গবেষণা ইতিহাসের বহুল প্রচলিত ধারণাকে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এত দিন মনে করা হতো, আব্বাসীয় আমলের (৭৫০-১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দ) পর আরবি সাহিত্য প্রায় ৮০০ বছর বছর স্থবির হয়ে ছিল। কিন্তু ভাষাবিদ ও সাহিত্য ইতিহাসবিদদের মতে, এই ধারণা আসলে পশ্চিমা দৃষ্টিকোণ থেকে তৈরি এক ‘ঔপনিবেশিক কল্পনা’ মাত্র। বাস্তবে আরবি সাহিত্য কখনোই থেমে যায়নি।

প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, অষ্টম শতাব্দীতে আব্বাসীয় খলিফাদের অধীনে বিজ্ঞান, দর্শন ও কবিতার কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল বাগদাদ। আবু নুয়াস, আল-মুতানাব্বি, আল-ফারাবি ও ইবনে সিনার মতো কবি ও দার্শনিকদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এক স্বর্ণযুগ। ঊনবিংশ শতাব্দীর ইউরোপীয় গবেষকেরা—যেমন ফরাসি চিন্তাবিদ আর্নেস্ট রেনাঁ ও ডাচ ইতিহাসবিদ রেইনহার্ট দোজি সেই আমলটিকেই আরবি বুদ্ধিবৃত্তিক জীবনের শিখর বলে স্বীকার করেছিলেন এবং দাবি করেছিলেন, একাদশ শতাব্দীর পর এই ধারাবাহিকতার পতন ঘটে। তাঁদের মতে, এরপর প্রায় ৮০০ বছর আরবে আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যিক বা দার্শনিক কাজ হয়নি—যতক্ষণ না ইউরোপে রেনেসাঁ শুরু হয়।

কিন্তু আধুনিক গবেষকেরা বলছেন, এই ধারণা সরলীকৃত ও পক্ষপাতদুষ্ট। ফ্রাঙ্কফুর্ট আন্তর্জাতিক বইমেলায় শেখ জায়েদ বুক অ্যাওয়ার্ডের আয়োজিত এক আলোচনায় ভাষাবিদেরা দাবি করেছেন, আরবি রচনা শৈলী কখনো বিলুপ্ত হয়নি; বরং তা ধারাবাহিকভাবে কপি, অনুবাদ ও পাঠের মাধ্যমে বেঁচে ছিল।

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলার তাঁর ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ গ্রন্থে দাবি করেছেন, আরবি সাহিত্যে ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে যে ধারণাটি প্রচলিত আছে তা আসলে গাল-গল্প। এই বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। গ্রুন্ডলার এতে দেখিয়েছেন, নবম শতাব্দীর বাগদাদে বইয়ের ব্যবসা, কপিকারদের প্রতিযোগিতা, জনসম্মুখে পাঠ ও লেখার প্রচলন—সবই ছিল আধুনিক প্রকাশনা সংস্কৃতির পূর্বসূরি। তিনি মত দিয়েছেন, ‘বাগদাদের রাস্তায় হাঁটলে আপনি দেখতেন লোকেরা হস্তলিপি বিক্রি করছে, বিরামচিহ্ন নিয়ে তর্ক করছে—এ যেন এক জীবন্ত প্রকাশনা বাজার।’

গবেষণা বলছে, আরবি সাহিত্য আসলে কখনো এক জায়গায় স্থির থাকেনি। এর কেন্দ্র এক সময় বাগদাদ থেকে কায়রো, দামেস্ক ও আন্দালুসিয়ায় স্থানান্তরিত হয়। কিন্তু ধারাটি অব্যাহতই থাকে। নতুন ঘরানা তৈরি হয়, পুরোনো ঘরানা রূপান্তরিত হয়।

ফরাসি অধ্যাপক হাকান ওজকান তাঁর গবেষণায় দেখিয়েছেন, ‘জাজাল’ নামের কথ্য ছন্দভিত্তিক কবিতার ধারা আব্বাসীয় যুগের পরও বিকশিত হতে থাকে। তাঁর মতে, ‘এই কবিরা নিয়ম ভেঙে নতুন রূপ দিয়েছে—তাঁদের ছন্দ ও ব্যঙ্গ আধুনিক র্যাপের মতো প্রাণবন্ত।’

জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
জার্মান গবেষক বেয়াট্রিস গ্রুন্ডলারের ‘দ্য রাইজ অব দ্য অ্যারাবিক বুক’ বইটি এবারের শেখ জায়েদ পুরস্কারের শর্টলিস্টে রয়েছে। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

এদিকে এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সোমবার (২০ অক্টোবর) আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, আবুধাবির নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ‘আরবি সাহিত্য লাইব্রেরি’ প্রকল্প ইতিমধ্যেই ‘হারানো শতাব্দী’ বলে বিবেচিত সময়ের ৬০ টিরও বেশি আরবি সাহিত্যকর্ম পুনরুদ্ধার করেছে। প্রকল্পটির সম্পাদক অধ্যাপক মরিস পোমেরান্টজ বলেছেন, ‘এই বইগুলো সম্পাদনা করা মানে এক চলমান সংলাপে অংশ নেওয়া—যেখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম লেখক, অনুবাদক ও সমালোচকেরা একে অপরকে উত্তর দিয়ে গেছেন।’

মরিস মনে করেন, আরবি সাহিত্য স্থবির হয়ে যাওয়ার ধারণাটি মূলত অনুবাদের অভাব থেকেই জন্ম নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো লেখা অনুবাদ করা হয় না, তখন সেটি বৈশ্বিক অস্তিত্ব হারায়।’

মরিসের মতে, এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো এই সাহিত্যকে আবার জনসাধারণের কল্পনায় ফিরিয়ে আনা—স্কুলে পড়ানো, মঞ্চে উপস্থাপন করা, অনুবাদের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া। তা না হলে আরবি সাহিত্যের ‘হারানো শতাব্দী’ হিসেবে চিহ্নিত সময়টি অধরাই থেকে যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত