আবদুল বাছেদ, ঢাকা
জন্মলগ্ন থেকেই সাপে-নেউলে সম্পর্ক এশিয়ার বৃহৎ দুই জনবহুল দেশ ভারত ও চীনের। তবে গত সপ্তাহের ব্রিকস সম্মেলন দিয়েছে তাতে বদলের হাওয়া। রাশিয়ার কাজানে সম্মেলন শুরুর ঠিক আগে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর উত্তেজনা প্রশমন চুক্তিতে সই করে দুই দেশ। দীর্ঘ তিতীক্ষার ফসল এই চুক্তি বাস্তবায়নে হয়নি কালবিলম্ব।
চুক্তি সইয়ের পরপরই সীমান্ত থেকে সৈন্য সরিয়ে নেওয়া শুরু করে ভারত ও চীন। সৈন্য প্রত্যাহারের দুই দিনের মাথায় একে অপরকে মিষ্টিমুখ করেছেন দুই দেশের সেনা কর্মকর্তারা।
দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার এলএসির পাঁচটি জায়গায় এই মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে দুটি স্থান লাদাখে অবস্থিত। চীন-ভারতের এমন মধুর সম্পর্কের ফলে যুক্তরাষ্ট্র কি কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়েছে?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের বাহিনী কবে থেকে ওই এলাকায় টহল দেওয়া শুরু করবে—তা এখন ঠিক করা হবে।
স্যাটেলাইটের ছবিতেও সেনাসদস্য সরানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এনডিটিভি আজ সেই ছবি প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ডেপস্যাংয়ের এক স্থানে ১১ অক্টোবর চীনা বাহিনীর যে অবস্থান ছিল, ২৫ অক্টোবর তা নেই। অর্থাৎ চুক্তি অনুযায়ী চীনা বাহিনী তা সরিয়ে নিয়েছে।
২০২০ সালের জুনে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। এরপর দুই দেশ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সেনা মোতায়েন বাড়ানোর পাশাপাশি সামরিক তৎপরতাও বাড়িয়ে গেছে। দুই দেশের সেনাবাহিনী ও কূটনৈতিক স্তরে বারবার বৈঠকের ফলে সংঘর্ষের পরিস্থিতি এড়ানো গেলেও মুখোমুখি অবস্থান থেকে কোনো দেশই পিছিয়ে আসেনি। তবে ব্রিকস সম্মেলনে পাল্টে গেছে চিত্রপট।
ভারতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, বৈঠকে দুই দেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছেছে। ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী চীনা প্রতিপক্ষের ওপর বিশ্বাস পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। এটি (বিশ্বাস পুনরুদ্ধার) তখনই ঘটবে যখন আমরা একে-অপরকে দেখতে পারব, বোঝাতে ও আশ্বস্ত করতে পারব যে, আমরা বাফার জোনে ঢুকে পড়ছি না।’
ভারত-চীন দ্বন্দ্ব প্রশমনের বিষয়টি এশিয়া ও বৃহত্তর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও বেশ প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এ বিষয়ে ভূরাজনীতি বিশ্লেষক জোরাওয়ার দাউলত সিং বলেন, এই সমঝোতা এশিয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক উন্নয়ন, যা যুক্তরাষ্ট্রের ঠান্ডা যুদ্ধের (কোল্ড ওয়ার) পরিকল্পনা থেকে ভারতকে আলাদা করতে পারে।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে চীনের ভূখণ্ডগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং আঞ্চলিক প্রভাবের বিরুদ্ধে একে অপরকে সহযোগিতা করে আসছে। তবে চীন ও ভারতের সাম্প্রতিক এই সমঝোতা ও আলোচনার মাধ্যমে ভারত হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে তার সম্পর্কের দিক নির্ধারণ করতে পারে।
সম্পর্কের এমন উন্নতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বেলায় সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হবে অর্থনীতি। কারণ, এরই মধ্যে চীন–ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বহরে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাপিয়ে গেছে চীন। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ভারত–চীন মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১১৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। যদিও চীনে ভারতের রপ্তানি ছিল মাত্র ১৬ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য-ঘাটতি এই মুহূর্তে ৮৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
চীনের চাহিদামতো বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ ভারত তুলে নিলেটেলিকমসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো উন্মুক্ত হবে। এতে বাণিজ্য-ঘাটতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ভারতীয় শিল্প মহলেরও চাপ রয়েছে সরকারের ওপর। বিশেষজ্ঞ মহল যদিও এই বিষয়ে ভারতকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি গভীর বিবেচনায় রাখতে বলেছে।
তবে চীনের সঙ্গে বিনিয়োগের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের জন্য ভারতের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা জোর দিয়ে বলেছেন, চীনা বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ভারতের বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে প্রবেশে সহায়ক হতে পারে। ভারতের বৈদ্যুতিক যানবাহন, সোলার প্যানেল এবং ব্যাটারি শিল্পে চীনা বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন দেশটির অর্থনীতিবিদেরা। তাদের মতে, চীনের সঙ্গে নিরাপত্তা ঝুঁকিমুক্ত রাখা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব বাড়ানো যেতে পারে।
এদিকে ভারত ও চীনের মধ্যে যখন সমঝোতার বিষয়টি সামনে আসছে, ঠিক তখনই ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কিছু রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিশেষ করে কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর। এ অবস্থায় ভারত-চীন তাদের সমঝোতা আলোচনার মাধ্যমে সম্ভবত পশ্চিমাদের কাছে একটি বার্তা পাঠাতে চাইছে যে তারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর পৃষ্ঠপোষকতার বিরোধিতা করলেও আঞ্চলিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।
ভারতের কৌশলগত বিশ্লেষক অনিল ত্রিগুনায়েত মনে করেন, এই সমঝোতার মাধ্যমে উভয় দেশ একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে, যা কৌশলগত উত্তেজনার মধ্যেও বজায় থাকবে।
চীন ও ভারতের সমঝোতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে চার দেশীয় নিরাপত্তা চুক্তির (কোয়াড) প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সংশয় তৈরি করছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবিলা করতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে এই জোট গঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপ চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে আনার চেষ্টা করছিল দীর্ঘদিন ধরে। এ কারণেই চীন-ভারত নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস। এক সম্পাদকীয়তে পত্রিকাটি জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও চীনকে ‘ডিকাপলিং’ বা 'ভাগ করো শাসন করো নীতিতে' স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞার চাপে এশিয়া প্যাসেফিকে আঞ্চলিক উত্তেজনা ও ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বেড়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করেই ভারত-চীন সম্পর্ক এগিয়ে নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাকনেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক অধ্যাপক জিকুইন ঝু ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, ভারত-চীন সম্পর্কের বরফ গলে যাওয়া উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। এটি চীনের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এতে কোয়াডের সদস্য ভারত পরবর্তীকালে চীনের বিরুদ্ধে কোনো শক্ত অবস্থান নেবে না। ফলে কোয়াড অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে।’
জন্মলগ্ন থেকেই সাপে-নেউলে সম্পর্ক এশিয়ার বৃহৎ দুই জনবহুল দেশ ভারত ও চীনের। তবে গত সপ্তাহের ব্রিকস সম্মেলন দিয়েছে তাতে বদলের হাওয়া। রাশিয়ার কাজানে সম্মেলন শুরুর ঠিক আগে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) বরাবর উত্তেজনা প্রশমন চুক্তিতে সই করে দুই দেশ। দীর্ঘ তিতীক্ষার ফসল এই চুক্তি বাস্তবায়নে হয়নি কালবিলম্ব।
চুক্তি সইয়ের পরপরই সীমান্ত থেকে সৈন্য সরিয়ে নেওয়া শুরু করে ভারত ও চীন। সৈন্য প্রত্যাহারের দুই দিনের মাথায় একে অপরকে মিষ্টিমুখ করেছেন দুই দেশের সেনা কর্মকর্তারা।
দীপাবলি উৎসব উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার এলএসির পাঁচটি জায়গায় এই মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এর মধ্যে দুটি স্থান লাদাখে অবস্থিত। চীন-ভারতের এমন মধুর সম্পর্কের ফলে যুক্তরাষ্ট্র কি কিছুটা দুশ্চিন্তায় পড়েছে?
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলছে, চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের বাহিনী কবে থেকে ওই এলাকায় টহল দেওয়া শুরু করবে—তা এখন ঠিক করা হবে।
স্যাটেলাইটের ছবিতেও সেনাসদস্য সরানোর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এনডিটিভি আজ সেই ছবি প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ডেপস্যাংয়ের এক স্থানে ১১ অক্টোবর চীনা বাহিনীর যে অবস্থান ছিল, ২৫ অক্টোবর তা নেই। অর্থাৎ চুক্তি অনুযায়ী চীনা বাহিনী তা সরিয়ে নিয়েছে।
২০২০ সালের জুনে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে ভারত ও চীনের সেনাবাহিনী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। এরপর দুই দেশ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় সেনা মোতায়েন বাড়ানোর পাশাপাশি সামরিক তৎপরতাও বাড়িয়ে গেছে। দুই দেশের সেনাবাহিনী ও কূটনৈতিক স্তরে বারবার বৈঠকের ফলে সংঘর্ষের পরিস্থিতি এড়ানো গেলেও মুখোমুখি অবস্থান থেকে কোনো দেশই পিছিয়ে আসেনি। তবে ব্রিকস সম্মেলনে পাল্টে গেছে চিত্রপট।
ভারতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের বলেছেন, বৈঠকে দুই দেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতায় পৌঁছেছে। ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী চীনা প্রতিপক্ষের ওপর বিশ্বাস পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে। এটি (বিশ্বাস পুনরুদ্ধার) তখনই ঘটবে যখন আমরা একে-অপরকে দেখতে পারব, বোঝাতে ও আশ্বস্ত করতে পারব যে, আমরা বাফার জোনে ঢুকে পড়ছি না।’
ভারত-চীন দ্বন্দ্ব প্রশমনের বিষয়টি এশিয়া ও বৃহত্তর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও বেশ প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এ বিষয়ে ভূরাজনীতি বিশ্লেষক জোরাওয়ার দাউলত সিং বলেন, এই সমঝোতা এশিয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক উন্নয়ন, যা যুক্তরাষ্ট্রের ঠান্ডা যুদ্ধের (কোল্ড ওয়ার) পরিকল্পনা থেকে ভারতকে আলাদা করতে পারে।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে চীনের ভূখণ্ডগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং আঞ্চলিক প্রভাবের বিরুদ্ধে একে অপরকে সহযোগিতা করে আসছে। তবে চীন ও ভারতের সাম্প্রতিক এই সমঝোতা ও আলোচনার মাধ্যমে ভারত হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে তার সম্পর্কের দিক নির্ধারণ করতে পারে।
সম্পর্কের এমন উন্নতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বেলায় সবচেয়ে বড় মাথাব্যথা হবে অর্থনীতি। কারণ, এরই মধ্যে চীন–ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বহরে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাপিয়ে গেছে চীন। ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ভারত–চীন মোট বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১১৮ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। যদিও চীনে ভারতের রপ্তানি ছিল মাত্র ১৬ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলার। চীনের সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য-ঘাটতি এই মুহূর্তে ৮৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।
চীনের চাহিদামতো বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ ভারত তুলে নিলেটেলিকমসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলো উন্মুক্ত হবে। এতে বাণিজ্য-ঘাটতির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাবে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ভারতীয় শিল্প মহলেরও চাপ রয়েছে সরকারের ওপর। বিশেষজ্ঞ মহল যদিও এই বিষয়ে ভারতকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি গভীর বিবেচনায় রাখতে বলেছে।
তবে চীনের সঙ্গে বিনিয়োগের সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের জন্য ভারতের অর্থনৈতিক বিশ্লেষকেরা জোর দিয়ে বলেছেন, চীনা বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ শিল্পখাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ভারতের বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে প্রবেশে সহায়ক হতে পারে। ভারতের বৈদ্যুতিক যানবাহন, সোলার প্যানেল এবং ব্যাটারি শিল্পে চীনা বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন দেশটির অর্থনীতিবিদেরা। তাদের মতে, চীনের সঙ্গে নিরাপত্তা ঝুঁকিমুক্ত রাখা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব বাড়ানো যেতে পারে।
এদিকে ভারত ও চীনের মধ্যে যখন সমঝোতার বিষয়টি সামনে আসছে, ঠিক তখনই ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কিছু রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিশেষ করে কানাডায় শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর। এ অবস্থায় ভারত-চীন তাদের সমঝোতা আলোচনার মাধ্যমে সম্ভবত পশ্চিমাদের কাছে একটি বার্তা পাঠাতে চাইছে যে তারা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর পৃষ্ঠপোষকতার বিরোধিতা করলেও আঞ্চলিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম।
ভারতের কৌশলগত বিশ্লেষক অনিল ত্রিগুনায়েত মনে করেন, এই সমঝোতার মাধ্যমে উভয় দেশ একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে, যা কৌশলগত উত্তেজনার মধ্যেও বজায় থাকবে।
চীন ও ভারতের সমঝোতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিতে চার দেশীয় নিরাপত্তা চুক্তির (কোয়াড) প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি নিয়ে সংশয় তৈরি করছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চীনের প্রভাব মোকাবিলা করতে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে এই জোট গঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিম ইউরোপ চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক কমিয়ে আনার চেষ্টা করছিল দীর্ঘদিন ধরে। এ কারণেই চীন-ভারত নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়েছে বলে জানিয়েছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস। এক সম্পাদকীয়তে পত্রিকাটি জানিয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারত ও চীনকে ‘ডিকাপলিং’ বা 'ভাগ করো শাসন করো নীতিতে' স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত নিষেধাজ্ঞার চাপে এশিয়া প্যাসেফিকে আঞ্চলিক উত্তেজনা ও ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বেড়েছে। এসব বিষয় বিবেচনা করেই ভারত-চীন সম্পর্ক এগিয়ে নিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাকনেল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক অধ্যাপক জিকুইন ঝু ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, ভারত-চীন সম্পর্কের বরফ গলে যাওয়া উভয় দেশের জন্যই লাভজনক। এটি চীনের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এতে কোয়াডের সদস্য ভারত পরবর্তীকালে চীনের বিরুদ্ধে কোনো শক্ত অবস্থান নেবে না। ফলে কোয়াড অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে।’
বিশ্বজুড়েই ছাত্র ইউনিয়নগুলো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা ইস্যুতে সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগকারী গোষ্ঠী হিসেবে কাজ করে। ইতিহাস বলে, এই ছাত্ররাই সরকারকে দায়বদ্ধ করে তোলে এবং তরুণদের অধিকার রক্ষা করে। বাংলাদেশে অনেক ছাত্র নেতা পরবর্তীকালে মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ...
১৬ ঘণ্টা আগেশেখ হাসিনার পতনের বর্ষপূর্তি উদ্যাপন ও বাংলাদেশের এক নতুন ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতির আশায় হাজারো মানুষ গত সপ্তাহে ঢাকায় জড়ো হয়েছিলেন। বর্ষাস্নাত দিনটিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে নেতা, অধিকারকর্মীদের উপস্থিতিতে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এক ‘নয়া বাংলাদেশের’ ঘোষণাপত্র উন্মোচন করেছেন।
২ দিন আগেমিয়ানমারে জান্তা বাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থান ঘটিয়ে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। সেই ঘটনার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অভ্যুত্থানের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তবে গত ২৪ জুলাই মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট কিছু ব্যক্তি ও কোম্পানির ওপর...
২ দিন আগে১৫৮ বছর আগে মাত্র ৭২ লাখ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আলাস্কা বিক্রি করে দিয়েছিল রাশিয়া। আর ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানসূত্র খুঁজতে সেখানেই বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন ট্রাম্প-পুতিন। মার্কিন মুল্লুকের এত সব জৌলুস এলাকা বাদ দিয়ে কেন এই হিমশীতল অঙ্গরাজ্য আলাস্কাকে বেছে নেওয়া হলো? এর পেছনে রহস্য কী?
২ দিন আগে