অনলাইন ডেস্ক
তেহরানে শুক্রবার ইসরায়েলি হামলার পর এখন দুই শত্রু—ইরান ও ইসরায়েল মুখোমুখি। অথচ এই ইসরায়েলই একসময় ছিল ইরানের মিত্র। ইরাকের সাবেক ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলাকালে ইরানকে সহায়তা করেছিল তারা। তখন ইরানের প্রধান শত্রু ছিল মুজাহিদীন-ই-খালক (এমইকে)। একসময় সংগঠনটি দ্বিতীয় বিপ্লব ঘটিয়ে ইরানের ধর্মীয় শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাত করার স্বপ্ন দেখত। কিন্তু এখন দেশটির ভেতরে সবচেয়ে ঘৃণিত রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর একটি এমইকে।
এদিকে ইসরায়েলের বিরোধী নেতা নাফতালি বেনেট ও ইয়াইর লাপিদ এখন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মতো করে ইরানিদের আহ্বান জানাচ্ছেন সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নামতে। কিন্তু বহু পরিচিত এই আহ্বানে কান দিচ্ছে না কেউ। এমনই, ইরানের ক্ষমতাচ্যুত রাজপরিবারের সাবেক যুবরাজ রেজা শাহ পাহলভিও একই আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
ইরানের সরকার জনসমর্থন হারিয়েছে, তা নতুন কিছু নয়। কয়েক বছর পরপরই সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির শাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে হাজারো মানুষ। নারী নিপীড়ন, সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের—তাও আবার কট্টর দ্বাদশ শিয়া মতবাদের নামে—অভিযোগও আছে। এর ওপর যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের নিষেধাজ্ঞা মধ্যবিত্ত ও দরিদ্রদের জীবন দুঃসহ করে তুলেছে।
ইরানে ২০২২ সালে নৈতিকতা পুলিশের হাতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর যে আন্দোলন হয়েছিল, তা ছিল ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর সবচেয়ে বড় গণবিক্ষোভ। দেশের বহু শহরের নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত নিয়ে নিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলার পর কিছু ইসরায়েলবিরোধী মিছিল ছাড়া আর তেমন কিছু দেখা যায়নি। ইসরায়েলি নেতারা যেভাবে আশা করছেন, সত্যিই কি ইরানিরা এই মুহূর্তে তাদের সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠবে?
১৯৮৬ সালে সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে মৈত্রী গড়ে তুলে এমইকের নেতা মাসউদ রাজাভি বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কসম, আরব ও পার্সিদের মধ্যে আমাদের চেয়ে বড় মিত্র আর কাউকে পাবেন না।’ অথচ এই রাজাভিই একসময় ইসলামি বিপ্লবের প্রধান নেতাদের একজন ছিলেন। কিন্তু ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় তিনি যখন ইরাকের সঙ্গে হাত মেলান, তখনই দেশের জনগণের কাছে তাঁর রাজনৈতিক ভিত্তি ভেঙে পড়ে।
আয়াতুল্লাহর শাসনের বিরুদ্ধে তখন ইরানিরা ক্ষুব্ধ ছিল ঠিকই, কিন্তু তারা মনে করেছিল সাদ্দাম হোসেন আরও বড় শত্রু। তাই তাঁর সঙ্গে হাত মেলানো এমইকের বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারে শেষ হয়ে যায়। এখন অনেকটা সেই চিত্রই ফিরে এসেছে। বর্তমানে ইরানে সরকারের বিরোধিতাকারীদের মাঝেও এমইকের প্রতি ঘৃণা অনেক গভীর।
কোরআনের প্রাচীন শব্দ ‘মুনাফিক’—অর্থাৎ ভণ্ড মুসলমান—আজ এমইকেই বোঝাতে ব্যবহার হয়। ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় থেকে সরকার এমইকেকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে তুলে ধরায় এই ধারণা আরও পোক্ত হয়েছে। এখন যখন নেতানিয়াহু বলছেন, ‘এই তো সময়, ইরানিরা জেগে ওঠো’—তখন তা অনেকটা সেই পুরোনো আহ্বানের মতোই শোনায়, যার পেছনে আসলে রয়েছে বোমাবর্ষণ।
তাই প্রশ্ন উঠছে, ইসরায়েলি নেতারা কি সত্যিই ইরানিদের সরকারবিরোধী আন্দোলনে উত্তেজিত করতে পারবেন? উত্তরটা খুব স্পষ্ট—না। নেতানিয়াহু ও তাঁর সহযোগীদের এই দাবি অবাস্তব। এমনকি এই দলে আছেন রেজা পাহলভিও, যিনি ইরানের সাবেক শাহর পুত্র। তাঁর বাবা যাঁর শাসনামলে দেশের জনগণ আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছিল, সেই শাহের পতন ঘটাতে যে এমইকেও ভূমিকা রেখেছিল।
পাহলভি এখন ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে বলছেন, পুরো পরিস্থিতির জন্য দায়ী কেবল ইরান সরকারই। তিনি বলছেন, যেন ‘ইরানই এই ক্ষেপণাস্ত্রযুদ্ধ শুরু করেছে।’ নেতানিয়াহুর মতো করে তিনি বলছেন, এই মুহূর্তেই ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে উৎখাত করার সুযোগ এসেছে। ঠিক যেমন করে রাজাভি একসময় ইরাকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু এখন ইসরায়েল যখন ইরানের শহরে শহরে হামলা চালাচ্ছে, তখন পাহলভির এমন আহ্বান জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। বরং, এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে ক্ষোভ, অপমান ও ঘৃণার ঝড় চলছে। একসময় যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হতো ‘রাজা দীর্ঘজীবী হোক’ ধ্বনি, এখন সেখানে তাঁকে গালাগাল দেওয়া হচ্ছে। অনেকে তাঁকেও ‘মুনাফিক’ বলে গালি দিচ্ছে, যেমন একসময় রাজাভিকেও দেওয়া হয়েছিল।
ইসরায়েলি হামলায় শিশুদের মৃতদেহের ছবি ছড়িয়ে পড়ছে। ফ্ল্যাটে হামলায় পরিবারের পর পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এই দৃশ্য ইরানিদের মনে করিয়ে দিচ্ছে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়কার ছবি, কিংবা আরও সাম্প্রতিক সময়ে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ। বোমার শব্দ, ধ্বংসস্তূপ, ছিন্নভিন্ন দেহ—এই সবকিছুর মধ্য দিয়ে যেন ইরানিরা ফের একবার ভয়াবহ এক অতীতকে অনুভব করছে।
এমন সময় ইরান সরকার নেতানিয়াহু ও পাহলভিকে জনগণের সামনে একেবারে ভয়ংকর শত্রু হিসেবে তুলে ধরছে। মানুষও তাতে সাড়া দিচ্ছে। এমনকি পাহলভির পক্ষে থাকা লোকজনও এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তিনি যখন বলছেন, পারসি ও ইহুদিরা মিলে কাজ করতে পারে, তখন তা রাজাভির সেই ‘আরব ও পারসি মিত্র’ কথার কথাই মনে করিয়ে দেয়।
এই পরিবর্তন একেবারে স্বাভাবিক। ইরানে থাকা মানুষের সঙ্গে কথা বললে শোনা যায় একটাই কথা—তারা খামেনির সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ ঠিকই, কিন্তু এখন তাদের প্রথম চাওয়া জীবন বাঁচানো। হামলা বন্ধ হোক। এখন আর নৈতিকতা পুলিশের বিরুদ্ধেও মানুষ ক্ষোভ ঝাড়ছে না। তাদের মনোযোগ শুধুই জীবন রক্ষায়।
একসময় যারা প্রতিদিন বাজারদরের চাপে ক্ষুব্ধ থাকত, তারা এখন কেবল বলছে—‘বোমা থামুক।’ যে সরকার একসময় ছিল অগঠিত, যার বিরুদ্ধে তখন ছিল বিপ্লব, সেই সরকারই ৮০—র দশকে যুদ্ধের সুযোগে নিজের ভিত শক্ত করে ফেলে। তখন নারীরা বাধ্য হয় হিজাব আন্দোলন থামাতে, কারণ ইরাকি ক্ষেপণাস্ত্র এসে ভেঙে ফেলছিল তাদের বাড়িঘর।
এখনো সে রকমই সময়। ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বাহিনী এখন সরাসরি তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে না। বরং তারা দেখছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী তাদের দেশ, তাদের শহর ধ্বংস করে দিচ্ছেন। তাই তারা এখন সব দোষ দিচ্ছে নেতানিয়াহু ও তাঁর মিত্রদের ওপর। এমনকি ইহুদিদের প্রতিও রাগ ছড়িয়ে পড়ছে।
পারসি টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোয় এখন ঘুরছে একটাই কথা—‘খামেনির বিচার পরে করব। আগে নেতানিয়াহুকে থামাও।’ এটাই কারণ, কেন আজ ইরানিরা জেগে উঠছে না।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
তেহরানে শুক্রবার ইসরায়েলি হামলার পর এখন দুই শত্রু—ইরান ও ইসরায়েল মুখোমুখি। অথচ এই ইসরায়েলই একসময় ছিল ইরানের মিত্র। ইরাকের সাবেক ও প্রয়াত প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলাকালে ইরানকে সহায়তা করেছিল তারা। তখন ইরানের প্রধান শত্রু ছিল মুজাহিদীন-ই-খালক (এমইকে)। একসময় সংগঠনটি দ্বিতীয় বিপ্লব ঘটিয়ে ইরানের ধর্মীয় শাসকগোষ্ঠীকে উৎখাত করার স্বপ্ন দেখত। কিন্তু এখন দেশটির ভেতরে সবচেয়ে ঘৃণিত রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলোর একটি এমইকে।
এদিকে ইসরায়েলের বিরোধী নেতা নাফতালি বেনেট ও ইয়াইর লাপিদ এখন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মতো করে ইরানিদের আহ্বান জানাচ্ছেন সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নামতে। কিন্তু বহু পরিচিত এই আহ্বানে কান দিচ্ছে না কেউ। এমনই, ইরানের ক্ষমতাচ্যুত রাজপরিবারের সাবেক যুবরাজ রেজা শাহ পাহলভিও একই আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
ইরানের সরকার জনসমর্থন হারিয়েছে, তা নতুন কিছু নয়। কয়েক বছর পরপরই সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির শাসনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে হাজারো মানুষ। নারী নিপীড়ন, সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের—তাও আবার কট্টর দ্বাদশ শিয়া মতবাদের নামে—অভিযোগও আছে। এর ওপর যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপের নিষেধাজ্ঞা মধ্যবিত্ত ও দরিদ্রদের জীবন দুঃসহ করে তুলেছে।
ইরানে ২০২২ সালে নৈতিকতা পুলিশের হাতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর যে আন্দোলন হয়েছিল, তা ছিল ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের পর সবচেয়ে বড় গণবিক্ষোভ। দেশের বহু শহরের নিয়ন্ত্রণ পর্যন্ত নিয়ে নিয়েছিল বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু সম্প্রতি ইসরায়েলি হামলার পর কিছু ইসরায়েলবিরোধী মিছিল ছাড়া আর তেমন কিছু দেখা যায়নি। ইসরায়েলি নেতারা যেভাবে আশা করছেন, সত্যিই কি ইরানিরা এই মুহূর্তে তাদের সরকারের বিরুদ্ধে জেগে উঠবে?
১৯৮৬ সালে সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে মৈত্রী গড়ে তুলে এমইকের নেতা মাসউদ রাজাভি বলেছিলেন, ‘আল্লাহর কসম, আরব ও পার্সিদের মধ্যে আমাদের চেয়ে বড় মিত্র আর কাউকে পাবেন না।’ অথচ এই রাজাভিই একসময় ইসলামি বিপ্লবের প্রধান নেতাদের একজন ছিলেন। কিন্তু ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় তিনি যখন ইরাকের সঙ্গে হাত মেলান, তখনই দেশের জনগণের কাছে তাঁর রাজনৈতিক ভিত্তি ভেঙে পড়ে।
আয়াতুল্লাহর শাসনের বিরুদ্ধে তখন ইরানিরা ক্ষুব্ধ ছিল ঠিকই, কিন্তু তারা মনে করেছিল সাদ্দাম হোসেন আরও বড় শত্রু। তাই তাঁর সঙ্গে হাত মেলানো এমইকের বিশ্বাসযোগ্যতা একেবারে শেষ হয়ে যায়। এখন অনেকটা সেই চিত্রই ফিরে এসেছে। বর্তমানে ইরানে সরকারের বিরোধিতাকারীদের মাঝেও এমইকের প্রতি ঘৃণা অনেক গভীর।
কোরআনের প্রাচীন শব্দ ‘মুনাফিক’—অর্থাৎ ভণ্ড মুসলমান—আজ এমইকেই বোঝাতে ব্যবহার হয়। ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় থেকে সরকার এমইকেকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে তুলে ধরায় এই ধারণা আরও পোক্ত হয়েছে। এখন যখন নেতানিয়াহু বলছেন, ‘এই তো সময়, ইরানিরা জেগে ওঠো’—তখন তা অনেকটা সেই পুরোনো আহ্বানের মতোই শোনায়, যার পেছনে আসলে রয়েছে বোমাবর্ষণ।
তাই প্রশ্ন উঠছে, ইসরায়েলি নেতারা কি সত্যিই ইরানিদের সরকারবিরোধী আন্দোলনে উত্তেজিত করতে পারবেন? উত্তরটা খুব স্পষ্ট—না। নেতানিয়াহু ও তাঁর সহযোগীদের এই দাবি অবাস্তব। এমনকি এই দলে আছেন রেজা পাহলভিও, যিনি ইরানের সাবেক শাহর পুত্র। তাঁর বাবা যাঁর শাসনামলে দেশের জনগণ আন্দোলনে ফুঁসে উঠেছিল, সেই শাহের পতন ঘটাতে যে এমইকেও ভূমিকা রেখেছিল।
পাহলভি এখন ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে বলছেন, পুরো পরিস্থিতির জন্য দায়ী কেবল ইরান সরকারই। তিনি বলছেন, যেন ‘ইরানই এই ক্ষেপণাস্ত্রযুদ্ধ শুরু করেছে।’ নেতানিয়াহুর মতো করে তিনি বলছেন, এই মুহূর্তেই ইসলামি প্রজাতন্ত্রকে উৎখাত করার সুযোগ এসেছে। ঠিক যেমন করে রাজাভি একসময় ইরাকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু এখন ইসরায়েল যখন ইরানের শহরে শহরে হামলা চালাচ্ছে, তখন পাহলভির এমন আহ্বান জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে না। বরং, এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁকে নিয়ে ক্ষোভ, অপমান ও ঘৃণার ঝড় চলছে। একসময় যাকে উদ্দেশ্য করে বলা হতো ‘রাজা দীর্ঘজীবী হোক’ ধ্বনি, এখন সেখানে তাঁকে গালাগাল দেওয়া হচ্ছে। অনেকে তাঁকেও ‘মুনাফিক’ বলে গালি দিচ্ছে, যেমন একসময় রাজাভিকেও দেওয়া হয়েছিল।
ইসরায়েলি হামলায় শিশুদের মৃতদেহের ছবি ছড়িয়ে পড়ছে। ফ্ল্যাটে হামলায় পরিবারের পর পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এই দৃশ্য ইরানিদের মনে করিয়ে দিচ্ছে ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময়কার ছবি, কিংবা আরও সাম্প্রতিক সময়ে গাজার ধ্বংসযজ্ঞ। বোমার শব্দ, ধ্বংসস্তূপ, ছিন্নভিন্ন দেহ—এই সবকিছুর মধ্য দিয়ে যেন ইরানিরা ফের একবার ভয়াবহ এক অতীতকে অনুভব করছে।
এমন সময় ইরান সরকার নেতানিয়াহু ও পাহলভিকে জনগণের সামনে একেবারে ভয়ংকর শত্রু হিসেবে তুলে ধরছে। মানুষও তাতে সাড়া দিচ্ছে। এমনকি পাহলভির পক্ষে থাকা লোকজনও এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তিনি যখন বলছেন, পারসি ও ইহুদিরা মিলে কাজ করতে পারে, তখন তা রাজাভির সেই ‘আরব ও পারসি মিত্র’ কথার কথাই মনে করিয়ে দেয়।
এই পরিবর্তন একেবারে স্বাভাবিক। ইরানে থাকা মানুষের সঙ্গে কথা বললে শোনা যায় একটাই কথা—তারা খামেনির সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ ঠিকই, কিন্তু এখন তাদের প্রথম চাওয়া জীবন বাঁচানো। হামলা বন্ধ হোক। এখন আর নৈতিকতা পুলিশের বিরুদ্ধেও মানুষ ক্ষোভ ঝাড়ছে না। তাদের মনোযোগ শুধুই জীবন রক্ষায়।
একসময় যারা প্রতিদিন বাজারদরের চাপে ক্ষুব্ধ থাকত, তারা এখন কেবল বলছে—‘বোমা থামুক।’ যে সরকার একসময় ছিল অগঠিত, যার বিরুদ্ধে তখন ছিল বিপ্লব, সেই সরকারই ৮০—র দশকে যুদ্ধের সুযোগে নিজের ভিত শক্ত করে ফেলে। তখন নারীরা বাধ্য হয় হিজাব আন্দোলন থামাতে, কারণ ইরাকি ক্ষেপণাস্ত্র এসে ভেঙে ফেলছিল তাদের বাড়িঘর।
এখনো সে রকমই সময়। ইসলামি প্রজাতন্ত্রের বাহিনী এখন সরাসরি তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে না। বরং তারা দেখছে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী তাদের দেশ, তাদের শহর ধ্বংস করে দিচ্ছেন। তাই তারা এখন সব দোষ দিচ্ছে নেতানিয়াহু ও তাঁর মিত্রদের ওপর। এমনকি ইহুদিদের প্রতিও রাগ ছড়িয়ে পড়ছে।
পারসি টেলিগ্রাম চ্যানেলগুলোয় এখন ঘুরছে একটাই কথা—‘খামেনির বিচার পরে করব। আগে নেতানিয়াহুকে থামাও।’ এটাই কারণ, কেন আজ ইরানিরা জেগে উঠছে না।
অনুবাদ করেছেন আজকের পত্রিকার সহসম্পাদক আব্দুর রহমান
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত গতকাল শনিবার নবম দিনে গড়িয়েছে। এই ৯ দিনে দুপক্ষই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে, যদিও ইরানের ক্ষয়ক্ষতি ইসরায়েলের তুলনায় অনেক বেশি। অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন, এই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হতে চলেছে। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়ালে ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে..
৩ ঘণ্টা আগেইরানের উত্তরাঞ্চলে গতকাল শুক্রবার মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের এই সময়ে ভূকম্পন ইরানের গোপন পারমাণবিক পরীক্ষা কি না, তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগেকয়েক মাস ধরে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের করণীয় কী হওয়া উচিত—তা নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। এই তর্ক-বিতর্কের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র আগের কঠোর নিষেধাজ্ঞাকে আরও জোরালো করেছে। আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গত জানুয়ারিতে ঘোষণা দিয়েছে, তারা আগামী ১ জুলাই থেকে ইরানি তেলে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর...
৯ ঘণ্টা আগেমধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে দ্রুত বাড়তে থাকা উত্তেজনাকে চীন ও রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র-নির্ভর বিশ্বব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠার একটি মোক্ষম সুযোগ হিসেবে দেখছে বলে মনে করছেন অনেকে। ফোনালাপে পুতিন এবং সি ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলাকে জাতিসংঘ সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে আখ্যায়িত
১০ ঘণ্টা আগে