জাহাঙ্গীর আলম
ইউক্রেন সংকটকে ঘিরে অনেকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা শুনতে পাচ্ছেন অনেকে। অনিবার্যভাবেই উঠে আসছে সাবেক দুই পরাশক্তির শক্তিমত্তার তুলনা। সোভিয়েত যুগের পর এই পরাশক্তি দুটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও কিছু দেশ। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আকাশযুদ্ধে সক্ষমতার হিসাব-নিকাশ। সেদিক দিয়ে সোভিয়েত যুগ থেকেই অনেকখানি এগিয়ে আছে রাশিয়া। স্নায়ুযুদ্ধের কালে যুক্তরাষ্ট্রও সমর কৌশল ও প্রযুক্তিতে বেশ এগিয়েছে।
কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার যখন যুদ্ধবিমান, তখন সেই অস্ত্রে দুই পরাশক্তি কে কাকে ছাড়িয়ে গেল? প্রতিরক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইট এয়ারফোর্স-টেকনোলজি ডটকমে সেরা যুদ্ধবিমানের একটি তুলনামূলক চিত্র দেওয়া হয়েছে।
ক্ষিপ্রতা ও তৎপরতায় আকাশে আধিপত্য বিস্তারে এগিয়ে থাকা কয়েকটি যুদ্ধবিমানের সংক্ষিপ্ত প্রোফাইল তুলে ধরা হলো। বিশ্বের বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বাহিনীতে রয়েছে এসব বিমান।
এখানে সুপারসনিক যুদ্ধবিমানের গতির একক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ‘মাক’। নির্দিষ্ট মাধ্যমে শব্দের গতির সঙ্গে বিমানের গতির অনুপাতকেই মাক এককে প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ একটি স্বাভাবিক আবহাওয়ার দিনে সমুদ্রপৃষ্ঠে একটি বিমানের সর্বোচ্চ গতি মাক ১ বলতে বোঝায় বিমানটির গতি শব্দের গতির সমান। যেখানে শব্দের গতি ঘণ্টায় ৭৬০ মাইল।
মিগ-৩১ই ফাইটার–মাক ২.৮৩
মিগ-৩১ই ফাইটার হলো মিগ-৩১ বিমানের একটি রপ্তানিযোগ্য সংস্করণ। রাশিয়ান এয়ারক্রাফট করপোরেশন (আরএসি ‘মিগ’) এই বিমান বানায়। এটির সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ৮৩। এই বিমান দিনে এবং রাতে যে কোনো উচ্চতা থেকে লক্ষ্যবস্তুকে প্রতিহত করার পাশাপাশি ধ্বংস করে ফেলতে পারে।
মিগ-৩১ বর্তমানে রুশ এবং কাজাখ বিমানবাহিনীর বহরে রয়েছে। এটি বিশ্বের প্রথম ধারাবাহিক উৎপাদনে থাকা যুদ্ধবিমান। এতে রয়েছে শক্তিশালী রাডার। বিমানটিতে আরও রয়েছে ৩০ এমএম জিএএইচ-৬-২৩ এম বিল্ট-ইন বন্দুক, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আর-৩৩ ই, মাঝারি-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আর-৪০ টিডি ১ (এএ-৬ অ্যাক্রিড) এবং স্বল্পপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য আর-৬০ এমকে ক্ষেপণাস্ত্র।
একবার জ্বালানি ভরলে এই মিগ-৩১ ই টানা ৩ হাজার কিলোমিটার উড়তে পারে। আর আকাশে ফুয়েল নেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে এটির সর্বোচ্চ উড্ডয়ন সক্ষমতা ৫ হাজার ৪০০ কিলোমিটার।
এতে রয়েছে দুটি ডি-৩০ এফ ৬ টার্বোজেট ইঞ্জিন। প্রতিটির টেক-অফ থ্রাস্ট ১৫ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স। মিগ-৩১ ই এর ভূপৃষ্ঠ থেকে বেশ উচ্চতায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩ হাজার কিলোমিটার বেগে উড়তে সক্ষম।
মিগ-২৫ ফক্সব্যাট মাক ২.৮৩
মিগ-২৫ যুদ্ধবিমানকে ন্যাটো বলে ফক্সব্যাট। এটি তৈরি করেছে রুশ কোম্পানি মিকোয়ান-কুরেভিট ওকেবি। বর্তমান নাম আরএসি মিগ। এটি মূলত ইন্টারসেপ্টর এবং গোয়েন্দা বিমান। বর্তমানে রাশিয়া এবং আরও কয়েকটি দেশে সীমিত আকারে এটি রয়েছে।
আলজেরিয়া, আর্মেনিয়া, সিরিয়া, বুলগেরিয়া, ভারত, ইরাক এবং লিবিয়ার বিমান বাহিনীসহ আরও কয়েকটি দেশ মিগ-২৫-এর গ্রাহক। এ বিমানে অস্ত্রসজ্জায় রয়েছে— দুটি ক্ষেপণাস্ত্র রাখার ব্যবস্থা। এর মধ্যে দুটি দূরপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য এএ-৬ অ্যাক্রিড এবং একই সক্ষমতার দুটি আর-৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র।
দুটি তুমানস্কি আর-১৫ বি-৩০০ টার্বোজেট ইঞ্জিন একত্রে মিগ-২৫-কে মাক ২ দশমিক ৮৩ গতি দিতে সক্ষম। প্রতিটি ইঞ্জিন ২২ হাজার ৫০০ পাউন্ড-ফোর্স থ্রাস্ট তৈরি করে।
এফ-১৫ই স্ট্রাইক ঈগল-মাক ২.৫ ক্লাস
এফ-১৫ই স্ট্রাইক ঈগল বানিয়েছে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং ডিফেন্স, স্পেস অ্যান্ড সিকিউরিটি। একসঙ্গে বহু কাজের কাজি এ যুদ্ধবিমান মার্কিন বিমানবাহিনীর মেরুদণ্ড। স্ট্রাইক ঈগল আছে সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, ইসরায়েল এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান বাহিনীসহ আরও কয়েকটি দেশের বাহিনীতে।
এফ-১৫ই বিমানে রয়েছে—একটি ২০ এমএম কামান, জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশনস (জেডিএএম), স্ট্যান্ডঅফ ল্যান্ড অ্যাটাক মিসাইল এক্সপ্যান্ডেড রেসপন্স (এসএলএএম-ইআর), আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য মাঝারি পাল্লার এআইএম-১২০ এএমআরএএএম এবং এআইএম-৯ এক্স সাইডউইন্ডার ক্ষেপণাস্ত্র। এ ছাড়া ছোট আকারের বোমাও বহন করে এটি।
এফ-১৫ই বিমান দিনে বা রাতে যে কোনো আবহাওয়ায় কম উচ্চতায় ওড়ার সময় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
এফ-১৫ই বিমানে রয়েছে দুটি পিঅ্যান্ডডব্লিউ এফ ১০০ অথবা দুটি জিই এফ ১১০ টারবোফ্যান জেট ইঞ্জিন। প্রতিটির থ্রাস্ট রেটিং ২৯ হাজার পাউন্ড-ফোর্স। কনফরমাল ফুয়েল ট্যাংক (সিএফটি) এবং তিনটি ড্রপ ট্যাংক লাগানো অবস্থায় বিমানটি এক টানা ৩ হাজার ৮৪০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
এসইউ-২৭ এসকে-মাক ২.৩৫
এসইউ-২৭ এসকে মাল্টি-রোল ফাইটারটি আসলে এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমানের রপ্তানিযোগ্য সংস্করণ। ন্যাটো এটির নাম দিয়েছে ফ্ল্যাঙ্কার। এটি তৈরি করেছে রুশ কোম্পানি সুখোই ডিজাইন ব্যুরো। বিমানটির সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ৩৫।
১৯৯১ সালে কমসোমলস্ক-অন-আমুর এবং ইরকুৎস্ক প্ল্যান্টে এসইউ-২৭ একে বিমানের ধারাবাহিক উৎপাদন শুরু হয়।
এর অস্ত্রসজ্জায় রয়েছে—একটি বিল্ট-ইন ৩০ এমএম-এর জিএসএইচ-৩০১ স্বয়ংক্রিয় কামান, মাঝারি পাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ছয়টি আর-২৭ আর ১ (আর-২৭ এআর১) ক্ষেপণাস্ত্র, দুটি আর-২৭ টি১ মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, ছয়টি আরভিভি-এই স্বয়ংক্রিয় রাডার চালিত ক্ষেপণাস্ত্র, ছয়টি আর-৭৩ই স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, ক্লাস্টার বোমা এবং রকেট।
দুটি এএল-৩১ এফ জেট ইঞ্জিন এ বিমানের পাওয়ার প্ল্যান্ট। ইঞ্জিন দুটি ১২ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স থ্রাস্ট উৎপন্ন করতে পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতায় এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। এটির অভ্যন্তরীণ জ্বালানি ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৪০০ কেজি।
বিমানটি ক্রুজিং উচ্চতায় (উড়োজাহাজের উড্ডয়ন উচ্চতা—৩৩ হাজার থেকে ৪২ হাজার ফুট) একটানা সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫৩০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
শেনিয়াং জে-টু ফাইটার-মাক ২.৩৫
শেনিয়াং জে-টু মূলত রাশিয়ার তৈরি এসইউ-২৭ এসকে মাল্টি-রোল ফাইটার বিমানের চীনা সংস্করণ। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সের বহরে এই বিমান রয়েছে। দেশে তৈরি এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ৩৫।
মূল জে-১১ বিমানটিতে রাশিয়ার তৈরি সরঞ্জাম যুক্ত করা হয়। আর জে-১১বি সংস্করণটিতে চীনে নির্মিত উড্ডয়ন যন্ত্রাংশ এবং অস্ত্রসজ্জা যুক্ত করা হয়। অস্ত্রসজ্জায় রয়েছে—একটি ৩০ এমএম বন্দুক, আকাশ থেকে আকাশ, আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, ক্লাস্টার বোমা এবং রকেট লাঞ্চার।
পাওয়ার-প্ল্যান্টে রয়েছে লিউলকা এএল-৩১ এফ অথবা উশান ডব্লিউএস-১০এ তাইহাং টার্বোফ্যান জেট ইঞ্জিন। প্রতিটি ইঞ্জিন ১২৩ কিলোনিউটন অথবা ১৩২ কিলোনিউটন থ্রাস্ট তৈরি করতে পারে। জে-১১ একটানা উড়তে পারে ৩ হাজার ৫৩০ কিলোমিটার।
মিগ-২৩ ফ্লোগার-মাক ২.৩৫
বিশ্বের দ্রুততম যুদ্ধবিমানের অন্যতম একটি হলো মিগ-২৩। ন্যাটো এটির নাম দিয়েছে ফ্লোগার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৫ হাজার ইউনিটের বেশি এই বিমান রপ্তানি করেছে রাশিয়া।
ইরান-ইরাক যুদ্ধ, আফগানিস্তানে সোভিয়েত যুদ্ধ এবং উপসাগরীয় যুদ্ধে মিগ-২৩ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। বিমানটি বর্তমানে রাশিয়ার বাইরে সীমিত পরিসেবায় রয়েছে।
এই বিমানে রয়েছে জিএসএইচ-২৩ বেলি-মাউন্টেড কামান, আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ভিম্পেল আর-২৩ এবং আর-৬০ ক্ষেপণাস্ত্র।
তুমানস্কি আর-২৯বি টার্বোজেট ইঞ্জিন চালিত এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ৩৫। ইঞ্জিনের থ্রাস্ট ৮ হাজার কেজি-ফোর্স (৭৮ দশমিক ৪ কিলো নিউটন)। আফটারবার্নিং থ্রাস্ট দাঁড়ায় ১১ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স বা ১১২ দশমিক ৮ কিলোনিউটন।
টর্নেডো এডিভি-মাক ২.২৭
প্যানাভিয়া এয়ারক্রাফট কোম্পানির নির্মিত টর্নেডো যুদ্ধবিমানের ইন্টারসেপ্টর ভেরিয়েন্টটিই টর্নেডো এয়ার ডিফেন্স ভেরিয়েন্ট (এডিভি)। এর সর্বোচ্চ গতি ম্যাক ২ দশমিক ২৭।
জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য এবং সৌদি আরবের বিমানবাহিনীর কাছে ৯৫০টির বেশি টর্নেডো যুদ্ধবিমান রয়েছে।
টর্নেডো এডিভির অস্ত্রসজ্জার মধ্যে রয়েছে—একটি ২৭ এমএম মাউসার বিকে-২৭ কামান, এআইএম ৭ স্কাইফ্ল্যাশ এবং এআইএম-১২০ এএমআরএএএম বা এআইএম-১৩২ এএসআরএএএম আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র।
দুটি টার্বো-ইউনিয়ন আরবি ১৯৯ টার্বোফ্যান জেট ইঞ্জিনের প্রতিটির ড্রাই থ্রাস্ট ৪০ দশমিক ৫ কিলো নিউটন। প্রতিটি ইঞ্জিন আফটারবার্নিং থ্রাস্ট ৭০ কিলো নিউটন। টর্নেডো এডিভির একটানা সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৯০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
মিগ-৩৫ ফালক্রাম-এফ-মাক ২.২৫
মিগ-৩৫ (ন্যাটো এর কোড নাম দিয়েছে: ফালক্রাম-এফ) ৪ প্লাস প্লাস প্রজন্মের এক আসনের মাল্টি-রোল যুদ্ধবিমান। এটি তৈরি করেছে আরএইস মিগ। এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ২৫। মিগ-৩৫-এর দুই সিটের একটি সংস্করণ আছে—মিগ-৩৫ডি।
মূলত মিগ-২৯ ফাইটারের ওপর ভিত্তি করেই বানানো হয় মিগ-৩৫। এটি ২০০৭ সালে ভারতের এয়ার শোতে প্রথম দেখা যায়। ২০১৯ সালের জুনে রাশিয়ার বিমানবাহিনীর বহরে এটি যুক্ত করা হয়।
বিমানটিতে রয়েছে—একটি ৩০ এমএম জিএসএইচ-৩০-১ কামান, আকাশ থেকে আকাশ, আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, গাইডেড এবং আনগাইডেড বোমা এবং রকেট রয়েছে।
এতে রয়েছে দুটি আরডি-৩৩ এমকে জেট ইঞ্জিনে রয়েছে একটি ধোঁয়াবিহীন দহন চেম্বার এবং নতুন ইলেকট্রনিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।
ডগফাইট পরিস্থিতির জন্য বিমানটিতে অল-অ্যাসপেক্ট থ্রাস্ট-ভেক্টর কন্ট্রোল (টিভিসি) আরডি-৩৩ এমকে ইঞ্জিনও যুক্ত করা হয়েছে।
এসইউ-৩৫ ফ্ল্যাঙ্কার-ই-মাক ২.২৫
এই যুদ্ধবিমান বানিয়েছে রুশ কমসমোলস্ক-না-আমুর এভিয়েশন প্রোডাকশন অ্যাসোসিয়েশন। এসইউ-৩৫ মাল্টিরোল ফাইটার মূলত এসইউ-২৭ বিমানের আধুনিক সংস্করণ। অত্যন্ত কৌশলী বিমানটি সর্বোচ্চ মাক ২ দশমিক ২৫ গতিতে উড়তে পারে।
এসইউ-৩৫ বর্তমানে রাশিয়ান এয়ার ফোর্স এবং চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সে রয়েছে। বিমানটিতে রয়েছে—একটি ৩০০ এমএম জিএসএইচ-৩০ কামান, বোমা, আকাশ থেকে আকাশ এবং আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র এবং গাইডেড ও আনগাইডেড রকেট।
বিমানটিতে দুটি স্যাটার্ন ১১৭এস টার্বোফ্যান ইঞ্জিন চালিত। প্রতিটি ইঞ্জিন আফটারবার্নিং ১৪ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স (১৪২ কিলো নিউটন) থ্রাস্ট উৎপন্ন করতে পারে। এসইউ-৩৫ একবার জ্বালানি ভরে টানা ৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
এফ-২২ র্যাপটর
এফ-২২ র্যাপটর পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার জেট। এটি বানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন। ইউএস এয়ার ফোর্সের জন্য এটি তৈরি করে তারা। দুই ইঞ্জিনের বিমানটি আফটারবার্নার ব্যবহার না করেই সুপারসনিক গতি পেতে সক্ষম। এটি মাক ২-এর বেশি গতিতে উড়তে পারে।
যুদ্ধবিমানটিতে রয়েছে একটি এম ৬১ এ ২ ভালকান ২০ এমএম কামান, এআইএম-১২০ এএমএএএম এবং এআইএম-৯ সাইডউইন্ডার আকাশ থেকে আকাশ এবং আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশন কিট এবং ছোট ব্যাসের জিবিইউ-৩৯ বোমা।
দুটি প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি এফ ১১৯-পিডব্লিউ-১০০ টার্বোফ্যান জেট ইঞ্জিন চালিত বিমানটিতে রয়েছে দ্বি-মাত্রিক থ্রাস্ট ভেক্টরিং অগ্রভাগ। ফাইটার বিমানটি সর্বোচ্চ ২০ হাজার মিটার উচ্চতায় এবং সর্বাধিক ২ হাজার ৯৬৩ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে।
ইউক্রেন সংকটকে ঘিরে অনেকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা শুনতে পাচ্ছেন অনেকে। অনিবার্যভাবেই উঠে আসছে সাবেক দুই পরাশক্তির শক্তিমত্তার তুলনা। সোভিয়েত যুগের পর এই পরাশক্তি দুটির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরও কিছু দেশ। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আকাশযুদ্ধে সক্ষমতার হিসাব-নিকাশ। সেদিক দিয়ে সোভিয়েত যুগ থেকেই অনেকখানি এগিয়ে আছে রাশিয়া। স্নায়ুযুদ্ধের কালে যুক্তরাষ্ট্রও সমর কৌশল ও প্রযুক্তিতে বেশ এগিয়েছে।
কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার যখন যুদ্ধবিমান, তখন সেই অস্ত্রে দুই পরাশক্তি কে কাকে ছাড়িয়ে গেল? প্রতিরক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইট এয়ারফোর্স-টেকনোলজি ডটকমে সেরা যুদ্ধবিমানের একটি তুলনামূলক চিত্র দেওয়া হয়েছে।
ক্ষিপ্রতা ও তৎপরতায় আকাশে আধিপত্য বিস্তারে এগিয়ে থাকা কয়েকটি যুদ্ধবিমানের সংক্ষিপ্ত প্রোফাইল তুলে ধরা হলো। বিশ্বের বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বাহিনীতে রয়েছে এসব বিমান।
এখানে সুপারসনিক যুদ্ধবিমানের গতির একক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ‘মাক’। নির্দিষ্ট মাধ্যমে শব্দের গতির সঙ্গে বিমানের গতির অনুপাতকেই মাক এককে প্রকাশ করা হয়। অর্থাৎ একটি স্বাভাবিক আবহাওয়ার দিনে সমুদ্রপৃষ্ঠে একটি বিমানের সর্বোচ্চ গতি মাক ১ বলতে বোঝায় বিমানটির গতি শব্দের গতির সমান। যেখানে শব্দের গতি ঘণ্টায় ৭৬০ মাইল।
মিগ-৩১ই ফাইটার–মাক ২.৮৩
মিগ-৩১ই ফাইটার হলো মিগ-৩১ বিমানের একটি রপ্তানিযোগ্য সংস্করণ। রাশিয়ান এয়ারক্রাফট করপোরেশন (আরএসি ‘মিগ’) এই বিমান বানায়। এটির সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ৮৩। এই বিমান দিনে এবং রাতে যে কোনো উচ্চতা থেকে লক্ষ্যবস্তুকে প্রতিহত করার পাশাপাশি ধ্বংস করে ফেলতে পারে।
মিগ-৩১ বর্তমানে রুশ এবং কাজাখ বিমানবাহিনীর বহরে রয়েছে। এটি বিশ্বের প্রথম ধারাবাহিক উৎপাদনে থাকা যুদ্ধবিমান। এতে রয়েছে শক্তিশালী রাডার। বিমানটিতে আরও রয়েছে ৩০ এমএম জিএএইচ-৬-২৩ এম বিল্ট-ইন বন্দুক, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আর-৩৩ ই, মাঝারি-পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র আর-৪০ টিডি ১ (এএ-৬ অ্যাক্রিড) এবং স্বল্পপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য আর-৬০ এমকে ক্ষেপণাস্ত্র।
একবার জ্বালানি ভরলে এই মিগ-৩১ ই টানা ৩ হাজার কিলোমিটার উড়তে পারে। আর আকাশে ফুয়েল নেওয়ার ব্যবস্থা থাকলে এটির সর্বোচ্চ উড্ডয়ন সক্ষমতা ৫ হাজার ৪০০ কিলোমিটার।
এতে রয়েছে দুটি ডি-৩০ এফ ৬ টার্বোজেট ইঞ্জিন। প্রতিটির টেক-অফ থ্রাস্ট ১৫ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স। মিগ-৩১ ই এর ভূপৃষ্ঠ থেকে বেশ উচ্চতায় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৩ হাজার কিলোমিটার বেগে উড়তে সক্ষম।
মিগ-২৫ ফক্সব্যাট মাক ২.৮৩
মিগ-২৫ যুদ্ধবিমানকে ন্যাটো বলে ফক্সব্যাট। এটি তৈরি করেছে রুশ কোম্পানি মিকোয়ান-কুরেভিট ওকেবি। বর্তমান নাম আরএসি মিগ। এটি মূলত ইন্টারসেপ্টর এবং গোয়েন্দা বিমান। বর্তমানে রাশিয়া এবং আরও কয়েকটি দেশে সীমিত আকারে এটি রয়েছে।
আলজেরিয়া, আর্মেনিয়া, সিরিয়া, বুলগেরিয়া, ভারত, ইরাক এবং লিবিয়ার বিমান বাহিনীসহ আরও কয়েকটি দেশ মিগ-২৫-এর গ্রাহক। এ বিমানে অস্ত্রসজ্জায় রয়েছে— দুটি ক্ষেপণাস্ত্র রাখার ব্যবস্থা। এর মধ্যে দুটি দূরপাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য এএ-৬ অ্যাক্রিড এবং একই সক্ষমতার দুটি আর-৪০টি ক্ষেপণাস্ত্র।
দুটি তুমানস্কি আর-১৫ বি-৩০০ টার্বোজেট ইঞ্জিন একত্রে মিগ-২৫-কে মাক ২ দশমিক ৮৩ গতি দিতে সক্ষম। প্রতিটি ইঞ্জিন ২২ হাজার ৫০০ পাউন্ড-ফোর্স থ্রাস্ট তৈরি করে।
এফ-১৫ই স্ট্রাইক ঈগল-মাক ২.৫ ক্লাস
এফ-১৫ই স্ট্রাইক ঈগল বানিয়েছে মার্কিন উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং ডিফেন্স, স্পেস অ্যান্ড সিকিউরিটি। একসঙ্গে বহু কাজের কাজি এ যুদ্ধবিমান মার্কিন বিমানবাহিনীর মেরুদণ্ড। স্ট্রাইক ঈগল আছে সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, ইসরায়েল এবং দক্ষিণ কোরিয়ার বিমান বাহিনীসহ আরও কয়েকটি দেশের বাহিনীতে।
এফ-১৫ই বিমানে রয়েছে—একটি ২০ এমএম কামান, জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশনস (জেডিএএম), স্ট্যান্ডঅফ ল্যান্ড অ্যাটাক মিসাইল এক্সপ্যান্ডেড রেসপন্স (এসএলএএম-ইআর), আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য মাঝারি পাল্লার এআইএম-১২০ এএমআরএএএম এবং এআইএম-৯ এক্স সাইডউইন্ডার ক্ষেপণাস্ত্র। এ ছাড়া ছোট আকারের বোমাও বহন করে এটি।
এফ-১৫ই বিমান দিনে বা রাতে যে কোনো আবহাওয়ায় কম উচ্চতায় ওড়ার সময় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
এফ-১৫ই বিমানে রয়েছে দুটি পিঅ্যান্ডডব্লিউ এফ ১০০ অথবা দুটি জিই এফ ১১০ টারবোফ্যান জেট ইঞ্জিন। প্রতিটির থ্রাস্ট রেটিং ২৯ হাজার পাউন্ড-ফোর্স। কনফরমাল ফুয়েল ট্যাংক (সিএফটি) এবং তিনটি ড্রপ ট্যাংক লাগানো অবস্থায় বিমানটি এক টানা ৩ হাজার ৮৪০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
এসইউ-২৭ এসকে-মাক ২.৩৫
এসইউ-২৭ এসকে মাল্টি-রোল ফাইটারটি আসলে এসইউ-২৭ যুদ্ধবিমানের রপ্তানিযোগ্য সংস্করণ। ন্যাটো এটির নাম দিয়েছে ফ্ল্যাঙ্কার। এটি তৈরি করেছে রুশ কোম্পানি সুখোই ডিজাইন ব্যুরো। বিমানটির সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ৩৫।
১৯৯১ সালে কমসোমলস্ক-অন-আমুর এবং ইরকুৎস্ক প্ল্যান্টে এসইউ-২৭ একে বিমানের ধারাবাহিক উৎপাদন শুরু হয়।
এর অস্ত্রসজ্জায় রয়েছে—একটি বিল্ট-ইন ৩০ এমএম-এর জিএসএইচ-৩০১ স্বয়ংক্রিয় কামান, মাঝারি পাল্লার আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ছয়টি আর-২৭ আর ১ (আর-২৭ এআর১) ক্ষেপণাস্ত্র, দুটি আর-২৭ টি১ মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, ছয়টি আরভিভি-এই স্বয়ংক্রিয় রাডার চালিত ক্ষেপণাস্ত্র, ছয়টি আর-৭৩ই স্বল্পপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, ক্লাস্টার বোমা এবং রকেট।
দুটি এএল-৩১ এফ জেট ইঞ্জিন এ বিমানের পাওয়ার প্ল্যান্ট। ইঞ্জিন দুটি ১২ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স থ্রাস্ট উৎপন্ন করতে পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতায় এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১ হাজার ৪০০ কিলোমিটার। এটির অভ্যন্তরীণ জ্বালানি ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ৯ হাজার ৪০০ কেজি।
বিমানটি ক্রুজিং উচ্চতায় (উড়োজাহাজের উড্ডয়ন উচ্চতা—৩৩ হাজার থেকে ৪২ হাজার ফুট) একটানা সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫৩০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
শেনিয়াং জে-টু ফাইটার-মাক ২.৩৫
শেনিয়াং জে-টু মূলত রাশিয়ার তৈরি এসইউ-২৭ এসকে মাল্টি-রোল ফাইটার বিমানের চীনা সংস্করণ। চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সের বহরে এই বিমান রয়েছে। দেশে তৈরি এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ৩৫।
মূল জে-১১ বিমানটিতে রাশিয়ার তৈরি সরঞ্জাম যুক্ত করা হয়। আর জে-১১বি সংস্করণটিতে চীনে নির্মিত উড্ডয়ন যন্ত্রাংশ এবং অস্ত্রসজ্জা যুক্ত করা হয়। অস্ত্রসজ্জায় রয়েছে—একটি ৩০ এমএম বন্দুক, আকাশ থেকে আকাশ, আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, ক্লাস্টার বোমা এবং রকেট লাঞ্চার।
পাওয়ার-প্ল্যান্টে রয়েছে লিউলকা এএল-৩১ এফ অথবা উশান ডব্লিউএস-১০এ তাইহাং টার্বোফ্যান জেট ইঞ্জিন। প্রতিটি ইঞ্জিন ১২৩ কিলোনিউটন অথবা ১৩২ কিলোনিউটন থ্রাস্ট তৈরি করতে পারে। জে-১১ একটানা উড়তে পারে ৩ হাজার ৫৩০ কিলোমিটার।
মিগ-২৩ ফ্লোগার-মাক ২.৩৫
বিশ্বের দ্রুততম যুদ্ধবিমানের অন্যতম একটি হলো মিগ-২৩। ন্যাটো এটির নাম দিয়েছে ফ্লোগার। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৫ হাজার ইউনিটের বেশি এই বিমান রপ্তানি করেছে রাশিয়া।
ইরান-ইরাক যুদ্ধ, আফগানিস্তানে সোভিয়েত যুদ্ধ এবং উপসাগরীয় যুদ্ধে মিগ-২৩ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। বিমানটি বর্তমানে রাশিয়ার বাইরে সীমিত পরিসেবায় রয়েছে।
এই বিমানে রয়েছে জিএসএইচ-২৩ বেলি-মাউন্টেড কামান, আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ভিম্পেল আর-২৩ এবং আর-৬০ ক্ষেপণাস্ত্র।
তুমানস্কি আর-২৯বি টার্বোজেট ইঞ্জিন চালিত এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ৩৫। ইঞ্জিনের থ্রাস্ট ৮ হাজার কেজি-ফোর্স (৭৮ দশমিক ৪ কিলো নিউটন)। আফটারবার্নিং থ্রাস্ট দাঁড়ায় ১১ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স বা ১১২ দশমিক ৮ কিলোনিউটন।
টর্নেডো এডিভি-মাক ২.২৭
প্যানাভিয়া এয়ারক্রাফট কোম্পানির নির্মিত টর্নেডো যুদ্ধবিমানের ইন্টারসেপ্টর ভেরিয়েন্টটিই টর্নেডো এয়ার ডিফেন্স ভেরিয়েন্ট (এডিভি)। এর সর্বোচ্চ গতি ম্যাক ২ দশমিক ২৭।
জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য এবং সৌদি আরবের বিমানবাহিনীর কাছে ৯৫০টির বেশি টর্নেডো যুদ্ধবিমান রয়েছে।
টর্নেডো এডিভির অস্ত্রসজ্জার মধ্যে রয়েছে—একটি ২৭ এমএম মাউসার বিকে-২৭ কামান, এআইএম ৭ স্কাইফ্ল্যাশ এবং এআইএম-১২০ এএমআরএএএম বা এআইএম-১৩২ এএসআরএএএম আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র।
দুটি টার্বো-ইউনিয়ন আরবি ১৯৯ টার্বোফ্যান জেট ইঞ্জিনের প্রতিটির ড্রাই থ্রাস্ট ৪০ দশমিক ৫ কিলো নিউটন। প্রতিটি ইঞ্জিন আফটারবার্নিং থ্রাস্ট ৭০ কিলো নিউটন। টর্নেডো এডিভির একটানা সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৮৯০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
মিগ-৩৫ ফালক্রাম-এফ-মাক ২.২৫
মিগ-৩৫ (ন্যাটো এর কোড নাম দিয়েছে: ফালক্রাম-এফ) ৪ প্লাস প্লাস প্রজন্মের এক আসনের মাল্টি-রোল যুদ্ধবিমান। এটি তৈরি করেছে আরএইস মিগ। এ বিমানের সর্বোচ্চ গতি মাক ২ দশমিক ২৫। মিগ-৩৫-এর দুই সিটের একটি সংস্করণ আছে—মিগ-৩৫ডি।
মূলত মিগ-২৯ ফাইটারের ওপর ভিত্তি করেই বানানো হয় মিগ-৩৫। এটি ২০০৭ সালে ভারতের এয়ার শোতে প্রথম দেখা যায়। ২০১৯ সালের জুনে রাশিয়ার বিমানবাহিনীর বহরে এটি যুক্ত করা হয়।
বিমানটিতে রয়েছে—একটি ৩০ এমএম জিএসএইচ-৩০-১ কামান, আকাশ থেকে আকাশ, আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, গাইডেড এবং আনগাইডেড বোমা এবং রকেট রয়েছে।
এতে রয়েছে দুটি আরডি-৩৩ এমকে জেট ইঞ্জিনে রয়েছে একটি ধোঁয়াবিহীন দহন চেম্বার এবং নতুন ইলেকট্রনিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।
ডগফাইট পরিস্থিতির জন্য বিমানটিতে অল-অ্যাসপেক্ট থ্রাস্ট-ভেক্টর কন্ট্রোল (টিভিসি) আরডি-৩৩ এমকে ইঞ্জিনও যুক্ত করা হয়েছে।
এসইউ-৩৫ ফ্ল্যাঙ্কার-ই-মাক ২.২৫
এই যুদ্ধবিমান বানিয়েছে রুশ কমসমোলস্ক-না-আমুর এভিয়েশন প্রোডাকশন অ্যাসোসিয়েশন। এসইউ-৩৫ মাল্টিরোল ফাইটার মূলত এসইউ-২৭ বিমানের আধুনিক সংস্করণ। অত্যন্ত কৌশলী বিমানটি সর্বোচ্চ মাক ২ দশমিক ২৫ গতিতে উড়তে পারে।
এসইউ-৩৫ বর্তমানে রাশিয়ান এয়ার ফোর্স এবং চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি এয়ার ফোর্সে রয়েছে। বিমানটিতে রয়েছে—একটি ৩০০ এমএম জিএসএইচ-৩০ কামান, বোমা, আকাশ থেকে আকাশ এবং আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র এবং গাইডেড ও আনগাইডেড রকেট।
বিমানটিতে দুটি স্যাটার্ন ১১৭এস টার্বোফ্যান ইঞ্জিন চালিত। প্রতিটি ইঞ্জিন আফটারবার্নিং ১৪ হাজার ৫০০ কেজি-ফোর্স (১৪২ কিলো নিউটন) থ্রাস্ট উৎপন্ন করতে পারে। এসইউ-৩৫ একবার জ্বালানি ভরে টানা ৩ হাজার ৬০০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
এফ-২২ র্যাপটর
এফ-২২ র্যাপটর পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ ফাইটার জেট। এটি বানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন। ইউএস এয়ার ফোর্সের জন্য এটি তৈরি করে তারা। দুই ইঞ্জিনের বিমানটি আফটারবার্নার ব্যবহার না করেই সুপারসনিক গতি পেতে সক্ষম। এটি মাক ২-এর বেশি গতিতে উড়তে পারে।
যুদ্ধবিমানটিতে রয়েছে একটি এম ৬১ এ ২ ভালকান ২০ এমএম কামান, এআইএম-১২০ এএমএএএম এবং এআইএম-৯ সাইডউইন্ডার আকাশ থেকে আকাশ এবং আকাশ থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র, জয়েন্ট ডাইরেক্ট অ্যাটাক মিউনিশন কিট এবং ছোট ব্যাসের জিবিইউ-৩৯ বোমা।
দুটি প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি এফ ১১৯-পিডব্লিউ-১০০ টার্বোফ্যান জেট ইঞ্জিন চালিত বিমানটিতে রয়েছে দ্বি-মাত্রিক থ্রাস্ট ভেক্টরিং অগ্রভাগ। ফাইটার বিমানটি সর্বোচ্চ ২০ হাজার মিটার উচ্চতায় এবং সর্বাধিক ২ হাজার ৯৬৩ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়তে পারে।
কিন্তু আরাকান আর্মি এখনো সেই অর্থে সিতওয়ে ও কায়াকফিউতে পূর্ণমাত্রার আক্রমণ চালায়নি। কিন্তু কেন? এর পেছনে রয়েছে তিনটি কৌশলগত কারণ—কায়াকফিউতে চীনের বড় বিনিয়োগ, সিতওয়েতে ভারতের বিনিয়োগ এবং স্থানীয় জনগণের কাছে রাজনৈতিক বৈধতা ও শাসন কাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এএ–এর অগ্রাধিকার।
৭ ঘণ্টা আগেআগামী বছর, অর্থাৎ ২০২৬ সালের এপ্রিল-মে মাসে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগেই নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহচর অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক কাঠামোতে নীরবে বড়সড় পরিবর্তন এনেছেন। আগের তুলনায় বিজেপির নির্বাচনী রণনীতি এবার অনেকটাই ভিন্ন।
১০ ঘণ্টা আগেআন্তর্জাতিক রাজনীতিতে পশ্চিমা বিশ্বে লবিস্ট নিয়োগের ঘটনা নতুন নয়। বিশেষ করে বিশ্বের অন্য দেশগুলো নিজ স্বার্থ উদ্ধারে মার্কিন প্রশাসনকে প্রভাবিত করতে প্রায়ই লবিং ফার্ম নিয়োগ দেয়। সাম্প্রতিক সময়ে খবর এসেছে, বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশী মিয়ানমার ও ভারত ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের প্রচেষ্টায় বিপুল...
১২ ঘণ্টা আগেবিগত পাঁচ বছর চীনকে প্রতিপক্ষ হিসেবেই দেখেছে ভারত। এমনকি গত মে মাস পর্যন্ত চীনকে কার্যত প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখেছে। কারণ, ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার পর চার দিনের যুদ্ধে পাকিস্তান চীনা প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করেছিল।
১৩ ঘণ্টা আগে