Ajker Patrika

লালন

সম্পাদকীয়
লালন

গল্পটি বাহারউদ্দিনের নাকি দেবেশ রায়ের, সেটা বলা যাচ্ছে না। এটা দুজনের গল্পই হতে পারে। আর এটাকে গল্পই বা বলা হবে কেন? সে সময়টিতে গল্প-উপন্যাস-নাটকের ভাগাভাগিকেই লোপাট করে দিতে চাইছিলেন কেউ কেউ।

কেন মঞ্চে উপন্যাস পড়া হবে না, কেন গল্পে নাটক দেখা যাবে না—এসব নিয়েও ভাবনা শুরু হয়েছিল।

সে বহুকাল আগের কথা। দেবেশ রায় তখন লেখালেখি নিয়ে খুব ব্যস্ত। বাহার তখনো ‘আরম্ভ’-এর সম্পাদক হয়ে ওঠেননি। সেই বাহার বিয়ে করেছিলেন স্বাতীকে।

বাহার মুসলমান, স্বাতী বদ্যিকন্যা। দুজনকে মিলিয়েছিল মানবধর্ম।

একদিন বাহার এসে বললেন, ‘রক্ষে করুন।’

 ‘কী ব্যাপার, কিসের রক্ষে?’

জানা গেল, বাহার-স্বাতীর সংসারে নতুন সদস্যের আগমন হয়েছে। নার্সিংহোম থেকে স্বাতী বাড়ি ফিরবে ছেলেসমেত। বাড়িতে তো ছেলের জন্য কিছুই নেই। এখন স্বাতী যদি বাড়ি ফিরে দেখে উড়নচণ্ডী বাহার সব গুছিয়ে রেখেছে, তাহলে তো তার খাতির বেড়ে যাবে বউয়ের কাছে। তাই অপদার্থ না হয়ে ছেলের বাবা হিসেবে পদোন্নতিটা যেন ভালোভাবে হয়, সেটাই নিশ্চিত করতে এসেছে। দেবেশ রায়ের স্ত্রী কাকলীকে নিয়ে কেনাকাটায় বের হলেন বাহার।

কোলবালিশ, দেড়হাতি তোশক, একাধিক চাদর, রাবার ক্লথ, মশারি, বেবি কটসহ নানা কিছু কেনা হলো।

দেবেশ রায় ভেবেছিলেন, ছেলের নাম রাখার ব্যাপারে তাঁর হাত থাকবে। মনে একটু লোভও জেগেছিল। বাহার নিশ্চয়ই বলবে, নাম রাখাটা তো আপনার ব্যাপার। স্বাতী আর বাহারের নামের সঙ্গে মিলিয়ে একটা নাম রাখবেন বলে ঠিক করেছিলেন দেবেশ।

কিন্তু নামের কথা জিজ্ঞেস করতেই বাহার বলল, ‘লালন।’

দেবেশ রায় লিখেছেন, ‘এমন মধুর পরাজয় খুব কমই ঘটে একজনের জীবনে। আমি আহ্লাদে নেচে উঠলাম।’ 

সূত্র: দেবেশ রায়, জলের মিনার জাগাও, পৃষ্ঠা ১৪-১৫ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের ‘দানবীয় ক্ষেপণাস্ত্রের’ সামনে উন্মুক্ত ইসরায়েলের ‘অ্যাকিলিস হিল’

ভারতীয় বিমানবন্দরে ১১ দিন ধরে পড়ে আছে ব্রিটিশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, ঘনাচ্ছে রহস্য

মা-মেয়ের ত্রিভুজ প্রেম, বিয়ে ও একটি খুন

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফল আজ, যেভাবে দেখবেন

মামদানি শতভাগ কমিউনিস্ট উন্মাদ, দেখতেও খারাপ: ট্রাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত