Ajker Patrika

ফিদেল কাস্ত্রো

সম্পাদকীয়
ফিদেল কাস্ত্রো

বিখ্যাত দাড়ি, মুখের চুরুট, আর কালচে-সবুজ সামরিক পোশাকের জন্য সারা দুনিয়ায় ফিদেল কাস্ত্রো ছিলেন সবার পরিচিত মুখ। অনেক অর্থেই ফিদেল কাস্ত্রো বিশ্ব ইতিহাসের একটা সময়ের এক প্রতীকী চরিত্র।

বিপ্লবী আন্দোলন, স্নায়ুযুদ্ধ, পূর্ব-পশ্চিম দ্বন্দ্ব, পুঁজিবাদ আর কমিউনিজমের সংঘাত—সব মিলে গড়ে ওঠা সেই কালপর্বের নন্দিত নায়ক ফিদেল কাস্ত্রো।

১৯২৬ সালের ১৩ আগস্ট জন্ম হয় ফিদেল কাস্ত্রোর।

ছাত্র অবস্থায় খেলাধুলার দিকে বেশি মনোযোগ থাকলেও ১৯৪০-এর দশকে হাভানা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়ার সময়ে তিনি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৪৮ সালে কিউবার ধনী এক রাজনীতিবিদের কন্যা মার্টা ডিয়াজ বালার্টকে বিয়ের মাধ্যমে দেশটির এলিট শ্রেণিতে যুক্ত হয়ে যাওয়ার সুযোগ ছিল কাস্ত্রোর, কিন্তু এর বদলে তিনি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে যান মার্ক্সবাদে।

মাত্র ৩৩ বছর বয়সে ১৯৫৯ সালে কিউবার তখনকার শাসক বাস্তিতাকে উৎখাত করে কাস্ত্রো পাঁচ দশক ধরে ক্ষমতায় ছিলেন, পার করেছেন ১০ জন আমেরিকান প্রেসিডেন্টের শাসনকাল। মোকাবিলা করেছেন ৬৩৮টি হত্যা চেষ্টা।

তাঁর শাসনের সময় কিউবাকে তিনি দিয়েছেন প্রথম বিশ্বের সমতুল্য শিক্ষার হার, আর এক স্বাস্থ্যব্যবস্থা, যা অনেক দেশের কাছে ঈর্ষার বিষয়। কিউবানদের গড় আয়ু এবং শিশুমৃত্যুর অতি নিম্ন হারও পশ্চিম ইউরোপের সঙ্গে তুলনীয়, যদিও তাদের মাথাপিছু আয় উন্নত দেশগুলোর তুলনায় নগণ্য।

একজন রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তিনি লাতিন আমেরিকায় মার্কিন প্রভাব-আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন আজীবন, সাম্যচিন্তায় অনুপ্রাণিত করেছেন বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষকে।

চিলির কবি পাবলো নেরুদা বলেছিলেন, লাতিন আমেরিকার রাজনৈতিক নেতারা অনেক প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু পূরণ করতে পারেন খুবই সামান্য। কিন্তু কাস্ত্রো ছিলেন এর ব্যতিক্রম। তিনি আমেরিকার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, কখনো তাদের চাপে পিছু হটেননি এবং এই অদম্য চেতনা তাঁর একটা বৈশিষ্ট্য ছিল।

কাস্ত্রোও তাঁর স্বপ্নের অনেক কিছুই পূরণ করতে পারেননি, কিন্তু তিনি তাঁর অঙ্গীকারের প্রতি আজীবন বিশ্বস্ত ছিলেন।

২০১৬ সালের ২৫ নভেম্বর কাস্ত্রোর জীবনাবসান হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত