গোলাম ওয়াদুদ
কোথা থেকে শুরু করব! ৯ মাসের প্রতিটি দিনই তো স্মৃতি হয়ে আছে। আচ্ছা, যে শনিবার ছুটি নিয়ে চলে গেল ফাহির, সেই দিন দিয়েই শুরু করি। শনিবার আমার সাপ্তাহিক ছুটি। সেদিন সকাল ১০টার একটু পরে আমি তাঁকে একটা নিউজ তুলতে বলি। সঙ্গে সঙ্গে নিউজটি তুলে দেয়। নিউজটা পোর্টালের কোন জায়গায় দিতে হবে, সেটিও বলে দিয়েছিলাম। তিনি বললেন, ‘ভাই, লিড নাই। লিড থাক।’
এভাবে বিনয়ের সঙ্গেই কথা বলতেন ফাহির। তিনি একটি বিষয় জানলেও, ফের জিজ্ঞেস করতে ভুলতেন না। পাছে ভুল না হয়। শনিবার বেলা ১২টার কিছু পরে একটা নিউজ নিয়ে তাকে বেশ কয়েকবার ফোন দিই। ফোন দিতে দিতে বিরক্ত করা যাকে বলে! কিন্তু ফাহিরের মুখে হাসির বদলে বিরক্তি আসেনি। বরং হাসতে হাসতেই বলেছিলেন, ‘ভাই, আপনি তো প্রতিনিধির চেয়েও বেশি ফোন করছেন!’ এরপর মেসেঞ্জারে ছোট্ট একটি বার্তা। সেটাই তাঁর সঙ্গে আমার শেষ কথা। বার্তাটি ছিল, ‘আরে পাগলা...’।
এই ‘আরে পাগলা...’ মাঝে মাঝেই বলতেন ফাহির। আমি রেগে গেলে বা মন খারাপ করলেই এটি বলতেন তিনি। আমাকে কেউ কখনও ‘পাগলা’ বলেনি। শুধু ফাহিরের মুখেই শুনতাম। এবার সেই পাগলাকে বিদায় দিতে হলো। আর হাজার চেষ্টা করেও হয়তো শোনা যাবে না, ‘আরে পাগলা...’।
ফাহিরকে কত নামে যে ডাকতাম আমরা, তার ইয়ত্তা নেই। একটুও মন খারাপ করতেন না। স্বভাবসুলভ হাসি দিয়ে মেনে নিতেন সব। সেই হাসি কি শেষ বেলাতেও ছিল? বিদায় দেওয়ার মুহূর্তেও যে মনে হচ্ছিল, এই বুঝি বলে উঠবেন, ‘আরে পাগলা...কাঁদেন কেন?’
আগামী জানুয়ারির ৭ তারিখে ফাহিরের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। বিয়ে নিয়ে কত পরিকল্পনা যে ছিল ছেলেটার, তা কল্পনাতীত। মাঝে মাঝেই বিকেলে আমাকে তাঁর বাইকে করে বাসায় নামিয়ে দিতেন। একদিনের কথা বলি। সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। তেজগাঁওয়ে একটা টং দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম। ফাহির তখন বলছিলেন, ‘ওয়াদুদ ভাই, আমার বিয়ে হয়তো শুক্রবার হবে। অফিসের সবাই তো যেতে পারবে না। আপনাকে আর সুপ্রিয় ভাইকে কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে যেতে হবে। নেলসন ভাইকে আগে থেকেই বলে রাখবেন।’
বলেছিলাম, দেখি। কিন্তু ফাহিরের অভিমান তা মানবে কেন? বলে উঠেছিলেন, ‘আপনাদের কোনো কথা আমি ফেলি না। আপনারা না গেলে আর কিছু শুনব না।’
এমনই ছিলেন ফাহির। মাথা হুটহাট গরম করতেন। কিন্তু একবার যদি তার দিকে তাকিয়ে বলতাম দীর্ঘ সুরে ডাক দিতাম, ‘ফাহিইইর...’, তবেই চুপচাপ। অনেকটা শিশুর মতো। যে কিনা শাসনও বোঝে, আবার স্নেহও।
ফাহির বিয়ের জন্য লম্বা ছুটির কথা বলতেন। মাঝে মাঝেই বলতেন, ‘ভাই, নেলসন ভাইকে বলে আমাকে একটু লম্বা ছুটি নিয়ে দিয়েন।’
ফাহির সেই লম্বা ছুটি নিয়েই চলে গেলেন। কারও অনুমতির আর ধার ধারলেন না। অনুমতি চাইলে কি আর এমন লম্বা ছুটি মিলত?
ফাহির, দেখা হবে একদিন। আর হ্যাঁ, আপনার ডেস্কে প্লাস্টিকের যে ফুল গাছটি আছে না, সেটি যত্নেই থাকবে। প্লাস্টিকের ফুল তো, শুকাবে না কখনো। মাঝে মাঝে ছবিও তুলে দেব। ঠিকানাটা পাঠাবেন, পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা থাকবে।
ভালো থাকবেন, ফাহির।
কোথা থেকে শুরু করব! ৯ মাসের প্রতিটি দিনই তো স্মৃতি হয়ে আছে। আচ্ছা, যে শনিবার ছুটি নিয়ে চলে গেল ফাহির, সেই দিন দিয়েই শুরু করি। শনিবার আমার সাপ্তাহিক ছুটি। সেদিন সকাল ১০টার একটু পরে আমি তাঁকে একটা নিউজ তুলতে বলি। সঙ্গে সঙ্গে নিউজটি তুলে দেয়। নিউজটা পোর্টালের কোন জায়গায় দিতে হবে, সেটিও বলে দিয়েছিলাম। তিনি বললেন, ‘ভাই, লিড নাই। লিড থাক।’
এভাবে বিনয়ের সঙ্গেই কথা বলতেন ফাহির। তিনি একটি বিষয় জানলেও, ফের জিজ্ঞেস করতে ভুলতেন না। পাছে ভুল না হয়। শনিবার বেলা ১২টার কিছু পরে একটা নিউজ নিয়ে তাকে বেশ কয়েকবার ফোন দিই। ফোন দিতে দিতে বিরক্ত করা যাকে বলে! কিন্তু ফাহিরের মুখে হাসির বদলে বিরক্তি আসেনি। বরং হাসতে হাসতেই বলেছিলেন, ‘ভাই, আপনি তো প্রতিনিধির চেয়েও বেশি ফোন করছেন!’ এরপর মেসেঞ্জারে ছোট্ট একটি বার্তা। সেটাই তাঁর সঙ্গে আমার শেষ কথা। বার্তাটি ছিল, ‘আরে পাগলা...’।
এই ‘আরে পাগলা...’ মাঝে মাঝেই বলতেন ফাহির। আমি রেগে গেলে বা মন খারাপ করলেই এটি বলতেন তিনি। আমাকে কেউ কখনও ‘পাগলা’ বলেনি। শুধু ফাহিরের মুখেই শুনতাম। এবার সেই পাগলাকে বিদায় দিতে হলো। আর হাজার চেষ্টা করেও হয়তো শোনা যাবে না, ‘আরে পাগলা...’।
ফাহিরকে কত নামে যে ডাকতাম আমরা, তার ইয়ত্তা নেই। একটুও মন খারাপ করতেন না। স্বভাবসুলভ হাসি দিয়ে মেনে নিতেন সব। সেই হাসি কি শেষ বেলাতেও ছিল? বিদায় দেওয়ার মুহূর্তেও যে মনে হচ্ছিল, এই বুঝি বলে উঠবেন, ‘আরে পাগলা...কাঁদেন কেন?’
আগামী জানুয়ারির ৭ তারিখে ফাহিরের বিয়ে ঠিক হয়েছিল। বিয়ে নিয়ে কত পরিকল্পনা যে ছিল ছেলেটার, তা কল্পনাতীত। মাঝে মাঝেই বিকেলে আমাকে তাঁর বাইকে করে বাসায় নামিয়ে দিতেন। একদিনের কথা বলি। সেদিন বৃষ্টি হচ্ছিল। তেজগাঁওয়ে একটা টং দোকানে দাঁড়িয়ে চা খাচ্ছিলাম। ফাহির তখন বলছিলেন, ‘ওয়াদুদ ভাই, আমার বিয়ে হয়তো শুক্রবার হবে। অফিসের সবাই তো যেতে পারবে না। আপনাকে আর সুপ্রিয় ভাইকে কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে যেতে হবে। নেলসন ভাইকে আগে থেকেই বলে রাখবেন।’
বলেছিলাম, দেখি। কিন্তু ফাহিরের অভিমান তা মানবে কেন? বলে উঠেছিলেন, ‘আপনাদের কোনো কথা আমি ফেলি না। আপনারা না গেলে আর কিছু শুনব না।’
এমনই ছিলেন ফাহির। মাথা হুটহাট গরম করতেন। কিন্তু একবার যদি তার দিকে তাকিয়ে বলতাম দীর্ঘ সুরে ডাক দিতাম, ‘ফাহিইইর...’, তবেই চুপচাপ। অনেকটা শিশুর মতো। যে কিনা শাসনও বোঝে, আবার স্নেহও।
ফাহির বিয়ের জন্য লম্বা ছুটির কথা বলতেন। মাঝে মাঝেই বলতেন, ‘ভাই, নেলসন ভাইকে বলে আমাকে একটু লম্বা ছুটি নিয়ে দিয়েন।’
ফাহির সেই লম্বা ছুটি নিয়েই চলে গেলেন। কারও অনুমতির আর ধার ধারলেন না। অনুমতি চাইলে কি আর এমন লম্বা ছুটি মিলত?
ফাহির, দেখা হবে একদিন। আর হ্যাঁ, আপনার ডেস্কে প্লাস্টিকের যে ফুল গাছটি আছে না, সেটি যত্নেই থাকবে। প্লাস্টিকের ফুল তো, শুকাবে না কখনো। মাঝে মাঝে ছবিও তুলে দেব। ঠিকানাটা পাঠাবেন, পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা থাকবে।
ভালো থাকবেন, ফাহির।
একটি ছোট পার্টি, একটি সাধারণ কমিউনিটি রুম এবং এক যুবক—১৫২০ সেডগউইক অ্যাভিনিউ, নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কস এলাকা তখন জানত না, যে এক রাতের অনুষ্ঠানই বিশ্বসংগীতের ইতিহাস বদলে দেবে। ১৯৭৩ সালের আজকের এই দিনে (১১ আগস্ট), যখন স্কুলফেরত কিছু কিশোর-তরুণীরা জমে উঠেছিল...
২ দিন আগেযুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরের ম্যানহাটানে অবস্থিত মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্টকে বলা হয় দেশটির বৃহত্তম শিল্প জাদুঘর। আর বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম। সংক্ষেপে জাদুঘরটি ‘দ্য মেট’ নামেও পরিচিত। ১৫৫ বছর পুরোনো এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৭০ সালে।
৬ দিন আগেবাংলা বর্ষার দ্বিতীয় মাস শ্রাবণ। বাতাসে আর্দ্রতা, আকাশে ঘনঘোর মেঘ, আর রিমঝিম শব্দে প্রকৃতির নীরব সংগীত। এই শ্রাবণেই, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ তারিখ, আমাদের ছেড়ে গিয়েছিলেন বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ কবি, বিশ্বকবি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেই থেকে ২২ শ্রাবণ বাঙালির জন্য শুধু এক প্রাকৃতিক ঋতুর উপলব্ধি নয়—এ এক স্মরণ,
৭ দিন আগেযুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামটি বিশ্বের অন্যতম প্রাকৃতিক ইতিহাসভিত্তিক জাদুঘর। এটি উদ্বোধন করা হয় ১৮৮১ সালে। ১৭৫৩ সালের দিকে বিজ্ঞানী স্যার হ্যান্স স্লোয়েনের সংগ্রহ দিয়ে যাত্রা শুরু হয় ব্রিটিশ মিউজিয়ামের। ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়াম ছিল ব্রিটিশ মিউজিয়ামেরই অংশ।
৭ দিন আগে