শাকেরা তাসনীম ইরা, ঢাকা
একে তো খ্রিষ্টান, তার ওপর ধর্মান্তরিত হিন্দু। তাই জীবনে সফলতার স্বীকৃতি পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য-ইতিহাস-সংস্কৃতির বিদগ্ধ গবেষক ও প্রখ্যাত অধ্যাপক সুকুমারী ভট্টাচার্যকে। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন তাঁকে বলেছিলেন ‘আধুনিক ভারতের গার্গী’।
সুকুমারী ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯২১ সালের ১২ জুলাই। আদি নিবাস চিত্রা নদীর তীরে শিঙে শোলপুর গ্রামে হলেও তাঁর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে। নিজের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রথাবিরোধী অবস্থানের জন্য ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে জীবদ্দশায় কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
সুকুমারী ভট্টাচার্যের জীবনে ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রভাব পড়েছিল প্রায় সব ক্ষেত্রেই। কথিত আছে, তাঁর পিতামহ বিপিনবিহারী দত্তের ‘আচারের অত্যাচারে’ শৈশবেই নিজের এক খেলার সাথির মৃত্যু চোখের সামনে দেখেছিলেন তিনি। একাদশী বলে জ্বরাক্রান্ত বালবিধবাকে জল পর্যন্ত দেওয়া হয়নি সেদিন। সেকালের হিন্দু সমাজের এই অযৌক্তিক আচার-ব্যবহারে বীতশ্রদ্ধ হয়ে কলকাতায় এসে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হন সুকুমারী। খ্রিষ্টধর্মের অধিকারী বলেই ছাত্রজীবনে নিজের অসংখ্য অধিকার তাঁকে বিসর্জন দিতে হয়েছে হিন্দু মৌলবাদীদের গোঁড়ামির কাছে। অসাধারণ মেধার পরিচয় রেখে ছাত্রজীবন সম্পন্ন করলেও সে জীবন কখনোই সহজ ছিল না সুকুমারী ভট্টাচার্যের। পুরো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতসহ সব কলা বিভাগের মধ্যে প্রথম হওয়ায় ঈশান স্কলারশিপের দাবিদার ছিলেন তিনি। কিন্তু এই বৃত্তি পলিসির অন্যতম শর্ত ছিল, প্রাপককে উচ্চ বর্ণের হিন্দু হতে হবে। শুধু ধর্মের কারণে নিজের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হন বলে সে সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভীষণ আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও সংস্কৃতে স্নাতকোত্তর না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অবশ্য পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে অধ্যাপনা করাকালে ১৯৫৪ সালে অভিমান ভুলে সুকুমারী ভট্টাচার্য আবার আপন করে নিয়েছিলেন তাঁর প্রথম প্রেম সংস্কৃত ভাষাকে। প্রাইভেটে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়েও সে বিষয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন তিনি।
জীবদ্দশায় তিনি প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য-ইতিহাস-সংস্কৃতির বিদগ্ধ গবেষক হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। প্রাচীন শাস্ত্র যেভাবে নারীর অধিকার খর্ব করেছে, তার স্বরূপ উন্মোচনই ছিল সুকুমারী ভট্টাচার্যের লক্ষ্য। তাই তিনি বৈদিক সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও উপনিষদ থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি তুলে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চেয়েছেন ধর্মের নামে দ্বিচারিতার আদি উৎসগুলোকে। এসব বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতে গিয়ে তাঁকে সম্মুখীন হতে হয়েছে নানান প্রতিকূলতার। তীব্র প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে তাঁর সত্যোদ্ঘাটনের জেদ বেড়ে গিয়েছিল আরও এবং ক্রমেই তাঁর শাণিত কলমে প্রকাশিত হয়েছিল কিছু মূল্যবান বই। সেগুলোর মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে ‘বেদের যুগে ক্ষুধা ও খাদ্য’ (১৯৯৮), ‘বেদে সংশয় ও নাস্তিক্য’ (২০০০)। এ ছাড়া ইংরেজিতে ‘উইমেন অ্যান্ড সোসাইটি ইন অ্যানশিয়েন্ট ইন্ডিয়া’ (১৯৯৪), ‘ফেটালিজম ইন অ্যানশিয়েন্ট ইন্ডিয়া’ (১৯৯৫)।
২০১৪ সালের ২৪ মে সুকুমারী ভট্টাচার্য মারা যান কলকাতায়।
একে তো খ্রিষ্টান, তার ওপর ধর্মান্তরিত হিন্দু। তাই জীবনে সফলতার স্বীকৃতি পেতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য-ইতিহাস-সংস্কৃতির বিদগ্ধ গবেষক ও প্রখ্যাত অধ্যাপক সুকুমারী ভট্টাচার্যকে। নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন তাঁকে বলেছিলেন ‘আধুনিক ভারতের গার্গী’।
সুকুমারী ভট্টাচার্যের জন্ম ১৯২১ সালের ১২ জুলাই। আদি নিবাস চিত্রা নদীর তীরে শিঙে শোলপুর গ্রামে হলেও তাঁর জন্ম পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে। নিজের সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রথাবিরোধী অবস্থানের জন্য ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে জীবদ্দশায় কিংবদন্তি হয়ে উঠেছিলেন তিনি।
সুকুমারী ভট্টাচার্যের জীবনে ধর্মান্তরিত হওয়ার প্রভাব পড়েছিল প্রায় সব ক্ষেত্রেই। কথিত আছে, তাঁর পিতামহ বিপিনবিহারী দত্তের ‘আচারের অত্যাচারে’ শৈশবেই নিজের এক খেলার সাথির মৃত্যু চোখের সামনে দেখেছিলেন তিনি। একাদশী বলে জ্বরাক্রান্ত বালবিধবাকে জল পর্যন্ত দেওয়া হয়নি সেদিন। সেকালের হিন্দু সমাজের এই অযৌক্তিক আচার-ব্যবহারে বীতশ্রদ্ধ হয়ে কলকাতায় এসে খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত হন সুকুমারী। খ্রিষ্টধর্মের অধিকারী বলেই ছাত্রজীবনে নিজের অসংখ্য অধিকার তাঁকে বিসর্জন দিতে হয়েছে হিন্দু মৌলবাদীদের গোঁড়ামির কাছে। অসাধারণ মেধার পরিচয় রেখে ছাত্রজীবন সম্পন্ন করলেও সে জীবন কখনোই সহজ ছিল না সুকুমারী ভট্টাচার্যের। পুরো কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতসহ সব কলা বিভাগের মধ্যে প্রথম হওয়ায় ঈশান স্কলারশিপের দাবিদার ছিলেন তিনি। কিন্তু এই বৃত্তি পলিসির অন্যতম শর্ত ছিল, প্রাপককে উচ্চ বর্ণের হিন্দু হতে হবে। শুধু ধর্মের কারণে নিজের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হন বলে সে সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভীষণ আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও সংস্কৃতে স্নাতকোত্তর না করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। অবশ্য পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। এরপর ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক হিসেবে কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন কলেজে অধ্যাপনা করাকালে ১৯৫৪ সালে অভিমান ভুলে সুকুমারী ভট্টাচার্য আবার আপন করে নিয়েছিলেন তাঁর প্রথম প্রেম সংস্কৃত ভাষাকে। প্রাইভেটে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা দিয়েও সে বিষয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন তিনি।
জীবদ্দশায় তিনি প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্য-ইতিহাস-সংস্কৃতির বিদগ্ধ গবেষক হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। প্রাচীন শাস্ত্র যেভাবে নারীর অধিকার খর্ব করেছে, তার স্বরূপ উন্মোচনই ছিল সুকুমারী ভট্টাচার্যের লক্ষ্য। তাই তিনি বৈদিক সংহিতা, ব্রাহ্মণ, আরণ্যক ও উপনিষদ থেকে প্রচুর উদ্ধৃতি তুলে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাতে চেয়েছেন ধর্মের নামে দ্বিচারিতার আদি উৎসগুলোকে। এসব বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতে গিয়ে তাঁকে সম্মুখীন হতে হয়েছে নানান প্রতিকূলতার। তীব্র প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়ে তাঁর সত্যোদ্ঘাটনের জেদ বেড়ে গিয়েছিল আরও এবং ক্রমেই তাঁর শাণিত কলমে প্রকাশিত হয়েছিল কিছু মূল্যবান বই। সেগুলোর মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হচ্ছে ‘বেদের যুগে ক্ষুধা ও খাদ্য’ (১৯৯৮), ‘বেদে সংশয় ও নাস্তিক্য’ (২০০০)। এ ছাড়া ইংরেজিতে ‘উইমেন অ্যান্ড সোসাইটি ইন অ্যানশিয়েন্ট ইন্ডিয়া’ (১৯৯৪), ‘ফেটালিজম ইন অ্যানশিয়েন্ট ইন্ডিয়া’ (১৯৯৫)।
২০১৪ সালের ২৪ মে সুকুমারী ভট্টাচার্য মারা যান কলকাতায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে গ্রাফিক ডিজাইনে পড়ার সময়ের কথা। অনেকটা শখের বশে শুরু করেন শরদিন্দু নামে একটি শপ। বিক্রি করেছেন হাতে আঁকা টি-শার্ট। ক্রেতা ছিলেন তাঁরই পরিচিত লোকজন। এরই মধ্যে চারুকলায় পড়াশোনা শেষ হলে লন্ডনের ইউনিভার্সিটি ফর দ্য ক্রিয়েটিভ আর্টসে স্নাতকোত্তর করতে পাড়ি জমান। তত দিনে
৪ দিন আগেকথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ এবং একাত্তরের ঘাতক দালালবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী জাহানারা ইমাম। ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ১০১ সদস্যবিশিষ্ট একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয় তাঁর নেতৃত্বে। জাহানারা ইমামের জন্ম ১৯২৯ সালের ৩ মে।
৪ দিন আগেবিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১২ মে পালন করা হয় আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। তবে যুক্তরাষ্ট্র ৬ মে থেকে ১২ মে পর্যন্ত পালন করে জাতীয় নার্স সপ্তাহ। সপ্তাহ কিংবা দিবস—যা-ই হোক না কেন, এর মূল লক্ষ্য হলো নার্সদের কঠোর পরিশ্রম, মানবিকতা ও স্বাস্থ্যসেবায় অবদানের স্বীকৃতি দেওয়া। এই সময় দেশগুলো নার্সিং পেশাজীবীদের সম্মা
৪ দিন আগেফ্রান্সের একটি বিদ্যুৎ কোম্পানির একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন ডমিনিক পেলিকট। তিনি ১৯৭৩ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন গিসেল নামের এক নারীর সঙ্গে। ৫০ বছরের সংসারজীবনে তাঁরা তিনটি সন্তানের জনক-জননী হন। সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের নিয়ে যদিও ছবির মতো নিখুঁত একটি পারিবারিক জীবন ছিল তাঁদের।
৪ দিন আগে