Ajker Patrika

বেলুচিস্তানের অগ্নিকন্যা মাহরাং

ফিচার ডেস্ক
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭: ২৪
বেলুচিস্তানের অগ্নিকন্যা মাহরাং

পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে দেশটির বৃহত্তম প্রদেশ বেলুচিস্তান। এর অধিবাসী বেলুচরা মূলত স্বাধীনচেতা যাযাবর সম্প্রদায়। ১৮৩৯ সালে ব্রিটিশরা বেলুচদের জন্মভূমি ভূখণ্ড দখল করে নেয়। এরপর এটি পাকিস্তানের মানচিত্রে যুক্ত হয়। বর্তমানে প্রায় ৭০ লাখ বেলুচ পাকিস্তানে এবং প্রায় ২০ লাখ ইরান, আফগানিস্তানসহ বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করছে।  

বেলুচিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ২০২৩ সালে একটি লংমার্চ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বেলুচিস্তান থেকে ইসলামাবাদ পর্যন্ত ১ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মার্চের নেতৃত্ব দেন মাহরাং বেলুচ। 

প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ বেলুচিস্তান দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় ডুবে আছে। পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াই করেছে এই অঞ্চলের মানুষ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় ক্ষেত্রে বেলুচিস্তানের সমস্যা ও সমাধানের বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য সামনের সারিতে কাজ করছেন যাঁরা, তাঁদের মধ্যে মাহরাং অন্যতম। 

বেলুচিস্তানের প্রভাবশালী সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মী মাহরাং বেলুচ। তিনি বালুচ ইয়াকজেহতি কমিটি নামে একটি মানবাধিকার প্রতিষ্ঠানের প্রধান। এ ছাড়া তিনি বোলান মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করা একজন চিকিৎসকও। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও বেলুচ জনগণের অধিকার এবং স্বাধীনতাকে টিকিয়ে রাখতে অক্লান্তভাবে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন এই নারী। 

চল্লিশের দশক থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের একাধিক তরঙ্গ বয়ে গেছে মাহরাংয়ের জন্মভূমিতে। বিভিন্ন সময় গণবিক্ষোভ দেখা গেছে সেখানে। ২০০৩ সাল থেকে ব্যাপক নাগরিক নিপীড়ন এবং স্পষ্টভাষী জাতীয় প্রতিনিধিদের জোরপূর্বক গুম করাসহ বিভিন্ন অরাজকতা তৈরি হয় ওই অঞ্চলে। এ ঘটনাগুলো বেলুচিস্তানের মানুষদের বেলুচ লিবারেশন আর্মি এবং বেলুচ লিবারেশন ফ্রন্টে যোগদান বা সমর্থন করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। মাহরাং বেলুচের বাবা আবদুল গাফফার ল্যাঙ্গোভ বেলুচ লিবারেশন আর্মি বা বিএলএর সদস্য ছিলেন। ২০০৯ সালের ২ ডিসেম্বর করাচিতে হাসপাতালে যাওয়ার পথে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী অপহরণ করে তাঁকে। সে সময় মাহরাংয়ের বয়স ১৬ বছর। সে বয়সে বাবার অপহরণের প্রতিবাদ শুরু করেন তিনি। ২০১১ সালের জুলাই মাসে ফিরে পান বাবাকে; তবে জীবিত নয়, মৃত।

মাহরাংয়ের ভাইকে বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির সঙ্গে সম্পর্কের কারণে ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। তিনি তখন ওই অঞ্চলের সম্পদ আহরণের প্রতিবাদে ছিলেন শক্তিশালী কণ্ঠস্বর।

জাতি, ধর্ম বা রাজনৈতিক বিশ্বাসনির্বিশেষে আমরা যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাই।

শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বিশ্বাসী ডা. মাহরাং বেলুচ বলেছেন, ‘জাতি, ধর্ম বা রাজনৈতিক বিশ্বাসনির্বিশেষে আমরা যেকোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাই।’ ডা. মাহরাং বেলুচ। ছবি: সংগৃহীতপাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের তথ্যমতে, গত বছর বেলুচিস্তানে ১৭০টি জঙ্গি হামলা হয়েছে। সেসব হামলায় ১৫১ জন বেসামরিক নাগরিক এবং ১১৪ জন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছে। বেলুচিস্তানে মেয়েদের স্কুলগুলোকে সামরিক ক্যাম্পে রূপান্তর করা হয়েছে। ধর্মীয় উগ্রবাদ সেখানে নারীদের আরও নিপীড়িত করেছে। ইসলামাবাদে ২০২৩ সালের মার্চের আগে মাহরাং ও অন্যান্য বেলুচ কর্মী হয়রানি, শারীরিক আক্রমণ, অবমাননাকর আচরণ এবং মৃত্যুর হুমকির সম্মুখীন হন রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। এমনকি তারা আন্দোলনকারী নারীদের ‘পতিতা’ হিসেবে উল্লেখ করে। একপর্যায়ে গ্রেপ্তারের পর তাঁদের স্কার্ফ খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। 

রক্ষণশীল অঞ্চলে বেলুচ নারীরা বছরের পর বছর এমন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। এই অবস্থা হাজার হাজার বেলুচ নারীকে গণপ্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দিতে উৎসাহিত করেছে। সম্প্রতি উত্তাল বেলুচিস্তানের নেতৃত্ব দিচ্ছে মাহরাং বেলুচের দল। 

সূত্র: আল জাজিরা, ট্রুথ ডিগ, দ্য গার্ডিয়ান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গণপরিবহনে হয়রানি, যেভাবে আইনি ব্যবস্থা নেবেন

ব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস
আপডেট : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১১: ৪৩
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দেশে গণপরিবহনে যাতায়াতে ৮৭ শতাংশ নারী মৌখিক, শারীরিকসহ বিভিন্ন হয়রানির শিকার হয়। তাদের মধ্যে ৩৬ শতাংশ হয় যৌন হয়রানির শিকার। এসব তথ্য চলতি বছরের এপ্রিলে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, ইউএন উইমেন্স ও সুইডেন দূতাবাসের সহযোগিতায় আয়োজিত একটি ক্যাম্পেইনে তুলে ধরা হয়। গণপরিবহনে হয়রানির শিকার হলে কীভাবে আইনি সহায়তা পেতে পারেন, সে বিষয়ে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইফফাত আরা গিয়াস।

গণপরিবহনে হয়রানি বা সহিংসতার শিকার হলে প্রথম কাজ হবে নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

যত দ্রুত সম্ভব ভিড় থেকে দূরে চলে যান, চিৎকার করে আশপাশের লোকদের সচেতন করুন এবং সরাসরি বিপদাপন্ন মনে হলে চালক, কন্ডাক্টর কিংবা শুভানুধ্যায়ীর সাহায্য চান। একই সময়ে মোবাইল ফোনে ঘটনার ভিডিও বা অডিও রেকর্ড রাখুন, ছবি তুলুন এবং পাশে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীর নাম ও মোবাইল ফোন নম্বর নোট করে নিন। এগুলো পরে প্রমাণ হিসেবে কাজে লাগবে।

আইনগত দিক

গণপরিবহনে শারীরিক ভঙ্গি, ছোঁয়া কিংবা আপত্তিকর আচরণ পেনাল কোডের ধার্য শাস্তিযোগ্য অপরাধের মধ্যে পড়ে। যেমন কোনো ব্যক্তি যদি কোনো নারীর শালীনতা ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশ্যে অথবা শালীনতা ক্ষুণ্ন হতে পারে জেনেও উক্ত নারীকে আক্রমণ করে বা তার ওপর অপরাধমূলক বল প্রয়োগ করে, সেটি ধারা ৩৫৪-এর মধ্যে পড়ে। আবার কোনো নারীর শ্লীলতাহানির উদ্দেশ্যে কোনো শব্দ ব্যবহার, অঙ্গভঙ্গি অথবা কোনো কাজ করলে তা ধারা ৫০৯ অনুসারে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

এই অপরাধগুলোর ভিত্তিতে মামলা করা যায়। দেশের সংবিধান নাগরিকদের সমতা ও মর্যাদা নিশ্চিত করেছে। তাতে নারীদের পুরুষের সঙ্গে সব ক্ষেত্রে সমান অধিকার নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।

কীভাবে আইনি পদক্ষেপ নিতে হবে

ঘটনার পর দ্রুত নিকটস্থ থানায় সাধারণ ডায়েরি বা জিডি অথবা গুরুতর হলে এফআইআর/মোকদ্দমা করুন। এ ছাড়া অনলাইন জিডি সার্ভিসও আছে, যেখানে প্রাথমিক অভিযোগ দাখিল করা যায়। পরে পুলিশ আপনাকে তদন্ত এবং প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের মাধ্যমে সাহায্য করবে। মেডিকেল পরীক্ষার কাগজ এবং মোবাইল ফোনে করা ভিডিও অথবা অডিও প্রমাণ সংরক্ষণ করুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পোস্ট বা মেসেজের স্ক্রিনশট রাখুন। প্রয়োজনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০-এর অধীন কঠোর ধারাও বিবেচিত হতে পারে।

গণপরিবহনে হয়রানি অথবা সহিংসতার শিকার হলে পেনাল কোড ধারা ৩৫৪, ৫০৯, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, সাংবিধানিক সমতা—এসব আইনি সূত্রের সাহায্যে যে কেউ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন।

কটূক্তি বা মৌখিক হয়রানির শিকার হলে করণীয়

হয়রানির ঘটনা ঘটলে কড়া ভাষায় বিরক্তি জানান। আশপাশের মানুষকে ডাকা এবং ঘটনাটি রেকর্ড বা নোট করা গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিকভাবে মামলা কিংবা অভিযোগ আনা গেলে ভুক্তভোগীকে অপমান করা

বা ন্যক্কারজনক ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রবণতা থাকতে পারে। এখানে আইনি প্রক্রিয়া ও প্রমাণই নির্ণায়ক, ব্যক্তিগত কলঙ্ক বা সোশ্যাল মিডিয়ার চাপকে অতিরঞ্জিতভাবে গ্রহণ করবেন না। গবেষণা ও এনজিও সার্ভেতে দেখা গেছে, গণপরিবহনে কটূক্তি ব্যাপক। এ কারণেই ব্যক্তিগত ঘটনা আইনি ও সামাজিকভাবে গুরুত্ব পায়।

মানসিক সহায়তা ও সুরাহা

ন্যক্কারজনক কোনো ঘটনা ঘটে গেলে পরিবার, বন্ধু অথবা স্থানীয় নারী সাহায্য কেন্দ্র কিংবা আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রমাণ জোগাড় না করে দ্রুত সামাজিক মিডিয়ায় নেটিভ স্টোরি ছড়িয়ে দেওয়ার আগে আইনগত পরামর্শ নিন। সমাজে ভুক্তভোগীকে দোষারোপ বন্ধ করতে সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে।

এ ক্ষেত্রে নিন্দা নয়, সহায়তা বাড়ানোই সমাধান।

গণপরিবহনে হয়রানি অথবা সহিংসতার শিকার হলে পেনাল কোড ধারা ৩৫৪, ৫০৯, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, সাংবিধানিক সমতা—এসব আইনি সূত্রের সাহায্যে যে কেউ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন।

জীবিকার প্রয়োজনে কিংবা পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে নারীদের ঘর থেকে বের হতে হয়। এই প্রাত্যহিক কাজে গণপরিবহনে হয়রানির শিকার হলে নারীদের স্বাভাবিক জীবনযাপন বাধাগ্রস্ত হয়। এটি আইনের চোখে অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ বন্ধে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ

অক্টোবরে সংঘটিত সহিংসতায় নারী হত্যার ঘটনা বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

অক্টোবর মাসে ২৩১ জন নারী এবং কন্যাশিশু ধর্ষণ, হত্যা, যৌন নিপীড়নসহ নানা ধরনের সহিংসতার শিকার হওয়ার খবর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে ৪৬ কন্যা, ১৬ নারীসহ মোট ৬২ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ প্রকাশিত মাসিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। অক্টোবরে বেশিসংখ্যক নারী ও কন্যাশিশু হত্যার শিকার হয়েছে। এ ঘটনার শিকার হওয়া ৫৩ জনের মধ্যে ৪৬ নারী ও ৭ জন কন্যাশিশু। ১৫টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের লিগ্যাল এইড উপপরিষদ এ তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নির্যাতনের শিকার হওয়া ২৩১ নারী ও কন্যাশিশুর মধ্যে ৩৪ কন্যাসহ ৪৪ জন ধর্ষণের শিকার হয়েছে, ১০ কন্যাসহ ১৩ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হয়েছে ২ কন্যাসহ ৫ জন। এ ছাড়া ১০ কন্যাসহ ১৩ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়া সহিংসতার ঘটনার মধ্যে ১০১ কন্যাশিশু, আর ১৩০ জন নারী সহিংসতার শিকার হয়েছে।

বিভিন্ন কারণে ৭ কন্যা এবং ৪৬ জন নারী হত্যার শিকার হয়েছে। হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছে ১ কন্যা ও ২ জন নারী। ৯ কন্যা, ১৭ নারীসহ ২৬ জনের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে।

২ কন্যা, ৫ নারীসহ ৭ জন আত্মহত্যা করেছে। এর মধ্যে আত্মহত্যার প্ররোচনার শিকার হয়েছে ১ জন।

যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে ৬ কন্যা, ৬ নারীসহ মোট ১২ জন। এর মধ্যে ৫ কন্যাসহ ১১ জন যৌন নিপীড়নের শিকার এবং ১ কন্যা উত্ত্যক্তকরণের শিকার হয়েছে।

অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়েছে ৪ জন নারী। সে কারণে মৃত্যু হয়েছে ১ জন নারীর। ১ জন নারী গৃহকর্মীকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে।

৭ কন্যা অপহরণের শিকার হয়েছে। পাচারের শিকার হয়েছে ৬ কন্যাসহ ১০ জন। শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৫ কন্যাসহ ১৯ জন। বাল্যবিবাহের চেষ্টা হয়েছে ২ জন কন্যার। যৌতুকের ঘটনা ঘটেছে ৭টি। এর মধ্যে যৌতুকের জন্য নির্যাতনে ২ এবং যৌতুকের কারণে হত্যার শিকার ৫ জন নারী। এ ছাড়া ৫ জন নারী বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গৃহযুদ্ধের আগুনে পুড়ছে সুদানের নারীজীবন

ফিচার ডেস্ক
সুদান সীমান্তের ভেতরে কমপক্ষে ৫৮ লাখ নারী ও কিশোরী বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ছবি: এএফপি
সুদান সীমান্তের ভেতরে কমপক্ষে ৫৮ লাখ নারী ও কিশোরী বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ছবি: এএফপি

গর্ত আর খানাখন্দে ভরা জীর্ণ সড়ক পেরিয়ে নিরাপদ জায়গার দিকে ছুটে চলেছে একটি ট্রাক। সীমান্ত পর্যন্ত তিন দিনের যাত্রা। প্রায় ৮০ জনের সঙ্গে সেই ট্রাকে চড়ে বসেছেন অন্তঃসত্ত্বা নারী ও তাঁর স্বামী। গন্তব্য নির্দিষ্ট হলেও তার দূরত্ব প্রায় ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার! এই দীর্ঘ পথে পদে পদে বিপদ। প্রায় প্রতি ২০ মিনিট পর আরএসএফ চেকপয়েন্ট। ট্রাক থামিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছিল জোর করে। পথে খাবার আর পানির দাম আকাশছোঁয়া। অনেক প্রতিকূলতার পর সেই নারী ও তাঁর স্বামী দক্ষিণ সুদানের সীমান্ত শহর আবেই-এ পৌঁছান। বৃষ্টি ও বন্যার কারণে সেখানেও টেকা কঠিন হয়ে পড়ে তাঁদের। অবশেষে, তাঁরা এন নাহুদ থেকে প্রায় ১ হাজার ৩০০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ সুদানের রাজধানী জুবা হয়ে উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় পৌঁছান।

গত ২৮ আগস্ট বিবিসি, সুদানের এমনই একটি গল্প শুনিয়েছে আমাদের। নিরাপত্তার কারণে প্রতিবেদনে ওই নারী এবং তাঁর স্বামীর নাম ব্যবহার করা হয়নি।

সুদানের সেনাবাহিনী এসএএফ, অন্যদিকে শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস বা আরএসএফ। সোনার খনি ও ক্ষমতার দখল নিয়ে এই দুই দলের মধ্যে প্রচণ্ড লড়াই শুরু হয়। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সে লড়াই গড়ায় গৃহযুদ্ধের দিকে। এর ফলে দুর্ভিক্ষ ও পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে।

দুই বছরের বেশি সময় ধরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চরম অত্যাচার চলছে সেখানে। আরএসএফ সম্প্রতি আল-ফাশের শহরটি দখল করার পর সেখানকার বাসিন্দাদের নিয়ে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে।

এই গৃহযুদ্ধে নৃশংসতার মাত্রা ব্যাপক। পুড়িয়ে দেওয়া ঘরবাড়ি, বিকৃত মৃতদেহ এবং গণকবরের প্রমাণ মিলেছে স্যাটেলাইট ও ভিডিওর মাধ্যমে। কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এসব বিষয় যাচাই করা এবং মানবিক সহায়তা প্রচেষ্টাকে ক্রমাগত বাধাগ্রস্ত করছে। নারী ও মেয়েদের হত্যা, ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন দাসত্ব, জোর করে বিয়ে এবং অপহরণের ঘটনা ঘটছে প্রতিদিন। স্থানীয় মেডিকেল নেটওয়ার্ক ও সুদান ডক্টরস ইউনিয়নের তথ্য অনুসারে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে নারী, কিশোরীসহ ২ হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। ৩০ অক্টোবর সৌদি ম্যাটারনিটি হসপিটালে হামলার সময় প্রায় ৫০০ রোগী এবং তাঁদের সঙ্গে থাকা স্বজনেরা নিহত হন বলে জানা যায়। এই হাসপাতালে অনেক নারী নিরাপত্তা ও চিকিৎসার জন্য আশ্রয় নিয়েছিলেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর হামলারও তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর আক্রমণ নারীদের মাতৃ ও প্রজননস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।

যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে নারী ও মেয়েদের কাছে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা পৌঁছতে পারছে না। চলতি বছরের জুন মাসে একটি হাসপাতালে বিমান হামলায় ৫৭ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রসবকক্ষে থাকা নারীরাও ছিলেন। এ ছাড়া জেন্ডার ইন হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের একটি প্রতিবেদনে সুদানের নারীদের স্বাস্থ্য নিয়ে ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। স্বাস্থ্যসুবিধাগুলো ধ্বংস হওয়ার কারণে বেঁচে যাওয়া নারীরা ধর্ষণ-পরবর্তী স্বাস্থ্য পরিচর্যা থেকে বঞ্চিত।

এপ্রিলে প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুদান সীমান্তের ভেতরে কমপক্ষে ৫৮ লাখ নারী ও কিশোরী বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সুদান

এবং এর বাইরে বাস্তুচ্যুত হওয়া ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের অর্ধেকের বেশি নারী। দুই বছরের কম সময়ে, লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতার ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে তিন গুণের বেশি। ২০২৪ সালে লৈঙ্গিকভিত্তিক সহিংসতার পরিষেবার

চাহিদা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় বেড়েছিল ২৮৮ শতাংশ। ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটি প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের মে মাসের মধ্যে সুদানে ২ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ

তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীনতার শিকার হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সুদান কান্ট্রি ডিরেক্টর এতিজাজ ইউসিফ এই সংকটকে পুরোপুরিভাবে মানবসৃষ্ট বলে উল্লেখ করেছেন।

যুদ্ধ যে মাত্রারই হোক না কেন, তাতে নারীদের ভিকটিম হওয়ার হার থাকে সবচেয়ে বেশি। সুদানের নারীদের ওপর এখন চলছে ভয়াবহ নির্যাতন। কবে যে দেশটিতে সুদিন ফিরে আসবে, তার কোনো নিশ্চয়তা এই মুহূর্তে কোথাও থেকে পাওয়া যাচ্ছে না।

সূত্র: ইউএন উইমেন, রিলিফওয়েব, বিবিসি

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

এক যে ছিল রানি

ফিচার ডেস্ক
লিডিয়া লিলিউওকালানি কামাকাএহা। ছবি: সংগৃহীত
লিডিয়া লিলিউওকালানি কামাকাএহা। ছবি: সংগৃহীত

হাওয়াইয়ের ঐতিহ্যবাহী গান ‘আলোহা ও-এ’। এই গানের রচয়িতা ছিলেন হাওয়াই রাজ্যের প্রথম ও একমাত্র ক্ষমতাসীন রানি এবং শেষ সার্বভৌম শাসক। লিলিউওকালানি নামে পরিচিত হলেও তাঁর পুরো নাম লিডিয়া লিলিউওকালানি কামাকাএহা। ১৮৯১ সালে তিনি তাঁর ভাই রাজা কালাকাউয়ার মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহণ করেন।

শুধু এই গানই নয়, তিনি ‘হাওয়াই পোনোই’ শিরোনামে হাওয়াই রাজ্যের জাতীয় সংগীতও লিখেছিলেন, যেটি এখনো সে দেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়।

১৮৯১ থেকে ১৮৯৩ সাল পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত শাসনামলে লিলি তাঁর প্রজাদের জন্য কাজ করেছেন। ১৮৯২ সালে ‘হাইওয়েজ অ্যাক্ট’ আইন পাস করেন তিনি। রাজকুমারী থাকাকালে দরিদ্র মেয়েদের শিক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠা করেন লিলিউওকালানি এডুকেশনাল সোসাইটি। সিংহাসনে বসে একটি নতুন সংবিধান রচনার উদ্যোগ নেন তিনি। তাঁর এই কাজের স্লোগান ছিল, হাওয়াই ফর দ্য হাওয়াইয়ান, অর্থাৎ হাওয়াই হাওয়াইবাসীর জন্য। তিনি বলতেন, ‘পতনের ভয়ে কাজ করা থামিয়ো না।’

লিলির জীবন একাধারে রাজকীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি এবং দেশের জন্য তীব্র ভালোবাসায় পূর্ণ ছিল। বিদেশি শক্তির হাতে তাঁর রাজ্যের পতন বিষাদের ছায়া ফেলেছিল। ১৮৯৩ সালের জানুয়ারি মাসে আমেরিকান ব্যবসায়ী ও জমিদারদের একটি দল মার্কিন নৌবাহিনীর সহায়তায় রানিকে ক্ষমতাচ্যুত করে। প্রজাদের রক্তপাত এড়াতে রানি অনিচ্ছা সত্ত্বেও আত্মসমর্পণ করেন। লিলিউওকালানির জন্ম ১৮৩৮ সালের ২ সেপ্টেম্বর, হনলুলুতে। তিনি ১৯১৭ সালের ১১ নভেম্বর মারা যান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হলেন মামদানি

জোট নয়, নির্বাচনী সমঝোতা করবে জামায়াত—জানালেন আমির

আজকের রাশিফল: অফিসে মিষ্টি কথায় মন গলবে বসের, প্রেমের ঝগড়ায় চ্যাটজিপিটিতে ভরসা নয়

বাংলা ভাষার সঙ্গে জোহরান মামদানির ঘরের সম্পর্ক, যোগসূত্র মা মীরা নায়ার

বুমরা-সূর্যকুমারকে শাস্তি দিল আইসিসি, নিষিদ্ধ পাকিস্তানি ক্রিকেটার

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত