রজত কান্তি রায়, ঢাকা
জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে আগস্ট মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া আন্দোলনে আমরা আমাদের নারীদের দেখেছি। তাঁদের রাগে কাঁপতে দেখেছি, দুঃখে কাঁদতে দেখেছি, চরম দুঃসময়ে সহায়তার হাত বাড়াতে দেখেছি, আহত হতে দেখেছি, শুশ্রূষা করতে দেখেছি। বিজয়ে উল্লাস করতে দেখেছি। এ এক অভাবনীয় দৃশ্য।
এবং যে কথাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে তা হলো, ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণ একে আরও বেগবান করেছিল, লক্ষ্য অর্জন ত্বরান্বিত করেছিল। আলোচকেরা বলছেন, জনসংখ্যার অর্ধেককে বাদ রেখে কিংবা সীমিত অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে আমাদের আন্দোলনের যে অতীত ইতিহাস, তা এবার ভেঙে গিয়েছিল। কারণ, সমাজ বিশ্লেষকেরা জানাচ্ছেন, এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল ঘর থেকে। দীর্ঘ মেয়াদে শোষণের যে গল্প, যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ জমা হয়েছিল, তা ছুঁয়ে ফেলেছিল গৃহকোণ। পাঞ্জাবির কোনা ছেড়ে তা ছড়িয়ে গিয়েছিল শাড়ির আঁচলে। ফলে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরাও। আর এই ঘুরে দাঁড়ানোটা ছিল অর্থবহ।
গত প্রায় ৫২ বছরে ধীরে ধীরে নারীর ক্ষমতায়নের ধারা শক্তিশালী হয়েছে। শিক্ষা, চাকরি কিংবা উদ্যোক্তা হিসেবে নারীদের অবস্থান হয়েছে সংহত। ফলে তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পুরুষের সমান না হলেও এগিয়েছে অনেকখানি। সন্তানেরা কোন স্কুলে পড়বে, সকালে কী খাবে—এসব সিদ্ধান্তে যেমন তাঁরা এগিয়েছেন, তেমনি এগিয়েছেন সন্তান কোথায় যাবে, কার সঙ্গে মিশবে ইত্যাদি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাতেও। ফলে পুরুষতান্ত্রিকতায় কিছুটা ধাক্কা যে লেগেছে, সেটা বলাই বাহুল্য। সেই অগ্রযাত্রার ফল এ আন্দোলনে আমরা দেখেছি। নারীরা সন্তানদের নিয়ে এসেছেন মিছিলে। শ্রাবণের প্রখর রোদ বা বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত সন্তানদের পানির বোতল কিংবা খাবার এগিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। পাহারা দিয়েছেন। পুলিশের সঙ্গে লড়েছেন, মার খেয়েছেন, আহত হয়েছেন, ছিনিয়ে এনেছেন সহপাঠী কিংবা ভাইকে। ঋজুভাবে দাঁড়িয়ে পড়েছেন পুলিশের গাড়ির সামনে। আমাদের সামনে এ এক দারুণ উদাহরণ।
এ আন্দোলনে আমরা সব শ্রেণির নারীদের অংশগ্রহণ লক্ষ করেছি, তাঁদের নিজস্ব অবস্থানে থেকে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এক মায়ের কথা উল্লেখ করতে পারি। অফিসে আসার পথে ঢাকা শহরের রামপুরার বনশ্রী এলাকায় একদিন দেখেছিলাম তাঁকে। মধ্য ৩০ বয়স। চোখমুখে আতঙ্কের ছাপ ছিল। কিন্তু কোমরে হাত দিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে কড়া নজরে রেখেছিলেন নিজের কিশোর ছেলেটিকে। আমি পাশে দাঁড়িয়ে যখন কিশোর-কিশোরী আর তরুণদের লেটারিং দেখছি, গ্রাফিতি আঁকা দেখছি, ছবি তুলছি, তিনি দু হাতে দুটি পানির বোতল নিয়ে এগিয়ে গেলেন ছেলেমেয়েদের দিকে। নিজের সন্তানকে দিলেন। আর একটি পানির বোতল এগিয়ে দিলেন ছেলের বন্ধুর দিকে। পাশে তাকিয়ে পুলিশের গতিবিধির দিকেও নজর রাখলেন। এই মা আসলে কী চেয়েছিলেন? সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যৎ? উত্তর হয়তো হ্যাঁ। প্রত্যেক মা-বাবাই চান তাঁদের সন্তানের ভবিষ্যৎ সুন্দর হোক। সন্তানেরা থাকুক দুধে-ভাতে। তাই হয়তো তিনি সন্তানের মিছিলে যাওয়ায় বাধা দেননি।
কিন্তু সন্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সতর্ক হয়ে। আমরা এই পুরো আন্দোলনে এমন হাজারো চোখ ভেজানো দৃশ্য দেখেছি। দেখেছি সন্তান কোলে মায়েদের পতাকা হাতে উল্লাস।
শুধু মায়েরা নন। নারী শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, উদ্যোক্তাদের দেখেছি। নারী সাংবাদিকদের দেখেছি। সবার একটিই চাওয়া ছিল—যথেষ্ট হয়েছে, আর না।
এই আন্দোলন আমাদের জানিয়ে দিল, পুরুষের হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়াই জেন জি প্রজন্মের নারী এবং তাঁদের মায়েদের চাওয়া। দেখিয়ে দিল, অর্ধেককে সুযোগ দিলে পূর্ণ হওয়া যায়। তাতে লক্ষ্য অর্জন ত্বরান্বিত হয়।
জুলাই মাসের ১ তারিখ থেকে আগস্ট মাসের ৫ তারিখ পর্যন্ত ঘটে যাওয়া আন্দোলনে আমরা আমাদের নারীদের দেখেছি। তাঁদের রাগে কাঁপতে দেখেছি, দুঃখে কাঁদতে দেখেছি, চরম দুঃসময়ে সহায়তার হাত বাড়াতে দেখেছি, আহত হতে দেখেছি, শুশ্রূষা করতে দেখেছি। বিজয়ে উল্লাস করতে দেখেছি। এ এক অভাবনীয় দৃশ্য।
এবং যে কথাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে তা হলো, ছাত্র-জনতার এ আন্দোলনে নারীদের অংশগ্রহণ একে আরও বেগবান করেছিল, লক্ষ্য অর্জন ত্বরান্বিত করেছিল। আলোচকেরা বলছেন, জনসংখ্যার অর্ধেককে বাদ রেখে কিংবা সীমিত অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে আমাদের আন্দোলনের যে অতীত ইতিহাস, তা এবার ভেঙে গিয়েছিল। কারণ, সমাজ বিশ্লেষকেরা জানাচ্ছেন, এ আন্দোলনের সূত্রপাত হয়েছিল ঘর থেকে। দীর্ঘ মেয়াদে শোষণের যে গল্প, যে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ জমা হয়েছিল, তা ছুঁয়ে ফেলেছিল গৃহকোণ। পাঞ্জাবির কোনা ছেড়ে তা ছড়িয়ে গিয়েছিল শাড়ির আঁচলে। ফলে ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরাও। আর এই ঘুরে দাঁড়ানোটা ছিল অর্থবহ।
গত প্রায় ৫২ বছরে ধীরে ধীরে নারীর ক্ষমতায়নের ধারা শক্তিশালী হয়েছে। শিক্ষা, চাকরি কিংবা উদ্যোক্তা হিসেবে নারীদের অবস্থান হয়েছে সংহত। ফলে তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পুরুষের সমান না হলেও এগিয়েছে অনেকখানি। সন্তানেরা কোন স্কুলে পড়বে, সকালে কী খাবে—এসব সিদ্ধান্তে যেমন তাঁরা এগিয়েছেন, তেমনি এগিয়েছেন সন্তান কোথায় যাবে, কার সঙ্গে মিশবে ইত্যাদি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাতেও। ফলে পুরুষতান্ত্রিকতায় কিছুটা ধাক্কা যে লেগেছে, সেটা বলাই বাহুল্য। সেই অগ্রযাত্রার ফল এ আন্দোলনে আমরা দেখেছি। নারীরা সন্তানদের নিয়ে এসেছেন মিছিলে। শ্রাবণের প্রখর রোদ বা বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত সন্তানদের পানির বোতল কিংবা খাবার এগিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। পাহারা দিয়েছেন। পুলিশের সঙ্গে লড়েছেন, মার খেয়েছেন, আহত হয়েছেন, ছিনিয়ে এনেছেন সহপাঠী কিংবা ভাইকে। ঋজুভাবে দাঁড়িয়ে পড়েছেন পুলিশের গাড়ির সামনে। আমাদের সামনে এ এক দারুণ উদাহরণ।
এ আন্দোলনে আমরা সব শ্রেণির নারীদের অংশগ্রহণ লক্ষ করেছি, তাঁদের নিজস্ব অবস্থানে থেকে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এক মায়ের কথা উল্লেখ করতে পারি। অফিসে আসার পথে ঢাকা শহরের রামপুরার বনশ্রী এলাকায় একদিন দেখেছিলাম তাঁকে। মধ্য ৩০ বয়স। চোখমুখে আতঙ্কের ছাপ ছিল। কিন্তু কোমরে হাত দিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে কড়া নজরে রেখেছিলেন নিজের কিশোর ছেলেটিকে। আমি পাশে দাঁড়িয়ে যখন কিশোর-কিশোরী আর তরুণদের লেটারিং দেখছি, গ্রাফিতি আঁকা দেখছি, ছবি তুলছি, তিনি দু হাতে দুটি পানির বোতল নিয়ে এগিয়ে গেলেন ছেলেমেয়েদের দিকে। নিজের সন্তানকে দিলেন। আর একটি পানির বোতল এগিয়ে দিলেন ছেলের বন্ধুর দিকে। পাশে তাকিয়ে পুলিশের গতিবিধির দিকেও নজর রাখলেন। এই মা আসলে কী চেয়েছিলেন? সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যৎ? উত্তর হয়তো হ্যাঁ। প্রত্যেক মা-বাবাই চান তাঁদের সন্তানের ভবিষ্যৎ সুন্দর হোক। সন্তানেরা থাকুক দুধে-ভাতে। তাই হয়তো তিনি সন্তানের মিছিলে যাওয়ায় বাধা দেননি।
কিন্তু সন্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন সতর্ক হয়ে। আমরা এই পুরো আন্দোলনে এমন হাজারো চোখ ভেজানো দৃশ্য দেখেছি। দেখেছি সন্তান কোলে মায়েদের পতাকা হাতে উল্লাস।
শুধু মায়েরা নন। নারী শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, উদ্যোক্তাদের দেখেছি। নারী সাংবাদিকদের দেখেছি। সবার একটিই চাওয়া ছিল—যথেষ্ট হয়েছে, আর না।
এই আন্দোলন আমাদের জানিয়ে দিল, পুরুষের হাতে হাত রেখে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়াই জেন জি প্রজন্মের নারী এবং তাঁদের মায়েদের চাওয়া। দেখিয়ে দিল, অর্ধেককে সুযোগ দিলে পূর্ণ হওয়া যায়। তাতে লক্ষ্য অর্জন ত্বরান্বিত হয়।
দেশে সবকিছু নিয়ে একটি পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নারীদের নিরাপত্তা, তাঁদের অধিকার, তাঁদের সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে অংশগ্রহণের বিষয়গুলো নিয়ে কতটুকু কথা হচ্ছে? নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে কথা হচ্ছে। এর মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি কতটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? রাজনৈতিক দলগুলোতে নারী নেতৃত্বের...
১ ঘণ্টা আগে১২ আগস্ট মঙ্গলবার, সকালেই এক গভীর শূন্যতা নেমে এল চারপাশে। অধ্যাপক মাহফুজা খানম আর নেই! বুকের ভেতর যেন এক অপার শূন্যতার ঢেউ আছড়ে পড়ল। মানুষ চলে গেলে পৃথিবী তো থেমে যায় না, আকাশের রংও বদলায় না, রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড় থাকে। কিন্তু আমাদের ভেতরের পৃথিবী থেমে যায়। আমার কাছে তিনি শুধু একজন খ্যাতিমান..
২ ঘণ্টা আগেযুদ্ধের উত্তাপে জর্জরিত গাজায় প্রতিটি মুহূর্তে মৃত্যুর ছায়া ঘোরে। তবু সেখানে নতুন প্রাণের আশা যেন এক অনন্য বিজয়। গাজার আসসাহাবা মেডিকেল কমপ্লেক্সের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স আর ইন্টার্নরা এই জীবন ও মৃত্যুর এক অপরিহার্য সম্পর্কের সাক্ষী হয়ে ওঠেন প্রতিনিয়ত। সেখানে অনিশ্চিত নিকষ কালো..
২ ঘণ্টা আগেআমি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। একটি ছেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল কলেজজীবন থেকে। সে এখন একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমাদের কথা বন্ধ হয়ে যায় এক বছর আগে তার ইচ্ছাতেই। এ ঘটনায় আমি খুবই বিষণ্ন হয়ে যাই। পরে তা কাটিয়ে উঠি। কিছুদিন আগে সে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে আনব্লক করে, স্টোরি দেখে...
৩ ঘণ্টা আগে