কাশফিয়া আলম ঝিলিক, ঢাকা
মধ্যবিত্ত এক পরিবারে বেড়ে ওঠা মানুষের গন্তব্য লেখাপড়া শেষ করে চাকরি পাওয়া। তারপর নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া। কিন্তু কখনো কখনো কিছু মানুষ এই বৃত্ত ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। সে এক বিশাল লড়াই। তেমনই লড়াই করে চলেছেন এক তরুণ উদ্যোক্তা ইফ্ফাত আলম জেসিকা। নিজের তো বটেই, কর্মসংস্থান করেছেন আরও প্রায় ৩২ জন নারীর।
জেসিকা ও তাঁর সর্বজয়া
বাবা সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন। তাই ছোটবেলা থেকে ক্যান্টনমেন্টে বড় হয়ে উঠেছেন জেসিকা। একসময় কাটিয়েছেন বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে; এখন সাভার ক্যান্টনমেন্টের বাসিন্দা। শৃঙ্খলা, পরিশ্রম, দায়িত্ববোধ, সততা কিংবা সীমিত আয়ে শৌখিনতার চর্চা—এগুলো শিখেছেন পরিবারের কাছ থেকেই। ছোটবেলায় জেসিকার বাবা তাঁর জন্য ঈদে কিনতেন সাধারণ গজ কাপড়, পোশাক বানানোর জন্য। সেসব পোশাকে নিজের হাতে লেইস-পুঁতি বসিয়ে ডিজাইন করে অন্য রকম বানিয়ে ফেলতেন তিনি। আঁকাআঁকি, ডিজাইন করা, নতুন কিছু তৈরি করা—এগুলো তাঁর অবসর কাটানোর অনুষঙ্গ ছিল।
আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের মতো জেসিকার মা-বাবার স্বপ্ন ছিল, মেয়ে পড়াশোনা করে চাকরি করবে। তিনিও পড়াশোনা শেষ করে ছোটখাটো একটা চাকরি নিয়েছিলেন। কিন্তু বাদ সাধে নিজের ইচ্ছা। সেখান থেকে নতুন কিছু করার ভাবনা শুরু জেসিকার। সেই ‘নতুন কিছু’ এখন সর্বজয়া; তাঁর ফেসবুক পেজ।
প্রথম কিছু বিক্রি করা
চাকরিরত অবস্থায় সহকর্মীদের উৎসাহে নিজের ফেসবুক আইডিতে তাঁর করা সেলাই-ফোড়াইয়ের কাজের ছবি আপলোড করেন জেসিকা। সেসব ছবি দেখে কয়েকজন সহকর্মী কিছু কুশন কভার বানিয়ে দিতে বলেন। সেটিই ছিল তাঁর প্রথম অর্ডার। সেখান থেকে হাজারখানেক টাকা লাভ হয়। সেই টাকা দিয়ে আরও কিছু কাপড় কিনেছিলেন জেসিকা। সেটিই ছিল প্রথম ‘ইনভেস্টমেন্ট’।
এরপর ধীরে ধীরে বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে অর্ডার পেতে শুরু করেন জেসিকা। তাঁর মধ্যে তৈরি হতে থাকে আত্মবিশ্বাস। জেসিকার কাছে ডিজাইন কেবল নান্দনিকতা নয়; বরং এটা গল্প তৈরির মাধ্যম। তাই ধীরে ধীরে আঁকাআঁকি এবং ডিজাইনকে পেশাগতভাবে নেওয়ার কথা ভাবেন তিনি।
অদৃশ্য সেই পর্দা সরিয়ে
এখন নারী-পুরুষের আলাদা বলে কোনো কাজ নেই। তারপরেও সমাজে কাজের ক্ষেত্রে একটা অদৃশ্য পর্দা রয়ে গেছে। জেসিকা সেই পর্দার নাম দিয়েছেন ‘নীরব সংঘাত’। জানালেন, সরাসরি কেউ কিছু না বললেও আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি আর ব্যবহারে বুঝিয়ে দেবে তাদের সিদ্ধান্ত। কাজের শুরুতে তাঁকেও শুনতে হয়েছিল, ‘ব্যবসা করা ছেলেদের কাজ। পড়াশোনা করছ কি কাপড় বেচতে?’
সেসব কথার সঙ্গে লড়াইটা খুব সহজ ছিল না। তবে সব সময় জেসিকার কাজের বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন মা-বাবা ও ভাই এবং বিয়ের পর স্বামী। জেসিকা বলেন, ‘প্রতিদিন নিজের ক্ষমতায় বিশ্বাস রাখতে হতো। নিজেকে প্রমাণ করতে হতো কাজ দিয়ে নিজের স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রেখে।’
‘সর্বজয়া’র সর্বজয়ারা
জেসিকার পথচলা শুরু হয়েছিল একটি সেলাই মেশিন দিয়ে। কাজ করতেন নিজে। সেখান থেকে বর্তমানে ৩০ জনের বেশি নারী কাজ করছেন তাঁর সঙ্গে। তাঁদের মধ্যে প্রতিদিন ওয়ার্কশপে কাজ করেন ৭ থেকে ৮ জন। বাকিরা সবাই সেলাইসহ বিভিন্ন কাজ করেন নিজ নিজ বাড়িতে। জেসিকা জানান, এই নারীদের কেউ পড়াশোনা, কেউ সংসারের কাজ সামলে অবসর সময়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করেন। কাজ করতে চাওয়া নারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে নারীরা ডিজাইন এবং সৃজনশীল কাজে পারদর্শী হলেও সেটি পেশা হিসেবে নেওয়ার সাহস করেন কম। জেসিকার সঙ্গে কাজ করে ও শিখে নিজেরাই ব্যবসা শুরু করেছেন, এমন নারীও আছেন বলে জানান জেসিকা।
সর্বজয়ার পণ্য
জেসিকার সর্বজয়ার সিগনেচার পণ্য ব্লাউজ। পেজটি তাই বিশেষভাবে পরিচিত। ব্লাউজ ছাড়াও তিনি তৈরি করেন থ্রি-পিস, শাড়ি ও কুশন কভার। এগুলোর ওপর দৃষ্টিনন্দন নকশা তোলা হয়। নকশার কাজ করেন জেসিকা নিজে। বাকিরা সেগুলো সেলাইসহ বিভিন্ন ভেল্যু অ্যাডের কাজ করেন। এখন প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ পিস ব্লাউজের অর্ডার নেওয়া হয়।
সঙ্গে শাড়ি, কুশন কভারও থাকে। প্রতি মাসে সর্বজয়া প্রায় ৪ লাখ টাকার এসব পণ্য বিক্রি করে।
এবং নিজের ব্র্যান্ড
‘সমাজ ও পরিবার নারীদের পাশে দাঁড়ালে তারা সাহস হারাবে না’ বলে মনে করেন জেসিকা। নিজের কাজের বিষয় নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তাঁর অনেকটা স্পষ্ট। তিনি ভবিষ্যতে সর্বজয়াকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে দেখতে চান। শুধু তা-ই নয়, নিজের ব্র্যান্ডকে ‘লোকাল থেকে গ্লোবাল’-এ নিয়ে যেতে চান ইফ্ফাত আলম জেসিকা।
মধ্যবিত্ত এক পরিবারে বেড়ে ওঠা মানুষের গন্তব্য লেখাপড়া শেষ করে চাকরি পাওয়া। তারপর নিজেকে গুছিয়ে নেওয়া। কিন্তু কখনো কখনো কিছু মানুষ এই বৃত্ত ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেন। সে এক বিশাল লড়াই। তেমনই লড়াই করে চলেছেন এক তরুণ উদ্যোক্তা ইফ্ফাত আলম জেসিকা। নিজের তো বটেই, কর্মসংস্থান করেছেন আরও প্রায় ৩২ জন নারীর।
জেসিকা ও তাঁর সর্বজয়া
বাবা সেনাবাহিনীতে চাকরি করেন। তাই ছোটবেলা থেকে ক্যান্টনমেন্টে বড় হয়ে উঠেছেন জেসিকা। একসময় কাটিয়েছেন বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে; এখন সাভার ক্যান্টনমেন্টের বাসিন্দা। শৃঙ্খলা, পরিশ্রম, দায়িত্ববোধ, সততা কিংবা সীমিত আয়ে শৌখিনতার চর্চা—এগুলো শিখেছেন পরিবারের কাছ থেকেই। ছোটবেলায় জেসিকার বাবা তাঁর জন্য ঈদে কিনতেন সাধারণ গজ কাপড়, পোশাক বানানোর জন্য। সেসব পোশাকে নিজের হাতে লেইস-পুঁতি বসিয়ে ডিজাইন করে অন্য রকম বানিয়ে ফেলতেন তিনি। আঁকাআঁকি, ডিজাইন করা, নতুন কিছু তৈরি করা—এগুলো তাঁর অবসর কাটানোর অনুষঙ্গ ছিল।
আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের মতো জেসিকার মা-বাবার স্বপ্ন ছিল, মেয়ে পড়াশোনা করে চাকরি করবে। তিনিও পড়াশোনা শেষ করে ছোটখাটো একটা চাকরি নিয়েছিলেন। কিন্তু বাদ সাধে নিজের ইচ্ছা। সেখান থেকে নতুন কিছু করার ভাবনা শুরু জেসিকার। সেই ‘নতুন কিছু’ এখন সর্বজয়া; তাঁর ফেসবুক পেজ।
প্রথম কিছু বিক্রি করা
চাকরিরত অবস্থায় সহকর্মীদের উৎসাহে নিজের ফেসবুক আইডিতে তাঁর করা সেলাই-ফোড়াইয়ের কাজের ছবি আপলোড করেন জেসিকা। সেসব ছবি দেখে কয়েকজন সহকর্মী কিছু কুশন কভার বানিয়ে দিতে বলেন। সেটিই ছিল তাঁর প্রথম অর্ডার। সেখান থেকে হাজারখানেক টাকা লাভ হয়। সেই টাকা দিয়ে আরও কিছু কাপড় কিনেছিলেন জেসিকা। সেটিই ছিল প্রথম ‘ইনভেস্টমেন্ট’।
এরপর ধীরে ধীরে বন্ধুবান্ধব ও পরিচিত মানুষদের কাছ থেকে অর্ডার পেতে শুরু করেন জেসিকা। তাঁর মধ্যে তৈরি হতে থাকে আত্মবিশ্বাস। জেসিকার কাছে ডিজাইন কেবল নান্দনিকতা নয়; বরং এটা গল্প তৈরির মাধ্যম। তাই ধীরে ধীরে আঁকাআঁকি এবং ডিজাইনকে পেশাগতভাবে নেওয়ার কথা ভাবেন তিনি।
অদৃশ্য সেই পর্দা সরিয়ে
এখন নারী-পুরুষের আলাদা বলে কোনো কাজ নেই। তারপরেও সমাজে কাজের ক্ষেত্রে একটা অদৃশ্য পর্দা রয়ে গেছে। জেসিকা সেই পর্দার নাম দিয়েছেন ‘নীরব সংঘাত’। জানালেন, সরাসরি কেউ কিছু না বললেও আচরণ, দৃষ্টিভঙ্গি আর ব্যবহারে বুঝিয়ে দেবে তাদের সিদ্ধান্ত। কাজের শুরুতে তাঁকেও শুনতে হয়েছিল, ‘ব্যবসা করা ছেলেদের কাজ। পড়াশোনা করছ কি কাপড় বেচতে?’
সেসব কথার সঙ্গে লড়াইটা খুব সহজ ছিল না। তবে সব সময় জেসিকার কাজের বড় অনুপ্রেরণা ছিলেন মা-বাবা ও ভাই এবং বিয়ের পর স্বামী। জেসিকা বলেন, ‘প্রতিদিন নিজের ক্ষমতায় বিশ্বাস রাখতে হতো। নিজেকে প্রমাণ করতে হতো কাজ দিয়ে নিজের স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রেখে।’
‘সর্বজয়া’র সর্বজয়ারা
জেসিকার পথচলা শুরু হয়েছিল একটি সেলাই মেশিন দিয়ে। কাজ করতেন নিজে। সেখান থেকে বর্তমানে ৩০ জনের বেশি নারী কাজ করছেন তাঁর সঙ্গে। তাঁদের মধ্যে প্রতিদিন ওয়ার্কশপে কাজ করেন ৭ থেকে ৮ জন। বাকিরা সবাই সেলাইসহ বিভিন্ন কাজ করেন নিজ নিজ বাড়িতে। জেসিকা জানান, এই নারীদের কেউ পড়াশোনা, কেউ সংসারের কাজ সামলে অবসর সময়ে তাঁর সঙ্গে কাজ করেন। কাজ করতে চাওয়া নারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। তবে নারীরা ডিজাইন এবং সৃজনশীল কাজে পারদর্শী হলেও সেটি পেশা হিসেবে নেওয়ার সাহস করেন কম। জেসিকার সঙ্গে কাজ করে ও শিখে নিজেরাই ব্যবসা শুরু করেছেন, এমন নারীও আছেন বলে জানান জেসিকা।
সর্বজয়ার পণ্য
জেসিকার সর্বজয়ার সিগনেচার পণ্য ব্লাউজ। পেজটি তাই বিশেষভাবে পরিচিত। ব্লাউজ ছাড়াও তিনি তৈরি করেন থ্রি-পিস, শাড়ি ও কুশন কভার। এগুলোর ওপর দৃষ্টিনন্দন নকশা তোলা হয়। নকশার কাজ করেন জেসিকা নিজে। বাকিরা সেগুলো সেলাইসহ বিভিন্ন ভেল্যু অ্যাডের কাজ করেন। এখন প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ পিস ব্লাউজের অর্ডার নেওয়া হয়।
সঙ্গে শাড়ি, কুশন কভারও থাকে। প্রতি মাসে সর্বজয়া প্রায় ৪ লাখ টাকার এসব পণ্য বিক্রি করে।
এবং নিজের ব্র্যান্ড
‘সমাজ ও পরিবার নারীদের পাশে দাঁড়ালে তারা সাহস হারাবে না’ বলে মনে করেন জেসিকা। নিজের কাজের বিষয় নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তাঁর অনেকটা স্পষ্ট। তিনি ভবিষ্যতে সর্বজয়াকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে দেখতে চান। শুধু তা-ই নয়, নিজের ব্র্যান্ডকে ‘লোকাল থেকে গ্লোবাল’-এ নিয়ে যেতে চান ইফ্ফাত আলম জেসিকা।
টিকটকে নিজের একা থাকার সিদ্ধান্ত শেয়ার করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরের বাসিন্দা ৩১ বছর বয়সী প্যাট এম। অনলাইনে প্রায় সময় ত্রিশের মধ্যে সম্পর্ক গড়ার বিষয়টি অনেক গুরুত্বসহকারে দেখানো হয়। কিন্তু এই বয়সে এসে করপোরেট চাকরিজীবী প্যাটের মনে হয়েছে, আপাতত তাঁর নিজের ওপর মনোযোগ...
২১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে গণপরিবহনে যাতায়াতকালে ৮৭ ভাগ নারী বিভিন্নভাবে মৌখিক শারীরিক ও অন্যান্যভাবে হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। আর ৩৬ ভাগ নারী যৌন হয়রানির শিকার হন। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ কার্যালয়ে (ডিটিসিএ) আয়োজিত ‘গণপরিবহনে নারীর সম্মান রাখুন’ ক্যাম্পেইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নারীদের বাসে চলাচলের
৫ দিন আগে২৪ এপ্রিল ২০১৩ সাল। সকাল পৌনে ৯টার দিকে ঢাকার সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে বহুতল ভবন রানা প্লাজা ধসে পড়ে। পৃথিবীর কারখানা দুর্ঘটনার ইতিহাসে লেখা হয় এক মর্মান্তিক অধ্যায়। এক যুগ পরেও সেই স্মৃতি শুধু আমাদের নয়, তাড়া করে ফেরে পুরো বিশ্বকে।
৬ দিন আগেবাবা-মা দুজনেই প্রচুর বই পড়তেন। বাড়িতে ছিল প্রায় পাঁচ হাজার বইয়ের এক বিশাল সংগ্রহশালা। তাই ছেলেবেলা থেকে বাড়িতে বই দেখতে দেখতেই বড় হয়ে উঠেছেন জান্নাতুল। স্কুলজীবনে ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ও ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির একজন নিয়মিত সদস্য। জান্নাতুলের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে এভাবেই জড়িয়ে গেছে বই।
৭ দিন আগে