মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
বিয়েতে বাবার দেওয়া জামদানি শাড়ি কেটে তৈরি করেছিলেন টাই। সেটি দিয়েই উদ্যোক্তাজীবন শুরু হয়েছিল আতিয়া সিদ্দিকা কেয়ার। ধীরে ধীরে তিনি বিখ্যাত হয়েছেন ‘বিবির বসন’ নামে নিজস্ব উদ্যোগের জন্য। এখন তাঁর আয় মাসে লাখ টাকার ওপরে। মানিকগঞ্জে রয়েছে নিজের কারখানা। সেখানে কাজ করেন ১০ জন কর্মচারী। ঢাকার ওয়ারীতে তাঁর আউটলেটে কাজ করেন ৪ জন।
দুই সন্তান, ছোট ভাই আর মাকে নিয়ে তাঁর পরিবার। ঢাকার ওয়ারীতে বাসা হলেও গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ। বাবা পাড়ি জমিয়েছেন না-ফেরার দেশে, অনেক আগেই। বিএসসি পাস করে আতিয়া ফ্যাশন ডিজাইনিং বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন থেকে।
বদলে যাওয়া জীবন
২০২০ সাল। মহামারি করোনার কারণে লকডাউনে বিপর্যস্ত ব্যক্তিগত জীবন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেন কাজ। বিয়েতে বাবার দেওয়া জামদানি শাড়ির অংশ দিয়ে নেক টাই তৈরি করে মডেল হিসেবে জমা দিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনে। ব্যাপক প্রশংসা পেল সে টাই। পরে সেটি আরও উন্নত করে বাজারজাত করলেন। শুরু হলো উদ্যোক্তার জীবন।
সৃষ্টিশীলতায় মুগ্ধতা
স্বকীয়তা আর সৃজনশীলতার ছোঁয়ায় নিজে কিছু করবেন—তেমনটাই ছিল আতিয়ার স্বপ্ন। সে পথে তাঁর সিগনেচার পণ্য হলো জামদানি টাই। এতেই তিনি থেমে থাকলেন না; তাঁতের তৈরি বিভিন্ন পণ্য, স্যান্ডেল, নাগরা, পাগড়ি, ব্লেজার, টিস্যু বক্স, জুয়েলারি বক্স, ওয়ালেট, পার্স, জামদানি টুপি, জামদানি বোতাম, ওয়ালম্যাট, জামদানি হোম ডেকর ইত্যাদি একে একে যুক্ত হলো মণিমুক্তোর মতো। পাটের শাড়ি ও পাঞ্জাবি—এ দুটি পণ্যেও আতিয়া বাজিমাত করেছেন। এগুলোর সবই তাঁর নিজস্ব ভাবনায় তৈরি। তিনি তাঁতিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন কাপড়। নিজের ডিজাইনে কর্মীদের দিয়ে তৈরি করিয়ে নেন পণ্যগুলো।
অদম্য নারী
কাজটাই যেন আতিয়ার ধ্যানজ্ঞান। নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে একবিন্দু ছাড় দেননি তিনি। কখনো কখনো ২২ ঘণ্টা কাটিয়েছেন অনলাইনে। ব্যবসার খুঁটিনাটি বিষয় জানতে প্রচুর পড়াশোনা করেছেন। কারখানা ও আউটলেটকে এনেছেন নিয়মের মধ্যে। নিজে না থাকলে সহযোগীরা ঠিক এসব চালিয়ে নিতে পারেন। এরপরও প্রায় ১৮ ঘণ্টা ব্যবসার কাজে নিজেকে যুক্ত রাখেন তিনি।
পরিবার পাশে ছিল
একলা মায়ের পথচলা খুব সহজ নয়। তার ওপর যদি একেবারে শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। আতিয়ার অবস্থা তেমনি। অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলে এগিয়ে গেছেন। এগিয়ে যাওয়ায় সমর্থন পেয়েছেন পরিবার থেকে। উদ্যোক্তা হতে গিয়ে আর দশটা মায়ের মতো সন্তানদের সময় দিতে পারেননি তিনি। এমনও হয়েছে, গভীর রাতে কারখানা থেকে এসে দেখেছেন, মেয়ে ছোট্ট হাতে মায়ের কাপড় জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। আতিয়া জানিয়েছেন, পরিবার সঙ্গে ছিল বলে সংসার ভাঙার ঘটনা খুব বেশি এলোমেলো করে দিতে পারেনি তাঁর জীবন। পরিবারের কারণেই মানুষের নেতিবাচক কথা কিংবা অর্থনৈতিক টানাপোড়েন তাঁকে পিছিয়ে দিতে পারেনি।
চমৎকার আফটার সেলস সেবা
অনলাইনে পণ্য নেওয়ার পর যদি কেউ পরিবর্তন করতে চায়, আতিয়া সেই সুযোগ রেখেছেন। ওয়ারীর শোরুমে গিয়ে যে কেউ সরাসরি পণ্য কিনতে পারেন। আতিয়া ইতিমধ্যে প্রচুর রিপিট ক্রেতা তৈরিতে সফল হয়েছেন। তিনি যথাসম্ভব চেষ্টা করেন পুরোনো ক্রেতার চাহিদামতো পণ্য ডেলিভারি দিতে।
পরামর্শ
কাজ করতে করতে অনেক কিছু শিখেছেন আতিয়া। নতুনদের তিনি ভালোবাসা ও ভালো লাগার কাজ করতে উৎসাহিত করেন সব সময়। হুট করে কোনো কিছু না করার পরামর্শ তাঁর। তাতে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। শুরুতেই লাভের চিন্তা না করে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সব সময় কথা বলেন আতিয়া। সেই সঙ্গে মনে করেন, কমিটমেন্ট ভীষণ জরুরি সাফল্যের জন্য।
বাবাহীন রাজকন্যার সাফল্য
আতিয়া ছিলেন বাবার রাজকন্যা। এখন ইউএনডিপির আনন্দমেলা প্ল্যাটফর্মের একজন উদ্যোক্তা তিনি। এই সাফল্য তাঁর বাবা দেখে যেতে পারেননি বলে একটা দুঃখবোধ আছে তাঁর মনে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান
বিবির বসন শুধুই একটা নাম নয় বলে মনে করেন আতিয়া। প্রিয়জনের প্রয়োজনকে সাজিয়ে দিয়ে রাঙিয়ে দিতে চান তাঁতিদের মন। অপার সম্ভাবনা সত্ত্বেও নারীরা কেউ হারিয়ে না যাক, সেটাই চান তিনি। সে জন্যই কাজ করতে চান অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কর্মসংস্থান তৈরিতে। বিবির বসন আর আতিয়ার গল্প একলা চলার। সে গল্প হাজারো নারীর মধ্যে ছড়িয়ে যাবে, তেমনটাই চাওয়া আতিয়ার।
বিয়েতে বাবার দেওয়া জামদানি শাড়ি কেটে তৈরি করেছিলেন টাই। সেটি দিয়েই উদ্যোক্তাজীবন শুরু হয়েছিল আতিয়া সিদ্দিকা কেয়ার। ধীরে ধীরে তিনি বিখ্যাত হয়েছেন ‘বিবির বসন’ নামে নিজস্ব উদ্যোগের জন্য। এখন তাঁর আয় মাসে লাখ টাকার ওপরে। মানিকগঞ্জে রয়েছে নিজের কারখানা। সেখানে কাজ করেন ১০ জন কর্মচারী। ঢাকার ওয়ারীতে তাঁর আউটলেটে কাজ করেন ৪ জন।
দুই সন্তান, ছোট ভাই আর মাকে নিয়ে তাঁর পরিবার। ঢাকার ওয়ারীতে বাসা হলেও গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ। বাবা পাড়ি জমিয়েছেন না-ফেরার দেশে, অনেক আগেই। বিএসসি পাস করে আতিয়া ফ্যাশন ডিজাইনিং বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইন থেকে।
বদলে যাওয়া জীবন
২০২০ সাল। মহামারি করোনার কারণে লকডাউনে বিপর্যস্ত ব্যক্তিগত জীবন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেন কাজ। বিয়েতে বাবার দেওয়া জামদানি শাড়ির অংশ দিয়ে নেক টাই তৈরি করে মডেল হিসেবে জমা দিলেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনে। ব্যাপক প্রশংসা পেল সে টাই। পরে সেটি আরও উন্নত করে বাজারজাত করলেন। শুরু হলো উদ্যোক্তার জীবন।
সৃষ্টিশীলতায় মুগ্ধতা
স্বকীয়তা আর সৃজনশীলতার ছোঁয়ায় নিজে কিছু করবেন—তেমনটাই ছিল আতিয়ার স্বপ্ন। সে পথে তাঁর সিগনেচার পণ্য হলো জামদানি টাই। এতেই তিনি থেমে থাকলেন না; তাঁতের তৈরি বিভিন্ন পণ্য, স্যান্ডেল, নাগরা, পাগড়ি, ব্লেজার, টিস্যু বক্স, জুয়েলারি বক্স, ওয়ালেট, পার্স, জামদানি টুপি, জামদানি বোতাম, ওয়ালম্যাট, জামদানি হোম ডেকর ইত্যাদি একে একে যুক্ত হলো মণিমুক্তোর মতো। পাটের শাড়ি ও পাঞ্জাবি—এ দুটি পণ্যেও আতিয়া বাজিমাত করেছেন। এগুলোর সবই তাঁর নিজস্ব ভাবনায় তৈরি। তিনি তাঁতিদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেন কাপড়। নিজের ডিজাইনে কর্মীদের দিয়ে তৈরি করিয়ে নেন পণ্যগুলো।
অদম্য নারী
কাজটাই যেন আতিয়ার ধ্যানজ্ঞান। নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে একবিন্দু ছাড় দেননি তিনি। কখনো কখনো ২২ ঘণ্টা কাটিয়েছেন অনলাইনে। ব্যবসার খুঁটিনাটি বিষয় জানতে প্রচুর পড়াশোনা করেছেন। কারখানা ও আউটলেটকে এনেছেন নিয়মের মধ্যে। নিজে না থাকলে সহযোগীরা ঠিক এসব চালিয়ে নিতে পারেন। এরপরও প্রায় ১৮ ঘণ্টা ব্যবসার কাজে নিজেকে যুক্ত রাখেন তিনি।
পরিবার পাশে ছিল
একলা মায়ের পথচলা খুব সহজ নয়। তার ওপর যদি একেবারে শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। আতিয়ার অবস্থা তেমনি। অদম্য ইচ্ছাশক্তির বলে এগিয়ে গেছেন। এগিয়ে যাওয়ায় সমর্থন পেয়েছেন পরিবার থেকে। উদ্যোক্তা হতে গিয়ে আর দশটা মায়ের মতো সন্তানদের সময় দিতে পারেননি তিনি। এমনও হয়েছে, গভীর রাতে কারখানা থেকে এসে দেখেছেন, মেয়ে ছোট্ট হাতে মায়ের কাপড় জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। আতিয়া জানিয়েছেন, পরিবার সঙ্গে ছিল বলে সংসার ভাঙার ঘটনা খুব বেশি এলোমেলো করে দিতে পারেনি তাঁর জীবন। পরিবারের কারণেই মানুষের নেতিবাচক কথা কিংবা অর্থনৈতিক টানাপোড়েন তাঁকে পিছিয়ে দিতে পারেনি।
চমৎকার আফটার সেলস সেবা
অনলাইনে পণ্য নেওয়ার পর যদি কেউ পরিবর্তন করতে চায়, আতিয়া সেই সুযোগ রেখেছেন। ওয়ারীর শোরুমে গিয়ে যে কেউ সরাসরি পণ্য কিনতে পারেন। আতিয়া ইতিমধ্যে প্রচুর রিপিট ক্রেতা তৈরিতে সফল হয়েছেন। তিনি যথাসম্ভব চেষ্টা করেন পুরোনো ক্রেতার চাহিদামতো পণ্য ডেলিভারি দিতে।
পরামর্শ
কাজ করতে করতে অনেক কিছু শিখেছেন আতিয়া। নতুনদের তিনি ভালোবাসা ও ভালো লাগার কাজ করতে উৎসাহিত করেন সব সময়। হুট করে কোনো কিছু না করার পরামর্শ তাঁর। তাতে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা বেশি। শুরুতেই লাভের চিন্তা না করে কাজ চালিয়ে যাওয়ার সব সময় কথা বলেন আতিয়া। সেই সঙ্গে মনে করেন, কমিটমেন্ট ভীষণ জরুরি সাফল্যের জন্য।
বাবাহীন রাজকন্যার সাফল্য
আতিয়া ছিলেন বাবার রাজকন্যা। এখন ইউএনডিপির আনন্দমেলা প্ল্যাটফর্মের একজন উদ্যোক্তা তিনি। এই সাফল্য তাঁর বাবা দেখে যেতে পারেননি বলে একটা দুঃখবোধ আছে তাঁর মনে।
কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান
বিবির বসন শুধুই একটা নাম নয় বলে মনে করেন আতিয়া। প্রিয়জনের প্রয়োজনকে সাজিয়ে দিয়ে রাঙিয়ে দিতে চান তাঁতিদের মন। অপার সম্ভাবনা সত্ত্বেও নারীরা কেউ হারিয়ে না যাক, সেটাই চান তিনি। সে জন্যই কাজ করতে চান অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কর্মসংস্থান তৈরিতে। বিবির বসন আর আতিয়ার গল্প একলা চলার। সে গল্প হাজারো নারীর মধ্যে ছড়িয়ে যাবে, তেমনটাই চাওয়া আতিয়ার।
মানুষ স্বপ্নবাজ প্রাণী। যুদ্ধ ও সংঘাতময় পৃথিবীতে ভিটে চ্যুত মানুষও স্বপ্ন দেখে। এই স্বার্থ আর সংঘাতময় পৃথিবীতে মানুষ তার জীবনের চেয়েও বড়। নইলে বেঁচে থাকে কীভাবে! বিশ্ব শরণার্থী দিবসে তেমনি কিছু নারীর গল্প রইল, যাঁরা উদ্বাস্তু জীবনেও স্বপ্ন দেখেছেন জীবনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার।
৩ দিন আগেকারও কোলে শিশুসন্তান, কেউ অন্তঃসত্ত্বা, কারও হাতে স্যালাইনের ক্যানুলা। চাকরি বাঁচাতে এই অবস্থায় ২১ দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন তাঁরা। করবেন নাই-বা কেন, তাঁদের কেউ সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, কারও বেতনের টাকায় চলছে পরিবারের অসুস্থ সদস্যের চিকিৎসা; কেউ আবার বেতনের টাকায় সন্তানের জন্য...
৬ দিন আগেযুদ্ধের কারণে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং দৈনন্দিন আতঙ্ক ইসরায়েলি নারীদের গভীরভাবে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। ইসরায়েলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে এমন তথ্যের আভাস পাওয়া গেছে।
৬ দিন আগেঅনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় মাত্র ২০ হাজার টাকায় বোরকার ব্যবসা শুরু করেন। ডিজাইন, কাপড় সংগ্রহ, ডেলিভারি—সবই এক হাতে সামলাতেন তিনি। বর্তমানে ঢাকায় তাঁর দুটি শোরুম রয়েছে। বিনিয়োগের পরিমাণ বহু আগেই কয়েক কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আমেরিকা, কানাডা, জাপান, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে...
৬ দিন আগে