মুহাম্মদ শফিকুর রহমান
নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুরে বন্যা চলছে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। বাড়িঘরের শুধু চালাটা দেখা যায়। ত্রাণ দিতে ব্যস্ত সবাই। আর দলবল নিয়ে চিকিৎসা দিতে ছুটে গেলেন মাহমুদা আলম মিতু। ডুবন্ত এক বাড়ি থেকে উদ্ধার করলেন এক শিশুকে। বেশ নাজুক অবস্থা ছিল তার। মিতুর কোলে সেই শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় মুহূর্তে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিউ হয় কয়েক মিলিয়ন।
এমনই অনেক তৃপ্তিদায়ক ছোট ছোট মুহূর্ত ধরা আছে মিতুর জীবনে। এসব কাজের জন্যই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৫৫ সদস্যের নাগরিক কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবে জায়গা পেয়েছেন মিতু। নাগরিক কমিটি থেকে আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জুলাই ফাউন্ডেশনের হয়েও আহতদের জন্য কাজ করছেন তিনি। পেশাগতভাবে এখন আজিমপুর মা ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে গাইনি বিভাগে পোস্টগ্র্যাজুয়েশন ট্রেইনি হিসেবে কর্মরত মাহমুদা আলম মিতু।
৩০ হাজার গর্ভবতী মায়ের পাশে
আয়রন ট্যাবলেট খেলে স্বাভাবিক প্রসব হবে না, অন্যের রক্ত নেওয়া খারাপ, বেশি ঘুমালে শিশুর
মাথা বড় হয়ে যাবে, গর্ভবতীরা হাঁসের মাংস খেলে শিশু হাঁসের মতো শব্দ করবে—এমন কুসংস্কারে ভোগে আমাদের দেশে নারীরা। গত তিন বছরে প্রায় ৩০ হাজার গর্ভবতীর পাশে ছিলেন মিতু।
তাঁদের এসব কুসংস্কার থেকে বাঁচানোর চেষ্টা ছিল তাঁর। তিনি চেষ্টা করেছেন সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে।
স্ত্রীরোগ বিভাগে কর্মরত থাকা চিকিৎসকদের শারীরিক ও মানসিক চাপ সয়ে নিয়েছেন মিতু। পৃথিবীর আলোয় কেঁদে ওঠা শিশুদের দেখাই তাঁর আনন্দ। এ কারণেই নিজের পেশার সব চ্যালেঞ্জ
কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
অপচিকিৎসা আর নয়
ফাইনাল ইয়ারে পড়ছেন। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে মায়েদের ভুল পরামর্শ দেওয়া দেখেছেন চোখের সামনে। বয়স কম ছিল। রক্তেও ছিল উত্তেজনা।
মিতু এসব গ্রুপ বন্ধের চেষ্টা করে বিফল হন। পুলিশ তাঁকে জানায়, এ দেশে এসব বন্ধ সম্ভব নয়। মিতু ভালো লিখতে পারতেন। অনেকে তাঁকে পরামর্শ দিলেন, নিজেই একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলে সঠিক তথ্য দাও। সে কারণেই ২০২০ সালে তিনি কেয়ার অব ডক্টর মিতু নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ এবং ডক্টর মাহমুদা মিতু নামে একটি পেজ খোলেন। এগুলোর মাধ্যমে তিনি বিনা মূল্যে গর্ভবতী ও শিশুদের সেবা দেওয়া শুরু করেন।
করোনায় সময়
করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কাজ বেড়ে যায় তাঁর। ঘুমের সময়টুকু বাদে তিনি সরব থাকতেন ফেসবুকে। পরামর্শ লিখতে লিখতে হাত ফুলে যেত। গরম পানিতে হাত ভিজিয়ে রাখতেন। আবার লিখতেন। এভাবে ব্যাপক সাড়া ফেলেন।
সেই স্মৃতি এখনো ভোলেননি মিতু।
অগ্নিকন্যা
নবজাতক ও গর্ভবতীদের প্রতি তীব্র আকর্ষণ আর মায়াই অনুভব করেন না মিতু, প্রয়োজনে রাস্তায়ও নামতে পারেন। ছাত্র-জনতার উত্তাল আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভেঙে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি রাস্তায় নেমেছিলেন। সেদিন নিজের খুব কাছে গুলিবিদ্ধ হতে দেখেন এক কিশোরকে। সে ঘটনায় তিনি ভয় পেলেও আন্দোলন থেকে সরে যাননি। যতটুকু সম্ভব আহত শিক্ষার্থীদের সেবা করেছেন।
ভাইরাল হতে আসিনি
আন্দোলনে শহীদদের পুনর্বাসন এবং আহতদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিতু।
কাজের ক্ষেত্রে ভালো অভিজ্ঞতাই বেশি। তবে সমালোচনামুখর মানুষেরা বলে বসেন, এসবই
মূলত ভাইরাল হওয়ার বাসনা। বিষয়টি ভীষণ বিরক্ত করে মিতুকে। তিনি জানান, ভাইরাল হতে কাজ করেন না তিনি। মানুষের সেবা করে যেতে চান যত দিন সম্ভব। অনেকে ফেসবুকের ইনবক্সে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ চান। ব্যস্ততার কারণে সবাইকে সহায়তা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য নিজেরই মনঃকষ্ট আছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
স্বাভাবিক প্রসব এবং শিশুদের স্তন্যদান বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে মিতু ভবিষ্যতে কাজ করতে
চান। জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসক এবং নাগরিক—উভয়ের অধিকার আদায়ে সোচ্চার থাকবে তাঁর কণ্ঠ।
যুগ বদলেছে। প্রযুক্তি একেবারে ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকে গেছে বেশ আগেই। ফলে বদলেছে চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়ার ধরন। অনেকে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছেন। এতে অনেক মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে দ্রুততম সময়ে। মাহমুদা আলম মিতুও এই নতুন পথের যাত্রী। হাসপাতাল এবং অনলাইন—দুই ভুবনেই মিতু কাজ করে চলেছেন নিরলসভাবে।
নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুরে বন্যা চলছে। চারদিকে শুধু পানি আর পানি। বাড়িঘরের শুধু চালাটা দেখা যায়। ত্রাণ দিতে ব্যস্ত সবাই। আর দলবল নিয়ে চিকিৎসা দিতে ছুটে গেলেন মাহমুদা আলম মিতু। ডুবন্ত এক বাড়ি থেকে উদ্ধার করলেন এক শিশুকে। বেশ নাজুক অবস্থা ছিল তার। মিতুর কোলে সেই শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় মুহূর্তে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিউ হয় কয়েক মিলিয়ন।
এমনই অনেক তৃপ্তিদায়ক ছোট ছোট মুহূর্ত ধরা আছে মিতুর জীবনে। এসব কাজের জন্যই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ৫৫ সদস্যের নাগরিক কমিটিতে কেন্দ্রীয় সদস্য হিসেবে জায়গা পেয়েছেন মিতু। নাগরিক কমিটি থেকে আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি জুলাই ফাউন্ডেশনের হয়েও আহতদের জন্য কাজ করছেন তিনি। পেশাগতভাবে এখন আজিমপুর মা ও শিশু স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে গাইনি বিভাগে পোস্টগ্র্যাজুয়েশন ট্রেইনি হিসেবে কর্মরত মাহমুদা আলম মিতু।
৩০ হাজার গর্ভবতী মায়ের পাশে
আয়রন ট্যাবলেট খেলে স্বাভাবিক প্রসব হবে না, অন্যের রক্ত নেওয়া খারাপ, বেশি ঘুমালে শিশুর
মাথা বড় হয়ে যাবে, গর্ভবতীরা হাঁসের মাংস খেলে শিশু হাঁসের মতো শব্দ করবে—এমন কুসংস্কারে ভোগে আমাদের দেশে নারীরা। গত তিন বছরে প্রায় ৩০ হাজার গর্ভবতীর পাশে ছিলেন মিতু।
তাঁদের এসব কুসংস্কার থেকে বাঁচানোর চেষ্টা ছিল তাঁর। তিনি চেষ্টা করেছেন সঠিক তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে।
স্ত্রীরোগ বিভাগে কর্মরত থাকা চিকিৎসকদের শারীরিক ও মানসিক চাপ সয়ে নিয়েছেন মিতু। পৃথিবীর আলোয় কেঁদে ওঠা শিশুদের দেখাই তাঁর আনন্দ। এ কারণেই নিজের পেশার সব চ্যালেঞ্জ
কাঁধে তুলে নিয়েছেন।
অপচিকিৎসা আর নয়
ফাইনাল ইয়ারে পড়ছেন। ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে মায়েদের ভুল পরামর্শ দেওয়া দেখেছেন চোখের সামনে। বয়স কম ছিল। রক্তেও ছিল উত্তেজনা।
মিতু এসব গ্রুপ বন্ধের চেষ্টা করে বিফল হন। পুলিশ তাঁকে জানায়, এ দেশে এসব বন্ধ সম্ভব নয়। মিতু ভালো লিখতে পারতেন। অনেকে তাঁকে পরামর্শ দিলেন, নিজেই একটি ফেসবুক গ্রুপ খুলে সঠিক তথ্য দাও। সে কারণেই ২০২০ সালে তিনি কেয়ার অব ডক্টর মিতু নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ এবং ডক্টর মাহমুদা মিতু নামে একটি পেজ খোলেন। এগুলোর মাধ্যমে তিনি বিনা মূল্যে গর্ভবতী ও শিশুদের সেবা দেওয়া শুরু করেন।
করোনায় সময়
করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কাজ বেড়ে যায় তাঁর। ঘুমের সময়টুকু বাদে তিনি সরব থাকতেন ফেসবুকে। পরামর্শ লিখতে লিখতে হাত ফুলে যেত। গরম পানিতে হাত ভিজিয়ে রাখতেন। আবার লিখতেন। এভাবে ব্যাপক সাড়া ফেলেন।
সেই স্মৃতি এখনো ভোলেননি মিতু।
অগ্নিকন্যা
নবজাতক ও গর্ভবতীদের প্রতি তীব্র আকর্ষণ আর মায়াই অনুভব করেন না মিতু, প্রয়োজনে রাস্তায়ও নামতে পারেন। ছাত্র-জনতার উত্তাল আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভেঙে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি রাস্তায় নেমেছিলেন। সেদিন নিজের খুব কাছে গুলিবিদ্ধ হতে দেখেন এক কিশোরকে। সে ঘটনায় তিনি ভয় পেলেও আন্দোলন থেকে সরে যাননি। যতটুকু সম্ভব আহত শিক্ষার্থীদের সেবা করেছেন।
ভাইরাল হতে আসিনি
আন্দোলনে শহীদদের পুনর্বাসন এবং আহতদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিতু।
কাজের ক্ষেত্রে ভালো অভিজ্ঞতাই বেশি। তবে সমালোচনামুখর মানুষেরা বলে বসেন, এসবই
মূলত ভাইরাল হওয়ার বাসনা। বিষয়টি ভীষণ বিরক্ত করে মিতুকে। তিনি জানান, ভাইরাল হতে কাজ করেন না তিনি। মানুষের সেবা করে যেতে চান যত দিন সম্ভব। অনেকে ফেসবুকের ইনবক্সে চিকিৎসার জন্য পরামর্শ চান। ব্যস্ততার কারণে সবাইকে সহায়তা করা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য নিজেরই মনঃকষ্ট আছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
স্বাভাবিক প্রসব এবং শিশুদের স্তন্যদান বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে মিতু ভবিষ্যতে কাজ করতে
চান। জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসক এবং নাগরিক—উভয়ের অধিকার আদায়ে সোচ্চার থাকবে তাঁর কণ্ঠ।
যুগ বদলেছে। প্রযুক্তি একেবারে ব্যক্তিগত পরিসরে ঢুকে গেছে বেশ আগেই। ফলে বদলেছে চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়ার ধরন। অনেকে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা সহায়তা দিচ্ছেন। এতে অনেক মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে দ্রুততম সময়ে। মাহমুদা আলম মিতুও এই নতুন পথের যাত্রী। হাসপাতাল এবং অনলাইন—দুই ভুবনেই মিতু কাজ করে চলেছেন নিরলসভাবে।
দেশে সবকিছু নিয়ে একটি পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু নারীদের নিরাপত্তা, তাঁদের অধিকার, তাঁদের সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে অংশগ্রহণের বিষয়গুলো নিয়ে কতটুকু কথা হচ্ছে? নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নিয়ে কথা হচ্ছে। এর মধ্যে নারীদের অংশগ্রহণের বিষয়টি কতটা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে? রাজনৈতিক দলগুলোতে নারী নেতৃত্বের...
১৫ ঘণ্টা আগে১২ আগস্ট মঙ্গলবার, সকালেই এক গভীর শূন্যতা নেমে এল চারপাশে। অধ্যাপক মাহফুজা খানম আর নেই! বুকের ভেতর যেন এক অপার শূন্যতার ঢেউ আছড়ে পড়ল। মানুষ চলে গেলে পৃথিবী তো থেমে যায় না, আকাশের রংও বদলায় না, রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড় থাকে। কিন্তু আমাদের ভেতরের পৃথিবী থেমে যায়। আমার কাছে তিনি শুধু একজন খ্যাতিমান..
১৫ ঘণ্টা আগেযুদ্ধের উত্তাপে জর্জরিত গাজায় প্রতিটি মুহূর্তে মৃত্যুর ছায়া ঘোরে। তবু সেখানে নতুন প্রাণের আশা যেন এক অনন্য বিজয়। গাজার আসসাহাবা মেডিকেল কমপ্লেক্সের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক, নার্স আর ইন্টার্নরা এই জীবন ও মৃত্যুর এক অপরিহার্য সম্পর্কের সাক্ষী হয়ে ওঠেন প্রতিনিয়ত। সেখানে অনিশ্চিত নিকষ কালো..
১৬ ঘণ্টা আগেআমি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি। একটি ছেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব ছিল কলেজজীবন থেকে। সে এখন একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। আমাদের কথা বন্ধ হয়ে যায় এক বছর আগে তার ইচ্ছাতেই। এ ঘটনায় আমি খুবই বিষণ্ন হয়ে যাই। পরে তা কাটিয়ে উঠি। কিছুদিন আগে সে আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে আনব্লক করে, স্টোরি দেখে...
১৭ ঘণ্টা আগে